Sunday, July 9, 2017

Tagged Under: , , , , , ,

কলা চাষ

  • Share The Gag
  • কলা চাষ



    চাষাবাদের ক্ষেত্রে কৃষকরা আবহমানকাল থেকে অর্থকরী ফসল হিসেবে শুধু ধানকেই দেখে আসছেন। ধানের বহুমুখী ব্যবহার ও চাহিদার জন্যই এর প্রভাব কৃষক মহলে বেশি। এদিকে জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি এলাকার দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ মাটি ধান চাষের জন্য উপযোগীও বটে। সম্প্রতি কচুরলতির প্রতিও মানুষের আগ্রহ বাড়ছে দিন দিন। গত ১০/১২ বছর থেকে কচুরলতির পাশাপাশি কৃষকদের কলার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। প্রাচীন ধ্যান-ধারণা ক্রমেই পাল্টাচ্ছে আর এই পরিবর্তনের ফলস্বরূপ লাভজনক ফসল হিসেবে তারা কলাকে চিহ্নিত করেছেন। কারণ হিসেবে জানা গেছে, ধান, পাট ও আখসহ প্রচলিত অন্যান্য ফসলের তুলনাই কলাচাষে শ্রম ব্যয় হয় কম, বিক্রি করতেও ঝামেলা নেই (বাগান থেকেই বিক্রি হয়)। অন্যদিকে কলার বাজার দরে সহজে ধস নামে না।

    পুষ্টিকর ফল হিসেবেও কলার চাহিদা বেশি। সর্বোপরি একবার কলার চারা রোপণ করলে ২/৩ মৌসুম চলে যায়। কলার গাছ বড় হওয়ার কারণে গরু-ছাগলের হাত থেকে রক্ষার জন্য বেড়া (ফেন্সিং) দিতে হয় না। বন্যাসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্ত না হলে ১ একর জমি থেকে ধান পাওয়া সম্ভব (ইরি-আমন মিলিয়ে) ৮০/৯০ মণ। এর আনুমানিক মূল্য ৪৫/৫০ হাজার টাকা। এতে খরচ হবে (সার, লেবার, চাষ ও পরিষ্কারসহ) প্রায় ১৬ হাজার টাকা। পক্ষান্তরে এক একর জমির কলা বিক্রি হবে ১ লাখ ৮০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত। এতে সর্বোচ্চ খরচ হবে ৫০ হাজার টাকা। এছাড়া কলার মোছা একটি উত্কৃষ্টমানের তরকারি হিসেবে ব্যবহ্নত হয়।

    চাহিদার জন্য কোনো কোনো গ্রামে কলাকে প্রধান অর্থকরী ফসল হিসেবে দেখা হচ্ছে। কলার কল্যাণে এলাকার কৃষকদের অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে। অর্থনৈতিক সচ্ছলতা ফিরছে তাদের সংসারে। বাজারে কলার চাহিদা ও দাম সন্তোষজনক হওয়ায় কৃষকরা কলার দিকে ঝুঁকছেন।

    কলার পুষ্টিগুণ
    কাঁচা ও পাকা কলায় আমিষ, শর্করা, চর্বি, খণিজ লবণ, ক্যালসিয়াম, লৌহ ও ভিটামিনসি রয়েছে।



    ভেষজ গুণ
    পাকা কলা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং কলার থোড় বা মোচা ডায়াবেটিস, আমাশয়, আলসারনিরাময়ে উপকারি।



    উপযুক্ত মাটি
    প্রায় সব ধরনের জমি বা মাটিতে কলার চাষ করা যায়। তবে উর্বর দোআঁশ মাটি ও পানি জমে নাএমন উঁচু জমি কলা চাষের জন্য উত্তম।



    যেভাবে চাষ শুরু করতে হবে 
    জাত বাছাই : এ এলাকায় অমৃত সাগর, মেহের সাগর, সবরি, অনুপম, চাম্পা, কবরী, নেপালি, মোহনভোগ, মানিকসহ বিভিন্ন জাতের কলাচাষ হয়ে থাকে। তবে সবরি, মানিক, মেহের সাগর ও নেপালি কলার চাহিদা অত্যন্ত বেশি, চাষও হয় ভালো এবং খেতেও অনন্য।

