ল্যাপকিন মারাক, বয়স ৪৮। শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের বাবেলাকোনা গ্রামে তৈরি করেছেন কেঁচো দিয়ে জৈব সার তৈরির কারখানা। এতে ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে তার। দিন দিন বাড়ছে সারের চাহিদা। বাড়ছে কারখানার পরিধি। বাড়ছে উৎপাদন। বদলে যাচ্ছে তার সংসারের অবকাঠামো।ক’বছর আগেও কর্মসংস্থানের অভাবে ল্যাপকিন মারাক ছিল সহায় সম্পদহীন। ১৯৯২ সালে বিয়ে করে আসেন বাবেলাকোনায় শ্বশুর বাড়ি। বিয়ের পর অভাবের তাড়নায় বিক্রি করেছিলেন স্ত্রীর ভিটেমাটি। থাকেন অন্যের বাড়িতে। নুন আনতে পানতা ফুরাতো তার সংসারে। এদিকে সংসারে আসে নতুন অতিথি। স্ত্রী ও আর চার সন্তানের ভরণ পোষণে ক্রমাগত নিষ্পেষিত হতেন তিনি। পাহাড়ের পরিত্যক্ত জমিতে জুম চাষ করে টিকে থাকার প্রচেষ্টা যেন বার বার মুখ থুবড়ে পড়েছিল। জীবন মানে যে যন্ত্রণা তা যেন তার ভাগ্যেই ভর করেছিল।
২০১৪ সালের শেষের দিকে তার দুঃসময় যেন চরমে। এ সময় তার এক প্রতিবেশির কাছে সংবাদ পান একটি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে জৈব সার তৈরির ট্রেনিং দেয়া হবে। সেখানে তিনি অংশ নেন। প্রশিক্ষণ হয় তিনদিনের। পরে ওই সংস্থার মাধ্যমে ট্রেনিং শেষে চীন থেকে আমদানিকৃত ৭৫ টাকায় ২৫টি কেঁচো কিনেন তিনি। এখান থেকেই শুরু হয় তার জৈব সার তৈরি।ঐকান্তিক প্রচেষ্টা আর তার স্ত্রীর সহযোগিতায় মাত্র দু’বছরেই স্বপ্ন দেখা শুরু করেন তারা।
বাড়ছে কেঁচোর সংখ্যা। এখন তার কারখানায় রয়েছে প্রায় ৪৫ লাখ কেঁচো। ওই সার ব্যবহার হচ্ছে শাক সবজি আর ইরিবোরো চাষাবাদে। ফলন ভাল হওয়ায় বাড়ছে বিক্রি। আলোচিত হয়ে ওঠছে তার জৈব সার কারখানা।অনেকেই বলেন, ল্যাপকিন জৈব সার। কেঁচো দিয়ে জৈব সার তৈরি করে ল্যাপকিনের এখন মাসিক আয় ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা। তবে আর্থিক সহায়তা পেলে কারখানার পরিধি আরো বাড়াতে পারবেন বলে জানান তিনি।এলাকার কৃষকরা জানান, বাজারের জৈব সারের চেয়ে গুণগত মানের দিক থেকে এ সার অনেক ভাল।
চাষাবাদের এ সারের ফলন অনেক বেশি। যারা একবার এ সার ব্যবহার করছে তারা কখনো অন্য সার ব্যবহার করবে না।এখন ল্যাপকিনের নিজের ভিটা হয়েছে। তার ঘরে সোলারের বাতিও জ্বলে।উপজেলা কৃষি সুপারভাইজার সাইফুল ইসলাম বলেন, এখানে যে সার উৎপাদন হচ্ছে তা বাজারের সারের তুলনায় অনেক ভাল। তাই স্থানীয় কৃষকেরা এ সার ব্যবহার করছেন।
Sunday, July 23, 2017
Tagged Under: কৃষি বিষয়ক সংবাদ, কৃষির তথ্য, কৃষির প্রযুক্তি, কেঁচোতে ভাগ্য বদল কৃষকের, জৈবসার
কেঁচোতে ভাগ্য বদল কৃষকের
By:
এক ঘরে সব কিছু
On: 4:06 AM
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
0 comments:
Post a Comment