Saturday, April 29, 2017

লিচুর ফল ছিদ্রকারী পোকা দমন

  • Share The Gag
  • লিচুর ফল ছিদ্রকারী পোকা

    লক্ষণ:

    এ পোকা ফলের বোঁটার কাছে ছিদ্র করে ভিতরে ঢোকে এবং বীজকে আক্রমণ করে । পরে ছিদ্রের মুখে বাদামী রংয়ের এক প্রকার করাতের গুড়ার মত মিহি গুড়া উৎপন্ন করে । এতে ফল নষ্ট এবং বাজার মূল্যে কমে যায় ।

    প্রতিকার:

    • লিচু বাগান নিয়মিত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা ।


    • আক্রান্ত ফল সংগ্রহ করে মাটিতে পুঁতে ফেলা ।


    • লিচু গাছ তলায় শুকানো খড়ে আগুন দিয়ে তাতে ধুপ দিয়ে ধোঁয়া দিতে হবে । এতে এ পোকা মথ বা কীড়া বিতড়িত হবে । ফলে লিচুর মধ্যে ডিম পারবে না ।


    • বোম্বাই জাতে এ পোকার আক্রমণ বেশি হয় তাই আক্রমণ প্রবণ এলাকায় চায়না ৩ জাত রোপন করা ।


    • আক্রমণ বেশি হলে ২ মিলি লেবাসিড বা সুমিথিয়ন বা ডায়াজিনন ৬০ইসি সবিক্রন বা কট ১০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা ।


    আমড়ার আঠা ঝড়া রোগ

  • Share The Gag
  • আমড়ার আঠা ঝড়া রোগ

    আমের কান্ড বা মোটা ডালের কিছু যায়গা থেকে প্রথমে হালকা বাদামী বা গাঢ় বাদামী আঠা বা রস বের হতে দেখা যায় । বেশি আক্রান্ত হলে পুরো ডালটি এমনকি পুরো গাছটি মারা যায়।
    এর প্রতিকার হল:

    ১. আক্রান্ত গাছে সুষম মাত্রায় জৈব সার ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করা এবং নিয়মিত সেচ প্রদান করা।
    ২. আঠা ঝড়া দেখামাত্র কিছুটা সুস্থ অংশসহ বাকল / ছাল তুলে ফেলা এবং কর্তিত অংশে বোর্দো মিশ্রণ বা কপার অক্সিক্লোরাইট জাতীয় ছত্রাক নাশক যেমন- কুপ্রাভিট ৭ গ্রাম / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।
    ৩. নতুন পাতা বের হলে ব্যাভিস্টিন ১ গ্রাম / লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে ৭-১০ দিন পর পর ৩ বার স্প্রে করা ।

    পরবর্তীতে যা যা করবেন না :

    ১. বাগান অপরিচ্ছন্ন রাখবেন না:

    পরবর্তীতে যা যা করবেন:

    ১.ফল সংগ্রহ শেষ হলে গাছের মরা ডালপালা, ফলের বোটা, রোগ বা পোকা আক্রান্ত ডাল পালা ও অতিঘন ডাল পালা ছাটাই করে পরিস্কার করে দিন
    ২. পরিস্কার করার পর একটি ছত্রাক নাশক ও একটি কীটনাশক দ্বারা পুরো গাছ ভালভাবে স্প্রে করুন
    ৩. নিয়মিত বাগান পরিদর্শন করুন।

    Friday, April 28, 2017

    সুগারবিটের চাষাবাদ পদ্ধতি জেনে নিন

  • Share The Gag
  • সুগারবিটের জাত পরিচিতি





    সুগারবিট (Beta valgaris L.) একটি শীত প্রধান দেশের ফসল। বর্তমানে উদ্ভাবিত জাত দ্বারা : Tropical এবং Sub-tropical অঞ্চলেও সুগারবিট চাষ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএসআরআই) এর কৃষিতত্ব ও ফার্মিং সিস্টেম বিভাগ, সিনজেন্টা বাংলাদেশ লি. এর মাধ্যমে সুগারবিটের সীমিত সংখ্যক জাত নিয়ে গবেষণা পরিচালনা করছে। একটি পাইলট প্রকল্পের আওতায় বিএসআরআই কর্তৃক ২০১১-২০১২ শস্য মৌসুমে বাংলাদেশের ১৬টি চিনিকল এলাকায় ট্রপিক্যাল সুগারবিটের উপর বিভিন্ন গবেষণা পরিচালিত হয়েছে যার অর্জিত ফলাফলের সারসংক্ষেপ নিম্নে দেয়া হলো :

















































    জাতরোপণ মৌসুম (নভেম্বর-এপ্রিল)রোপণ মৌসুম (ডিসেম্বর-মে)
    ফলন ( টন/একর)পোল (%)ফলন (টন/একর)পোল (%)
    শুভ্রা৫৪১৩.১৯৩২১২.২০
    কাভেরী৫১১৪.২১৪০১২.২০
    ইবি-০৬১৮৪৫১৪.২৮৩০১১.৯৬
    ইবি-০৬১৬৩৬১৪.০৩২৯১২.৩৭
    ইবি-০৮০৯৪০১৩.৯৯৩৪১১.৫৬

    তথ্যসূত্রঃ বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএসআরআই), ঈশ্বরদী, পাবনা

    সুগারবিটের বপন/রোপণ প্রযুক্তি


    বীজ বপনের সময়ঃসুগারবিট শীতকালীন ফসল। বাংলাদেশে এর বীজ বপনের উত্তম সময় ১৫ অক্টোবর থেকে ১৫ নভেম্বর (কার্তিক মাস)।





    বীজ হারঃএক বিঘা জমির জন্য ৪৭০-৫৩০ গ্রাম বীজের প্রয়োজন অথবা ১৩৩৩০ থেকে ১৬০০০ গাছ থাকবে।






    বীজ বপন পদ্ধতিঃ প্রায় ২০ ইঞ্চি দূরে দূরে তৈরীকৃত রিজ/আইলের উপর ২০ সেমি. দূরে দূরে বীজ ২-৩ সেমি. নীচে বপন করতে হবে। কাঙ্খিত গাছের সংখ্যা পাওয়ার জন্য পাশাপাশি দুটি গর্ত করে প্রতিটি গর্তে ১টি করে বীজ বপন করতে হবে এবং পরবর্তী ২০-২৫ দিন পর প্রতি ২০ সেমি. দূরে একটি করে গাছ রেখে বাকী গাছ তুলে ফেলতে হবে।

    সুগারবিট চাষে সার ব্যবস্থাপনা






    সুগারবিট উৎপাদন সফলভাবে করার জন্য নিম্নরুপে সার প্রয়োগ করতে হবে-





































    সারের নামসারের পরিমাণ শতকের জন্যমন্তব্য
    পচা গোবর৬০.৬ কেজিগ্রাম বা কেজি যেকোন একটি দেখুন। এলাকা ও মৃত্তিকাভেদে সারের পরিমাণ কম-বেশী হতে পারে।
    ইউরিয়া১.০৫ কেজি
    টিএসপি০.৪৮ কেজি
    পটাশ০.৯১ কেজি
    জিপসাম০.৪০ কেজি
    দস্তা০.০৪ কেজি
    বোরণ০.০৮ কেজি

    – টেবিলে প্রদত্ত সারের মাত্রা এলাকা ও মৃত্তিকার ভিন্নতার কারণে পরিবর্তন হতে পারে।অধিকতর তথ্য জানতে এখানে ক্লিক করুন



    সার প্রয়োগ পদ্ধতিঃজমি চাষ করার পূর্বে সম্পূর্ণ জৈব সার (পচা গোবর) সমানভাবে জমিতে ছিটিয়ে দিতে হবে। রিজ করার পূর্বে সারিতে সম্পূর্ণ টিএসপি, জিপসাম, দস্তা ও বোরণ এবং এক তৃতীয়াংশ ইউরিয়া ও পটাশ সার প্রয়োগ করতে হবে। পরবর্তীতে বীজ বপনের ৩০ ও ৬০ দিন পর বাকি ইউরিয়া ও পটাশ সার সারিতে উপরি প্রয়োগ করতে হবে।

    সুগারবিট চাষে অন্যান্য প্রযুক্তি





    সেচ প্রয়োগঃ সুগারবিট উৎপাদনের জন্য মাটির আদ্রতা অবশ্যই ৬৫% এর উপরে রাখতে হবে।সুগারবিটের সক্রিয় মূল প্রায় ২০০-২৫০ সেমি পর্যন্ত মাটির গভীরে প্রবেশ করতে পারে তাই মাটির ৬০ সেমি গভীর থেকে সে প্রায় ৭০% পানি গ্রহণ করে। প্রতি ১০০ কেজি মূল উৎপাদনের জন্য সুগারবিট মাটি থেকে প্রায় ৪০-৪৫ কেজি পানি গ্রহণ করে। সুগারবিটের জীবনকাল মাটির আদ্রতাভেদে ৫-৬ টি সেচ প্রয়োজন হয়। অঙ্কুরোদগম ভালভাবে হওয়ার জন্য বীজ বপনের পরপরই এমনভাবে একটি সেচ দিতে হবে যাতে রিজ/আইল সম্পূর্ণভাবে ভিজে যায়। পরবর্তীতে ১৫/২০ দিন পরপর সেচ দিতে হবে। বিট উত্তোলের ১৫-২০ দিন পূর্বে সেচ প্রয়োগ বন্ধ করতে হবে। তবে উত্তোলনের সময় মাটি খুব শুকনা ও শক্ত থাকলে সহজভাবে বিট উত্তোলনের জন্য হালকা সেচ প্রয়োগ করা যেতে পারে।



    গ্যাপ ফিলিংঃ বিটের কাঙ্খিত ফলন পাওয়ার জন্য গ্যাপ ফিলিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বীজ বপনের ১০ দিনের মধ্যে বীজ থেকে চারা না গজালে বীজ দ্বারা এবং ২০ দিনের মধ্যে বীজ থেকে চারা না হলে/রোগাক্রান্ত হলে আলাদাভাবে পলিব্যাগে তৈরীকৃত চারা দ্বারা গ্যাপ ফিলিং করতে হবে। উল্লেখ্য যে, সারি থেকে উত্তোলিত চারা দ্বারাও গ্যাপ ফিলিং করা যাবে।আগাছা দমনঃসুগারবিটের ভাল ফলন পাওয়ার জন্য সময়মত আগাছাদমনের প্রয়োজনীয়তা অত্যাধিক। বীজ বপনের পর থেকে ৯০-১০০ দিন পর্যন্ত জমি অবশ্যই আগাছামুক্ত রাখতে হবে। তিন পর্যায়ে আগাছা দমন করতে  হবে; প্রথম ২৫-৩০ দিন পর, দ্বিতীয় ৪৫-৫০ দিন পর এবং তৃতীয় ৭০-৮০ দিন পর। তবে জমিতে আগাছার পরিমাণ বেশি হলে প্রয়োজনে আরও আগাছা দমন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।গোড়ায় মাটি




    দেয়াঃ সুগারবিট একটি মূলজাতীয় ফসল, তাই গোড়ায় মাটি দেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। দ্বিতীয় বার সার উপরি প্রয়োগ করার পর গাছের গোড়ায় মাটি দিতে হবে। মাটি এমনভাবে দিতে হবে যাতে গাছের মাথায় (Crown) মাটি না পড়ে।

    সুগারবিট সংগ্রহ ও পরবর্তী ব্যবস্থাপনা


    বিট উত্তোলন ও ফলনঃ




    সুগারবিট ফসলটি ৫ থেকে ৫.৫ মাসে উত্তোলনের উপযুক্ত হয়।এজন্য বিটের বয়স ৪ মাস হওয়ার পর প্রতি ১০ দিন পর পর ব্রিক্সের পরিমাণ নির্ণয় করতে হবে। গাছের পাতাগুলো হলুদ হতে শুরু করলে এবং মূলে ব্রিক্সের পরিমাণ ১৮-২২% হলে বিট সংগ্রহ করতে হবে। মাঠ থেকে সাধারণতঃ হাত দিয়ে বিট উত্তোলন করা হয়। সুগারবিটের বিঘা প্রতি ফলন ১০.৬৭-১৩.৩৩ টন হয়।


    প্রক্রিয়াকরণঃ




    উৎপাদিত বিট ভালভাবে পরিস্কার করে পাতলা স্লাইস করতে হবে। স্লাইসকৃত বিট ডিফিউজারে ৭০ ডিগ্রি সে. তাপমাত্রায় স্লাইসের দ্বিগুন পরিমাণ পানিতে ১ ঘন্টা সিদ্ধ করতে হবে। ডিফিউজার থেকে রস সংগ্রহ করে জ্বাল দিয়ে রস ঘনীভূত করতে হবে। ঘনীভূত রসে প্রয়োজনমত পাউডার চিনি মিশিয়ে দানাদার গুড় উৎপাদন করা যায়। পরবর্তীতে উৎপাদিত গুড় রোদে শুকিয়ে প্যাকেটজাত করতে হবে।


     

    পানি কচু চাষ পদ্ধতি

  • Share The Gag
  • পানি কচুর জাত পরিচিতি

























































    জাতের নামক্লিক করুনজীবনকাল ও বপন সময়বিঘা প্রতি ফলন (মণে)
    বারি পানি কচু-১ (লতিরাজ)bari 1১৮০-২৭০ চৈত্র-ভাদ্র

    (লাগানোর ২ মাস পর থেকে ৭ মাস পর্যন্ত লতি হয়ে থাকে)
    কান্ডঃ ৫৫-৭০,

    লতিঃ ৯০-১০৫
    এ জাতে কান্ড অপেক্ষা লতির প্রাধান্য বেশি। গাছ মাঝারী, পাতা সবুজ, পাতা ও বোঁটার সংযোগস্থলের উপরিভাগ লাল রং বিশিষ্ট যা জাতটির সনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য। লতি লম্বায় ৩ ফুট থেকে ৩ ফুট ৪ ইঞ্চি, সামান্য চ্যাপ্টা, হাল্কা পিংক রং বিশিষ্ট। লতি সমানভাবে সিদ্ধ হয়, গলা চুলকানীমুক্ত (ক্যালসিয়াম অক্সালেট কম)। দেশের সব অঞ্চলে চাষ করা যায়।
    বারি পানি কচু-২bari 2 কান্ডঃ ৬৫-৮০

    লতিঃ ৯০-১০৫
    এ জাতে কান্ড অপেক্ষা লতির প্রাধান্য বেশি। এ জাতটি প্রচুর উৎকৃষ্ট মানের লতি উৎপাদন করে যার লতি লম্বায় সোয়া ৩ ফুট, লতি গোলাকার, অপেক্ষাকৃত মোটা ও গাঢ় সবুজ বর্ণের হয়। লতি সমানভাবে সিদ্ধ হয়, গলা চুলকানীমুক্ত (ক্যালসিয়াম অক্সালেট কম)। দেশের সব অঞ্চলে চাষ করা যায়।
    বারি পানি কচু-৩bari 3কান্ডঃ ৯০-১০৫

    লতিঃ ৩৫-৪২
    এ জাতে কান্ড হলো প্রধান ভক্ষণযোগ্য অংশ। কান্ড গোলাকার, মোটা ও হালকা সবুজ বর্ণের হয়। কান্ডের দৈর্ঘ্য সোয়া ৩ ফুট, সমানভাবে সিদ্ধ হয়, গলা চুলকানীমুক্ত (ক্যালসিয়াম অক্সালেট কম)। দেশের সব অঞ্চলে চাষ করা যায়।
    বারি পানি কচু-৪bari 4কান্ডঃ ২৫-১৬০

    লতিঃ ২০-৩০
    এ জাতের গাছ খাড়া, কান্ড থামাকার এব সবুজ বর্ণের। পাতা সবুজ ও peltate আকৃতির। কান্ড মোটা ও গোলাপী বর্ণের হয়। পত্রফলকের মধ্য ও অন্যান্য শিরা নিম্নপৃষ্টে গাঢ় গোলাপী রঙের এবং উপরের পৃ্ষ্ঠে গোলাপী রঙের। বোঁটা এবং পত্র ফলকের সংযোগস্থল গোলাপী রঙের। রাইজোম গোলাপী রঙের এবং ফ্লেস হালকা গোলাপী যা অন্য জাত থেকে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। এটি মূলত রাইজোম উৎপাদিত তবে অল্প পরিসরে লতিও উৎপন্ন করে। কান্ড সমানভাবে সিদ্ধ হয়, গলা চুলকানীমুক্ত (ক্যালসিয়াম অক্সালেট কম)। দেশের সব অঞ্চলে চাষ করা যায়।
    বারি পানি কচু-৫bari 5কান্ডঃ ২৫-১৫০

    লতিঃ ২০-৩০
    এ জাতের গাছ খাড়া, কান্ড থামাকার এব সবুজ বর্ণের। পাতা সবুজ ও peltate আকৃতির। কান্ড মোটা ও সবুজ বর্ণের হয়। পত্রফলকের মধ্য ও অন্যান্য শিরা সবুজ রঙের এবং উপরের পৃ্ষ্ঠে গোলাপী রঙের। বোঁটা এবং পত্র ফলকের সংযোগস্থল সবুজ রঙের। রাইজোম হালকা সবুজ রঙের এবং ফ্লেস সাদাটে যা অন্য জাত থেকে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। এটি মূলত রাইজোম উৎপাদিত তবে অল্প পরিসরে লতিও উৎপন্ন করে। কান্ড সমানভাবে সিদ্ধ হয়, গলা চুলকানীমুক্ত (ক্যালসিয়াম অক্সালেট কম)। দেশের সব অঞ্চলে চাষ করা যায়।


    উৎসঃ বারি কৃষি প্রযুক্তি হাত বই (৬ষ্ঠ সংস্করণ), বারি, গাজীপুর

    পানি কচুর বপন/রোপণ প্রযুক্তি





    রোপনের সময়ঃ

    আগাম ফসলের জন্য কার্তিক (মধ্য  অক্টোবর থেকে মধ্য নভেম্বর), নাবী ফসলের জন্য মধ্য ফাল্গুন থেকে মধ্য বৈশাখ (মার্চ-এপ্রিল)। তবে বানিজ্যিকভাবে চাষ করার জন্য অগ্রহায়ন-পৌষ (ডিসেম্বর থেকে মধ্য জানুয়ারী) মাসে চারা লাগানো হয়।

    বীজ হারঃ বিঘা প্রতি ৫০০০ টি চারার প্রয়োজন হয়।

    স্পেসিং/দূরত্বঃ সারি – সারির দূরত্ব হবে = ২ ফুট, গাছ – গাছের দূরত্ব হবে= ১.৫ ফুট।

    উৎসঃ বারি কৃষি প্রযুক্তি হাত বই (৬ষ্ঠ সংস্করণ), বারি, গাজীপুর

    পানি কচু চাষে সার ব্যবস্থাপনা





    পানি কচুর ভাল ফলন পাওয়ার জন্য প্রতি শতাংশ (ডেসিমাল) মাঝারি উর্বর জমির জন্য নিম্নোক্ত হারে সার প্রয়োগ করতে হবেঃ

    সমুদয় গোবর, টিএসপি, জিপসাম, জিংক সালফেট (দস্তা), বোরণ ও অর্ধেক পটাশ সার জমি তৈরির আগে শেষ চাষের সময় মাটিতে প্রয়োগ করতে হবে। চারা রোপণের ১.৫-২ মাস পর অবশিষ্ট পটাশ ও ইউরিয়া সারের ছয় ভাগের এক ভাগ ছিটিয়ে দিতে হবে। বাকি পাঁচ ভাগ ইউরিয়া সার সমান কিস্তিতে ১৫ দিন পর পর জমিতে সারির পার্শ্বে প্রয়োগ করতে হবে।​





































    সারের নামসারের পরিমাণ

    শতকের জন্য


    মন্তব্য
    পচা গোবর/কম্পোস্ট৪০.০০-৬০.০০ কেজিএলাকা বা মৃত্তিকাভেদে সারের পরিমাণে কম-বেশী হতে পারে। অধিকতর তথ্য জানতে এখানে ক্লিক করুন
    ইউরিয়া১.২০-১.৪০ কেজি
    টিএসপি০.৬১-০.৮১ কেজি
    এমওপি/পটাশ১.২০-১.৪০ কেজি
    জিপসাম০.৪০-০.৫৩ কেজি
    দস্তা০.০৪-০.০৬ কেজি
    বোরণ০.০৪-০.০৫ কেজি


    প্রয়োগ পদ্ধতিঃ 

    সমুদয় গোবর, টিএসপি, জিপসাম, জিংক সালফেট (দস্তা), বোরণ ও অর্ধেক পটাশ সার জমি তৈরির আগে শেষ চাষের সময় মাটিতে প্রয়োগ করতে হবে। চারা রোপণের ১.৫-২ মাস পর অবশিষ্ট পটাশ ও ইউরিয়া সারের ছয় ভাগের এক ভাগ ছিটিয়ে দিতে হবে। বাকি পাঁচ ভাগ ইউরিয়া সার সমান কিস্তিতে ১৫ দিন পর পর জমিতে সারির পার্শ্বে প্রয়োগ করতে হবে

    উৎসঃ বারি কৃষি প্রযুক্তি হাত বই (৬ষ্ঠ সংস্করণ), বারি, গাজীপুর

     


    Wednesday, April 26, 2017

    ডেইরী খামারীরা তৈরি করুন বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট

  • Share The Gag
  • বায়ো গ্যাস প্রকল্প প্রস্তুত প্রনালী

    বায়োগ্যাস প্রকল্প

    যুগ-যুগ ধরে বাংলাদেশের গ্রামঞ্চলে রান্নাবান্নার কাজে কাঠ, খড়-কুটা, নাড়া, শুকনা গোবর এগুলোই জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। বর্তমানে প্রতিবছর দেশে ৩ কোটি ৯০ লাখ মেট্রিক টন এ জাতীয় জ্বালানির প্রয়োজন। জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহারের ফলে গাছপালা উজাড় হয়ে যাচ্ছে, যার ফলে আমরা শুধু বনজ সম্পদই হারাচ্ছি না, আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশকে ঠেলে দিচ্ছি এক ভয়াবহ অবস্থার দিকে। অন্যদিকে গোবর, নাড়া এবং অন্যান্য পচনশীল পদার্থগুলো পুড়িয়ে ফেলার ফলে আবাদি জমি জৈব সার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে জ্বালানি সঙ্কট তীব্রতর হচ্ছে। এই জ্বালানি সঙ্কট মোকাবেলায় বিকল্প জ্বালানি হিসেবে বায়োগ্যাসই একমাত্র এই সমস্যার সমাধান দিতে পারে এবং নিশ্চিত করতে পারে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ উন্নতমানের জৈব সার, পরিচ্ছন্ন জ্বালানি ও উন্নত জীবনযাত্রা।

    বায়োগ্যাস কী?

