Tuesday, February 7, 2017

যশোরের মৎস্য চাষী মফিজুরের উৎপাদিত কৈ আর শিং মাছ ব্যাপক সাঁড়া ফেলেছে

  • Share The Gag
  • যশোরের মৎস্য চাষী মফিজুর রহমান তরফদারের ঋৎপাদিত উন্নত জাতের কৈ আর শিং মাছ ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তিনি জেলা পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ মাছ চাষি হিসেবে পুরস্কারও পেয়েছেন একাধিকবার।
    জানাযায়,গত ২৭ বছর আগে যশোর শহরতলীর চাঁচড়ার বাসিন্দা মফিজুর রহমান তরফদার পৈত্রিক ব্যবসার হাত ধরে মাছ চাষ শুরু করেন। মফিজুর রহমানের পিতা মুজিবার রহমানও ছিলেন একজন আদর্শ চাষি। আধুনিক পদ্ধতির ধান ও সবজির চাষাবাদ করে তিনিও রাষ্ট্রীয় পদক লাভ করেন। সরকারি পৃষ্টপোষকতায় করেন বিদেশ ভ্রমণ। এক পর্যায়ে শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ায় ১৯৯০ সালে মফিজুর রহমান লেখা পড়া ছেড়ে পৈত্রিক ব্যবসায় আত্মনিয়োগ করেন। প্রথমে তিনি বর্মণ পাড়ায় পৈত্রিক জমিতে ২/৩টি পুকুর খনন করে কার্প জাতীয় মাছের চাষ শুরু করেন।
    এরপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি মৎস্য চাষি মফিজুর রহমান তরফদারকে। বর্তমানে তিনি চঁচড়া বর্মণ পাড়ায় নিজস্ব ৬ হেক্টর জমিতে ছোট বড় ১০টি পুকুর খনন করে সেখানে উন্নত জাতের কৈ ও শিং মাছের চাষ করছেন। এছাড়া সারা বছরই তিনি সাদা মিশ্র জাতের মাছ চাষ করে থাকেন।

    তার উৎপাদিত কৈ আর শিং মাছ স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য জেলা শহরে রপ্তানি করেন তিনি। তরফদার মৎস্য চাষ প্রকল্প থেকে গত বছর আড়াই শ’ মেট্রিক টন কৈ ও শিং মাছ উৎপাদন করেছেন মফিজুর রহমান। উৎপাদিত এসব মাছ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে  দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা। তার দেখাদেখি অনেকেই এখন উন্নত জাতের কৈ আর শিং মাছ চাষ ঝুঁকে পড়ছেন।
    এৎস্য চাষী মফিজুর রহমান তরফদার আমাদের এ প্রতিবেদককে বলেন তিনি এর আগে রুই, কাতলা, মৃগেলসহ অন্যান্য দেশি জাতের মাছের চাষ করতেন। ৭ বছর আগে তিনি উন্নতমানের কৈ ও শিং মাছের চাষ শুরু করেন। স্থানীয় বাজারে কৈ ও শিং মাছের চাহিদা বেশি হওয়ায় তিনি লাভের মুখ দেখতে শুরু করেন। তিনি বলেন, তার খামারের উৎপাদিত মাছ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে প্রতি নিয়ত রাজধানী ঢাকা, বরিশাল, খুলনা, চুয়াডাঙ্গা, কুমিল্লা, নোয়াখালী, ভোলা, পটুয়াখালী, মাগুরা, ফরিদপুর, মাদারীপুরসহ কমপে ২০ জেলায় সরবরাহ করা হয়। মফিজুর রহমানের স্বপ্ন, বাংলাদেশের আমিষের চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত মাছ বিদেশে রপ্তানি করে যাতে দেশের চাষিরা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জণ করতে পারে সে ব্যাপারে সরকার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।তার মৎস্য খামারে নিয়মিত ২ জন নারী শ্রমিক ও ৪ জন পুরুষ শ্রমিক কাজ করছেন। এছাড়া মৌসুমে আরো ১০/১২ জন শ্রমিক তরফদার মৎস্য চাষ প্রকল্পে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
    এদিকে চাঁচড়ার মৎস্য চাষি কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আনোয়ারুল করিম আনু বলেন, কৈ ও শিং মাছের চাষ লাভজনক হওয়ায় মফিজুর রহমান তরফদারের মতো আরো অনেক চাষি কৈ ও শিং মাছ চাষের প্রতি অধিক হারে ঝুঁকে পড়ছেন।

