Sunday, July 23, 2017

Tagged Under: , , , ,

মরিচ চাষে চরবাসীর ভাগ্য বদল

  • Share The Gag
  • মরিচ আবাদ করে ভাগ্য বদলে গেছে যমুনা চরের অভাবী মানুষগুলোর। ‘মরিচের ব্যাংক’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে যমুনার চর। এই সময় যমুনার বুকে জেগে উঠে বিশাল চর। এসব চরে ধানের পাশাপাশি আবাদ হচ্ছে মরিচ। বর্তমানে যমুনার চরে ধুম পড়ে মরিচ আবাদের। চরের অনেক কৃষকের নিজস্ব কোন জমি নেই। জেগে উঠা চরের ফাঁকা জমি কাজে লাগিয়ে মরিচ চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছে চরের অভাবী মানুষেরা।

    এখানে ব্যাপক মরিচ উৎপাদিত হওয়ায় সপ্তাহে তিন দিন বিশাল মরিচের হাট বসছে কাজিপুরের সোনামুখী, চালিতাডাঙ্গা, মাইজবাড়ী, কাজীপুর সদর, মাইজবাড়ী, শুভগাছা, খাসরাজবাড়ী, নাটুয়ারপাড়া, তেকানী, নিশ্চিন্তপুর, চরগিরিশ ও মনসুরনগর ইউনিয়নের চরাঞ্চলে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যাপারীরা আসেন এখানে মরিচ কিনতে। প্রতি হাটে লাখ লাখ টাকার মরিচ বেচা-কেনা হয় যমুনার চরে।

    সরেজমিনে দেখা গেছে, কৃষকরা এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ক্ষেত থেকে মরিচ তোলা ও মরিচ ক্ষেত পরিচর্যার কাজে। অনুকূল আবহাওয়া থাকায় এবার মরিচের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষকরা। ইতোমধ্যে জেলার বাজারগুলোতে উঠতে শুরু করেছে নতুন মরিচ। শ্রম মজুরি বেড়ে যাওয়ায় এবার মরিচ চাষে উৎপাদন খরচও বেড়েছে। তারপরও বাজারে মরিচের ভালো দাম পাওয়ায় খুশি এ অঞ্চলের কৃষকরা। ভালো দাম পাওয়ায় মরিচ চাষিরা এবার বেশ লাভবান হবেন বলে আশা করছেন কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষকরা।

    ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজার দর গত মৌসুমের চেয়ে এই মৌসুমে বেড়ে গেছে। এবার যমুনা নদীর সিরাজগঞ্জ জেলায় প্রায় ১শ কোটি টাকার কাচা ও শুকনা মরিচ কেনা-বেচা হবে। যা দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে।

    সিরাজগঞ্জের কাজীপুর, বেলকুচি ও চৌহালী উপজেলার যমুনা নদীর চর ঘুরে দেখা গেছে- মরিচ তোলা, পরিচর্যা আর শুকানোর কাজে ব্যস্ত কৃষক-কৃষানী।

    কাজীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মামুনুর রহমান জানান, চরাঞ্চলে কৃষকরা এবার মরিচ চাষে ভাগ্যের পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখছেন। চলতি মৌসুমে ১৪শ ১০ হেক্টর জমিতে ৯ হাজার ৮১৫ জন কৃষক মরিচের আবাদ করেছেন। মোট ২ হাজার ৩শ ৯৭ মেট্রিক টন মরিচ উৎপাদন হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি আরও জানান, ফলন ভালো হওয়ায় প্রতি হেক্টরে ১.৬ মে. টন মরিচ উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এতে করে কৃষকরা বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন।

    কাজীপুর উপজেলার দুর্গম নাটুয়াপাড়া চর থেকে মরিচ নিয়ে হাটে আসা লোকমান হোসেন জানান, এবার চরের ৮ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছেন। প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে ১২-১৪ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা থেকে টোপা মরিচ তুলেছেন ৩০-৩২ মণ।

    ব্যবসায়ী জামাল হোসেন বলেন, এবার মরিচের আবাদ ভালো হয়েছে। ঝড় বৃষ্টি না হওয়ায় মরিচের ক্ষেত নষ্ট হয়নি। মরিচ বিক্রি করে তিনি এবার জমি কিনবেন।

    কাজীপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক বকুল সরকার জানান, কাজীপুর চরাঞ্চলের উৎপাদিত লাল মরিচই বগুড়ার লাল মরিচ নামে দেশের নামিদামি কোম্পানিগুলো সংগ্রহ করে তা বাজারজাত করে আসছে।

    কাওয়াখোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন ঠান্ডু বলেন, চরের অনেকরই কৃষি জমি নেই। চরের ফাঁকা জমি কাজে লাগিয়ে মরিচ চাষ করে তারা স্বাবলম্বী হচ্ছেন।

    সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা বলেন, যমুনা চরের মরিচ দেশের চাহিদা মেটাচ্ছে। আগামীতে এর পরিধি আরো বাড়বে। যা দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে।

    0 comments:

    Post a Comment