    বারি কলা-১: পাকা কলা হিসেবে ব্যবহার করা হয়। পাকা কলা দেখতে উজ্জ্বল হলুদ রঙের ও খেতে মিষ্টি। প্রতি ফলের গড় ওজন ১২৫ গ্রাম। প্রতি হেক্টরে (২৪৭ শতক) গড় ফলন ৫০-৬০ টন।
    বারি কলা-২: কাঁচা কলা হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কলার আকার মাঝারি, রঙ গাঢ় সবুজ। প্রতি হেক্টরে (২৪৭ শতক) গড় ফলন ৩৫-৪০ টন।
    বারি কলা-৩: ফল মাঝারি আকারের। প্রতি ফলের গড় ওজন ১০০ গ্রাম। পাকা ফল হলুদ রঙের, সম্পূর্ণ বীজ ছাড়া। কলার শাঁস মষ্টি ও আঠালো। প্রতি হেক্টরে (২৪৭ শতক) গড় ফলন ৪৫-৫০ টন।
    বারি কলা-৪: এটি চাপা কলার একটি উচ্চ ফলনশীল জাত। ফল মাঝারি আকারের। প্রতি ফলের গড় ওজন ৯৫-১০০ গ্রাম। প্রতি হেক্টরে (২৪৭ শতক) গড় ফলন ৪০-৪৫ টন।
    অমৃতসাগর: কলা আকারে বেশ বড়, সামান্য বাঁকা ও লম্বাটে। শাঁস বীজশূন্য, বেশ মোলায়েম, মিষ্টি স্বাদের সুগন্ধযুক্ত ও উজ্জ্বল মাখন রং। প্রতি হেক্টরে (২৪৭ শতক) গড় ফলন ২৫-৩০ টন।
    সবরি: কলা বীজশূন্য, আকারে খাটো ও খোসা খুব পাতলা। পাকলে উজ্জ্বল রঙ হয়। কলার শাঁস নরম, ভালোভাবে পাকা কলার শাঁস সুগন্ধযুক্ত মিষ্টি স্বাদের। প্রতি হেক্টরে (২৪৭ শতক) গড় ফলন ১২-১৪ টন।
    মেহেরসাগর: পাকলে কলা হলুদ রঙ হয়। শাঁস সুস্বাদু ও মিষ্টি তবে বেশি নরম। প্রতি হেক্টরে (২৪৭ শতক) গড় ফলন ৩০-৩২ টন।
    চাঁপা ও চিনি চাঁপা: ফল আকারে ছোট (৩ থেকে ৫ ইঞ্চি লম্বা), প্রায় বীজশূন্য ও পাতলা খোসা বিশিষ্ট হলুদ রঙের। শাঁস আঠালো, লালচে সাদা রঙের, টকযুক্ত মিষ্টি স্বাদের এবং আকর্ষণীয় সুগন্ধ সম্পন্ন। প্রতি হেক্টরে (২৪৭ শতক) গড় ফলন ১৪-১৬ টন।

    জমি তৈরি ও সার প্রয়োগ : ৭/৮ বার চাষ দিয়ে জমি ভালোভাবে তৈরি করে নিতে হয়। অতঃপর জৈবসার (যেমন গোবর, কচুরিপানা ইত্যাদি) হেক্টরপ্রতি ১২ টন হিসেবে প্রয়োগ করতে হবে। অতঃপর ২–২ মিটার দূরত্বে গর্ত খনন করতে হবে। প্রতিটি গর্তে ৬ কেজি গোবর, ৫০০ গ্রাম খৈল, ১২৫ গ্রাম ইউরিয়া, ২৫০ গ্রাম টিএসপি, ১০০ গ্রাম এমপি, ১০০ গ্রাম জিপসাম, ১০ গ্রাম জিংক এবং ৫ গ্রাম বরিক এসিড প্রয়োগ করে মাটি দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। ১৫ দিন পর প্রতিটি গর্তে নির্ধারিত জাতের সতেজ ও সোর্ড শাকার (তরবারি চারা) চারা রোপণ করতে হবে। এভাবে একরপ্রতি সাধারণত ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১শ’ চারা রোপণ করা যায়। পরবর্তী সময়ে ২ কিস্তিতে গাছপ্রতি ১২৫ গ্রাম ইউরিয়া ও ১০০ গ্রাম এমপি ৩ মাস অন্তর অন্তর প্রয়োগ করতে হবে।