    Wednesday, February 1, 2017

    দিন বদলের স্বপ্ন দেখছে নওগাঁর মাছ চাষিরা

  • Share The Gag
  • নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার মধ্য দিয়ে বহমান আত্রাই নদীতে ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ করে দিন বদলের স্বপ্ন দেখছে চাষিরা। মহাদেবপুরের মহিষবাথান এলাকা ও কুঞ্জবন এলাকায় আত্রাই নদীতে ৭৬টি খাঁচায় মাছ চাষ করেছেন এলাকার ৩৫ জন মাছ চাষি। ওই এলাকায় মাছ চাষের নতুন এই পদ্ধতি দেখে স্থানীয় বেকার যুবক ও ভূমিহীন মৎস্য জীবীরা এই নদীতে ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষে আগ্রহী হচ্ছে।

    উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানা গেছে, গত বছরের জুন মাসে উপজেলার মহিষবাথান গ্রামে ২০ জন মৎস্যজীবীকে এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। পরে নদীতে ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষে স্থানীয় লোকজনকে উদ্বুদ্ধ করতে এই ২০ জনের একটি দল গঠন করে তাদেরকে ১০টি খাঁচায় মাছ চাষের জন্য উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে দুই লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হয়। গত সেপ্টেম্বর মাসে ওইসব খাঁচাতে ‘মনোসেক্স’ জাতের তেলাপিয়া মাছের পোনা ছাড়া হয়। পরবর্তী সময়ে মাছ চাষের নতুন পদ্ধতি দেখে স্থানীয় বেকার যুবকরা নিজস্ব উদ্যোগে নদীতে ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ করতে শুরু করে। পোনা ছাড়ার দুই-তিন মাস পর মাছের ওজন ও মাছে কোনো রোগ-বালাই দেখা না দেওয়ায় প্রতিটি খাঁচা থেকে ৮ থেকে ১০হাজার টাকা লাভের আশা করছে চাষিরা।

    মাছচাষি নওশাদ আলী বলেন, এ পদ্ধতিতে মাছ চাষে অনেক লাভ। পাঁচ জলার মাছ মাত্র ১০টি খাঁচাতেই চাষ করা যায়। যাদের মাছ চাষের জন্য জলা নেই তাদের জন্য এই পদ্ধতি খুবই উপকারী। তিনি আরো জানান, পুকুরে বা যেকোনো বদ্ধ জলাশয়ে যে হারে মাছ বাড়ে তার চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি হারে নদীতে মাছ বাড়ে। নদীর পানিতে মাছের রোগ বালাই হয় না বললেই চলে।

    মহিষবাথান গ্রামের ভূমিহীন জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ছয়-সাত মাস আগে একদিন উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মাহফুজুল হক মহিষবাথানে এসে ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষের জন্য ২০জনের একটি দল গঠন করতে বলেন। দল গঠন করার পর তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এরপর ১০টি খাঁচা তৈরি ও মাছের পোনা ছাড়ার জন্য দুই লাখ টাকা সরকারি অনুদানও দেওয়া হয়। অনুদানের টাকায় ড্রাম, নেট ও বাঁশ দিয়ে মহিষবাথান খেয়াঘাট এলাকায় আত্রাই নদীর ওপর ১০টি খাঁচা তৈরি করেন। এরপর গত সেপ্টম্বর মাসে বগুড়ার আদমদীঘি থেকে মনোসেক্স তেলাপিয়া মাছের পোনা এনে তারা খাঁচায় মাছ চাষ করতে শুরু করে। পরে ওই দলের সদস্যরা নিজেরদের খরচে আরও ১০টি খাঁচা তৈরি করে ওই বছরের অক্টোবরের মাসে মাছের পোনা ছাড়েন। কিছুদিন আগে পাঁচটি খাঁচা থেকে ৭৫হাজার টাকার মাছ বিক্রি করেছেন বলেও জানান তিনি।