    গোবর ও অন্যান্য পচনশীল পর্দাথ বাতাসের অনুপস্থিতিতে পচানোর ফলে যে বড়বিহীন জ্বালানি গ্যাস তৈরী হয় তাই হচ্ছে বায়োগ্যাস। এতে ৬০/৭০ ভাগ জ্বালানি গ্যাস তৈরী হয়ে অবশিষ্ট অংশ উন্নতমানের জৈবসার হিসাবে ব্যবহৃত হতে পারে। জ্বলানি গবেষকরা, বলছেন, মানব বিষ্ঠা, মোরগ-মুরগীর বিষ্ঠা, জৈব আবর্জনা এবং গোবর থেকে বায়োগ্যাস উৎপাদন সম্ভব। পৃথিবীর অনেক দেশেই এ জাতীয় পর্দাথ থেকে বায়োগ্যাস উৎপাদন করে কলকারখানা এবং গৃহস্থালী কাজে ব্যবহার হচ্ছে। বায়োগ্যাস ব্যবহার এবং উৎপাদনে গণচীন সবচেয়ে এগিয়ে আছ। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও বায়োগ্যাসের প্রচলন রয়েছে। গৃহস্থালী রান্নাবান্না এবং ম্যান্ডেলবাতি জ্বালানো ছাড়াও বায়োগ্যাস দিয়ে জেনারেটরের সাহায্যে বিদু্যৎ উৎপাদন করে বাতি, ফ্যান, ফ্রিজ, টিভিসহ অন্যান্য বৈদুত্যিক সরঞ্জামাদি চালানো সম্ভব। গবেষকরা বলছেন, ৭-৮ সদস্য বিশিষ্ট পরিবারের জন্য ৫-৬ টি মাঝারি আকারের গরুর দৈনন্দিন গোবর থেকে ১০৫ ঘনফুট গ্রাস উৎপাদন সম্ভব যা দিয়ে তিন বেলার রান্না-বান্না সহ একটি ম্যান্টেল বাতি জ্বালানো যাবে।

    জ্বালানি সংকট সমাধানে এই মাধ্যমটিতে এত সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও এর প্রসার ঘটেনি এ দেশের এতটুকুও। বাংলাদশে বিজ্ঞান ও গবেষণা পরিষদের জ্বালানি গবেষণা ও গোড়ার ইনস্টিটিউট এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে অনেক বছর ধরে।

    কিভাবে বায়োগ্যাম প্লান্ট তৈরী করবো, এর কারিগরী তথ্য কোথায় পাব, এর নির্মাণ ব্যয় কত হবে ইত্যাদি।

    ৭/৮ সদস্যবিশিষ্ট পরিবারের জন্য ১০৫ (৩ ঘনমিটার) ঘনফুট গ্যাস উৎপাদনক্ষম স্থিরডোম বায়েঅগ্যাস প্লান্ট নির্মাণ পদ্ধতি

    ডাইজেস্টার তৈরি পদ্বতি

    ২৫০ সে. মি. ব্যাস এবং ২২০ সে. মি. গভীর একটি গোলাকার কুয়া খননকরতে হবে। কুয়ার তলদেশ চাড়ির তলার আকৃতিতে খনন হবে যাতে হেব যাতে বাড়ির তলার মধ্যবিন্দু থেকে আর্চের উচ্চতা ৩০ সে. মি. (১ ফুট) হয় এর পর তলদেশে ভালো করে দুরমুজ করে নিতে হবে।

    তলদেশে ৭.৫ সে. মি. পুরু ইট বিছিয়ে দিতে হবে। এই সোলিং-এর ওপর ১:৩:৬ (সিমেন্টঃ বালুঃ খোয়া) অনুপাতে ৫ সে. মি. পরু ঢালাই দিতে হবে। ঢালাই এর ওপর ২১০ সে. মি. ব্যাস (ভিতরে রেখে গোলাকৃতি ১২.৫ সে. মি. ইটের দেয়ালের গাঁথুনি করতে হবে। দেয়ালের উচ্চতা যখন ২৫ সে. মি. হবে

    মনে করি,

    প্রস্তাবিত ডাইজেস্টারের কেন্দ্র হতে ইনলেট চেম্বারের কেন্দ্র পর্যন্ত দূরত্ব- x

    এবং হাইড্রোলিক চেম্বারের কেন্দ্র পর্যন্ত দূরত্ব- y

    ডাইজেস্টারে ব্যাস- D

    হাইড্রোলিক চেম্বারের ব্যাস- D2

    ভূতল হতে ডাইজেস্টারের টপ ডোমের গভীরতা- ০.৩০ m

    ডাইজেস্টারের উপরের ডোমের উচ্চতা- f1

    ডাইজেস্টারের দেয়ালের উচ্চতা- H

    ডাইজেস্টারের নীচের ডোমের উচ্চতা- f2

    ডাইজেস্টারের দেয়ালের পুরুত্ব- T

    উপরের ডোমের পুরুত্ব- T1

    তলার ডোমের পুরুত্ব- T2

    ইনলেট চেম্বারের দেয়ালের পুরুত্ব- T4

    হাইড্রোলিক চেম্বারের দেয়ালের পুরুত্ব- T3

    ইনলেট চেম্বারের কেন্দ্র- C2

    ডাইজেস্টারের কেন্দ্র- C

    হাইড্রোলিক চেম্বারের কেন্দ্র- C1

    ওপরের ডোমের বক্রাকার বাঁকের ব্যাসার্ধ- R1

    নীচের ডোমের বক্রাকার বাঁকের ব্যাসার্ধ- R2

    তখন কুয়ার একদিকে হাইড্রলিক চেম্বারের মুখের জন্য ১৫০ সে. মি.× ৭৫ সে. মি. এবং অন্যদিকে ইনলেট পাইপ বসানোর জন্য ২০×২৫ সে. মি. গাঁথুনি খোলা রাখতে হবে। ১৫ সে. মি. ব্যাসবিশিষ্ট একটি আরসিসি পাইপ (ইনলেট পাইপ) দেয়ালের সঙ্গে আনুমানিক ৩০ ডিগ্রি কোণ রেখে বসিয়ে নিতে হবে।

    দেয়ালের কাজ মোট ১০০ সে. মি. হলে হাইড্রলিক চেম্বারের দরজার কাজ শেষ হবে। দেয়ালেরকাজ পুনরায় শুরু করে হাইড্রলিক চেম্বারের মুখের উপরিভাগ থেকে ৪০ সে. মি. পর্যন্ত গেঁথে নিতে হবে। এখন দেয়ালের উপরিভাগে ১:২:৪ অনুপাতে ৭.৫ সে. মি.পুরু ঢালাই দিতে হবে। এই ঢালাই-এর ওপর ৭.৫ সে. মি. পুরু ইটের গাঁথুনি দিয়ে ৬০ সে. মি. আর্চ উচ্চতাবিশিষ্ট গম্বুজ আকৃতির ডোম তৈরী করতে হবে।

    ডেমের উপরের অংশে গ্যাস নির্গমনের জন্য একটি ১.২৭ সে. মি. ব্যাসবিশিষ্ট ২৫ সে. মি. লম্বা জিআই পাইপ খাড়াভাবে স্থাপন করতে হবে। জিআই পাইপের উপরি অংশে একটি গ্যাস ভাল সংযুক্ত করতে হবে। এখন দেয়ালের ভিতরের অংশে নিচ থেকে হাইড্রলিক চেম্বারের মুখের উপরিভাগ পর্যন্ত ১:৪ অনুপাত ১.২৭ সে. মি. পুরু প্লাস্টার করতে হবে। হাইড্রলিক চেম্বারের মুখের উপরি ভাগ তেকে ডোমের ভেতরের সম্পূর্ণ অংশ ১:৩, ১:২, ১:১ অনুপাতে তিনবার প্লাস্টার করতে হবে।

    প্রতিবার প্লাস্টারিং-এর পূর্বে সিমেন্ট পেস্ট করে ব্রাশ করে নিতে হবে। ৫/৬ কিউরিং করার পর ভেতরের ডোমসহ আউটলেটের মুখ পর্যন্ত দেয়ালের শুকনা অবস্থায় ১ মি. মি. পুরু মোম/সিলিকেট প্রলেপ দিতে হবে। ডোমের ওপরের সম্পূর্ণ অংশ প্লাস্টার করে নিতে হবে।

    হাইড্রোলিক চেম্বার

    ৭.৫ সে. মি. ইটের গাঁথুনি দিয়ে ২ স্তরবিশিষ্ট একটি আয়তাকার হাইড্রলিক চেম্বার তৈরী করতে হবে। নিচু ও ওপর চেম্বারের মাপ হবে যথাক্রমে ১০০ সে. মি. দৈর্ঘ্য × ১৫০ সে. মি. প্রস্থ × ১১৫ সে. মি. উচ্চতা এবং ১৬০ সে. মি. দৈর্ঘ্য × ১৫০ সে. মি. প্রস্থ × ৬০ সে. মি. উচ্চতা। ৬০ সে. মি. দেয়ালের শেষ হলে স্পেন্ট স্লারি নির্গমনের জন্য একটা খোলা পথ/দরজা রাখতে হবে হাড্রলিক চেম্বারের ভিতরে দিক ১:৪ অনুপাতে প্লাস্টার কাজ শেষ করে নিতে হবে। স্পেন্ট স্লারী নির্গমনের পথের ওপরে আরও ৭.৫ সে. মি. গেঁথে নিতে হবে। হাইড্রলিক চেম্বারের ওপরের অংশ ঢেকে রাখার জন্য প্রয়োজনবোধে স্লাব ব্যবহার করতে হবে।

    ইনলেট ট্যাঙ্ক

    ইনলেট পাইপের মুখে ৬০ সে. মি. × ৬০ সে. মি. মাপে একটি ১২.৫ পুরু ইটের ট্যাঙ্ক তৈরী করতে হবে। এই ট্যাঙ্ক ভেতরের অংশ ভালোভাবে প্লাস্টার করতে হবে। ডাইজেস্টার হাইড্রলিক চেম্বার এবং ইনলেট ট্যাঙ্ক তৈরীর পর প্লান্টের চারপাশে বালি ও মাটি দিয়ে এমনভাবে ভরাট করতে হবে যেন ডোমের উপরিভাগ পর্যন্ত মাটির নিচে থাকে।

    প্লান্ট চালু করার নিয়মাবলী

    প্লান্ট চালু করার সময় ১.৫/২ টন কাঁচামাল যথা গোবর, হাঁস-মুরগির মল, মানুষের মল জাতীয় পচনশীল পদার্থের প্রয়োজন। প্লান্ট তৈরির শুরু থেকে এগুলেপা জমা করে রাখলে প্লান্ট চালুর সময় এগুলো ব্যবহার করা যাবে। অবশ্য কেউ যদি ২/১ দিনেই উক্ত পরিমান কাঁচামাল যোগাড় করতে পারেন, তবে আগে থেকে জমা করে রাখার প্রয়োজন নেই। জমাকৃত কাঁচামাল এবং পরিষ্কার পানি গোবরের ক্ষেত্রে ১:১ হাঁস-মুরগির মলের ক্ষেত্রে ১:৩ অনুপাতে মিশিয়ে ইনলেট পাইপ দিয়ে আস্তে আস্তে কুয়ায় ঢালতে হবে। চার্জিং-এর সময় খেয়াল রাখতে হবে মাটির চাকা, পাথর, বালি, বড় সাইজের খড়কুটা ইত্যাদি যেন কুয়ার ভিতর প্রবেশ না করে। যদি প্লান্ট সম্পূর্ণ ভর্তি না হয়, বাকি অংশ পানি দিয়ে ভরে নিতে হেব।

    প্লান্ট এবং গ্যাস বাল্বের ছিদ্র পরীক্ষা

    গ্যাস বাল্বের ছিদ্র পরীক্ষার জন্য পলিথিন পাইপের গ্যাস বাল্বের মাথা পানির মধ্যে সামান্য ডুবিয়ে দিতে হবে। যদি বাল্ব বন্ধ অবস্থায় পানিতে বুদবুদ তৈরী হয়, তবে বুঝতে হবে বাল্বের ভিতর ছিদ্র আছে। বাল্বের গোড়ায় সাবানের ফেনা লাগিয়ে যদি বুদবুদ দেখা তবে ধরে নিতে হবে বাল্বের গোড়ায় গ্যাস লিক রয়েছে। এমতাবস্থায় গ্রিজ ও পাট জাতীয় কিছু দিয়ে ছিদ্র বন্ধ করতে হবে।

    গ্যাস সরবরাহের নিয়ম

    ১.২৭/২.৫৪ সে. মি. চওড়া পিভিসি / জিআই পাইপ লাইন প্লান্ট থেকে চুলা, হ্যাজাক লাইট, জোনারেটর পর্যন্সংযোগ করতে হবে। যেহেতু বায়োগ্যাসে পানি মিশ্রিত থাকে, সেহেতু পানি জমে থাকার সম্ভবনা থাকবে না। পাইপের এক মাথা একটি প্লাস্টিক পাইপের সাহায্যে প্লান্টের সরবরাহ লাইনে এবং অন্য মাথাটি চুলা, হ্যাজাক, লাইট, জেনারেটর ইত্যাদির সাথে টি-এর সাহায্যে যুক্ত করে নিতে হবে।

    ৩ মিটার (১০৫) ঘনফুট গ্যাস উৎপাদনক্ষম স্থিরডোম বায়োগ্যাস প্লান্ট নির্মাণের উপকরণ সমূহের পরিমাণ এবং মূল্য ১৯৯৪ সালের বাজর অনুসারে দেয়া হল। ১ হাজার ইট ২,৭০০ টাকা, ১২ বস্তা সিমেন্ট, ২,৭০০ টাকা, ১২০ ঘনফুট বালু ৫০০ টাকাক, আরসিসি পাইপ ১২ ফুট ১৫০ টাকা, রাজমিস্ত্রি ৮ জন ৮০০ টাকা, হেলপার ১২ জন ৬০০ টাকা, গ্রঅস বাল্ব (শর্ট পিসসহ) ১টি ১০০ টাকা, মোম ২ কেজি ১০০ টাকাক, বার্নার ১টি ৫০০ টাকাক, হ্যাজাক ১টি ৫০০ টাকা, পাইপ ২০০ টাকা, কুয়া খনন ৫০০ টাকা এবং অন্যান্য খরচ ২০০ টাকা মিলে মোট ৯,৫৫ টাকা আনুমানিক খরচ হবে। এ জাতীয় একটি গ্যাস প্লান্টের স্থায়িত্ব হবে অন্তত ৩০ বছর।

    বর্তমানে বাংলাদেশে গরু-মহিষের সংখ্যা আনুমানিক ২ কোটি ২০ লাখ। এই গরু-মহিষ থেকে দৈনিক প্রাপ্ত গোবরের পরিমাণ ২২০ মিলিয়ন কেজি। প্রতি কেজি গোবর থেকে ১.৩ ঘনফুটগ্যাস হিসাবে বছরে ১০৯ ঘনমিটার গ্যঅস পাওয়া সম্ভব যা ১০৬ টন কেরোসিন বা কয়লার সমান। এ ছাড়াও হাঁস-মুরগি, ছাগল-ভেড়া ইত্যাদির মলমূত্র থেকে এবং আবর্জনা, কচুরপানা বা জলজ উদ্ভিদ থেকেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বায়োগ্যাস পাওয়া সম্ভব। শুধু তাই নয়, গ্যাসহিসাবে ব্যবহারের পর ঐ গোবর জমির জন্য উৎকৃষ্ট মানের জৈব সার হিসাবে ব্যবহার করা সম্ভব। তাই প্রতিটি পরিবারকে বায়োগ্যাস প্লান্টের সাথে যুক্ত করতে পারলে জ্বালানি সঙ্কট দূর করে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং উন্নত গ্রামীণ জীবনযাত্রা নিশ্চিত করা সম্ভব।

    স্কোয়াসের চাষ পদ্ধতি

  • Share The Gag
  • স্কোয়াসের জাত পরিচিতি

    মূলতঃ স্কোয়াস একটি বিদেশী সবজি। বাংলাদেশে নতুনভাবে এটি চাষ শুরু হয়েছে। ভারতে চাষাবাদ হচ্ছে এরকম কয়েকটি কয়েকটি জাতের -zucchini (Cucurbita pepo) একটি জনপ্রিয় জাত। আমাদের দেশে এরকম লম্বা স্কোয়াস চাষাবাদ হচ্ছে। বিভিন্ন বেসরকারী কোম্পানী স্কোয়াসের বীজ বাজারজাত করছে। বিস্তারিত তথ্য এখনো পাওয়া যায় নি।

    স্কোয়াসের বপন/রোপণ প্রযুক্তি

    স্কোয়াসের বীজ একটি একটি করে বপন করা যায় আবার একটি মাদায় একাধিক বপন করা যায়। প্রায় ৩ ফুট দূরে দূরে একটি মাদায় ২-৩ টি বীজ বপন করা হয়। বীজ প্রায় ১ ইঞ্চি গভীরে বপন করতে হবে। চারা গজানোর পর মাটি তুলে ৬-১২ ইঞ্চি উঁচু করে দিতে হবে এবং ১-২ ফুট প্রশ্বস্থ করতে হবে। বীজ বপনের ৪-৬ সপ্তাহ পরে ফল ধরা আরম্ভ হবে।

    স্কোয়াস চাষে অন্যান্য প্রযুক্তি

    মালচিং

    স্কোয়াস চাষে মালচিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। চারা টিকে গেলেই গোড়ার চারপাশে মালচিং করলে তাপমাত্রা ঠিক থাকে এবং মাটি আর্দ্রতা ধরে রাখে। বিষয়টি স্কোয়াসের ফলন আগাম ও বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

    সেচ প্রদানঃ

    স্কোয়াস গাছ সপ্তাহে ২ ইঞ্চি পানি শোষ করে থাকে। তাই প্রয়োজনে সেচ প্রদান করতে হবে।

    কাঁকরোল চাষ পদ্ধতি

  • Share The Gag
  • কাকরোলের জাত পরিচিতি

    কাঁকরোলের বেশ কয়েকটি জাত রয়েছে। সেসব জাতের মধ্যে –

    আসামি,
    মণিপুরি,
    মুকুন্দপুরি ও
    মধুপুরি উল্লেখযোগ্য।

    আসামিঃ এ জাতের ফলগুলো গোলাকার ও বেঁটে এবং খেতে সুস্বাদু।

    মণিপুরিঃ এ জাতের ফল কিছুটা লম্বাটে ও অপেক্ষাকৃত চিকন। তবে তুলনামূলক ফলন বেশি হয় এ জাতে।

    কাঁকরোলের বপন/রোপণ প্রযুক্তি:

    জমি তৈরীঃ
    ১) জমি ৪-৫ টি চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরা করে তৈরী করতে হবে।
    ২) জমির উপরিভাগ সমান ও আগাছা দমন করতে হবে।
    ৩) এরপর চাষকৃত জমিতে প্রয়োজনীয় মাপের বেড তৈরী করতে হবে।

    বপন সময়ঃ কাঁকরোলের বীজ বপন বা মোথা রোপণের উত্তম সময় মধ্য এপ্রিল থেকে মধ্য জুন মাস।

    বেড তৈরীঃ
    ১) দৈর্ঘ্যঃ জমির দৈর্ঘ্যের উপর নির্ভর করে।
    ২) প্রস্থঃ ৩০০ সে.মি।
    ৩) দুই বেডের মাঝে নালার প্রস্থ ৩০ সেমি।
    ৪) দুই বেডের মাঝে নালার গভীরতা ২০ সেমি।
    ৫) প্রতি বেডে দুটি সারি থাকবে।
    ৬) সারি থেকে সারির দূরত্ব হবে ২০০ সেমি।
    ৭) প্রতি সারিতে ৬০x৬০x৬০ সেমি আকারের গর্ত তৈরী করতে হবে।
    ৮) মাদা থেকে মাদার দূরত্ব হবে ২৫০ সেমি।
    ৯) হেক্টরপ্রতি প্রতি মাদার সংখ্যা হবে ২০০০টি।

    বীজ বা মোথা বপন :
    ১) কাঁকরোল চাষের জন্য মোথা রোপণ করতে হবে। ২ মিটার দূরত্বে সারিতে ও ব্যবধানে ৫-৬ সেমি গভীরে মোথ রোপণ করে খড়কুটা দ্ধারা ঢেকে দিতে হবে।
    ২) রোপণের জন্য নির্বাচিত মোথার ৫% পুরুষ গাছের মোথা হতে হবে।
    ৩) কেননা কাঁকরোলের পুরুষ ও স্ত্রী ফুল আলাদা গাছে জন্মেই পরাগায়ন নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে স্ত্রী গাছের পাশাপাশি আনুপাতিক হারে পুরুষ গাছ ধাকা দরকার।

    কাঁকরোল চাষে সার ব্যবস্থাপনা





    কাঁকরোলের ভাল ফলন পাওয়ার জন্য প্রতি শতাংশ (ডেসিমাল) জমির জন্য নিম্নোক্ত হারে সার প্রয়োগ করতে হবেঃ









































     
    সারের নামসারের পরিমাণ

    শতকের জন্য


    মন্তব্য
    পচা গোবর/কম্পোস্ট২০ কেজিএলাকা বা মৃত্তিকাভেদে সারের পরিমাণে কম-বেশী হতে পারে। অধিকতর তথ্য জানতে এখানে ক্লিক করুন
    টিএসপি০.৫১-০.৬১ কেজি
    ইউরিয়া০.৪-০.৫১ কেজি
    এমওপি/পটাশ০.৪-০.৫১ কেজি
    জিপসাম০.৩২-০.৪ কেজি
    দস্তা সার০.০৫ কেজি
    বোরণ০.০৪ কেজি
    ম্যাগনেশিয়াম অক্সাইড