    রোপণের সময় : কলার চারা বছরে তিন মৌসুমে রোপণ করা যায়। প্রথম মৌসুম মধ্য জানুয়ারি থেকে মধ্য মার্চ। দ্বিতীয় মৌসুম মধ্য মার্চ থেকে মধ্য মে। তৃতীয় মৌসুম মধ্য সেপ্টেম্বর থেকে মধ্য নবেম্বর।

    অন্তর্বর্তীকালীন পরিচর্যা : শুকনো মৌসুমে ১৫-২০ দিন পর পর সেচের প্রয়োজন হয়। গাছ রোপণের প্রথম অবস্থায় ৫ মাস পর্যন্ত বাগান আগাছামুক্ত রাখা জরুরি। কলাবাগানে জলাবদ্ধতা যেন না হয়, সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে।

    সাথী ফসল : চারা রোপণের প্রথম ৪/৫ মাস বলতে গেলে জমি ফাঁকাই থাকে। যদি সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে চারা রোপণ করা হয়, তবে কলাবাগানের মধ্যে আন্তঃফসল হিসেবে মিষ্টি কুমড়া, শসা ও বিভিন্ন ধরনের সবজি উত্পাদন করা যায়।

    কলার রোগ ও প্রতিরোধ : সাধারণত কলাতে বিটল পোকা, পানামা রোগ, বানচিটপ ভাইরাস ও সিগাটোকা রোগ আক্রমণ করে থাকে। বিটল পোকায় আক্রান্ত হলে কলা সাধারণত কালো কালো দাগযুক্ত হয়। প্রতিরোধের জন্য ম্যালথিয়ন অথবা লিবাসিস ৫০ ইসিসহ সেভিন ৮৫ ডব্লিউপি প্রয়োগ করা যেতে পারে। পানামা রোগে সাধারণত কলাগাছের পাতা হলুদ বর্ণ ধারণ করে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে গাছ লম্বালম্বি ফেটে যায়। এ রোগের প্রতিরোধে গাছ উপড়ে ফেলা ছাড়া অন্য কোনো ব্যবস্থা নেই। বাঞ্চিটর ভাইরাসে আক্রান্ত হলে কলার পাতা আকারে ছোট ও অপ্রশস্ত হয়। এটি দমনের জন্য রগর বা সুমিথিয়ন পানিতে মিশিয়ে প্রয়োগ করা যেতে পারে। সিগাটোগায় আক্রান্ত হলে পাতায় ছোট ছোট হলুদ দাগ দেখা যায়। এক সময় এ দাগগুলো বড় ও বাদামি রং ধারণ করে। এ অবস্থা দেখা দিলে আক্রান্ত গাছের পাতা পুড়ে ফেলতে হবে এবং মিলিটিলট-২৫০ ইসি অথবা ব্যাভিস্টিন প্রয়োগ করা যেতে পারে।

    কলার সিগাটোকা রোগ দমন:



    এ রোগের আক্রমনে প্রাথমিকভাবে ৩য় বা ৪র্থ পাতায় ছোট ছোট হলুদ দাগ দেখা যায়। ধীরে ধীরে দাগগুলো বড় হয়ে বাদামি রঙ ধারণ করে।
    প্রতিকার: আক্রান্ত গাচের পাতা পুড়ে ফেলতে হয়। প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মি.লি টিল্ট ২৫০ ইসি অথবা ১ গ্রাম বাভিস্টিন মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর স্প্রে করা দরকার।



    কলার পাতা ও ফলের বিটল পোকা
    কলার পাতা ও ফলে বিটল পোকা করার কচি পাতায় হাটাহাটি করে এবং সবুজ অংশ নষ্ট করে। ফলে সেখানে অসংখ্য দাগের সৃষ্টি হয়। কলা বের হওয়ার সময় হলে পোকা মোচার মধ্যে ঢুকে কচি করার ওপর হাটাহাটি করে এবং রস চুষে খায়। কলার গায়ে বসন্ত রোগের মতো দাগ হয়।
    প্রতিকার: পোকা আক্রান্ত মাঠে বারবার কলা চাষ করা যাবে না। করার মোচা বের হওয়ার সময় ছিদ্র বিশিষ্ট পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করে এ পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। আক্রমণ বেশি হলে প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম সেভিন ৮৫ ডব্লিউ পি মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর ২ বার গাছের পাতার উপরে ছিটাতে হবে।