    সরকারি অনুদানে স্থানীয় চাষিদের খাঁচায় মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ হয়ে মহিষবাথানা খেয়াঘাট এলাকায় আত্রাই নদে খাঁচায় মাছ চাষ করছেন দুই বন্ধু মনজেল হোসেন ও বুলবুল আহমেদ। মনজেল হোসেন বলেন, ডিগ্রি পাস করে বাড়িতে বেকার বসেছিলাম। নদীতে খাঁচায় মাছ চাষ পদ্ধতি দেখে আমি ও আমার বন্ধু বুলবুল দুজনে খাঁচায় মাছ চাষ করার সিদ্ধান্ত নিই। পরে প্রশিক্ষণ নিয়ে মাছ চাষ শুরু করি। তাঁরা দুজন মিলে তিন মাস ধরে ১৫টি খাঁচায় মাছ চাষ করছেন। তাঁরা জানান, জিআইপাইপ, নেট ও ড্রাম দিয়ে ১০টি খাঁচা তৈরি করতে তাদের খরচ পড়েছে এক লক্ষ ৪০ হাজার টাকা। আর বাঁশ, নেট ও ড্রাম দিয়ে পাঁচটি খাঁচা তৈরিতে খরচ হয়েছে ৫০হাজার টাকা।

    হ্যাচারি থেকে পোনা এনে রাখার জন্য বাঁশ ও নেট দিয়ে একটি বড় হাঁফা (বড় খাঁচা) তৈরি করতে খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। প্রতিটি খাঁচায় ১ হাজার থেকে ১২শ পিস করে ১৪টি খাঁচায় প্রায় ১৫হাজার পিস তেলাপিয়া মাছ ছেড়েছেন তারা। আর একটি খাঁচায় পরীক্ষা মূলকভাবে পাঙ্গাস মাছ চাষ করছেন তারা দুই বন্ধু। মাছের পোনা ছাড়তে খরচ পড়েছে ৯০ হাজার টাকা। গত বছরের অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ের দিকে খাঁচায় মাছ ছাড়ার পর মাত্র আড়াই মাসে প্রতিটি মাছের ওজন ৭শ থেকে ৮শ গ্রাম পর্যন্ত হয়েছে। আর ১৫-১৬ দিন পর মাছ বিক্রি করা যাবে। খাবার খরচ বাদ দিয়ে আশা করা হচ্ছে প্রতিটি খাঁচার মাছ বিক্রি করে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা লাভ হবে।

    মহিষবাথান সিবিজি (কমিউনিটি বেইসড গ্রুপ) দলের নেতা জাহাঙ্গীর হোসনে জানান, সরকারি উদ্যোগে আরো বেশি সংখ্যক চাষিকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দিলে এবং খাঁচায় মাছ চাষে উদ্যোগী বেকার যুবকদের স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করলে এই পদ্ধতি আরো প্রসার লাভ করবে। এতে এলাকার বেকার যুবকরা স্বাবলম্বী হতে পারবে।

    মহাদেবপুর উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মাহফুজুল হক বলেন, বেকার সমস্যা দূর ও ভূমিহীন মৎস্যজীবীদের স্বাবলম্বী করার উদ্দেশ্যে মহাদেবপুরে খাঁচায় মাছ চাষ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে এলাকার মানুষজনের মধ্যে এই পদ্ধতি অল্প কিছুদিনের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তিনি আরো বলেন, স্বল্প পুঁজি নিয়েই যে কেউ এই পদ্ধতি নদীতে মাছ চাষ করতে পারেন। ২০বাই ১০ ফিটের প্রতিটি খাঁচা তৈরি করতে ১২থেকে ১৫হাজার টাকা খরচ হয়। আর টাকা খরচ হবে মাছের পোনা ও মাছের খাবার বাবদ। এর জন্য নিজস্ব কোনো জলাভূমির প্রয়োজন নেই। সিবিজি প্রকল্প দেখে অনেকে এই পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে আমাদের কাছে আসছে এবং প্রশিক্ষণ নিতে চাচ্ছে। আমরাও তাদের সর্বাত্মক সহায়তা করছি।

     