     

    প্রয়োগ পদ্ধতিঃ

    গোবর সার জমি তৈরির সময় মাটির সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। টিএসপি, এমওপি ও জিপসাম সার মোথা লাগানোর ১৫ দিন আগে মাদার মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে। ইউরিয়া সার সমান দু’ভাগে ভাগ করে মোথা থেকে চারা গজানোর পর যথাক্রমে ১৫ ও ৩০ দিন পর উপরি প্রয়োগ করতে হবে। মাটি অমস্নীয় হলে শেষ চাষের সময় হেক্টরপ্রতি ৮০ থেকে ১০০ কেজি ডলোচুন প্রয়োগ করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে।

    কাঁকরোল চাষে অন্যান্য প্রযুক্তি





    অন্তর্বর্তীকালীন পরিচর্যা :

    ১) মোথা গজানোর পর আগাছা জন্মালে তা দমন করতে হবে।
    ২) নালার সাহায্যে পানির সেচ দিতে হবে।
    ৩) অতিরিক্ত পান অপসারণের ব্যবস্থা করতে হবে।
    ৪) প্রতিদিন ভোরবেলা স্ত্রী ফুলে কৃত্রিম পরাগায়ন করতে হবে।
    ৫) রোগ ও পোকার আক্রমন দেখা দিলে দমনের ব্যবস্থা নিতে হবে।
    ৬) কাঁকরোলের গাছ ৫-৬ ইঞ্চি লম্বা হলে গাছের গোড়ায় ১ টি করে কাঠি পুঁতে দিতে হবে।
    ৭) গাছ ২০ ইঞ্চি সেমি লম্বা হলে মাচা করে দিতে হবে।

    পরাগায়নঃ

    কাকরোল যদিও প্রাকৃতিকভাবেই পরাগায়িত হয়, তথাপিও ভালো ফলনের জন্য কাকরোল ফুলের কৃত্রিম পরাগায়ন করতে হয়। ফুলের কৃত্রিম পরাগায়ন পদ্ধতি হলো :-

    • (১) সকাল ৬টার দিকে সদ্য ফোটা পুরুষ ফুল বোটাসহ কেটে নিয়ে সতেজ রাখার জন্য ফুলগুলোর বোটা পানির ভেতর ডুবিয়ে ছায়াযুক্ত স্থানে রেখে দিতে হবে।

    • (২) এরপর পুরুষ ফুলের পুংকেশর ঠিক রেখে পাঁপড়িগুলো ছিঁড়ে ফেলতে হবে। এতে কৃত্রিম পরাগায়নের কাজ সহজ হবে।

    • (৩) তারপর স্ত্রীফুলের গর্ভকেশরের মুন্ডের উপর পুরুষ ফুলের পুংকেশর খুব আস্তে আস্তে ২-৩ বার স্পর্শ করাতে হবে। এর ফলে গর্ভকেশরের মুণ্ডে রেনু আটকে যাবে ও পরাগায়ন হবে। সচেতনভাবে করলে একটি পুরুষ ফুল দিয়ে ৬-৭টি স্ত্রী ফুলে কৃত্রিম পরাগায়ন সম্ভব।


    রেটুন কাকরোল :

    শীতের শুরুতেই কাকরোল গাছ মরে যায় এবং পরবর্তী বর্ষা না আসা পর্যন্ত মাটির নিচে মোথা নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকে, যা থেকে পরবর্তী বছর আবার যথাযথ যত্ন নিলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। এতে বীজ বাবদ খরচ, রোপণ এবং রোপণ পরবর্তী খরচ থেকে বাচা যায় ফলে লাভ বেশি হয়।


    কাঁকরোল সংগ্রহ ও পরবর্তী করণীয়





    ফসল সংগ্রহঃ

    ১) কাঁকরোল হলদে সবুজ হলে সংগ্রহ করতে হয়।
    ২) গাছ রোপণের দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে কাঁকরোল ফুল দিতে আরম্ভ করে।
    ৩) পরাগায়নের ১২-১৫ দিনের মধ্যে কাঁকরোল সংগ্রহের উপযোগী সময়।

    ফসল সংগ্রহের সময়ঃ মধ্য জুলাই হতে সেপ্টেম্বর মাস কাঁকরোল সংগ্রহের উত্তম সময়।
     গ্রেডিং, প্যাকেজিং ও বাজারজাতকরণঃ



    ১) কাঁকরোল সংগ্রহের পরপরই আকার অনুসারে গ্রেডিং করা হয়।
    ২) গ্রেডিংকৃত কাঁকরোল প্যাকিং করে বাজারজাত করা হয়।
    ৩) কাঁকরোল বস্তবন্দী না করে বায়ু চলাচলের সুবিধাযুক্ত প্লাস্টিক, কাঠ বা বাঁশের খাঁচা বা হার্ডবোর্ডের বাক্সে করে বাজারে পাঠাতে হয় যাতে গায়ে আঘাত না লাগে।

    ফলনঃ ভালোভাবে যত্ন নিলে জাতভেদে হেক্টরপ্রতি কাঁকরোলের ২০ থেকে ২৫ টন পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়।




    গাছে গুটি কলম করার পদ্ধতি

  • Share The Gag
  • গাছে গুটি কলম করার পদ্ধতি

    গুটি কলমঃ

    দাবাকলমের মধ্যে গুটি কলম সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং প্রচলিত পদ্ধতি । গুটি কলমকে পটলেয়ারেজ, চাইনিজ লেয়ারেজ, এয়ার লেয়ারেজ, মারকটেজ নামেও ডাকা হয়ে থাকে। গুটিকলম নিরক্ষীয় এবং নাতিশীষ্ণ অঞ্চরের গাছের বংশবিস্তারে বিশেষ করে ফল গাছেরবংশ বিস্তারে ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন ফলের বংশবিস্তারে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় যেমনঃ লিচু, পেয়ারা, কাগজীলেবু, জামরুল,বাতাবী লেবু, ডালিম, করমচা, গোলাপজাম, জলপাই, কামিনী ফুল, ভেলভেট ফুল ইত্যাদি।

    সাধারণতঃ ঝোপ জাতীয় ফল গাছ যেগুলো উচু কম হয় এবং পাশ্বে বেশী ছড়ায় এ ধরণের গাছের বংশবিস্তারের জন্য দাবা কলম উপযোগী।

    গুটিকলমের সুবিধাঃ
    ক) এটি একটি সহজ পদ্ধতি এবং করতে খুব একটি দক্ষতার প্রয়োজন হয় না।
    খ) অল্প সময়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গাছের চারা উৎপাদন করা যায়।
    গ) কলমের চারায় কম সময়ে ফল ধারণ করে।
    ঘ) যে সমস্ত প্রজাতি কাটিং এ সহজে শিকড় গজায় না তাদের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি সফলতা বয়ে আনতে পারে।

    গুটি কলমের অসুবিধাঃ

    ক) বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এ পদ্ধতি কাটিং অপেক্ষা ব্যয়বহুল এবং এর জন্য বাড়তি শ্রমিকের প্রয়োজন হয়।

    খ) এই পদ্ধতিতে বংশবিস্তার করতে গেলে অধিক সংখ্যক মাতৃগাছের প্রয়োজন হয়।

    সুবিধা অসুবিধা বিবেচনায় এনে যদি এই পদ্ধতিতে বংশবিস্তার করে যদি একজন চাষী একে লাভজনক মনে করেন তবে তখনই এটিকে গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়।

    শাখা গুটিকলম:
    শাখার আগ্রভাগের কিছুটা অংশ নিচের দিকে নুইয়ে এর অংশবিশেষ বাকল তুলে ৫-৭ সেঃমিঃ মাটির গভীরে পূঁতে রাখা হয়। দুই/ তিন সপ্তাহের মধ্যে বাকল তোলা উপরের অংশের গোড়া থেকে অস্থানিক শিকড় গজায় এবং তখন মাতৃগাছ থেকে এটিকে বিচ্ছিন্ন নির্দিষ্ট জায়গায় রোপণ করতে হয়। যেমনঃ রাস্পবেরী, ব্লাকবেরী।

    গুটিকলমের ধাপসমূহঃ
    ধাপ ১. নির্বাচিত শাখা যাতে গুটি কলম করা হবে।
    ধাপ ২. পাতা অপসারণ করে চক্রাকারে বাকল তুলে ফেলা হয়েছে।
    ধাপ ৩. কাটা অংশের চারিদিকে রুটিং মিডিয়াম দিকে ঢেকে দেয়া হয়েছে এবং পানি ধারণ নিশ্চিত করা হয়েছে।
    ধাপ ৪. রুটিং মিডিয়াম সহ ডালকে পাতলা স্বচ্ছ পলিথিন দিয়ে মুড়ে দেয়া হয়েছে।
    ধাপ ৫. মূল গজানো দাবা কলম।

    গুটি কলম সাধারণতঃ

    ক) মাটির সমান্তরালে অবস্থান করছে এমন শাখায় করা হয়ে থাকে।
    খ) নির্বাচিত ডালের বয়স ৬-১২ মাস হতে হবে।

    গ) ডালটি পেন্সিলের মত মোটাহতে হবে, গাছের দক্ষিণ পূর্ব দিকের ডাল হলে উত্তম। নির্বাচিত শাখারঅগ্রভাগর ৩০-৪০ সে:মি: নীচে কয়েকটি পাতা সরিয়ে দুটি পর্ব মধ্যবর্তী অংশথেকে ধারালো ছুরি দিয়ে চক্রাকারে ৪-৫ সে:মি: পরিমাণ জায়গায় বাকল তুলে ফেলতেহয়। কাটা জায়গার কাঠের উপরের সবুজাভ আবরণটি ছুরির বুক দিয়ে চেঁছে ফেলেদিতে হয। এতে ক্যাম্বিয়াম যোগসুত্র বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ডালের উপরের দিকেরকাটাটি গিটের কাছাকাছি হলে ভাল হয়। কারন এতে কলমে তাড়াতাড়ি শিকড় গজায়। এরপরকাটা জায়গাটিকে পুরোপুরি রুটিং মিডিয়া (৫০% এটেল দোয়াশ মাটি + ৫০% পঁচাগোবর) নারিকেলের ছোবড়ার গুড়া, নারিকেলের ছোবড়া, পাটের আঁশ ইত্যাদি দিয়েঢেকে দিতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে শিকড় গজানোর জন্য কাটা উপরের অংশ যেনঅবশ্যই রুটিং মিডিয়া দিয়ে ঢাকা থাকে। রুটিং মিডিয়া স্থাপনের পর এর চারদিকেস্বচ্ছ পলিথিনের শীট শক্ত করে বেধে দিতে হয যেমন কোন ভাবেই রুটিং মিডিয়াপিছলে না নেমে যায়। এ ব্যবস্থা রুটিং মিডিয়ায় পানি ধারণ নিশ্চিত করে।

    অনেকসময় সহজে শিকড় গজায় না এমন প্রজাতির কলমের ক্ষেত্রে কাটা অংশে রুটিং হরমোন(IBA, NAA, Kinetin ইত্যাদি) প্রয়োগ করা হয়। বৈশাখ – আষাঢ় মাস গুটি কলমকরার উপযুক্ত সময়। গুটি কলমে শিকড় গজাতে গাছের প্রকার ভেদে কয়েক সপ্তাহথেকে কয়েক মাস পর্যন্ত সময় নেয়। শিকড়ের রং প্রথমে সাদা থাকে, আস্তে আস্তেরং বদলিয়ে খয়েরী হয়। শিকড়ের রং খয়েরী হলে মাতৃগাছ থেকে ২ থেকে ৩ দফায় কেটেনিয়ে এসে নার্সারী বেডে রোপণ করতে হয়। উদাহারণঃ লিচু, কাগজীলেবু, পেয়ার, ডালিম, জামরুল, বতাবীলেবু, জলপাই,গোলাপজাম, করমচা, আম ইত্যাদি।

    লিচু গাছের গুটি কলম করার পদ্ধতি :


    • গুটি কলম করার উপযুক্ত সময় বর্ষাকাল৷

    • গুটি কলমের জন্য ১-২ বছর বয়সী, সতেজ, সরল, নিরোগ, পেন্সিলের মতো মোটা ডাল বেছে নিতে হবে ৷

    • নির্বাচিত ডালের আগা হতে ৪০-৫০ সেন্টিমিটার পরে (লম্বা) ঠিক একটি গিঁটের নিচে ৩-৪ সেন্টিমিটার পরিমাণ মাপের ছাল



    গোল করে ধারালো ছুরি দিয়ে কেটে ডালটির কেবল বাকল সাবধানে উঠিয়ে ফেলতে হবে৷
    * এরপর জৈব সার মিশ্রিত (৩ ভাগ এঁটেল মাটি ও ১ ভাগ পঁচা গোবর বা পাতা পঁচা ) মাটির সাথে পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করতে হবে৷ উক্ত পেস্ট দ্বারা কাটা অংশ সমান ভাবে ঢেকে দিতে হবে৷
    * ঢেকে দেয়ার পর ২০ সে.মি. লম্বা ও চওড়া পলিথিন দিয়ে মাটি বলটি ঢেকে দিয়ে সুতলি দিয়ে বেঁধে দিতে হবে ৷
    * শিকড় আসতে সময় লাগে ২-৩ মাস ৷ শিকড়ের রঙ খয়েরী বা তামাটে হলে কলম করা ডালটি গুটিসহ কেটে এনে পলিথিন সরিয়ে দিয়ে ছায়া জায়গায় তৈরি বীজতলায় বা টবে ৪-৫ সপ্তাহ সংরক্ষণ করার পর গাছটি লাগানোর উপযোগী হয়৷

    Tuesday, April 25, 2017

    ব্রোকলি চাষ পদ্ধতি

  • Share The Gag
  • ব্রোকলির জাত পরিচিতি

    ব্রোকলি আমাদের দেশে নতুন সবজি। কাজেই এখন পর্যন্ত তেমন কোন ভাল জাত আমাদের দেশে নেই। উন্নত বিশ্বের বেশ কয়েকটি জাত যেমন- প্রিমিয়াম ক্রস, গ্রীন কমেট, জুপিটার প্রভৃতি জাতের ব্রোকলি চাষ করা যায়। লালতীর সীডস লিমিটেড ‘লিডিয়া’ নামে ব্রোকলির একটি জাত বাজারজাত করছে, যা আমাদের দেশের আবহাওয়া উপযোগী। জাতটি দ্রুত বর্ধনশীল, মাঝারি আকৃতির, তাপ সহিষ্ণু ও রোগ প্রতিরোধী, দেখতে আকর্ষণীয় ও খেতে সুস্বাদু।
    ব্রোকলির বপন/রোপণ প্রযুক্তি

    বীজ বপন:

    আমাদের দেশের আবহাওয়ায় ব্রোকলি চাষের উত্তম সময় হল আশ্বিন থেকে পৌষ মাস।

    বীজ হারঃ

    চারা রোপণের আগে বিঘাপ্রতি (৩৩ শতক) প্রায় ৫০ গ্রাম বীজ বপন করে বীজতলায় চারা তৈরি করতে হবে। এরপর মূল জমিতে চাষের জন্য বিঘাপ্রতি ৬ হাজার চারা রোপণ করতে হবে।

    রোপণ দূরত্বঃ

    প্রায় ৪ থেকে ৫ সপ্তাহ বয়সের চারা সারি থেকে সারি ২২ ইঞ্চি ও চারা থেকে চারা ১.৫ ফুট দূরত্বে রোপণ করলে ভাল ফল পাওয়া যায়। পাশাপাশি দুটি বেডের মাঝে ১ ফুট চওড়া এবং ৬ ইঞ্চি গভীর নালা রাখতে হবে।

    ব্রোকলি চাষে সার ব্যবস্থাপনা:

    ব্রোকলির ভাল ফলন পাওয়ার জন্য প্রতি শতাংশ (ডেসিমাল) জমির জন্য নিম্নোক্ত হারে সার প্রয়োগ করতে হবেঃ












































    সারের নামসারের পরিমাণ

    শতকের জন্য
    মন্তব্য
    পচা গোবর/কম্পোস্ট৬০ কেজি এছাড়াও ৭৬০ গ্রাম খৈল প্রয়োগ করা যেতে পারে
    টিএসপি০.৭৬ কেজি
    ইউরিয়া০.৪৫ কেজিএলাকা বা মৃত্তিকাভেদে সারের পরিমাণে কম-বেশী হতে পারে। অধিকতর তথ্য জানতে এখানে ক্লিক করুন
    এমওপি/পটাশ০.৬১ কেজি
    জিপসাম০.৩২-০.৪ কেজি
    দস্তা সার০.০৫ কেজি
    বোরণ০.০৪ কেজি
    ম্যাগনেশিয়াম অক্সাইড



    প্রয়োগ পদ্ধতিঃ

    উপরোক্ত সার মূল জমি তৈরির সময়  প্রয়োগ করতে হবে। বিঘাপ্রতি ২ কেজি হারে রুটোন বা অন্য কোন শিকড় বর্ধনকারী হরমোন প্রয়োগ করতে হবে। জমি তৈরির সময় জিংক ও বোরন না প্রয়োগ করে চারা লাগানোর ২০ থেকে ২৫ দিন পর প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০ গ্রাম লিবরেল জিংক ও ২০ গ্রাম লিবরেল বোরন একত্রে মিশিয়ে সপ্রে করা যায়। তবে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জৈব সার ব্যবহার করা উত্তম।

    ব্রোকলি সংগ্রহ ও পরবর্তী করণীয়


    ফসল সংগ্রহঃ

    চারা রোপণের দুই মাসের মধ্যে ব্রোকলির অগ্রীয় প্রোপুষ্প মঞ্জুরী খাওয়ার জন্য সংগ্রহ করা যায়। তবে সঠিকমানের জৈব হরমোন ব্যবহার করলে প্রায় ১০ দিন আগে ফসল সংগ্রহ করা যায়। প্রায় তিন ইঞ্চি কাণ্ডসহ ধারালো ছুরি দিয়ে ফুল কেটে সংগ্রহ করতে হয়। এর ১০ থেকে ১২ দিন পর পর্যায়ক্রমে বোঁটাসহ কক্ষীয় প্রোপুষ্পমঞ্জুরী সংগ্রহ করতে হয়।

    ফলন:

    সঠিক পরিচর্যা করলে বিঘাপ্রতি ৫০-৬৫ মণ ফলন পাওয়া যায়।

    ব্রোকলি চাষে অন্যান্য প্রযুক্তি

    পরিচর্যাঃ

    ব্রোকলির চারা লাগানোর পর বেশকিছু বাড়তি পরিচর্যা করতে হবে। জমিতে আগাছা হলে সাথে সাথে নিড়ানি দিতে হবে। মাঝে মাঝে নিড়ানি দিয়ে মাটি আলগা করে দিতে হবে। এছাড়া সূর্যালোকে উম্মোচিত থাকলে ফুল হলুদাভ বর্ণ ধারন করতে পারে। তাই চারদিকের পাতা দিয়ে ফুল ঢেকে দিতে হয়, যা ব্লাচনিং নামে পরিচিত। অনেক সময় আগাম জাতের ব্রোকলি দেরিতে রোপণ করলে বা জমিতে নাইট্রোজেন পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি হলে ফুল ছোট হয়ে যেতে পারে। এসময় ইনডোল বিউটারিক এসিড জাতীয় জৈব হরমোন সপ্রে করলে বা ইউরিয়া উপরি প্রয়োগের পর সেচ দিলে উপকার পাওয়া যায়।




    বন্যা প্রবণ এলাকায় কৃষক ভাইদের করণীয়

  • Share The Gag
  • বন্যা প্রবণ এলাকায় কৃষক ভাইদের করণীয়

    রোপা আমনঃ

    . পানিতে ডুবে যাবার পর যেসব ক্ষেতে ধানের চারা বেঁচে আছে, সেসব ক্ষেতের পানি নামার সাথে সাথে হালকা ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগ করুন। চারার পাতায় পলিমাটি লেগে থাকলে পানি ছিটিয়ে ধুয়ে দিন।

    . আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত জমির এক পাশের চারা তুলে নিয়ে অপর পাশের ফাঁকা জায়গাগুলো পূরণ করে দিন। সৃষ্ট খালি জায়গায় পানি সরে গেলে পুনরায় ধানের চারা লাগিয়ে দিন।

    . বন্যামুক্ত উঁচু জায়গায় বীজতলা তৈরি করে নাবি জাতের ধান বিআর২২/বিআর২৩/বিনাশাইল/নাইজারশাইল জাতের বীজ ভাদ্র মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত বীজতলায় বপন করতে পারেন।

    . উফশী চারা না পাওয়া গেলে স্থানীয় জাতের আমন ধান (গাইঞ্জা, সাইটা, গড়িয়া) এর গজানো বীজ আশ্বিনের মাঝামাঝি পর্যন্ত ছিটিয়ে বপন করুন।

    . বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উঁচু জমির অভাবে ভাসমান বীজতলা তৈরি করতে পারেন।

    . নাবী রোপণের বেলায় প্রতি গুছিতে ৬/৭ টি করে বয়স্ক চারা রোপণ করুন।

    আউশ ধান ও পাটঃ

    আউশ ধান শতকরা ৮০ ভাগ পাকলেই কেটে সংগ্রহ করা যায়। ডুবে গেলে বা ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে জরুরি ভিত্তিতে আউশ ধান ও পাট কেটে নিন।

    আগাম রবি ফসলঃ

    . পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে পাতা জাতীয় সবজি যেমন-গিমাকলমি, লালশাক, ডাঁটাশাক, পালংশাক এসবের চাষ করুন;

    . চারা রোপণ উপযোগী সবজির জমিতে, বাড়ির আঙ্গিনায় বা বাঁধের ধারে সবজির চারা উৎপাদন করুন। শুকনো জায়গার অভাব হলে টব, মাটির চাড়ি, কাঠের বাক্স, কাটা ড্রাম, ভাসমান কচুরীপানার স্তুপ, কলার ভেলা এসবে আগাম শীতকালীন সবজির চারা উৎপাদন করা যায়।