     

    টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে কলা চাষ অল্প সময়ে অধিক মুনাফা

    টিস্যু কালচার পদ্ধতির মাধ্যমে বারি কলা ৩ ও ৪ চাষ করে কৃষক অল্প সময় অধিক মুনাফা পেতে পারেন। টিস্যু কালচারের মাধ্যমে বারি কলা উৎপাদন বিষয়ে গত ৩ মে কাপ্তাইয়ে দিন ব্যাপী কৃষক প্রশিক্ষণ ও চাষী সমাবেশে এ তথ্য জানান রাজশাহী কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের পরিচালক (গবেষণা ও ব্যবস্থাপনামোঃ নুরুল ইসলাম ভূঁইয়া। তিনি বলেনসাধারণ পদ্ধতিতে কলা চাষ করে যে ফল পাওয়া যাবে তার চেয়ে অনেক বেশি এবং হৃষ্টপুষ্ট ও সতেজ ফল পাওয়া যাবে টিস্যু কালচার পদ্ধতির চাষ থেকে।

    রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলায় অবস্থিত পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র রাইখালীর উদ্যোগে আয়োজিত কৃষক প্রশিক্ষণ ও চাষী সমাবেশে রাঙ্গামাটি সদর উপজেলাকাউখালীরাজস্থলী এবং কাপ্তাই উপজেলার চাষীরা উপস্থিত ছিলেন।

    কৃষি গবেষণা কেন্দ্র রাইখালীর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হারুনর রশিদের সভাপতিত্বে প্রশিক্ষণ ও কৃষক সমাবেশে টিস্যু কালচার বিষয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাঙ্গামাটির উপ-পরিচালক নরেশ চন্দ্র বাড়ৈকৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট জয়দেবপুরের জীব প্রযুক্তি বিভাগের কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন মোল্লাউদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের উপ-সহকারী পরিচালক একেএম খোরশেদুজ্জামানপরিচালক মোঃ মশিউর রহমান এবং ওয়াগ্‌গা চা বাগানের ব্যবস্থাপক খোরশেদুল আলম কাদেরী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষিবিদ শ্যাম প্রসাদ চাকমাসমরেশ রায় ও মহিদুল ইসলাম।

    রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের কর্মকর্তা ডহারুনর রশিদ বলেনবারি কলা ৩ ও ৪ উৎপাদনে কৃষকদের উৎসাহিত ও উদ্বুদ্ধ করতে রাঙ্গামাটি জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত কৃষকদের টিস্যু কালচার কলা চাষের উপর দিন ব্যাপী এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। পরে কৃষকদের ওয়াগ্‌গাছড়ায় কৃষক বাসনত্মী রানীর টিস্যু কালচারে গড়ে তোলা বারিকলা ৩ ও ৪ এর বাগান পরিদর্শনে নিয়ে যাওয়া হয়। বাসনত্মী রানী বলেনরাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের সহযোগিতায় গত বছরের ১৩ জুন তিনি এই টিস্যু কালচার কলা বাগানে ৪শ গাছের চারা রোপন করেন। যথাযথ যত্ন নেওয়ায় বাগানের প্রতিটি কলাগাছ হৃষ্টপুষ্টভাবে বেড়ে উঠে। চলতি মে মাসের মধ্যে তাঁর প্রতিটি গাছে ফলন আসবে বলে তিনি আশা করেন।

    কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের পরিচালক (গবেষণা ও ব্যবস্থাপনানুরুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন কিভাবে টিস্যু কালচারের মাধ্যমে কলা চাষ করতে হবে তা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কৃষকদের অবহিত করা হয়েছে। কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের পরামর্শ অনুযায়ী চাষ করে কৃষক উল্লেখ্যযোগ্য সফলতা পাবেন বলেও তিনি জানান।