    দুই বছরেও চালু হয়নি নেত্রকোনা কৃষি আবহাওয়া অফিস

  • Share The Gag
  • হস্তান্তর হওয়ার দুই বছরেও চালু হয়নি নেত্রকোনা কৃষি আবহাওয়া অফিস। সদর উপজেলার কাইলাটি ইউনিয়নে বনুয়াপাড়া গ্রামে মনোরম পরিবেশে আড়াই একর জমিতে নির্মিত হয়েছে আবহাওয়া কার্যালয়টি।

    জেলার দশ উপজেলার মধ্যে কেন্দুয়া-আটপাড়া-মদন-খালিয়াজুরী ও কলমাকান্দা উপজেলা হাওরাঞ্চল। এই চার উপজেলাসহ বাকি সবকটি উপজেলাতে আবহাওয়ার পূর্বাভাস, আবহাওয়া তথ্য আদান-প্রদান করতে নেত্রকোনা কৃষি আবহাওয়া কার্যালয়টি নির্মিত হয়েছে। কার্যালয়ের মূল ফটক ধরে ভিতরে ঢুকে হাতের ডান পাশে প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্যে রয়েছে একটি দ্বিতল ভবন। এর ছাদে স্থাপন করা হয়েছে বাতাস পরিমাপক, বাতাসের দিক নিয়ন্ত্রক এবং সানশাইন রেকর্ডারসহ তিনটি যন্ত্র। আর বাম পাশে দ্বিতল ভবনে যৌথ শয়নালয়।

    এছাড়াও একতলা বিশিষ্ট গার্ডশেড, পাম্প হাউজ ও একটি ইকুইপমেন্ট এরিয়া আছে। যার ভিতরে ট্রান্সমিটার, বৃষ্টি পরিমাপক যন্ত্র, সোলার রেডিওশন, বড় আকারের কয়েকটি থার্মোমিটার এবং একটি অটোমেটিক ওয়েদার স্টেশন রয়েছে বলে  সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

    কৃষি আবহাওয়া কার্যালয়ের পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মহসিন উদ্দিন জাগো নিউজকে জানান, অফিসে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি প্রায় সবকিছুই আছে। নেই শুধু প্রয়োজনীয় লোকবল। নিয়মানুযায়ী আবহাওয়া কার্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনার জন্যে বিভিন্ন পদে ১১ জন স্টাফ থাকার কথা রয়েছে। ১১ জনের মধ্যে রয়েছে মাত্র তিন জন। এখানে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো এখনো শূন্য। এছাড়াও নেই কেয়ারটেকার ও  গেটম্যান।

    Netrokona

    নেত্রকোনা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মোক্তার হোসেন দেওয়ান জাগো নিউজকে জানান,বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের বাস্তবায়নাধীন ‘আপগ্রেডেশন অব অ্যাগ্রো ম্যাটেউরোজিক্যাল সার্ভিস (রিভাইসড)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় তিন কোটি ২৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হয়েছে নেত্রকোনা কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার।

    ২০১১ সালের ১৬ জুন শুরু হয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদকাল ছিল ১৫ জুন ২০১২ পর্যন্ত। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আজাদ রহমান অ্যান্ড আনিসুর রহমান শাহীন ( জেভি) ও  মেসার্স সাঈফ খান বিপ্লব নির্মাণ কাজ  শেষে ২০১৪ সালের ৬ জুন গণপূর্ত অধিদফতরে তা হস্তান্তর করেন।

    হস্তান্তরের দুই বছর পরেও আবহাওয়া কার্যালয়টি চালু না হওয়ায় কৃষি ক্ষেত্রে মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা। আবহাওয়া কার্যালয়টি চালু না হওয়াতে নেত্রকোনার চারটি উপজেলার হাওরাঞ্চলে আগাম বন্যায় ক্ষতি হয় বছরের একমাত্র বোরো ফসল।

    কৃষক পাবেন ৩৩ কোটি টাকার প্রণোদনা

  • Share The Gag
  • সরকার তিন ফসল চাষে প্রায় ৩৩ কোটি টাকার কৃষি প্রণোদনা দিয়েছে। আউশ চাষে ৩১ কোটি টাকা আর কুমড়া এবং পাট চাষে দেয়া হচ্ছে বাকি এক কোটি ৯০ লাখ টাকা। কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বুধবার তার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রণোদনা ঘোষণা করেন। এ সময় জানানো হয় চলতি অর্থবছরে দুইবারে ৭৫ কোটি টাকা কৃষি প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। গত সেপ্টেম্বরে প্রথম ধাপের ৪২ কোটি টাকা কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। নতুন প্রণোদনা ১০ দিনের মধ্যে শুরু হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।



    কৃষিমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের বড় বড় দেশ জলবায়ুর পরিবর্তনের জন্য দায়ী। কিন্তু তারা জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে অনেক কথা বললেও কোনদিনই পরিবর্তন রোধে কোন কাজ করে না। না তারা কার্বন নিঃসরণ কমায় না তাদের বোমাবাজি কমে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত হই আমরা।



    মতিয়া চৌধুরী বলেন, আউশ চাষে কৃষকদের উৎসাহী করে তোলার জন্যই এই প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে এই মৌসুমে কুমড়া এবং পাট চাষেও প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। ফসলের উন্নত জাতের সম্প্রসারণে প্রণোদনা কাজে আসবে। একই সঙ্গে কৃষক যাতে অতিরিক্ত অপ্রয়োজনীয় বালাই নাশক ব্যবহার না করে সে জন্য কৃষি বিভাগ সচেষ্ট রয়েছে।



    এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সরকার কৃষি পণ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করছে। এরপরও সবজি নষ্ট হচ্ছে। এজন্য বেশি বেশি করে সবজি খাওয়ার পারমর্শ দেন তিনি। পান চাষে চুয়াডাঙ্গার কৃষকদের সমস্যা দূর করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার নিদের্শ দেন তিনি।



    সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় উচ্চফলনশীল স্থানীয় আউশ ও নেরিকা চাষে বীজ ও সারসহ প্রয়োজনীয় উপকরণের যোগান দিতে ২ লাখ ২৫ হাজার ৯৮৮ জন কৃষককে এ প্রণোদনার টাকা দেয়া হবে। নেরিকা হচ্ছে তুলনামূলক কম সময়ে উৎপাদনশীল ক্ষরাসহিষ্ণু জাত। ২০০৯ সালে এটি আফ্রিকা থেকে আমদানি করা হয়। আগামী মার্চ থেকে শুরু খারিফ-১ মৌসুমে ৫১ জেলায় আউশের জন্য ২৭ কোটি ১০ লাখ এবং ৪০ জেলায় নারিকা জাত চাষে ৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা প্রণোদনা দেয়া হবে। এতে আউশ চাষে ২ লাখ ও নারিকার জন্য ২০ হাজার কৃষক সহায়তা পাবে।



    মতিয়া চৌধুরী বলেন, এছাড়া ৬৪ জেলায় পাট, ইক্ষু, মিষ্টি কুমড়ার বালাই দমনে এক কোটি ৯০ লাখ ১৬ হাজার ৪৬০ টাকা দেয়া হবে।



    আউশ চাষে প্রত্যেক কৃষক ৫ কেজি বীজ, ২০ কেজি ইউরিয়া, ১০ কেজি ফসফেট ও ১০ কেজি করে পটাশ পাবে। নারিকার জন্য প্রত্যেক কৃষককে দেয়া হবে ১০ কেজি বীজ, ২০ কেজি ইউরিয়া, ১০ কেজি ফসফেট ও ১০ কেজি পটাশ।



    মন্ত্রী বলেন, এতে অতিরিক্ত ৭০ হাজার টন আউশ ও ৬ হাজার টনেরও বেশি নারিকা উৎপাদিত হবে। এছাড়া ৯৮ দশমিক ১৭ বেল অতিরিক্ত পাটের উৎপাদন হবে (এক বেলে ৫ মণ পাট)। তিনি বলেন, সারাদেশে প্রায় ২ কোটি কৃষকের কৃষি কার্ড রয়েছে। তিনি বলেন, সরাসরি টাকা দেয়ার বদলে আমরা কৃষিপণ্য এবং সহায়তা দিয়ে থাকি। এতে দুর্নীতি কম হয়। অনুষ্ঠানে কৃষি সচিব মোহাম্মদ মঈনুদ্দিন আবদুল্লাহ ও কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মঞ্জুরুল হান্নানসহ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।