    . বন্যার পানি সরে গেলে জো আসার পর বিনা চাষে ভুট্রা ও সরিষার বীজ এবং আলু, চীনাবাদাম, রসুন বুনা যায়

    . বন্যার পানি নেমে গেলে ভেজা মাটিতে মাসকলাই, খেসারি, ভুট্রা বীজ বুনে দিতে পারেন। পরে একই জমিতে অন্যান্য রবি ফসলের আবাদ করা যাবে;

    . রোপিত ফলের চারার গোড়ায় পানি জমে থাকলে নালা কেটে পানি নিকাশের ব্যবস্থা নিন;

    . আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ শাকসবজি, ফল ও অন্যান্য ফসলী জমির রস কমানোর জন্য মাটি আলগা করে ছাই মিশিয়ে দিন এবং সামান্য ইউরিয়া ও পটাশ সার প্রয়োগ করুন;

    . বেডে তৈরি শিম, লাউ প্রভৃতি সবজি চারার গোড়ায় পানি এলে চারাগুলো মাটির পাত্রে বা কলাগাছের খোলে ভাসিয়ে রাখার ব্যবস্থা করুন, যাতে পানি সরে গেলে আবার মাটিতে লাগানো যায়;

    বিঃ দ্রঃ বিস্তারিত জানতে নিকটস্থ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণের নিকট যোগাযোগ করুন।

    তথ্যসূত্রঃ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর

    ছবিঃ ইন্টারনেট।

    Saturday, April 22, 2017

    পেয়ারার শুয়া পোকা

  • Share The Gag
  • পেয়ারার শুয়া পোকা

    এ পোকা গাছকে অংশিক বা সম্পুর্ণ পাতাশুন্য করে ফেলে। আনেক সময় মারাত্বক আক্রমনে গাছে ফল আসেনা। এর প্রতিকার হল ১. পোকা সহ পাতা সংগ্রহ করে পিশে পোকা মেরে ফেলা ২. সুমিথিয়ন ২ মি.লি. / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।

    পরবর্তীতে যা যা করবেন না :

    ১. বাগান অপরিচ্ছন্ন রাখবেন না

    পরবর্তীতে যা যা করবেন:

    ১.ফল সংগ্রহ শেষ হলে গাছের মরা ডালপালা, ফলের বোটা, রোগ বা পোকা আক্রান্ত ডাল পালা ও অতিঘন ডাল পালা ছাটাই করে পরিস্কার করে দিন

    ২. পরিস্কার করার পর একটি ছত্রাক নাশক ও একটি কীটনাশক দ্বারা পুরো গাছ ভালভাবে স্প্রে করুন

    ৩. নিয়মিত বাগান পরিদর্শন করুন।

    পানের সাদা ও কালো মাছি

  • Share The Gag
  • পানের সাদা ও কালো মাছি:

    এ পোকায় আক্রান্ত হলে গাছের পাতা হালকা রংয়ের হয়ে যায়। পাতার নিচ দিকে পোকার উপস্থিতি লক্ষ করা যায় । এর প্রতিকার হল :
    ১. পোকাসহ আক্রান্ত পাতা তুলে পোকা মেরে ফেলা
    ২. বরজ ও আশ পাশের জায়গা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা
    ৩. আক্রমণ বেশি হলে এদের দমনের জন্য মারশাল ২০ ইসি ১ মি.লি. / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।

    ঢেঁড়শের ছাতরা পোকা দমন

  • Share The Gag
  • ঢেঁড়শের ছাতরা পোকা

    লক্ষণ:

    পূর্ণ বয়স্ক ও বাচ্চা উভয়ই পাতা কান্ড ও ডগার রস চুষে খায়্ । আক্রান্ত স্থান কালো ঝুলের মত দেখায় আক্রান্ত পাতা ঝরে পড়ে ।

    প্রতিকার :

    আক্রান্ত ডগা, পাতা ও ডাল দেখা মাত্রা তা সংগ্রহ করে ধ্বংস করা ।
    আক্রমণ বেশি হলে প্রতি লিটার পানিতে ম্যালাথিয়ন বা সুমিথিয়ন ২ মিঃলি মারসাল ২০ ইসি ১মিঃলিঃ ডায়ামেথয়েট ৪০ ইসি ২মিঃলিঃ মিশিয়ে স্প্রে করা ।

    পরবর্তীতে যা যা করবেন না:

    ১. স্প্রে করার পর ১৫ দিনের মধ্যে সেই সবজি খাবেন না বা বিক্রি করবেন না

    পরবর্তীতে যা যা করবেন:

    ১. আগাম বীজ বপন করা
    ২. সুষম সার ব্যবহার করা

    ক্যাপসিকাম মিস্টি মরিচের জাব পোকা দমন

  • Share The Gag
  • মিস্টি মরিচের জাব পোকা

    লক্ষণ :

    পোকা গাছের কচি পাতা ও ডগার রস শুষে খেয়ে গাছকে দুর্বল করে ফেলে ।

    প্রতিকার:

    গাছের আক্রান্ত অংশ অপসারণ করা
    প্রাথমিক অবস্থায় শুকনো ছাই প্রয়োগ করা
    পরিস্কার পানি জোরে স্প্রে করা
    ক্ষেত পরিস্কার/পরিচ্ছন্ন রাখা ।
    হলুদ রঙের ফাঁদ ব্যবহার করা ।

    তামাকের গুড়া (১০গ্রাম), সাবানের গুড়া (৫গ্রাম) ও নিমের পাতার নির্যাস প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ব্যবহার করা ।
    প্রতি গাছে ৫০ টির বেশি পোকা দেখা দিলে এডমেয়ার ২০ এসএল ০.৫ মিলি./লি হারে পানিতে শিশিয়ে স্প্রে করা।

    কৃষকের আচরণগত পরিবর্তন যোগাযোগ (এফবিসিসি)

    পরবর্তীতে যা যা করবেন না:

    ১. স্প্রে করার পর ১৫ দিনের মধ্যে সেই সবজি খাবেন না বা বিক্রি করবেন না

    পরবর্তীতে যা যা করবেন:

    ১. আগাম বীজ বপন করা
    ২. সুষম সার ব্যবহার করা

    Thursday, April 20, 2017

    ছাঁদ কৃষি এবং কৃষি কাজে কোকো পিটের ব্যবহার

  • Share The Gag
  • ছাঁদ কৃষি এবং কৃষি কাজে কোকো পিটের ব্যবহার

    কোকো পিট কি?



    কোকো পিট একটি জৈব উপাদান যা নারিকেলের আঁশ এর থেকে বাছাই করা এক প্রকার গুঁড়ো উপাদান। এই জৈব উপাদান সম্পূর্ন স্বয়ংক্রিয় আধুনিক মেশিনের মাধ্যমে ইলেকট্রিক চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে এই কোকো পিটের ব্লক তৈরি করা হয়, যা আধুনিক কৃষি খামারীরা তাদের কৃষিজ খামারে ব্যবহার করে থাকেন।

     

    কোকো পিট এর ব্যবহারঃ  

     

    কোকো পিট উন্নত বিশ্বে বীজ তলা তৈরি, হাইড্রপোনিক্স চাষাবাদ, বাড়ীর ছাদে বাগান করার পাশাপাশি অনেক দেশে মাটির বিকল্প মাটিতে তৈরিতে অন্যান্য জৈব উপাদানের সাথে সাথে এই কোকো পিট জৈব উপাদান মিশ্রণ করে থাকে। বাসা বাড়ীর ছাঁদে বাগান করার জন্য মাটি অনেক ওজন ধারণ করে থাকে এবং আমাদের দেশের শহরে বাগান করার জন্য  ভালো মানের মাটি সংগ্রহ করা একটি দূর্লভ কাজের মধ্যেই পরে। তাই আমাদের দেশেও খুব ধীর গতিতে হলেও এখন কোকো পিটের ব্যবহার শুরু হয়েছে।

    কেন কোকো পিট ব্যবহার করবেন?

     



    বাসা বাড়ীর ছাঁদে বাগান করার জন্য এই কোকো পিটের ব্যবহার উন্নত বিশ্বে তেমন বেশী প্রচার করতে হয় না কিন্তু আমাদের দেশে এই কোকো পিটের ব্যবহারে এখনো মানুষের সচেতনা তেমন তৈরি হয়নি বিধায় মানুষ এখনো ছাঁদ বাগান করার জন্য এই কোকো পিট ব্যবহার শুরু করতে পারে নাই।


    • ছাঁদ বাগান করার জন্য এটি একটি খুবই ওজন কম এবং বেশী পরিমাণ জলীয় অংশ ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি ১০০% জৈব উপাদান।

    • কোকো পিটে প্রাকৃতিকভাবে অপকারী ব্যাকটেরিয়া এবং ফাঙ্গাস প্রতিরোধী উপাদান বিদ্যমান থাকে।

    • কোকো পিট হালকা এবং ঝুরঝুরে হবার কারনে এর ভিতরে খুব সহজে মাটিতে উদ্ভিদের জন্য খাদ্য তৈরিতে অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারে।

    • কোকো পিটে প্রাকৃতিক মিনারেল থাকে যা উদ্ভিদের খাদ্য তৈরি এবং উপকারী অণুজীব সক্রিয় করার জন্য বিশেষ ভূমিকা রাখে।

    • কোকো পিটের পি এইচ এর মাত্রা থাকে ৪.২ থেকে ৬.২ এবং এর ভেতরে ক্ষারত্ব সহনশীল পর্যায় থাকে বলে উন্নত বিশ্বে এই কোকো পিটের ব্যবহার সব চাইতে বেশী।

    • কর্পোরেট ফার্ম গুলো বীজ জার্মিনেশন থেকে শুরু করে মাটি ছাড়া চাষাবাদ করার জন্য এই কোকো পিট বহুল আলোচিত।

    • ওজনে হালকা হওয়াতে পরিবহণে সহজ তাই এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পরিবহণ এবং ছাঁদে বগান করার জন্য এই কোকো পিট অধিক ব্যবহার হয়।





    বানিজ্যিকভাবে বাংলাদেশে এখনো সেইভাবে কোকো পিট ব্যবহার শুরু হইনি তবে প্রাপ্তী এবং এর ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনতা অনেক বেশী প্রয়োজন তবেই এর ব্যবহার দিন কে দিন বাড়বে। বাংলাদেশে খুব বেশী কোম্পানি এই কোকো পিট আমদানী করে না আর যারা করছে তারাও খুব বেশী মার্কেট না থাকার কারনে খুব বেশী পরিমাণ আমদানী করতে সাহস পায় না। আমাদের দেশে এর যপোযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত হলেই আমাদের দেশে এর ব্যপক সম্ভাবনা রয়েছে এবং দাম ও তখন অনেক কমে যাবে।

    বর্তমানে নার্সারী গুলো ৫০ কেজি থেকে শুরু করে ৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে থাকে যা সম্পূর্ন পি এইচ নিয়ন্ত্রন করা থাকে না এবং এর ভেতরে অনেক জলীয় অংশ থাকে বিধায় পরিমানে বেশী ক্রয় করেও শুঁকানোর পরে তা পরিমানে কমে যায় বিধায় ক্রেতা সাধারণত খুশী হতে পাড়ে না। আমাদের ক্ষুদ্র প্রয়াস এই প্রচারণায় যে এর ব্যবহার শুরু হলেই এর বাণিজ্যিক আরো প্রসার ঘটবে এবং দাম ও কমে যাবে।

    বর্তমানে এই কোকো পিট বিভিন্ন নার্সারী এবং মগবাজার কৃষি ষ্টোর এর আউটলেটে পাওয়া যায়।

    ক্রয় করতে আগ্রহীরা যোগাযোগ করতে পারেন- ০১৯৭১৬২৫২৫২।

     

     

    Wednesday, April 19, 2017

    গ্রীষ্মকালীন বারি মরিচ ২ এর চাষাবাদ

  • Share The Gag
  • গ্রীষ্মকালীন বারি মরিচ ২ এর চাষাবাদ

    মরিচ বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী মসলা ফসল। কাঁচা ও পাকা উভয় অবস্থাতেই এ ফসলে প্রচুর চাহিদা রয়েছে। রান্নার রং, রুচি ও স্বাদে ভিন্নতা আনার জন্য মরিচ একটি অপরিহার্য উপাদান। পুষ্টির পাশাপাশি মরিচের ভেষজ গুণ রয়েছে। কাঁচা মরিচ ভিটামিন-এ ও সি সমৃদ্ধ। প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচা মরিচে ২-৩ গ্রাম আমিষ, ৬ গ্রাম শ্বেতসার, ০.৬ গ্রাম তেল, ৭ গ্রাম আঁশ, ১০০-থেকে ২০০০ আই.ইউ ভিটামিন-সি এবং ২০ থেকে ২৮ গ্রাম অন্যান্য ভিটামিন ও পানি রয়েছে। এটি ক্ষুধা বর্ধক, বায়ু নাশক ইত্যাদি গুণাবলি সম্পন্ন। বাংলাদেশে প্রায় ১৬ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে ৩৭ হাজার ৯০০ মেট্রিক টন কাঁচা মরিচ উৎপাদিত হয়। বাংলাদেশ থেকে বিদেশে কাঁচা মরিচ রপ্তানি হয়। রবিও খরিপ-১ মৌসুমে মরিচ সহজলভ্য হলেও খরিপ-২ মৌসুমে বাজারে স্বল্পতা দেখা দেয়। তাই বর্ষ ও শীত মৌসুমের পূর্বে মরিচের উৎপাদন অব্যাহত রাখার প্রয়াসে মসলা গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীগণের নিরলস প্রচেষ্টায় বারি মরিচ -২ নামে একটি উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন করা হয় এবং জাতীয় বীজবোর্ড কর্তৃক ২০১৩ সালে মুক্তায়িত করা হয়। জাতটি দেশে কাঁচা মরিচের মোট উৎপাদন বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে।

    জাতের বৈশিষ্ট্য: এটি একটি গ্রীষ্মকালীন মরিচের জাত। গাছ বেশ লম্বা ও ঝোপালো। গাছের পাতার রং হালকা সবুজ। প্রতি গাছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টি মরিচ ধরে। এই জাতের মরিচের ত্বক পুরু। কাঁচা অবস্থায় মরিচের রং হালকা সবুজ এবং পাকা অবস্থায় লাল। এ জাতের মরিচের জীবন কাল প্রায় ২৪০ দিন।

    মাটি: উঁচু এবং মাঝারি উঁচু জমিতে এ জাতটি চাষ করা যায়। সুনিষ্কশিত , উর্বরতা সমৃদ্ধ বেলে দোঁআশ এবং পলি দোঁআশ মাটি এ জাতের মরিচ চাষের জন্য উত্তম। বাংলাদেশের বগুড়া, পাবনা, লালমরিহাট, ময়মনসিংহ ও সমগ্র খুলনা অঞ্চল, মানিকগঞ্জ ঢাকা প্রভৃতি এলকায় জাতটি চাষ করা যায়।

    রোপণমৌসুম: এটি একটি গ্রীষ্মকালীন জাতের মরিচ। এপ্রিল মাসে জমিতে এ মরিচের চারা রোপণের উপযুক্ত সময়। মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত এ জাতের মরিচের চারা জমিতে রোপণ করা যায়।

    চারা উৎপাদন: অপেক্ষাকৃত উঁচু যেখানে বৃষ্টির পানি দাঁড়ায় না, যতেষ্ট আলো-বাতাস পায়, পানি সেচের উৎস আছে এরূপ জমি বীজতলার জন্য নির্বাচন করতে হবে।গ্রীষ্মকালীন মরিচের জন্য মার্চ মাসে বীজতলায় বীজ বপন করতে হবে। প্রতিটি বীজতলার আকৃতি ৩ মি.ঢ ১ মিটার হওয়া উচিত। এ ধরনের প্রতিটি বীজতলায় ১৫ গ্রাম হারে বীজ সারিতে বপন করতে হবে। ভাল চারার জন্য প্রথমে বীজতলার মাটিতে প্রয়োজনীয় কম্পোষ্ট সার এবং কাঠের ছাই মিশিয়ে ঝুরঝুরে করে নিতে হবে। বীজ বপনের ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা আগে প্রতিকেজি বীজে ২ গ্রাম হারে প্রোভেক্স বা ব্যাভিষ্টিন মিশিয়ে শোধন করে নিতে হবে। শোধিত বীজ বীজতলায় ৪ থেকে ৫ সে.মি. দূরে দূরে সারি করে ১ সে.মি. গভীরে সরু দাগ টেনে ঘন করে বপন করতে হবে। বীজ বপনের পর বীজতলায় যাতে পোকামাকড় দ্বারা চারা ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে জন্য প্রতিলিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে সেভিন পাউডার মিশিয়ে মাটিতে স্প্রে করতে হবে। অতিবৃষ্টি বা খরা থেকে চারা রক্ষার জন্য বাঁশের চাটাই, পলিথিন বা নেট দিয়ে বীজতলা ঢেকে দিতে হবে। বাঁশের চাটাই বা পলিথিন সকাল বিকাল বা রাতে সরিয়ে নিতে হবে। নেট ব্যবহারে বিভিন্ন শোষক পোকা চারাকে আক্রমণ করতে পারে না এবং নেটের উপর দিয়ে হালকা সেচ দিলে চারা ভাল থাকে। ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে বীজ গজায়। চরা ৩ থেকে ৪ সে.মি. হলে নির্দিষ্ট দূরত্বে চারা পাতলা করা হয়। খাট, মোটা কান্ড ও ৪ থেকে ৫ পাতা বিশিষ্ট ৩০ থেকে ৩৫ দিন বয়সের উৎকৃষ্ট চারা মূল জমিতে রোপণ করারর উপযুক্ত বলে বিবেচনা করা হয়।
    জমি প্রস্তুত ও বেড তৈরী: গ্রীষ্মকালীন মরিচ চাষের জন্য ৪ থেকে ৫টি আড়আড়িভাবে চাষও মই দিয়ে গভীরভাবে চাষ করে মাটি ঝুরঝুরে করে নিতে হবে। জমি থেকে আগাছা ও পূর্ববর্তী ফসলের আবর্জনা ইত্যাদি সরিয়ে ফেলতে হবে। চারা রোপণের জন্য ১.২ মি. প্রস্থ বিশিষ্ট প্রয়োজন মতো লম্বা ৩০ সে.মি. উচ্চতার বেড তৈরী করতে হবে। পানি সেচ ও নিষ্কাশনের জন্য দুই বেডের মাঝখানে ৪০ থেকে ৫০ সে.মি. প্রশস্ত নালা রাখতে হবে।
    বীজের পরিমাণ ও রোপণ দূরত্ব: বারি মরিচ-২ এর চারা তৈরী করার জন্য একর প্রতি ২০০ থেকে ৩০০ গ্রাম বীজের প্রয়োজন হয়। সারি থেকে সারির দূরত্ব দিতে হবে ৬০ সে.মি. এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্ব দিতে হবে ৫০ সে.মি.। এ ভাবে রোপণ করলে একর প্রতি ১৩ ,৩৩৩ টি গাছ পাওয়া যায়।
    সারের পরিমাণ ও প্রয়োগ পদ্ধতি। মাটির প্রকৃতি, উর্বরতা ইত্যাদির উপর নির্ভর করে সারের মাত্রা ভিন্ন হতে পারে। বারি মরিচ-২ এর জন্য একর প্রতি ২ টন কম্পোষ্ট, ৮৪ কেজি ইউরিয়া,১৩২ কেজি টিএসপি, ৮০ কেজি এমওপি ৪৪ কেজি জিপসাম ৬০০ গ্রাম বোরন সারের প্রয়োজন হয়। শেষ চাষের সময় কম্পোষ্ট, টিএসপি, জিপসাম, বোরন ও ১/৪ অংশ এমপি সার মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। তারপর চারা রোপণের ২৫, ৫০ ও ৭০ দিন পর পর্যাক্রমে ১ম ২য় ও ৩য় কিস্তিতে প্রতিবার ৭০ কেজি ইউরিয়া ও ৫০ কেজি এমওপি সার উপরি প্রয়োগ করতে হবে।
    সেচ প্রয়োগ: চারা রোপণ করার পর অবস্থা বুঝে হালকা সেচ প্রয়োগ করতে হবে, যাতে চারা সতেজ থাকে এবং মাটিতে সহজে খাপ খাওয়াতে পারে। যেহেতু বারি-২ মরিচ খরিপ-২ মৌসুমে চাষ করা হয়, তাই অন্যান্য মরিচের মতো বেশি সেচ প্রয়োজন হয় না। তবে অবস্থা ভেদে ৩ থেকে ৪ টি সেচ প্রয়োজন হতে পারে।

    আগাছ দমন: ভাল ফলনের জন্য চারা রোপণের ১৫, ৩০ , ৪৫ও ৬০ দিন পর পর চার বার নিড়ানী দিয়ে আগাছা দমন করতে হবে।

    মাটি তোলা: ভাল ফসলের জন্য ৩ থেকে৪ বার দুই সারির মাঝের মাটি তুলে দিতে হবে। এতে গাছের গোড়া শক্ত হয় এবং পানি নিষ্কাশনের সুবিধা হয়।

    খুঁটি প্রদান: অধিক উচ্চতা, ফলনের ভার , ঝড়-বাতাস বা অতিবৃষ্টির কারণে গাছ হেলে পড়ে। ফলে মরিচের গুণাগুণ হ্রাস পায়। তাই হেলে পড়া থেকে রক্ষার জন্য খুঁটির সাথে মরিচ গাছ বেঁধে দিতে হবে।

    ফসল ও বীজ সংগ্রহ: চারা রোপণের ৭০ থেকে ৮০ দিন পর মরিচ ফল উত্তোলন করা হয়। বারি মরিচ-২ এর জীবনকাল দীর্ঘ হওয়াতে প্রায় ৮ থেকে ১০ বার ফসল উত্তোলন করা যায়। উত্তম বীজের জন্য বড়, পুষ্ট ও সম্পূর্ণ পাকা মরিচ নির্বাচন করতে হবে। বর্ষাকালে মরিচ শুকানো বেশ কষ্টকর। এজন্য পাকা মরিচ দুই ফালি করে কেটে বীজ বের করে নিয়ে শুকাতে হবে।