    কৃষক কলিন কুসুম চাকমা বলেনকলা বাগানে জাব পোকাবিটল পোকাউইপোকাথ্রিপসমিলি পোকামাছি পোকাউইভিল পোকাস্কেল পোকাপাতা খেকো পোকা এবং পিঁপড়ার আক্রমণ হতে পারে বলে প্রশিক্ষণে আমাদের জানানো হয়। বাগানে এসব পোকার আক্রমণ হলে কি ব্যবস্থা নিতে হবে তা চাষিদের ভালোভাবে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। টিস্যু কালচার কলা বাগান করার জন্য কি ধরনের জমি বাছাই করতে হবেজমিতে কতটুকু গর্ত করতে হবেকি পরিমাণ দূরত্বে চারা রোপন করতে হবেজমিতে কখন ও কি ধরনের সার প্রয়োগ করতে হবে এসব বিষয়েও ধারণা দেওয়া হয়। গাছে কলার ছড়া আসার পর কি পদ্ধতিতে ছড়া সংরক্ষণ করতে হবে এবং কিভাবে গাছ থেকে ছড়া নামাতে এসব বিষয়েও আলোচনা করা হয়। এখন টিস্যু কালচারের মাধ্যমে বারি কলা ৩ ও ৪ উৎপাদন করতে আর কোন সমস্যা হবেনা বলেও কৃষকরা জানান।

    কলা চাষ করে বিঘা প্রতি ৩ লক্ষ টাকা লাভ করছেন



    প্রসেনজিৎ বিশ্বাস বাড়ি উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার গাইঘাটা ব্লকের সুটিয়া গ্রামে। আর্থিক কারনে পড়াশোনা বেশি দুর এগিায় নি। বাবার হাত ধরে চাষের কাজে প্রবেশ। একটা সময় অন্যের জমিতে কাজ করে সংসার চলত। এখন চাষ কাজের ওপর ভর করে বাড়ি দু-চাকার গাড়ি সবই করেছেন। গত ১৫ বছর ধরে চাষ কাজের সঙ্গে যুক্ত। সবজি ধান পাটের পাশাপাশি ফুলের চাষ করেন। বর্তমানে তার ৮ বিঘা জমি আছে। আধুনিক প্রযুক্তি মেনে চাষ করে যথেষ্ঠ লাভবান প্রসেনজিৎ বাবু।এবছর এক বিঘা জমিতে দুটো পাটে সিঙ্গাপুরী জাতের কলা লাগিয়েছেন। বাজার দর ভালো থাকায় হাসি ফুটুছে কৃষকের মুখে। চাষ পদ্ধতি জানাতে গিয়ে কৃষক যেটা জানালেন গত বছর আষাঢ় মাসে কলা বসিয়েছিলাম বিঘা প্রতি ৪/৪ হাত ৪০০ গাছ। চারা বসানোর সময় জৈব কীটনাশক দিয়ে শোধন কওে বসানো হয়েছিল। উচু জমি এবং জলনিকাশি ব্যবস্থা ভালো রেখে চাষ করেছিলাম। জমিতে রাসয়ানিক সারের পাশাপাশি প্রচুর পরিমানে জৈব সার দেওয়া হয়েছিল। কৃষি দপ্তরের পরামর্শ মত কীটনাশক ও সার প্রয়োগ করেছি। একবার কলা লাগালে ২ বছরে তিন বার ফলন পাওয়া যায়। প্রথম ফলন পাওয়া যায় চারা বসানোর ১২ মাসের মাথায়, দ্বিতীয় ফলন ১৮ মাসের মাথায়, তৃতীয় ফলন ২৪ মাসের মাথায়। বিঘা প্রতি খরচ দাড়ায় প্রথম ফলনে ২৫ হাজার টাকা, দ্বিতীয় ফলনে ৩০ হাজার টাকা, তৃতীয় ফলনে ২৫ হাজার টাকা। প্রতিটি কলার ঝারে ৩ টি করে গাছ রেখে বাকিগুলি কেটে ফেলা হয়। বাগান সব সময় পরিস্কার রাখা উচিত। এবছর প্রথম ফলনের কলা বিক্রি করেছি ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা কাঁদি। বিঘা প্রতি ৪০০ গাছে প্রায় ১ লক্ষ টাকা। দ্বিতীয় ফলনে প্রায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা আর তৃতীয় ফলনে ৮০ হাজার টাকা বিক্রি হবে। কলা চাষে সুবিধা হল বিক্রি করে এককালিন টাকা পাওয়া যায় এবং পাইকাররা জমি থেকে কলা কিনে নিয়ে যান।

    0 comments:

    Post a Comment