    বীজ সংরক্ষণ: মরিচের বীজ বিভিন্ন ধরনের বায়ুরোধী পাত্র, পলিথিন বা অ্যালুমনিয়াম ফয়েল প্যাকেটে সংরক্ষণ করা যায়। বীজ শোধনের জন্য অপেক্ষাকৃত ছোট আকৃতির বায়ুরোধী পাত্র বা পলিথিন প্যাকেট ইত্যাদি ব্যবহার করা উচিত।

    রোগ ও পোকামাকড় ব্যবস্থাপনা: বারি মরিচ-২ জাতে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ নেই বললেই চলে। তবে মাঝে মধ্যে আগা মরা রোগের প্রাদুর্ভাব হতে পারে। এ ছাড়া বীজের জন্য রাখা পাকা মরিচে ফল পচা রোগ দেখা দিতে পারে।

    আগা মরা রোগ: সারা বছর এই রোগ হয়ে তাকে। তবে সাধারণত বৃষ্টি হওয়ার পর তাপমাত্রাও আর্দ্রতা বৃদ্ধি পেলে এ রোগের আক্রমণ বৃদ্ধি পায়।

    রোগের লক্ষণ:

    ১। এই ছত্রাকের আক্রমণে নতুন আগায় ক্ষত দেখা দেয়।ফলে আগা মরতে মরতে পিছনের দিকে অগ্রসর হয়। এজন্যই এই রোগকে আগা মরা রোগ বলা হয়।

    ২। গাছে যখন ফুল ধরা শুরু করে তখনই এই রোগের আক্রমণ দেখা দেয়। আক্রান্ত গাছের ফুল শুকিয়ে যায়।

    ৩। রোগ ফুল থেকে কা-ে ছড়িয়ে পড়ে এবং পরবর্তীতে এটি শাখা-প্রশাখা ও কা-ে ডাইব্যাক রোগের সৃষ্টি করে। শাখা- প্রশাখাগুলি নেতিয়ে শুকিয়ে যায়।

    ৪। মরা আগা পানি ভেজা বাদামি রং এর হয়ে থাকে ও চূরান্ত পর্যায়ে ধূসর সাদা বা খড়ের রং এর মতো ধারণ করে। আক্রান্ত আগা, কা- বা মরিচের ফলে অত্যধিক পরিমাণে কালো রং এর ছোট ছোট ছত্রাকের অণুবীজ বিক্ষিপ্ত অবস্থায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে, যা খালি চোখে দেখা যায় না।

    দমন ব্যবস্থাপনা:

    ১। রোগ মুক্ত বীজ ব্যবহার করতে হবে।

    ২। বীজ বপনের পূর্বে প্রোভেক্স-২০০ প্রতি কেজি বীজের সাথে ২ গ্রাম বা কার্বেনডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক এক গ্রাম হারে মিশিয়ে শোধন করে কিছুক্ষণ ছায়ায় রাখার পর বপন করতে হবে।

    ৩। রোগের লক্ষণ দেখাদিলে প্রতি লিটার পানির সাথে ৩ গ্রাম হারে কুপ্রাভিট মিশিয়ে ৭ থেকে ১০ দিন পরপর ২ থেকে ৩ বার সমস্ত গাছে স্প্রে করতে হবে।

    ফল পচা রোগ: এটি একটি বীজবাহিত রোগ। এ রোগের কারণে মরিচের ফলন শতকরা প্রায় ৫০ ভাগ পর্যন্ত হ্রাস পেতে পারে।

    রোগের লক্ষণ:

    ১।এই রোগের জীবাণু সাধারণত পাকা মরিচকে আক্রমণ করে থাকে।

    ২। আক্রান্ত ফলের ত্বকের উপর ছোট ছোট কালো গোলাকার স্পষ্ট দাগ দেখতে পাওয়া যায়।

    ৩। ফলের বিবর্ণ এলাকায় কালো ছত্রাকের অণুবীজ দেখতে পাওয়া যায়।

    ৪। আক্রমণের চূরান্ত পর্যায়ে ছত্রাক দ্বারা বীজ ঢেকে যায়।

    ৫। ফলে আক্রান্ত অংশ কালো হয়ে কুঁচকে যায়। আক্রান্ত ফল শুকিয়ে যায়।

    দমন ব্যবস্থাপনা:

    ১। রোগমুক্ত গাছ হতে বীজ সংগ্রহ করতে হবে।

    ২। রোগাক্রান্ত শুকনা কা- কেটে আগুনে পুড়য়ে ফেলতে হবে।

    ৩। ফসলের ক্ষেত সব সময় আগাছা মুক্ত রাখতে হবে।

    ৪। রোগের লক্ষণ দেখা দিলে প্রতি লিটার পানির সাথে ৩ গ্রাম হারে কুপ্রাভিট মিশিয়ে ৭ থেকে ১০ দিন পর পর ৩ থেকে ৪ বার স্প্রে করতে হবে।

    ফলন: ভালভাবে যত্ন নিলে বারি-২ জাতের মরিচে একর প্রতি ৮ থেকে ১০ টন ফলন পাওয়া যেতে পারে।

    Tuesday, April 18, 2017

    শসার ফলছিদ্রকারি পোকা

  • Share The Gag
  • শসার ফলছিদ্রকারি পোকা

    লক্ষণ :

    পোকার কীড়া কচি ফল ও ডগা ছিদ্র করে ও ভিতরে কুরে কুরে খায় । এরা ফলের কুঁড়িও খায়

    প্রতিকার :

    •ক্ষেত পরিস্কার পরচ্ছন্ন রাখা ।
    • আক্রান্ত ডগা ও ফল সংগ্রহ করে নষ্ট করা
    • চারা রোপনের ১৫ দিন পর থেকে ক্ষেত ঘন ঘন পর্যাবেক্ষন করা ।
    • জৈব বালাইনাশক ব্যবহার যেমন নিমবিসিডিন ৩ মিঃলিঃ / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্পে করা ।
    • শতকরা ১০ ভাগের বেশি ক্ষতি হলে যে কোন একটি বালাইনাশক ব্যবহার করা । যেমন রিপকর্ড ১ মিঃলিঃ বা ডেসিস ০.৫মিলি বা ফাসটেক ০.৫ মিঃলিঃ বা সাবক্রণ -২ মিঃলিঃ বা সুমিথিয়ন-২ মিঃলিঃ বা ডায়াজিনন ২ মিঃলিঃ /লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে স্পে করা ।

    পরবর্তীতে যা যা করবেন না:

    ১. স্প্রে করার পর ১৫ দিনের মধ্যে সেই সবজি খাবেন না বা বিক্রি করবেন না

    পরবর্তীতে যা যা করবেন:

    ১. আগাম বীজ বপন করা
    ২. সুষম সার ব্যবহার করা

    লাউয়ের গামি স্টেম ব্লাইট রোগ

  • Share The Gag
  • লাউয়ের গামি স্টেম ব্লাইট রোগ

    এ রোগ হলে পাতায় পানি ভেজা দাগ দেখা যায়। ব্যাপক আক্রমনে পাতা পচে যায়। কান্ড ফেটে লালচে আঠা বের হয়।
    এর প্রতিকার হল:

    ১. ক্ষেত থেকে আক্রান্ত গাছ তুলে ফেলা
    ২. রোগমুক্ত বীজ বা চারা ব্যবহার করা
    ৩. ম্যানকোজেব অথবা ম্যানকোজেব + মেটালক্সিল যেমন: রিডোমিল গোল্ড ২ গ্রাম / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে ৭-১০ দিন পরপর ৩ বার স্প্রে করা।

    বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা

  • Share The Gag
  • বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা

    লক্ষণ:

    সাধারণত চারা রোপনের ৪/৫ সপ্তাহের মধ্যেই এ পোকারা আক্রমণ শুরু হতে দেখা যায় । তবে বেগুন গাছে ফুল আসা শুরু হওয়ার পর আক্রমণের মাত্রা বাড়তে থাকে । এই পোকার আক্রমণ শুরু হওয়ার পর প্রাথমিক লক্ষণ হিসাবে জমিতে সদ্য নেতিয়ে ডগা চোখে পড়ে । ফল আসার পূর্বে এ পোকার কীড়া কচি ডগায় আক্রমণ করে এবং এর ভিতরে খেতে থাকে । পরবর্তীতে ফল আসার পর অধিকাংশ কীড়াই কচি ফলে আক্রমণ করে । কীড়া কোন কোন সময় ফুলও খেয়ে থাকে । পূর্ণতা প্রাপ্ত হওয়ার পর কীড়া পুত্তলিতে পরিণত হওয়ার জন্য ফল থেকে সুড়ঙ্গ তৈরী করে মাটিতে নেমে আসে । কীড়া বের হওয়ার ছিদ্র ফলে স্পষ্ট দেখা যায় তবে ডগায় এই ছিদ্র পরিলক্ষিত নাও দেখা যেতে পারে । এ পোকা আক্রমণ শুরু হবার পর থেকে শেষ বার বেগুন সংগ্রহ পর্যন্ত চলতে থাকে ।

    প্রতিকার:

    ঋতুভেদে বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণের মাত্রায় ভিন্নতা দেখা যায় । উঞ এবং আর্দ্র আবহাওয়া এ পোকার বংশবৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে বলে গ্রীষ্মকালে এ পোকার ব্যাপকা আক্রমণ পরিলক্ষিত হয় । অন্যদিকে শীতকালে এ পোকার আক্রমণের হার কম থাকে । সেহেতু এ পোকা দমনের ব্যবস্থাপনাও ঋতুভেদে ভিন্নতর হওয়া বাঞ্চনীয় ।

    গ্রীষ্মকালীন ব্যবস্থাপনা:

    ১. সপ্তাহে অন্ততঃ একবার পোকা আক্রান্ত ডগা ও ফল বাছাই করে বিনষ্ট করতে হবে ।

    ২. ফেরোমন ফাঁদের ব্যবহারঃ চারা রোপনের ২/৩ সপ্তাহের মধ্যেই জমিতে ফেরোমন ফাঁদ পাততে হবে । (প্রতি শতাংশে ১টি)

    ৩. আক্রমণের মাত্রা বেশী হলে জৈব বালাইনাশক, স্পেনোসেড ( ট্রেসার ৪ মিলি./ ১০ লি. পানি হারে ) স্প্রে করতে হবে । গাছের ফুল আসার সময় হতে প্রতি ২ সপ্তাহ অন্তর ৩-৪ বার স্প্রে করতে হবে ।

    ৪. প্রতি ১৫ দিন পর পর উপকারী পোকা, ট্রাইকোগ্রামা কাইলোনিজ ও ব্রাকন হেবিটর পর্যায়ক্রমিকভাবে মুক্তায়িত করতে হবে ।

    ৫. আক্রমণের মাত্রা বেশী হলে ভলিয়াম ফ্লাক্সি ৩০০ এসসি প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিঃলিঃ হারে বা কারটাপ গ্রুপের কীটনাশক যেমন: সানটাপ ২.৪ গ্রাম/ লি. হারে বা সাইপামেথ্রিন গ্রুপের কীটনাশক যেমন: রিপকর্ড বা ফেনকর্ড বা ম্যাজিক বা কট ০.৫ মিলি./ লি হারে বা ডেল্টামেথ্রিন গ্রুপের কীটমাশক যেমন: ডেসিস বা ক্র্যাকডাউন ১ মিলি./ লি হরে বা এ পোকার জন্য অন্যান্য অনুমোদিত রাসায়নিক কীটনাশক ১০-১২ দিন পর পর ৪-৫ বার স্প্রে করতে হবে ।

    শীতকালীন ব্যবস্থাপনা:

    ১. সপ্তাহে অন্ততঃ একবার পোকা আক্রান্ত ডগা ও ফল বাছাই করে বিনষ্ট করতে হবে ।

    ২. ফেরোমন ফাঁদের ব্যবহারঃ চারা লাগানোর ২/৩ সপ্তাহের সধ্যেই জমিতে ফেরোমন ফাঁদ পাততে হবে ।

    ৩. প্রতি সপ্তাহে একবার করে উপকারী পোকা, ট্রাইকোগ্রামা কাইলোনিজ ও ব্রাকন হেবিটর পর্যায়ক্রমিকভাবে মুক্তায়িত করতে হবে ।

    ৪. আইপিএম প্রদ্ধতির এলাকাভিত্তিক প্রয়োগ করতে হবে ।

    ৫. আক্রমণের মাত্রা বেশী হলে জৈব বালাইনাশক, স্পেনোসেড ( ট্রেসার ৪ মিলি./ ১০ লি. পানি হারে ) স্প্রে করতে হবে বা ভলিয়াম ফ্লাক্সি ৩০০ এসসি প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিঃলিঃ হারে বা কারটাপ গ্রুপের কীটনাশক যেমন: সানটাপ ২.৪ গ্রাম/ লি. হারে বা সাইপামেথ্রিন গ্রুপের কীটনাশক যেমন: রিপকর্ড বা ফেনকর্ড বা ম্যাজিক বা কট ০.৫ মিলি./ লি হারে বা ডেল্টামেথ্রিন গ্রুপের কীটমাশক যেমন: ডেসিস বা ক্র্যাকডাউন ১ মিলি./ লি হরে বা এ পোকার জন্য অন্যান্য অনুমোদিত রাসায়নিক কীটনাশক ১০-১২ দিন পর পর ৪-৫ বার স্প্রে করতে হবে ।

    পরবর্তীতে যা যা করবেন না:

    ১. স্প্রে করার পর ১৫ দিনের মধ্যে সেই সবজি খাবেন না বা বিক্রি করবেন না

    পরবর্তীতে যা যা করবেন:

    ১. আগাম বীজ বপন করা
    ২. সুষম সার ব্যবহার করা
    ৩. সঠিক দুরত্বে চারা রোপন করা

    চাল কুমড়া চাষের পদ্ধতি

  • Share The Gag
  • চাল কুমড়া চাষের পদ্ধতি
    সবজি হিসাবে আমাদের দেশে চাল কুমড়ার জনপ্রিয়তা ব্যাপক। ঘরের চালে এ সবজি ফলানো হয় বলে এটি চাল কুমড়া নামে পরিচিত। তবে চাল কুমড়া শুধু চালে নয় ইহা জমিতে মাচায় চাষ করলে ফলন বেশি হয়। সবুজ কচি চাল কুমড়া তরকারি হিসেবে খাওয়া হয়। শুধু চাল কুমড়াই নয় এর কচি পাতা ও ডগা খাওয়া যায়। আর চুনের মত সাদা চাল কুমড়া দিয়ে বড়ি, মোরব্বা ও হালুয়া তৈরি করা যায়।

    পুষ্টিগুণ:

    চাল কুমড়া পুষ্টিকর সবজি। চাল কুমড়াই বিভিন্ন ধরণের ভিটামিন, আমিষ, শর্করা, চর্বি ও ক্যালসিয়াম রয়েছে।

    ঔষধিগুণ:

    চাল কুমড়ার বড়ি ও মোরব্বা ফুসফুসের জন্য উপকারী। চাল কুমড়ার বীজ কৃমি নাশ করে থাকে। এবং এর রসের সাথে চিনি মিশিয়ে খেলে অজীর্ণ রোগ ভাল হয়।

    জাত নির্বাচন:

    আমাদের দেশে একটি উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন হয়েছে যা বার মাসই চাষ করা যায়। নাম তার বারি চাল কুমড়া-১। সম্প্রতি আমাদের দেশে হাইব্রিড জাতের চালকুমড়ার বীজও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। এসব জাতের মধ্যে জুপিটার, ইউনিক, ভেনাস, পানডা, সুমাইয়া, বাসন্তী, নিরালা, মনি, দেব-১২০৩, মাধবী ইত্যাদি অন্যতম।

    মাটি:

    প্রায় সব ধরনের মাটিতে চাল কুমড়া চাষ করা যায়। তবে চাল কুমড়া চাষের জন্য দো-আঁশ ও এটেল দো-আঁশ মাটি উত্তম।

    বপনের সময়:

    সারা বছরই চাল কুমড়ার চাষ করা যায়। তবে ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত বীজ বোনার উপযুক্ত সময়।

    বীজের পরিমাণ:

    প্রতি শতাংশ জমিতে প্রায় ১৫-২০ গ্রাম বীজের দরকার হয়।

    জমি তৈরি ও বীজ বপন:

    চাল কুমড়া যদি বসতবাড়িতে করতে চান সেক্ষেত্রে ঘরের কোণে মাদা তৈরি করে তাতে ৩-৪টি বীজ বপন করতে হবে। এবং চারা গজালে ও একটু বড় হলে বাঁশের কঞ্চি বা পাট কাঠি চারার গোড়ায় পুঁতে দিয়ে চারাগুলো চালায় তুলে দিতে হবে। আর জমিতে চাষ করলে জমি ভাল করে ৩-৪টি চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে নিতে হবে।
    তারপর জমিতে মাদা তৈরি করে ৪-৫টি বীজ বপণ করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে জমিতে যেন বৃষ্টির বা বন্যার পানি জমে না থাকে।এরপর ২.৫ ফুট চওড়া ২ ফুট গভীর গর্ত তৈরি করতে হবে। ২ থেকে ২.৫০ মিটার দূরে দূরে মাদা তৈরি করে বীজ বুনতে হবে।

    সার প্রয়োগ পদ্ধতি:

    ইউরিয়া ১০-১২ কেজি

    টিএসপি ৮-১০ কেজি

    মিউরেট অব পটাশ ৩-৫ কেজি

    জিপসাম ৩ কেজি

    জিংক অক্সাইড ১০০-১৫০ গ্রাম

    জৈব সার যত দেওয়া যায় তত ভাল। (শতাংশ অনুযায়ী)

    ইউরিয়া সার ছাড়া অন্যান্য সব সার বীজ বোনার ৫-৭ দিন আগে জমি তৈরি করার সময় মাদার মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।

    পরিচর্যার নিয়ম:

    প্রত্যেক মাদায় সুস্থ সবল ২-৩ চারা রেখে বাকি চারা তুলে ফেলতে হবে। নিয়মিত বিশেষ করে গাছের গোড়ার আগাছাগুলো পরিষ্কার ও গোড়ার মাটি কুপিয়ে আলগা করে দিতে হবে। জমির মাটিতে রস না থাকলে সেচ দিতে হবে। বর্ষার পানি নিকাশের জন্য নালার ব্যবস্থা করতে হবে। গাছ বড় হওয়ার সাথে সাথে মাচা তৈরি করে দিতে হবে।
    পোকমাকড় দমন:

    চাল কুমড়া গাছে বিভিন্ন পোকার আক্রমন হয়। এসকল পোকার মধ্যে মাছি পোকা সবচেয়ে ক্ষতিকর। মাছি পোকার আক্রমনে চালকুমড়ার ফলন মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হয়। এই পোকা প্রথমে চাল কুমড়ার ফুলের মধ্যে ডিম পাড়ে, পরবর্তীতে ডিম থেকে কীড়া বের হয়ে ফলের ভেতর খেয়ে ফল নষ্ট করে ফেলে। এপোকার জন্য ফলন নষ্ট হয় ৫০-৬০ ভাগ।

    তাই আমাদের কঠোরভাবে মাছি পোকা দমন করতে হবে। এই পোকা দমন করার প্রথম উপায় হচ্ছে-

    পোকা দেখা মাত্র মেরে ফেলা।

    পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ করা। এ পোকা মারার ফাঁদ তৈরি করা এবং বিষটোপ ব্যবহার করা।

    ফসল সংগ্রহ:

    চাল কুমড়া গাছ লাগানোর ৬০-৭০ দিনের মধ্যে ফল দেওয়া শুরু করে। চাল কুমড়া সবজি হিসেবে খেতে হলে সবুজ হুল যুক্ত ৪০০-৬০০ গ্রাম হলে তুলতে হবে। মোরব্বা বা বড়ি দেওয়ার জন্য পরিপক্ক করে ১২০-১৩০ দিন পর তুলতে হবে।
    আমাদের দেশে চাল কুমড়ার চাষ করে অনেকেই দারিদ্র দূর করেছে।

    ধানের ব্লাস্ট রোগ লক্ষণ এবং করণীয়

  • Share The Gag
  • ধানের ব্লাস্ট রোগ

    লক্ষণ: পাতা, কান্ড ও শীষ আক্রান্ত হয়। প্রথমে পাতায় ডিম্বাকৃতির দাগ পড়ে যার দু প্রান্ত লম্বা হয়ে চোখাকৃতি ধারণ করে। দাগের মধ্যভাগ ছাই রংয়ের ও বাইরের দিকের প্রান্ত গাঢ় বাদামী হয়। অনেকগুলি দাগ একত্রিত হলে পাতাটি মরে যেতে পারে। রাতে ঠান্ডা, দিনে গরম এবং শিশির থাকলে এ রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়।

    ব্যবস্থাপনা:

    জমিতে সব সময় পানি ধরে রাখা।

    কুশি অবস্থায় রোগটি দেখা দিলে বিঘা প্রতি ৫ কেজি পটাশ সার উপরি প্রয়োগ করে সেচ দেওয়া।

    প্রতি লিটার পানিতে (টেবুকোনাজল ৫০% + ট্রাইফ্লুক্সিট্রোবিন ২৫%) জাতীয় ছত্রাকনাশক যেমন: নাটিভো ৭৫ ডব্লিউপি ০.৬০ গ্রাম মিশিয়ে বিকেলে স্প্রে করা।

    অথবা প্রতি লিটার পানিতে ট্রাইসাইক্লাজল গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন: ট্রপার ৭৫ ডব্লিউপি বা জিল ৭৫ ডব্লিউপি ০.৮১ গ্রাম বা অন্যান্য নামের এ রোগের জন্য অনুমোদিত ছত্রাকনাশক অনুমোদিত মাত্রায় মিশিয়ে বিকেলে স্প্রে করা।

    পরবর্তীতে যা যা করবেন না:

    আক্রান্ত ক্ষেত থেকে বীজ সংগ্রহ করবেন না।

    পরবর্তীতে যা যা করবেন:

    ১. ধান কাটার পর শুকিয়ে নিয়ে নাড়া জমিতেই পুড়িয়ে ফেলুন।

    ২. মাটি পরীক্ষা করে জমিতে সুষম সার প্রয়োগ করুন

    ৩. মাটিতে জৈব সার প্রয়োগ করুন

    এ রোগের আশঙ্কা থাকলে জমিতে পটাশ সার দুইবারে প্রয়োগ করুন (জমি তৈরির সময় অর্ধেক ও চারা লাগানোর ৩০ দিন উইরিয়া উপরি প্রয়োগের সময় অর্ধেক)।

    Thursday, April 13, 2017

    মিষ্টি কুমড়ার পাতা কোঁচকানো রোগ

  • Share The Gag
  • মিষ্টি কুমড়ার পাতা কোঁচকানো রোগ

    এ রোগ হলে গাছে হলুদ ও গাঢ় সবুজ ছোপ ছোপ মোজাইক করা পাতা দেখা দেয়। পাতা কুচকে যায়।
    এর প্রতিকার হল:

    ১. ক্ষেত থেকে আক্রান্ত গাছ তুলে ফেলা
    ২. জাপ পোকা ও সাদা মাছি এ রোগের বাহক, তাই এদের দমনের জন্য ইমিডাক্লোরোপ্রিড ১ মি.লি. / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।

    কুমড়ার মাছি পোকা সমাধান

  • Share The Gag
  • কুমড়ার মাছি পোকা
    স্ত্রী মাছি কচি ফলের নিচের দিকে ওভিপজিটর ঢুকিয়ে ডিম পাড়ে। ডিম পাড়ার স্থান থেকে পানির মত তরল পদার্থ বেড়িয়ে আসে যা শুকিয়ে বাদামী রং ধারন করে । ডিম থেকে কীড়া বের হয়ে ফলের শাস খেতে শুরু করে এবং ফল বিকৃত হয়ে যায় এবং হলুদ হয়ে পঁচে ঝড়ে যায়।
    প্রতিকার :
    ১. আক্রান্ত ফল বা ফুল সংগ্রহ করে ধ্বংশ করা বা পুড়ে ফেলা।
    ২. কচি ফল কাগজ বা পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেয়া ।
    ৩. প্রথম ফুল আসা মাত্র কুমড়া জাতীয় ফসলের ফেরোমন ফাঁদ স্থাপন করা। প্রতি ১০ শতাংশের জন্য ৩ টি হারে ।
    ৪.আম বা খেজুরের রসে সামান্য বিষ মিশিয়ে তা বোতলে রেখে জানালা কেটে দিয়ে ক্ষেতের মাঝে মাঝে স্থাপন করা।
    ৫. পাকা মিষ্টি কুমড়া বা কুমড়া জাতীয় ফল ১০০ গ্রাম কুচি কুচি করে কেটে তাতে সামান্য বিষ ( যেমন- সপসিন ০.২৫ গ্রাম ) মিশিয়ে তা দিয়ে বিষটোপ তৈরী করে মাটির পাত্রে করে ক্ষেতের মাঝে মাঝে স্থাপন করা।
    ৬. সাইপারমেথ্রিন গ্রুপের কীটনাশক ১ মি.লি. / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।

    বিষটোপ ও ফেরোমন ফাঁদ স্থাপন
    কৃষকের আচরণগত পরিবর্তন যোগাযোগ (এফবিসিসি)

    পরবর্তীতে যা যা করবেন না

    ১. স্প্রে করার পর ১৫ দিনের মধ্যে সেই সবজি খাবেন না বা বিক্রি করবেন না

    পরবর্তীতে যা যা করবেন

    ১. উত্তমরুপে জমি চাষ দিয়ে পোকার পুত্তলি পাখিদের খাবার সুযোগ করে দিন।

    Wednesday, April 12, 2017

    জেনে নেই বৈশাখ মাসে কৃষিতে করণীয়

  • Share The Gag
  • জেনে নেই বৈশাখ মাসে কৃষিতে করণীয়

    বৈশাখ বাংলা বছরের প্রথম মাস। তাই ছয় ঋতুর প্রথম ঋতু গ্রীষ্মও শুরু হয় এ মাস দিয়েই। এ মাসে থাকে সূর্যের প্রখর তাপ, অন্যদিকে দেখা যায় কালবৈশাখী ঝড়। বৈশাখের এ আবহাওয়ায় মাঠে পাওয়া যায় ধান, পাট, শাকসবজি, মসলা, ভুট্টাসহ আরো অনেক ফসল এবং বনজ ও ফলদ গাছপালা। তবে দেশের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে চিনিকলে মাড়াই ও গুড় করার জন্য উৎপাদিত হয় আখ ফসল। সর্বোপরি পুকুর, নদ-নদী, খাল-বিলে মাছ চাষসহ হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলের খামারিদের কাজের প্রতিও দৃষ্টি দিতে হয় এ সময়। দেশব্যাপী এ মাসে যেসব মাঠফসলের যত্ন নিতে হয় তা হলো বোরো, রোপা ও বোনা আউশ, ভুট্টা, পাট, আখ, শাকসবজি। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আবাদ করেও চাষি ভাইয়েরা প্রচুর অর্থ আয় করতে পারেন। এ সময় চাষি ভাইয়েরা অনেক রকম ফলেরও আবাদ করেন।
    ধান : বোরো ধানের জমিতে এখন থোড় আসার সময়। এ মাসে ফসলে থোড় অবস্থা দেখা গেলে জমির পানি বাড়িয়ে দিতে হবে। জমিতে পানি রাখার এ ব্যবস্থা ধানের দানা শক্ত না হওয়া পর্যন্ত ধরে রাখতে হবে। তবে ধানের দানা যখন শক্ত হয়ে আসে তখনই জমি থেকে পানি বের করে দিতে হবে। এখন বোরো ধান মাজরা পোকা, বাদামি গাছফড়িং, গান্ধি পোকা, লেদা পোকা, সবুজ পাতাফড়িং, পাতা মোড়ানো পোকাসহ বিভিন্ন ধরনের পোকায় আক্রান্ত হয়। সঙ্গে সঙ্গে এ মাসেই বিভিন্ন ধরনের রোগেও বোরো ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সাধারণত যেসব রোগ এ ফসলে দেখা যায় তা হলো বাদামি দাগ রোগ, পাতা ঝলসানো রোগ ও বস্নাস্ট রোগ। এসব কারণে ধানের জমিকে এখন সার্বিক পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। জমিতে এসব রোগ বা পোকা আক্রমণ যাতে না হয় সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। জমিতে পোকার আক্রমণ হলে তা দমনের ব্যবস্থা নিতে হবে। ধানের জমির পোকা দমনের জন্য জমিতে বিভিন্ন স্থানে বাঁশের খুঁটি অথবা শাখাযুক্ত ডালপালা পুঁতে দিতে হবে। এর ফলে জমিতে পাখির আনাগোনা বেড়ে যায়। এসব পাখি ডালে বসে এবং তাদের আহার হিসেবে জমির পোকা খেয়ে ফসলকে সুস্থ রাখে।

    এ ছাড়া আপনি বোরো ধানের বীজও আবাদ করতে পারেন। অবশ্যই দেখতে হবে এসব জমিতে যেন পর্যাপ্ত পানি থাকে। তবে আপনি কোনো অবস্থাতেই হাইব্রিড ধানের জমি থেকে ভবিষ্যতে আবাদের জন্য বীজ সংগ্রহ করবেন না। এ মৌসুমে অনেকেই হাইব্রিড ধানের আবাদ করেছেন। কেননা হাইব্রিড ধানের বীজ তৈরি করে গবেষণা খামার ও সরকার নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠানগুলো। কারণ হাইব্রিড বীজ হলো জিন দ্বারা প্রক্রিয়াজাত করা একধরনের বিশেষ বীজ। এসব বীজ উৎপাদনের সূক্ষ্ম তাপমাত্রা, পরিমাণমতো সার নির্ধারণ, হিসাব করে জমিতে বীজ বপন ও তার সঠিক পরিচর্যা প্রভৃতি বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি রাখতে হবে।
    এ মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত সিলেট অঞ্চলে দেশি আউশ এবং মাসের পুরো সময় ধরেই জমিতে ব্রি-আউশ ধানের জাতগুলো জমিতে রোপণ করা যেতে পারে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে আউশ আবাদের এসব জমিন যেন বন্যামুক্ত হয়। আউশ ধানের জমিতে চারা অবস্থায় দু-তিন বার নিড়ানি দিতে হয়। এতে জমি পরিষ্কার থাকে। এ ছাড়া শ্রাবণের মাঝামাঝি পর্যন্ত জমিতে পোকার আক্রমণ দেখা যায়। মাজরা পোকা এখন ফসলের কুশি বা শীষের ক্ষতি করে। আউশ ফসল এভাবে আক্রান্ত হলে কুশি অবস্থায় ফুল আসার পর গাছের সাদা শীর্ষ দেখা যায়। জমিতে এ পোকা দমনের জন্য সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনাগুলো অনুসরণ করা উত্তম।
    পাট : এ মাসেই তোষা পাটের বীজ বোনার জন্য উপযুক্ত সময়। বর্ষায় পানি দাঁড়ায় না এ ধরনের জমিতেই তোষা পাটের বীজ বুনতে হয়। তোষা পাটের যেসব উন্নত জাত রয়েছে তা হলো ফাল্গুনী তোষা, ও এম-১, ও-৪ এবং ও-৭২। এসব বীজ জমিতে বপনের আগে তা কীটনাশক দিয়ে শোধন করে নিতে হবে। এতে ফসলের বালাইয়ের আক্রমণও কম দেখা যায়। এখন পাটের জমি তৈরি করার জন্য এ মাসেই বৃষ্টির পরে জমিতে চাষ ও মই দিয়ে দিতে হবে। এ ছাড়া জমি তৈরির সময় এতে প্রয়োজনীয় জৈব ও রাসায়নিক সারও দিতে হবে। এখন খরা থাকলে জমিতে সেচ দিতে হবে। এ সময় পাটে ক্ষুদ্র লাল মাকড়ের আক্রমণ দেখা যায়। এ অবস্থায় থাকলে তা থিয়োভিট ৮০ ডবিস্নউ জি অথবা রিপকর্ড ১০ ইসি অথবা সালফোটাক্স ৮০ ডবিস্নউ পি এগুলোর যে কোনো একটি ব্যবহারের মাধ্যমে দমনের ব্যবস্থা নিতে হবে।
    ভুট্টা : এখন ভুট্টা সংগ্রহের সময়। এখন ভুট্টার মোচা খড়ের মতো রঙ হয় এবং এ অবস্থা হলেই গাছ থেকে এসব মোচা সংগ্রহ করতে হয়। আপনি এখন হাঁস-মুরগির খামারি বা গবাদিপশুর মালিকদের কাছে পশুর খাবার হিসেবে এ ভুট্টা সহজেই বিক্রি করতে পারেন এবং নিজের পশুপাখির খাবার হিসেবেও এ ফসল ব্যবহার করতে পারবেন। খরিফ মৌসুমে এখন অনেকে আবার ভুট্টার আবাদও করেছেন। জমিতে ভুট্টার বয়স ২০-২৫ দিন হলে ইউরিয়া সার উপরিপ্রয়োগ করতে হবে। এখন জমিতে ভুট্টা গাছ বেশ বাড়ন্ত পর্যায়ে ও অনেক গাছে এখন ফুল আসে। গাছে ফুল দেখা গেলে তখন গাছের পাতা ছেঁটে দিতে হেব। এ সময় জমিতে

    পানি সেচ দেয়া এবং জমির আগাছা পরিষ্কারসহ অনেক স্থানেই প্রয়োজনে সার উপরিপ্রয়োগ করা যায়।
    আখ : এ মাসে আখের জমির মাটি চাষ করতে হয়। প্রয়োজন হলে আখ ফসলে সার উপরিপ্রয়োগ করা যায়।
    শাক-সবজি : আপনারা অনেকেই এ মাসে গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষ শুরু করেছেন। তবে শাসসবজি যারা আগে আবাদ করেছেন তারা এসবের পরিচর্যা করতে পারেন। এ সময় আপনি গ্রীষ্মকালীন টমেটোর আবাদ করতে পারেন। এ জন্য বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট গ্রীষ্মকালীন টমেটোর কয়েকটি জাতও উদ্ভাবন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে বারি টমেটো-৪, ৫, ৬, ১০ ও ১১। পরমাণু কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এ সময়ের জন্য দুটি জাত উদ্ভাবন করেছে তা হলো বিনা টমেটো-১ ও ২। এ সময় জমিতে গ্রীষ্মকালীন শাকসবজির বীজ, চারা বা কন্দ বপন বা রোপণ করা যায় যেমন পেঁপে, লালশাক, পুঁই, ডাঁটা, গিমা কলমি, লাউ, বেগুন, চালকুমড়া, মিষ্টিকুমড়া, শসা, ঢেঁড়স, কাঁকরোল, ঝিঙা, মরিচ, শিম, চিচিঙ্গা, করলা, বরবটি একং ওল, মুখিসহ সব ধরনের কচু। এসব লাগানোর জন্য সঠিক দূরত্ব, রোপণ গর্তের আকার বা গভীরতা, সারের পরিমাণ ও প্রয়োগ পদ্ধতি প্রভৃতি বিষয়ে আপনাকে সঠিক ধারণা রাখতে হবে। এ জন্য আপনি নিকটস্থ উপ-সহকারী কৃষি অফিসারের পরামর্শ নিতে পারেন।
    মসলা : এ মাসে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ শুরু করা যেতে পারে। গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের চারা তৈরি করে নিয়ে পরে তা মূল জমিতে রোপণ করা যায়। এতে পেঁয়াজ চাষ থেকে লাভ বেশি পাওয়া যাবে। গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের উন্নত জাতগুলোর মধ্যে রয়েছে বারি পেঁয়াজ-২ ও ৩ এবং এন-৫৩। এ মাসে আপনি আদা বা হলুদের রোগমুক্ত, সতেজ কন্দ জমিতে রোপণ করতে পারবেন। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট উদ্ভাবিত উন্নত যেসব হলুদের জাত রয়েছে তা হলো বারি হলুদ-১, ২ ও ৩। এ ছাড়া উন্নত আদার জাত হলো বারি আদা-১। আদা ও হলুদ মূল-জাতীয় ফসল বলে এ ফসলের জমির মাটি অনেক গভীর পর্যন্ত আলগা থাকে। এ জন্য জমিতে পানি যেন না দাঁড়ায় সেদিকে চাষি ভাইদের বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে। এ মাসে বীজতলা তৈরি ও মরিচের বীজ করা যায়। এক থেকে দেড় মাস পরে চারা উঠিয়ে এসব মূল জমিতে রোপণ করা যায়।
    ফল : এ সময় আমবাগানের পোকামাকড় দমনের ব্যবস্থা নিতে হবে। এ মাসে ফলে পোকামাকড় বিশেষ করে হপার পোকার আক্রমণ বেশি দেখা যায়। সে ক্ষেত্রে গাছে রেলোথ্রিন ১০ইসি, টাফ্গর ৪০ইসি, সাইপারমার ১০ইসি, সবিক্রন ৪২৫ইসি এগুলোর যে কোনো একটি ব্যবহার করতে পারেন।
    গবাদিপশু ও পাখি : এ মাসে কড়া রোদ। এ সময় গবাদিপশুকে বাইরে রাখা যাবে না। গরমে এসব পশু-পাখি অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। তাই গরু-ছাগলকে খোলামেলা ছায়াযুক্ত জায়গায় রাখতে হবে। এ ছাড়া এখন গবাদিপশুকে খাওয়ানোর জন্য সুষম খাবার দিতে হবে। কাঁচা ঘাসের ব্যবস্থা করতে হবে। আপনার পশু এখন বাদলা, তড়কা, ক্ষুরারোগ প্রভৃতির মাধ্যমে আক্রান্ত হতে পারে। এসব রোগ খুবই ক্ষতিকর। এসব রোগ থেকে আপনার পশুকে রক্ষার জন্য পশুপাখিকে প্রতিষেধক টিকা দেয়ার ব্যবস্থা নিতে হবে। খামারি ভাইয়েরা হাঁস-মুরগির বার্ড ফ্লু রোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এসব রোগ থেকে রক্ষার জন্য আপনাকে যথাসময়ে হাঁস-মুরগির প্রতিষেধক বা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ ছাড়া এ মাসে মুরগির কলেরা ও রানিক্ষেত এবং হাঁস প্লেগ রোগ দ্বারাও আক্রান্ত হয়। সমস্যা সমাধানে উপজেলা পশুসম্পদ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
    মৎস্য : আপনি মাছ চাষের জন্য নতুনভাবে পুকুর তৈরি করবেন এ মাসেই। তা ছাড়া পুরনো পুকুর হলে এ মাসেই তা শুকিয়ে এবং পুকুরের পাড় মেরামত করে নিতে হবে। এখন পুকুরপাড়ের গাছপালা ছাঁটাইয়ের ব্যবস্থাও নেয়া প্রয়োজন। সম্ভব হলে পুকুরে থাকা জলজ আগাছা দমনের ব্যবস্থাও এখন নিতে হবে। সমস্যা দেখা দিলে উপজেলায় গিয়ে সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা/উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
    চাষি ভাইয়েরা, আপনাদের মাঠের ফসল, ফলমূল, গাছপালা, গো-সম্পদ ও মৎস্যসম্পদ এ মাসে খুবই কষ্টক্লেশ করে দেখাশোনা করতে হয় এবং এ জন্য আপনাকে প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে এসব কাজ করতে হবে। প্রয়োজনে আপনি স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিতে পারেন।

    লিখেছেনঃ কৃষিবিদ সরকার মো. আবুল কালাম আজাদ।

    Sunday, April 9, 2017

    চাষ করুন নেপিয়ার ঘাস

  • Share The Gag
  • চাষ করুন নেপিয়ার ঘাস

    বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। দেশের প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ কোনো না কোনোভাবে কৃষির উপর নির্ভরশীল। সেক্ষেত্রে হাল চাষের প্রয়োজনে অনেকেই গবাদিপশু পালন করে থাকে। আবার হালের বলদের সাথে অনেকেই ২/১টি গাভীও পালন করে থাকে। এসব গাভীর অধিকাংশই দেশী এবং তাদের দুধ উৎপাদন মোটেই উল্লেখ্যযোগ্য নয়। তবু যতটুকু দুধ পাওয়া যায় তাঁরা তা বাজারে বিক্রি করে থাকেন। যদিও মুষ্টিমেয় কিছু সংখ্যক গাভী তুলনামূলকভাবে বেশি দুধ দেয় তারাও পুষ্টিকর খাদ্যের অভাবে দুধ উৎপাদন ক্ষমতা ধীরে ধীরে হারিয়ে ফেলছে। এর ফলে দেশে ক্রমশই দুধের অভাব প্রকট হয়েছে Household Income and Expenditure Survey (HIES) ২০০০ অনুযায়ী ১৯৯৫-৯৬ অর্থ বছরে মাথা পিছু দুধ গ্রহণের পরিমাণ ছিল ৩২.৫ মিঃলিঃ এবং ২০০৪-০৫ অর্থ বছরে এর পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৪২.৭২ মিঃলিঃ (উৎসঃ বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০০৬)। অথচ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মান অনুযায়ী একজন মানুষের দৈনিক ২০০ মিঃলিঃ দুধ খাওয়া প্রয়োজন। এদিক বিবেচনায় আমাদের দেশে দুধের উৎপাদন খুবই খারাপ বলা যায়। এ অবস্থা থেকে উত্তরনের জন্য দেশে দুধ উৎপাদনের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ অতীব জরুরি। তাছাড়া আমাদেরকে বছরে প্রায় ৪০০-৪৫০ কোটি টাকার দুধ বা দুগ্ধজাতপণ্য আমদানি করতে হয়। আমরা যদি দেশের গবাদি পশুর সঠিক পরিচর্যা ও উন্নয়নের মাধ্যমে দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারি তাহলে একদিকে যেমন কর্মসংস্থান বাড়বে অন্যদিকে তেমনি বিশাল অংকের বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে।

    নেপিয়ার ঘাস:

    দুধ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রথমেই জাতের উন্নয়ন আবশ্যক। তারপরই আসে খাদ্যের ভূমিকা। খাদ্যের মধ্যে কাঁচা ঘাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দুধ উৎপাদন বৃদ্ধিতে কাঁচা ঘাসের কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশ জনসংখ্যায় খুবই ঘন বসতিপূর্ণ। জমির পরিমাণ অল্প। তাই যেখানে মানুষের খাদ্য উৎপাদনেই নাভিশ্বাস উঠছে, সেখানে গবাদির জন্য খাদ্য উৎপাদন অনেকটা চ্যালেঞ্জের মুখে। তবুও যদি কৃষকভাইরা দেখেন যে ঘাস উৎপাদনের ফলে তাঁদের গাভীর দুধ উৎপাদন বাড়ছে এবং এর লভ্যাংশ দ্বারা অন্যান্য খরচ মেটানো সম্ভব, তাহলে তাঁরা গবাদিপশু পালনের দিকে ঝুঁকে পড়বেন। আর কাঁচা ঘাস সহজ প্রাপ্য হলে গাভী পালনও সহজতর হবে। তাই আধুনিক পদ্ধতিতে ঘাস চাষ করতে হবে। সেজন্য দরকার ব্যাপকভাবে উচ্চ উৎপাদশীল ঘাস চাষ। কাজেই এ বিষয়ে কৃষক ভাইদের সচেতন করতে হবে।
    আমরা আজকে এমনই একটি ঘাস চাষ নিয়ে আলোচনা করবো যার উৎপাদন যথেষ্ট পরিমাণে বেশি। বাংলাদেশের প্রায় সকল এলাকায় এ ঘাস জন্মানো সম্ভব এবং তা থেকে প্রায় সারা বছরই গবাদির কাঁচা ঘাসের চাহিদা পূরণ করা যেতে পারে। এই ঘাসটির নাম নেপিয়ার।
    নেপিয়ার এক প্রকার স্থায়ী ঘাস। দেখতে আখের মত, লম্বা ৬.৫-১৩.০ ফুট বা তার চেয়েও বেশি হয়ে থাকে। এই ঘাস দ্রুত বধর্নশীল, সহজে জন্মে, পুষ্টিকর, সহজপাচ্য ও খরা সহিষ্ণু। একবার রোপন করলে ৩/৪ বছর পর্যন্ত এর ফলন পাওয়া যায়। শীতকালের ২/৩ মাস ছাড়া প্রায় সারা বছরই এর উৎপাদন অব্যাহত থাকে। এই ঘাস আবাদের জন্য উঁচু ও ঢালু জমি যেমন বাড়ির পার্শ্বে উঁচু অনাবাদি জমি, পুকুরের পাড়, রাস্তার ধার ও বেড়ীবাঁধ সবচেয়ে উত্তম। ডোবা, জলভূমি কিংবা প্লাবিত হয় এমন অঞ্চলে এই ঘাস আবাদ করা যায় না।

    জমি নির্বাচনঃ

    পানি নিষ্কাশনের জন্য ভাল ব্যবস্থা আছে অর্থাৎ যেখানে বৃষ্টি বা বর্ষার পানি জমে থাকে না এরূপ জমি নেপিয়ার চাষের জন্য উত্তম। প্রায় সব ধরনের মাটিতেই এ ঘাস রোপন করা যায়, তবে বেলে-দোআঁশ মাটি সবচেয়ে বেশি উপযোগী।

    চাষের সময়ঃ

    নেপিয়ার ঘাস সারা বৎসরই রোপন করা যায়। সাধারণতঃ বর্ষা মৌসুমেই রোপন করা ভাল। বর্ষার প্রারম্ভে এই ঘাসের কাটিং বা চারা রোপন করা হয়। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে প্রথম বৃষ্টির পর জমিতে চারা বা কাটিং লাগালে প্রথম বছরেই ৩/৪ বার পর্যন্ত ঘাস কাটা যেতে পারে। চারা বা কাটিং লাগানোর পর যদি রৌদ্র হয় বা মাটিতে রস কম থাকে তাহলে চারার গোড়ায় পানি সেচ দিতে হবে।

    জমিচাষ ও রোপন পদ্ধতিঃ

    সমতল জমিতে ৪/৫টি চাষ ও মই দিয়ে জমি আগাছামুক্ত করে কাটিং বা চারা লাগাতে হবে। এই ঘাস আখের কাটিং-এর মত কাটিং অর্থাৎ কান্ডের দুই মাথায় কমপক্ষে দু'টি বা তিনটি গিট রেখে কাটতে হবে। এক সারি হতে অন্য সারির দূরত্ব ৩৬ ইঞ্চি এবং এক চারা হতে অন্য চারার দূরত্ব ১৮ ইঞ্চি। কাটিং ৬-৮ ইঞ্চি গভীরে রোপন করা উচিত। একটি গিট মাটির নীচে, মধ্যের গিট মাটির সমানে রেখে চারা বা কাটিং অনুমানিক ৪৫০ কৌণিকভাবে লাগাতে হয়। সাধারণত জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রথম বৃষ্টির পর অথবা ভাদ্র মাসের শেষ ভাগে যখন বৃষ্টিপাত কম থাকে তখন নেপিয়ার ঘাস লাগানো উত্তম। অতি বৃষ্টিতে কাটিং লাগালে তা পচে যাবার সম্ভাবনা থাকে। মোথা লাগালে অনুরূপভাবে জমি তৈরি করে নির্দিষ্ট দূরত্বে গর্ত করে গর্তের মধ্যে একটি করে চারা লাগাতে হবে। সম্ভব হলে প্রতি গর্তে কিছু পচা গোবর বা মুরগীর বিষ্ঠা দেয়া উত্তম।
    রাস্তা, পুকুরের বাঁধ বা পাহাড়ের ঢালু জমিতে নেপিয়ার চাষ করতে হলে প্রথমে ঢালের আগাছা কোদাল বা কাচি দ্বারা কেটে পরিষ্কার করতে হবে। এরপর নির্দিষ্ট দুরত্বে কোদাল দিয়ে ছোট ছোট গর্ত করে প্রতি গর্তে গোবর বা মুরগীর বিষ্ঠা এবং টিএসপি সার দিয়ে চারা লাগাতে হবে। চারা লাগিয়ে চার পাশ ভাল করে মাটি দিয়ে চেপে দিতে হবে যাতে চারার শিকড় মাটির সাথে লেগে থাকে।

    সার ও পানি সেচ পদ্ধতিঃ

    উন্নত জাতের ঘাসের ফলন বেশি পেতে হলে জমিতে প্রয়োজন অনুসারে সার দিতে হয়। জমির গুণাগুণের উপর নির্ভর করে সার ও পানি সেচ দিতে হবে। বাংলাদেশে বর্ষার সময় ৫/৭ মাস পানি সেচের প্রয়োজন হয় না, শুধু খরার সময় পানির সেচের প্রয়োজন হয়। পচা গোবর ও ফার্মজাত আবর্জনা, পচানো ঘাস হেক্টর প্রতি প্রায় ৩০০০/৪০০০ কেজি জমি চাষের সময় ভালভাবে ছিটিয়ে দিলে মাটিতে পুরোপুরি মিশে যায়। বেশি ফলন পেতে হলে এর সাথে হেক্টর প্রতি ২২৫ কেজি ইউরিয়া, ১৫০ কেজি টিএসপি এবং ৭৫ কেজি মিউরেট অব পটাশ প্রয়োগ করতে হবে। চারা রোপনের পর জমিতে চারা লেগে গেলে অর্থাৎ রোপনের প্রায় ১০/১২ দিন পর হেক্টর প্রতি ৮০ কেজি ইউরিয়া সার দিলে ভাল হয়। প্রত্যেক কাটিং-এর পর দুই সারির মাঝের জমি ভালভাবে লাঙ্গল বা কোদাল দিয়ে মাটি আলগা করে হেক্টর প্রতি ৫০ কেজি ইউরিয়া সার দিলে ভাল ফলন পাওয়া যায়। প্রথম কাটিং ৬০-৮০ দিনের মধ্যে পাওয়া যায়। বর্ষাকালে নেপিয়ারের উৎপাদন ভাল হয়। বৎসরে কমপক্ষে দু'বার (আষাঢ়-শ্রাবণ ও মাঘ-ফাল্গুন মাসে মাটি আলগা করে দিতে হবে। গ্রীষ্মকালে ১০-১২ দিন বিরতিতে এবং শীতকালে ১৫-২০ দিন বিরতিতে পানি সেচ দিলে আশানুরূপ ফলন পাওয়া যায়।

    সাথী ঘাস চাষঃ

    নেপিয়ার ঘাসের সঙ্গে শুটি চাষ করলে একদিকে যেমন জমির উর্বরতা বাড়ে অন্যদিকে ঘাসের পুষ্টিমাণও বৃদ্ধি পায়। স্থায়ী শুটি যেমন সেন্ট্রোসীমা, পয়রো, সিরাট্রো ইত্যাদি এবং অস্থায়ী শুটি যেমন বারসীম, কাউপি, মাসকলাই ও খেসারী ইত্যাদির চাষ করা যেতে পারে। দুই সারি নেপিয়ারের মাঝে এই ঘাসের চাষ করতে হয়।

    ঘাস কাটার নিয়ম ও ফলনঃ

    কাটিং বা মোথা লাগানোর ৬০-৭০ দিন পর প্রথমবার ঘাস সংগ্রহ করা যায় এবং এর পর প্রতি ৬-৮ সপ্তাহ পরপর জমি হতে ঘাস সংগ্রহ করা যায়। মাটির ৫-৬ ইঞ্চি উপর থেকে ঘাস কাটতে হয়। প্রথম কাটিং-এ ফলন একটু কম হলেও দ্বিতীয় কাটিং থেকে পরবর্তী ২/৩ বছর পর্যন্ত ফলন বাড়তে থাকে। এরপর আস্তে আস্তে কমতে থাকে। ৪-৪-১/২ বছর পর পুনরায় কাটিং বা মোথা লাগাতে হবে। বৎসরে প্রতি হেক্টরে ১৪০-১৮০ টনের মত ঘাস উৎপাদিত হয়। সাইলেজ করার ক্ষেত্রে ঘাসে ফুল ফোটার পূর্বে বা পর পরই কাটা ভাল। এতে খাদ্যমান বেশি থাকে।

    খাওয়ানোর নিয়মঃ

    জমি থেকে ঘাস কাটার পর ঘাস যাতে শুকিয়ে না যায় সেদিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে। আস্ত ঘাস গবাদিকে খেতে দিলে অপচয় বেশি হয়। তাই মেশিন, দা অথবা কাঁচি দ্বারা ২-৩ ইঞ্চি লম্বা করে কেটে খাওয়ানো ভাল। এই কাটা ঘাস খড়ের সাথে মিশিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে।
    সংরক্ষণঃ

    নেপিয়ার ঘাস রৌদ্রে শুকিয়ে সংরক্ষণ করা সুবিধাজনক নয়, তবে রাখা যেতে পারে। কাঁচা সবুজ ঘাস ছোট ছোট খন্ড বা টুকরা করে সাইলেজ আকারে সংরক্ষণ করাই উত্তম।

    সাবধানতাঃ

    নেপিয়ারের জমিতে ইউরিয়া সার প্রয়োগের পর অনেক দিন খরা হলে ইউরিয়া হতে নাইট্রেট বা নাইট্রাইট ঘাসের মধ্যে উৎপন্ন হতে পারে এবং পরবর্তীতে অধিক বৃষ্টিপাত হওয়ার পর দ্রুত বেড়ে ওঠা এই ঘাস কেটে খাওয়ানো ঝুকিপূর্ণ। এতে বিষক্রিয়া হতে পারে।

    নিম্নলিখিত সতর্কতা অবলম্বন করলে বিষক্রিয়ার প্রভাব থেকে গবাদিপশুকে মুক্ত রাখা যায়।

    (১) জমিতে সার ছিটাবার ২ (দুই) সপ্তাহের মধ্যে ঘাস কাটা উচিত নয়।

    (২) সার ছিটাবার পরে দীর্ঘ দিন খরা থাকার পর হঠাৎ অধিক বৃষ্টিপাতের পর দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়া ঘাস কেটে খাওয়ানো উচিত নয়।

    (৩) ঘাস কাটার একমাস পূর্বে সার ছিটানো যেতে পারে।

    নেপিয়ার উচ্চ ফলনশীল ঘাস। এই ঘাস চাষের মাধ্যেমে গবাদিপশুর কাঁচা ঘাসের চাহিদা মিটানো সম্ভবপর। কাঁচা ঘাস/সাইলেজের ব্যবহার যথাযথভাবে করতে পারলে দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে যা দ্বারা ক্রমান্বয়ে দেশের দুধের চাহিদা মিটানো যাবে এবং এর ফলে দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য আমদানির মাধ্যমে যে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হচ্ছে তা বহুল অংশে কমানো সম্ভব। বর্তমানে দুধের দাম যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে করে দুধ উৎপাদন বাড়লে কৃষকের যেমন আর্থিক স্বচ্ছলতা বৃদ্ধি পাবে তেমনি দেশের আর্থিক অবস্থারও উন্নতি ঘটবে।

    ঘাসের বীজের জন্য যোগাযোগ করতে পাড়েন-কৃষি ষ্টোর- ০১৯৭১৬২৫২৫২।

    বর্ষার মৌসুমে গো-খাদ্য সংরক্ষণ

  • Share The Gag
  • বর্ষার মৌসুমে গো-খাদ্য সংরক্ষণ

    বাংলাদেশে গো-খাদ্যের খুব অভাব রয়েছে। দেশে চারণ ভূমির পরিমাণ অত্যন্ত কম থাকার ফলে চারণ ভূমিতে গবাদিপশু চরে যৎসামান্য পরিমাণে কাঁচা ঘাস খেতে পারে। কৃষক ভাইয়েরা ফসলা জমিতে ঘাস চাষ করে গরুকে খাওয়াতে তেমন একটা আগ্রহ প্রকাশ করেন না।

    আবার বাংলাদেশে গম ও ডাল জাতীয় ফসলের উৎপাদন মোটেও আশানুরূপ নয়। ফলে ভূষি উৎপাদন চাহিদার তুলনায় অনেক কম হয়। এ কারণে বাজারে ভূষির দাম সবসময় অত্যধিক থাকে। তবে আঁশ জাতীয় খাদ্য যেমন খড় ও দেশী ঘাস সে তুলনায় বেশি পরিমাণে উৎপাদিত হলেও কৃষক ভাইয়েরা সে সবের সংরক্ষণ পদ্ধতির বিষয়ে তেমন ওয়াকিবহাল নন। ফলে এ জাতীয় খাদ্যের উদ্বৃত্ত অংশ পচে নষ্ট হয়ে যায়।দেশে প্রতি বছর বন্যাতেও প্রচুর পরিমাণে গো-খাদ্য বিভিন্নভাবে বিনষ্ট হয়।ধান কাটার সময় কিছু এলাকার কৃষক ভাইয়েরা ধান গাছের ৬-৮ ইঞ্চি উপরে না কেটে প্রায় ১-১১২ ফুট উপর থেকে কেটে নেয়। ফলে খড়ের উৎপাদন স্বভাবতই কম হয়। তাই ভিজা খড় ও কাঁচা ঘাস সংগ্রহ ও সংরক্ষণ পদ্ধতির উপর কৃষক ভাইদের সম্যক জ্ঞান থাকা একান্ত প্রয়োজন।

    বর্ষাকালে কাঁচা ও ভিজা খড় সংরক্ষণ পদ্ধতি:

    আমাদের দেশে গরুর প্রধান খাদ্য হল খড়। বর্ষাকালে ইরি-বোরো ও আউশ ধানের খড় বেশির ভাগ ভিজে পচে নষ্ট হয়ে যায়। এ পচনশীল খড় বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে সংরক্ষণ করা হলে দেশে গো-খাদ্যের চাহিদা অনেকটা পূরণ হতে পারে। ইউরিয়া সহযোগে খড় প্রক্রিয়াজাতকরণের পদ্ধতি নিম্নে বর্ণিত হলো।

    উপকরণঃ

    প্রতি ১০০ কেজি খড়ের জন্য ১.৫-২.০০ কেজি ইউরিয়া সার এবং আচ্ছাদন দেয়ার জন্য পলিথিন পেপার।

    প্রক্রিয়াজাতকরণ পদ্ধতি:

    প্রথমে পানি জমে না এমন একটি উঁচু ও সমতল স্থান বাছাই করতে হবে।

    বাছাইকৃত উঁচু জায়গাটি পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।

    এরপর পলিথিনের উপরে খড় বিছাতে হবে এবং

    ৮-১০ ইঞ্চি করে খড়ের স্তর করে তার উপর পরিমাণ মত ইউরিয়া ছিটাতে হবে।

    খড়ের স্তর করার সময় পা দিয়ে খুব চেপে চেপে খড় রাখতে হবে যাতে খড়ের গাদায় বাতাস না থাকে।

    খড়ের গাদা তৈরি শেষ হয়ে গেলে পলিথিন দিয়ে এমনভাবে ঢেকে দিতে হবে যাতে বাহির থেকে বাতাস এবং পানি প্রবেশ না করতে পারে।

    প্রক্রিয়াজাত খড় খাওয়ানোর নিয়ম:

    ৭-১০ দিন পর গাদা থেকে খড় বের করার পর কিছুক্ষণ ছায়াযুক্ত স্থানে রেখে তারপর খাওয়াতে হবে। এর ফলে গাদায় উৎপাদিত এমোনিয়া গ্যাস বের হয়ে যায়। এ খড়ের সাথে শতকরা ৪০ ভাগ হারে সাধারণ শুকনা খড় মিশিয়ে খাওয়ালে এমোনিয়াজনিত কোনো বিষক্রিয়া হবার সম্ভাবনা থাকে না।

    লক্ষণীয় বিষয়সমূহ:
    এই খড়ের গাদা প্রয়োজনে ১ বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায় এবং প্রয়োজনের সময় গরুকে খাওয়ানো যায়। ভিজা খড় সংরক্ষণের ক্ষেত্রে যদি খড়ে বেশি পানি থাকে তবে কিছুক্ষণ উঁচু জায়গায় রাখলে পানি কমে যাবে অথবা এই খড়ের সাথে স্তরে স্তরে শুকনা খড় মিশানো উচিত। খড়ের গাদা ঢাকার জন্য ছেঁড়া বা ফাটা পলিথিন ব্যবহার করা যাবে না। গাদা এমনভাবে ঢেকে রাখতে হবে যাতে এর ভিতর বাতাস বা পানি প্রবেশ করতে না পারে।

    বর্ষাকালে কাঁচা ঘাস সংরক্ষণ পদ্ধতি:
    আমাদের দেশে বর্ষাকালে দূর্বা, বাকসা, আরাইল, সেচি, দল, শস্য ক্ষেতের আগাছা ইত্যাদি জাতীয় কাঁচা ঘাস প্রচুর পাওয়া যায় অথবা জমিতে চাষ করা নেপিয়ার, পারা, ভুট্টা, সরগম, ওট ইত্যাদি খুব সহজেই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সাইলেজ করে ১ বছর পর্যন্ত পশুকে খাওয়ানো যেতে পারে।
    ১০০ ঘনফুট একটি মাটির গর্তে ২.৫-৩.০ মেট্রিক টন ঘাস সংরক্ষণ করা যায়।

    উপকরণ:
    ১০০ কেজি কাঁচা ঘাসের জন্য ৩-৪ কেজি চিটা গুড়, চিটা গুড়ের সমপরিমাণ পানি, শুকনা খড় ও পলিথিন কভার।
    সাইলেজ প্রস্তুতের পদ্ধতি:

    প্রথমে পানি জমে না এমন একটি উঁচু স্থান নিবার্চন করতে হবে।

    সেখানে এমনভাবে একটি গর্ত খুঁড়তে হবে যাতে গর্তের নীচের অংশ পাতিলের তলার মত অথবা ইংরেজি বর্ণমালার ইউ এর আকৃতি হয় যাতে সেখানে কোনো কৌণিক অংশ না থাকে।

    এরপর গর্তের মাটিতে পুরু করে শুকনা খড় বিছিয়ে দিতে হবে।

    এবার গর্তে পরতে পরতে সবুজ ঘাস ও শুকনা খড় বিছিয়ে দিতে হবে ( প্রতি পরতে ৩০০ কেজি সবুজ ঘাস ও ১৫ কেজি শুকনো খড় থাকবে)।

    প্রতি পরতে পরিমাণ মতা চিটাগুড় পানিতে গুলে ঘাসের উপর ছিটিয়ে দিতে হবে (৯-১২ কেজি চিটা গুড় ও ৮-১০ কেজি পানি)।

    মাঝে মাঝে ঘাসের স্তরের উপর পা দিয়ে চাপ দিতে হবে যাতে ভিতরে বাতাস না থাকতে পারে।

    ঘাসে পানির পরিমাণ বেশি হলে স্তরের মাঝে শুকনা খড় দিতে হবে। ফলে খড় অতিরিক্ত পানি শুষে নেবে।

    এই ভাবে স্তরে স্তরে ঘাস সাজিয়ে মাটির উপরে কোমর সমান উঁচু করতে হবে।

    সবশেষে শুকনা খড় দিয়ে পুরু করে আস্তরণ দ্বারা পলিথিন দিয়ে ভালোভাবে ঘাসের গাদা ঢেকে দিতে হবে।

    লক্ষণীয় বিষয়:

    এই ঘাসের গাদা ১ বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়। কিছু দিন পর ঘাসের রং বিবর্ণ হলেও তা খাওয়ানোর উপযোগী থাকে। চিটাগুড় পাতলা হলে পরিমাণ বাড়িয়ে পানি কম করে মেশাতে হবে।

    ভুট্টার গাছ সংরক্ষণ ও আপদকালীন খাদ্য সরবরাহ:

    বর্ষাকালে ভুট্টা সংগ্রহ করার পর ভুট্টার গাছ শুকিয়ে দা দিয়ে ছোট ছোট টুকরা করে বস্তায় বেঁধে রেখে দিলে বর্ষা বা বন্যার সময় আপদকালে গরুকে খাওয়ানো যায়। ভুট্টা গাছের টুকরা পানিতে ভিজিয়ে চিটাগুড় দিয়ে মাখিয়ে দিলে গরু খায়।

    শুকনো খড় সংরক্ষণ:

    শুকনো খড়ের সতূপে খড়ের গুণগত মান ভালো আছে কিনা তা মাঝে মধ্যে সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করতে হয়। কারণ, সতূপ (পালা) তৈরির সময় কোনো ত্রুটি থাকলে বর্ষাকালে সতূপের ভিতর পানি ঢুকে খড় পচে যেতে পারে। ঐ পচা খড় গরুকে খাওয়ালে বিষক্রিয়া বা ডায়রিয়া হতে পারে।

    ভূষি ও কুড়া সংরক্ষণ:

    বর্ষাকালে ভূষি ও চাউলের কুড়ার বস্তার মুখ খুব ভালো করে বেঁধে ঘরের মাচার উপরে রাখতে হবে। দানাদার খাদ্যের বস্তা কখনও মাটিতে রাখা যাবে না। অবশ্যই মাচার উপর শুষ্ক স্থানে রাখতে হবে। তা না হলে এতে ছত্রাক জন্মাবে। এ জাতীয় খাদ্য খেলে গবাদিপশু বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা থাকে।

    এ সমস্ত কারণে গবাদিপশুকে খাদ্য প্রদানের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সজাগ হতে হবে।গবাদিপশুর উৎপাদন ও দৈহিক ওজন বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য যথারীতি সরবরাহ অত্যন্ত জরুরি। এছাড়াও গর্ভবতী গাভীর জন্য পুষ্টিকর খাদ্য প্রদান নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখা প্রয়োজন যে সুস্থ ও স্বাস্থ্যবান গবাদিপশু সহজে বিশেষ করে পুষ্টিহীনতা, পেটের পীড়া ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হয় না।এজন্য স্বাস্থ্যসম্মতভাবে গো-খাদ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ অতীব গুরুত্বপূর্ণ।

    Saturday, April 8, 2017

    ধানের বাদামী দাগ রোগ দমন

  • Share The Gag
  • ধানের বাদামী দাগ রোগ দমন

    লক্ষণ:

    পাতায় প্রথমে তিলের দানার মতো ছোট ছোট বাদামী দাগ হয়। ক্রমান্বয়ে বেড়ে ওঠা গোলাকৃতি দাগের মাঝখানটা অনেক সময় সাদাটে ও কিনারা বাদামী রঙের হয়। একাধিক দাগ মিলে বড় দাগের সৃষ্টি হয়ে সমস্ত পাতাটিই দাগে পরিপূর্ণ হয়ে যেতে পারে এবং গাছটি মরে যেতে পারে।

    ব্যবস্থাপনা:

    .  বীজতলা বা জমিতে পরিমিত সেচ দেয়া।

    . জমিতে পর্যাপ্ত পরিমানে নাইট্রোজেন ও পটাশ সার ব্যবহার করা।

    . পরিমানমতো ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ করলে এ রোগ আর বাড়তে পারেনা।

    .  রোগ বেশি মাত্রায় দেখা দিলে কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন: এমকোজিম ৫০ ডব্লিউপি ১ গ্রাম বা নোইন ৫০ ডব্লিউপি ২ গ্রাম অথবা হেক্সাকোনাজল গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন: কনটাফ ৫ ইসি অথবা সাবাব ৫ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি হারে মিশিয়ে স্প্রে করা। অথবা এই গ্রুপের অন্য নামে অনুমোদিত ছত্রাকনাশক অনুমোদিত মাত্রায় স্প্রে করা ।
    পরবর্তীতে যা যা করবেন না:

    ১. আক্রান্ত ক্ষেত থেকে বীজ সংগ্রহ করবেন না

    পরবর্তীতে যা যা করবেন:

    ১. রোগমুক্ত বীজ ব্যবহার করুন

    ২. বপনের পূর্বে কেজি প্রতি ৩ গ্রাম প্রোভ্যাক্স বা কার্বেন্ডাজিম মিশিয়ে বীজ শোধন করুন।

    ৩. ফসল কাটার পর আক্রান্ত জমি ও তার আসে-পাশের জমির নাড়া পুড়িয়ে দিন।

    পাটের বিছা পোকা দমন

  • Share The Gag
  • পাটের বিছা পোকা দমন

    পাতার উল্টো পিঠের সবুজ অংশ খেয়ে পাতাকে সাদা পাতলা পর্দার মত করে ফেলে।এরা সারা মাঠে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো পাতা খেয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে।

    প্রতিকার:

    ১. প্রাথমিক পাটের পাতায় ডিমের গাদা বা পোকা দেখলে তা তুলে ধ্বংস করা।

    ২. ডিম অথবা আক্রমণের প্রথম অবস্থায় কীড়াগুলো যখন পাতায় দলবদ্ধ অবস্থায় থাকে তখন পোকা সমেত পাতাটি তুলে পায়ে মাড়িয়ে বা গর্তে চাপা দিয়ে মারা।

    ৩.পাট ক্ষেতের আশে পাশে বা অন্য আগাছা থাকলে তা পরিস্কার করা।

    ৪.বিছা পোকা যাতে এক ক্ষেত হতে অন্য ক্ষেতে ছড়াতে না পারে সে জন্য প্রতিবন্ধক নালা তৈরী করা যায়।

    ৫. অধিক আক্রমণের ক্ষেতে কার্বারিল গ্রুপের কীটনাশক যেমন: ভিটাব্রিল বা ক্যালভিন বা র‌্যাভিন প্রতি লিটার পানির সাথে ৩ গ্রাম বা কুবারিল ২ গ্রাম অথবা ক্লোরপাইরিফস গ্রুপের কীটনাশক যেমন: কম্পল বা কিংগোল্ট ১ মিলি/ লি হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা

    পরবর্তীতে যা যা করবেন না:

    ১. ক্ষেতের আশ পাশ অপরিচ্ছন্ন রাখবেন না

    পরবর্তীতে যা যা করবেন:

    ১. নিয়মিত মাঠ পরিদর্শন করে আক্রমণের শুরুতেই ব্যবস্থা নিন

    Wednesday, April 5, 2017

    আমের মিলিবাগ

  • Share The Gag
  • আমের মিলিবাগ

    সাদা সাদা অসংখ্য পোকা একসাথে থাকে কখনও কখনও বিচ্ছিন্ন ভাবেও থাকে।এরা রস চুষে খায় এবং এক ধরনের আঠালো মিষ্টি রস নিঃস্বরণ করে যা খাবার জন্য পিপিলিকার আগমন ঘটে। এর আক্রমণ বেশি হলে শুটি মোল্ড ছত্রাকের আক্রমণ ঘটে এবং আক্রান্ত অংশ এমনকি পুরো গাছ মরে যায় । এর প্রতিকার হল ১. প্রাথমিক অবস্থায় হাত দিয়ে পিশে পোকা মেরে ফেলা ২. ব্রাশ দিয়ে ঘসে পোকা মাটিতে ফেলে মেরে ফেলা ।৩. ইমিডাক্লোরোপ্রিড গ্রুপের কীটনাশক যেমন : ইমিটাফ বা ২ মি.লি. / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।



     

     

    [caption id="attachment_4512" align="aligncenter" width="415"]আমের মিলিবাগ আমের মিলিবাগ[/caption]

    পরবর্তীতে যা যা করবেন না :

    ১. বাগান অপরিচ্ছন্ন রাখবেন না:

    পরবর্তীতে যা যা করবেন :

    ০. ফেব্রুয়ারি- মার্চ মাসের দিকে গাছের গোড়ায় আঠাযুক্ত ফিতা বা প্লাস্টিকের মসৃণ ফিতা পেচিয়ে বা ফানেল স্থাপন করুন তাতে পোকা গাছ বেয়ে উপরে উঠতে পারবে না।

    ১.ফল সংগ্রহ শেষ হলে গাছের মরা ডালপালা, ফলের বোটা, রোগ বা পোকা আক্রান্ত ডাল পালা ও অতিঘন ডাল পালা ছাটাই করে পরিস্কার করে দিন

    ২. পরিস্কার করার পর একাট ছত্রাক নাশক ও একটি কীটনাশক দ্বারা পুরো গাছ ভালভাবে স্প্রে করুন

    ৩. নিয়মিত বাগান পরিদর্শন করুন।

    ঔষধের জন্য যোগাযোগ করুন কৃষি ষ্টোর- ০১৯৭১৬২৫২৫২।

    আমের ফল ঝড়ে যাওয়া সমস্যা সমাধান

  • Share The Gag
  • আমের ফল ঝড়ে যাওয়া সমস্যা

    রোগ বা পোকার আক্রমণে বা দীর্ঘ খরা হলে বা শুষ্ক ও গরম হাওয়ার ফলে শারীরবৃত্তীয় কারণে অথবা মাটিতে সারের ঘাটতি হলেও ফল ঝড়ে যেতে পারে । এর ব্যবস্থাপনা হল:

    ১. খরা মৌসুমে নিয়মিত সেচ দেওয়া

    ২. গুটি বাধার পরপরই ম্যাগনল ০.৫ মি.লি/ লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা

    ৩. বর্ষার আগে ও পরে বছরে দুইবার গাছের বয়স অনুযায়ী সুষম সার প্রয়োগ করা।

    ৪. প্রতি বছর গাছ প্রতি ৫০ গ্রাম হারে ডলোচুন প্রয়োগ করা ( গাছের বয়স অনুযায়ী পরিমান বাড়াতে হবে)।

    ৫. পর্যাপ্ত জৈব সার প্রয়োগ করা।
    পরবর্তীতে যা যা করবেন না :

    ১. বাগান অপরিচ্ছন্ন রাখবেন না

    পরবর্তীতে যা যা করবেন :

    ১.ফল সংগ্রহ শেষ হলে গাছের মরা ডালপালা, ফলের বোটা, রোগ বা পোকা আক্রান্ত ডাল পালা ও অতিঘন ডাল পালা ছাটাই করে পরিস্কার করে দিন

    ২. পরিস্কার করার পর একটি ছত্রাক নাশক ও একটি কীটনাশক দ্বারা পুরো গাছ ভালভাবে স্প্রে করুন

    ৩. নিয়মিত বাগান পরিদর্শন করুন।

    পেপের সুটি মোল্ড রোগের সমাধান

  • Share The Gag
  • পেপের সুটি মোল্ড রোগ

    এ রোগের আক্রমনে পাতায় , ফলে ও কান্ডে কাল ময়লা জমে। মিলিবাগের আক্রমন এ রোগ ডেকে আনে।

    প্রতিকার :

    মিলিবাগ দমণের জন্য - ১. আকান্ত পাতা ও ডগা ছাটাই করে ধ্বংস করা।

    ২. গাছের গোড়ার মাটি থেকে 15-20 সেমি উপরে স্বচ্ছ পলিথিন দ্বারা মুড়ে দিতে হবে যাতে মিলিমাগ গাছে উঠতে না পারে।

    ৩. সম্ভব হলে হাত দিয়ে ডিম ব বাচ্চার গাদা সংগ্রহ করে ধ্বংস করা।

    ৪. জৈব বালাইনাশক নিমবিসিডিন (0.4%) ব্যবহার করা।

    ৫. আক্রমণ বেশী হলে প্রতিলিটার পানিতে 2 মিলি রগর টাফগর, সানগর বা সুমিথিয়ন 2 মিলি মিপসিন বা সপসিন মিশিয়ে স্প্রে করা। পেপের সুটি মোল্ড রোগের আক্রমণ খুব বেশি হলে # টিল্ট ২৫০ ইসি ১০ লি. পানিতে ৫ মি.লি. মিশিয়ে ১৫ দিন পরপর ২ বার স্প্রে করা যেতে পারে।

    ধানের বাদামী গাছফড়িং এর সমাধান

  • Share The Gag
  • ধানের বাদামী গাছফড়িং

    লক্ষণ:

    এটি কারেন্ট পোকা নামেও পরিচিত। এটি ধানের অতি ক্ষতিকর একটি পোকা।এরা খুব তাড়াতাড়ি বংশ বৃদ্ধি করে, ফলে এ পোকার সংখ্যা এত বেড়ে যায় যে, আক্রান্ত ক্ষেতে বাজ পড়ার মত হপারবার্ণ - এর সৃষ্টি হয়। আক্রান্ত গাছগুলো প্রথমে হলদে হয় এবং পরে শুকিয়ে মারা যায়। লম্বা পাখাবিশিষ্ট পূর্ণবয়স্ক বাদামী ফড়িংগুলো প্রথমে ধান ক্ষেতে আক্রমণ করে। এরা পাতার খোলে এবং পাতার মধ্য শিরায় ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে বাচ্চা (নিমফ) বের হতে ৭-৯ দিন সময় লাগে। বাচ্চাগুলো ৫ বার খোলস বদলায় এবং পূর্ণবয়স্ক ফড়িং এ পরিণত হতে ১৩-১৫ দিন সময় নেয়। প্রথম পর্যায়ের (ইনস্টার) বাচ্চাগুলোর রং সাদা এবং পরের পর্যায়ের বাচ্চাগুলো বাদামী। বাচ্চা থেকে পূর্ণবয়স্ক বাদামী গাছফড়িং ছোট পাখা এবং লম্বা পাখা বিশিষ্ট হতে পারে। ধানে শীষ আসার সময় ছোট পাখা বিশিষ্ট ফড়িং এর সংখ্যাই বেশী থাকে এবং স্ত্রী পোকাগুলো সাধারণত: গাছের গোড়ার দিকে বেশি থাকে। গাছের বয়স বাড়ার সাথে সাথে লম্বা পাখা বিশিষ্ট ফড়িং এর সংখ্যাও বাড়তে থাকে, যারা এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় উড়ে যেতে পারে।

    ব্যবস্থাপনা:

    আক্রান্ত জমিতে বিলি কেটে আলো চলাচলের ব্যবস্থা করা ।



    জমিতে জমে থাকা পানি সরিয়ে ফেলা।



    উর্বর জমিতে ইউরিয়া সারের উপরি প্রয়োগ পরিহার করা ।



    বাদামী গাছফড়িং প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন জাত যেমন: ব্রি ধান-৩৫ চাষ করা।



    ক্ষেতে শতকরা ৫০ ভাগ গাছে অন্ততঃ একটি মাকড়সা থাকলে কীটনাশক প্রয়োগ না করা।



    শতকরা ৫০ ভাগ ধান গাছে ২-৪টি ডিমওয়ালা স্ত্রী পোকা অথবা ১০টি বাচ্চা পোকা প্রতি গোছায় পাওয়া গেলে অনুমোদিত কীটনাশক ব্যবহার করা। যেমন: আইসোপ্রোকার্ব গ্রুপের কীটনাশক যেমন: মিপসিন বা সপসিন ২.৬ গ্রাম / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা । ( ১০ লিটার পানিতে ২৬ গ্রাম মিপসিন বা সপসিন মেশালে ৫ শতাংশ জমি স্প্রে করা যাবে।) অথবা ইমিডাক্লোপ্রিড গ্রুপের কীটনাশক যেমন: ইমিটাফ ১২৫ মিলি/ হেক্টর (০.২৫ মিলি/ লি) হারে বা ইমপেল (০.৫ মিলি/ লি) হারে অথবা ক্লোরপাইরিফস গ্রুপের কীটনাশক যেমন: ক্লাসিক ২ মিলি/ লি. হারে পানিতে মিশিয়ে গাছের গোড়ায় স্প্রে করা



    অবশ্যই ক্ষেতে বিলি কেটে গাছের গোড়ায় স্প্রে করতে হবে।



    পরবর্তীতে যা যা করবেন না:

    ১. বিলম্বে চারা রোপন করবেন না:

    পরবর্তীতে যা যা করবেন:

    ১. যে সব এলাকায় সব সময় বাদামী গাছফড়িং এর উপদ্রব হয় সে সব এলাকায় তাড়াতাড়ি পাকে ( যেমন: বিনা ধান-৭ বা ব্রি ধান৩৩ ) এমন জাতের ধান চাষ করুন ।
    ২. চারা থেকে চারা ৩০ সে.মি ও লাইন থেকে লাইন ৪০ সেন্টিমিটার দূরে দূরে লাগান।
    ৩. জমিতে সুষম পরিমানে ইউরিয়া, টিএসপি এবং পটাশ সার ব্যবহারের জন্য এনপিকে গুটি প্রয়োগ করুন ।
    ৪. ফসল কাটার পর আক্রান্ত জমি ও তার আসে-পাশের জমির নাড়া পুড়িয়ে দিন।

    Tuesday, April 4, 2017

    হালদা রক্ষায় রাবার ড্যামের বিকল্প খুঁজছে কৃষি মন্ত্রণালয়

  • Share The Gag
  • হালদা রক্ষায় রাবার ড্যামের বিকল্প খুঁজছে কৃষি মন্ত্রণালয়



    কৃষিজমিতে সেচ সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১১ সালে হালদা নদীর ফটিকছড়ির ভুজপুরে এবং নদীটির শাখা হারুয়ালছড়ি খালে দুটি রাবার ড্যাম নির্মাণ করা হয়। এসব ড্যামের মাধ্যমে শুষ্ক মৌসুমে নদীর উজান থেকে সরিয়ে নেয়া হয় পানি। এতে পানির প্রবাহ কমে যাওয়ায় হুমকির মুখে পড়ে স্বাদু পানির মাছের সবচেয়ে বড় প্রজননক্ষেত্র হালদা। এ অবস্থায় হালদা রক্ষায় রাবার ড্যামের ব্যবহার থেকে বেরিয়ে আসার চিন্তা করছে সরকার। কৃষিতে পানি ব্যবহারের একটি বিকল্প প্রকল্পও হাতে নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। শিগগিরই এটি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

    কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কৃষকদের ক্ষতি না করে হালদায় রাবার ড্যামের বিকল্প ব্যবস্থা নিতে এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে চট্টগ্রামের বেশ কয়েকটি উপজেলার কৃষকদের হালদার পানি ব্যবহার থেকে সরিয়ে নেয়া হবে। পাশাপাশি ধীরে ধীরে রাবার ড্যামগুলো সরিয়ে নেয়ার মাধ্যমে উত্স থেকে নদীতে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করা হবে।

    এ বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ্ বণিক বার্তাকে বলেন, হালদাকে রক্ষার জন্য কাজ করছে সরকার। এজন্য বিভিন্ন দপ্তরকে নিজ নিজ ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করতে নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, রাউজান এলাকার মানুষের কৃষিতে পানির ব্যবহার নিশ্চিত করতে রাবার ড্যাম স্থাপন করা হয়েছিল। তবে এরই মধ্যে রাবার ড্যামের নির্ভরতা কমাতে একটি প্রকল্পও প্রস্তুত করেছি আমরা। শিগগিরই এটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে। এটি বাস্তবায়ন হলে হালদার পানির ব্যবহার কমিয়ে ভিন্নভাবে ওইসব এলাকায় কৃষিতে পানির ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে।

    হালদা নদীর উজানে ছয় বছর আগে কৃষি মন্ত্রণালয় নির্মিত এ দুটি রাবার ড্যামে সে সময় প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়েছিল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। তবে  দেরিতে হলেও রাবার ড্যাম স্থাপনের বিষয়টি ভুল ছিল বলে স্বীকার করেছেন এলজিইডির কর্মকর্তারা।

    সম্প্রতি রাবার ড্যাম এলাকা পরিদর্শন করেন এলজিইডির পার্টিসিপেটরি স্মল স্কেল ওয়াটার রিসোর্সেস সেক্টর প্রকল্পের পরিচালক শেখ মো. নুুরুল ইসলাম। এ সময় হালদার মতো জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ নদীতে রাবার ড্যাম নির্মাণের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী এলজিইডি রাবার ড্যাম নির্মাণে কারিগরি সহযোগিতা দিলেও হালদায় রাবার ড্যামের নেতিবাচক ফলাফল নিয়ে অবগত ছিল না। মত্স্য বিভাগের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা না থাকায় এলজিইডি রাবার ড্যাম নির্মাণে কাজ করে। দেশের স্বার্থে হালদা নদীকে রক্ষায় রাবার ড্যামমুক্ত করতে এলজিইডি কাজ করবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

    এদিকে গত ২৮ মার্চ নদী কমিশনের চেয়ারম্যান আতাহারুল ইসলাম ও সদস্য মো. আলাউদ্দিন মানিকছড়ি থেকে ভুজপুর পর্যন্ত হালদা নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। ওই সময় স্থানীয় কৃষকদের তামাক চাষে নিরুত্সাহিত করার পাশাপাশি হালদার পানির ব্যবহার কমানোর বিষয়ে অবহিত করেন তিনি।

    হালদা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া বলেন, ‘পরিবেশবাদীরা বিভিন্ন সময় হালদায় রাবার ড্যাম নির্মাণের বিরোধিতা করেছিলেন। কিন্তু মত্স্য বিভাগের উদাসীনতায় এলজিইডি ও কৃষি মন্ত্রণালয় দুটি রাবার ড্যাম নির্মাণ করে। কয়েক বছরের মধ্যে এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে হালদায়। প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণার প্রাক্কালে সব সরকারি সংস্থা এখন হালদা রক্ষায় এগিয়ে আসছে। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে কাজ না করলে এসব উদ্যোগও সুফল বয়ে আনবে না।’

    চট্টগ্রামের হালদা নদীকে ইসিএ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় অনেক আগেই। কয়েক দফা সরেজমিন পরিদর্শন শেষে ইসিএ ঘোষণার বিষয়টি এখন বাস্তবায়নের অপেক্ষায় রয়েছে। পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকে এরই মধ্যে একটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। শিগগিরই এটি রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তের জন্য পাঠানো হবে।

    ছয় বছর আগে দুটি রাবার ড্যাম নির্মাণ ছাড়াও পাকিস্তান আমলে ফটিকছড়ি সদর এলাকায় হালদার আরেক শাখা ধুুরুং খালে কংক্রিট বাঁধ নির্মাণ করা হয়। দুটি রাবার ড্যাম ও একটি কংক্রিট বাঁধের মাধ্যমে শুষ্ক মৌসুমে উজানে পানি ধরে রাখার কারণে হুমকির মুখে পড়ে হালদা। পানিপ্রবাহ কমে যাওয়ায় প্রজনন ছাড়াও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। প্রতি বছর মে-জুনে হালদা নদীতে এক বা একাধিকবার মা-মাছ প্রাকৃতিকভাবে ডিম ছাড়লেও ২০১৬ সালে কোনো ডিম ছাড়েনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ডিম সংগ্রহকারী ও পরিবেশ সংগঠকদের দাবির মুখে হালদা নিয়ে একটি গবেষণা কার্যক্রম হাতে নেয় সরকার।

    পানি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ইমেরিটাস ড. আইনুন নিশাতের তত্ত্বাবধানে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। মত্স্য ও পাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে বাংলাদেশ মত্স্য গবেষণা ইনস্টিটিউট। এক বছর ধরে গবেষণা কার্যক্রমের পর সরকার হালদার ওপর নির্মিত রাবার ড্যামের বিষয়ে একটি স্থায়ী সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে।

    বিশ্বের একমাত্র জোয়ার-ভাটাসমৃদ্ধ নদী হালদা স্বাদু পানির মাছের প্রাকৃতিক প্রজননক্ষেত্র। রুইজাতীয় মাছের নিষিক্ত ডিম সংগ্রহ করা হয় এ নদী থেকে। প্রতি বছর হালদা থেকে পাওয়া রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালিবাউশ মাছের পোনা সারা দেশের মত্স্যচাষীরা প্রতি কেজি ৫০-৬০ হাজার টাকায় কিনে নেন। হালদার ডিম ও পোনা থেকে ভালো মানের মাছ চাষে লাভবান হন কৃষক। গবেষকদের মতে, হালদার একটি মা-মাছ প্রতি বছর প্রায় চার কোটি টাকার আর্থিক সুবিধা দেয় দেশকে। এ অবস্থায় ইসিএ ঘোষণার মাধ্যমে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে আনা হলে হালদার মাধ্যমে মত্স্য খাতে দেশের অগ্রগতি বেগবান হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

    সোর্স- বনিকবার্তা