Friday, May 26, 2017

কারিপাতা বিস্তারিত ও চাষাবাদ নিয়ম

  • Share The Gag
  • হিমালয়ের পাদদেশ থেকে শুরু করে সুন্দরবনসংলগ্ন জনপদেও দেখেছি কারিপাতার গাছ জন্মাতে। তবে কারিপাতার রান্না তামিলনাড়ুর চিদাম্বরমে আন্নামালাই বিশ্ববিদ্যালয়ে খেয়ে তবেই না এর স্বাদ বুঝেছি। কারিপাতাগাছ এ দেশে পরিচিত গাছ হলেও সুগন্ধি গাছ হিসেবে এর ব্যবহার প্রায় নেই বললেই চলে। কারিপাতা এদেশে কোথাও কোথাও নিমভুতগাছ হিসেবে পরিচিত। বনে জঙ্গলে জন্মে, আপনা আপনি হয়। কেউ কখনো এ গাছ লাগায় না। এগাছ অবশ্য কেউ কেউ কবিরাজী কাজে ব্যবহার করে থাকেন। তবে এর সুগন্ধি পাতা ব্যবহার করে এদেশে কেউ কখনো রান্না করেন না। কিন্তু ভারতের তামিলনাড়ুতে গিয়ে কারিপাতা ছাড়া রান্না কেউ না খেয়ে ফিরে এসেছে এমনটি শোনা যায়নি। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে দক্ষিণ ভারতে রান্নাকে সুগন্ধিযুক্ত করতে কারিপাতার ব্যবহার চলে আসছে। খাদ্যকে শুধু সুস্বাদু করাই নয়, এ পাতার কিছু ভেষজগুণও আছে। তাই আমাদের বুনো এ গাছটির পাতা তেজপাতার মতো মসলা হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। আর এ গাছ চাষে আলাদা কোনো জমি দরকার নেই। বাড়ির আশপাশে যেসব বাগানের ভেতর ছায়া ছায়া ফাঁকা জায়গা পড়ে রয়েছে সেসব পতিত জায়গা ব্যবহার করে কারিপাতা উৎপাদন করে বাড়তি আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করা যেতে পারে।


    গাছের পরিচয়


    মূলত কারি বা ঝোল তরকারি রান্নার জন্য এ গাছের পাতা ব্যবহার করা হয় বলে এর ইংরেজি নাম কারি লিফ, বাংলায় কারি পাতা। বাংলায় স্খানীয় কিছু নামও আছে- নিমভুত, বারসাঙ্গা ইত্যাদি। তামিল ভাষায় বলে কারিভেম্পু, তেলেগুতে কারেপাকু। হিন্দিতে বলে কাঠনিম, মিঠানিম, গোরানিম, গাধেলা, কারি পাত্তা ইত্যাদি। উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম abcdr, পরিবার রুটেসী। অর্থাৎ কারি পাতা ও কামিনী ফুলের গাছ একই গোত্রের। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৫০০ মিটার উঁচুতেও কারিপাতাগাছ জন্মাতে পারে। গাছ মাঝারি উচ্চতার, উচ্চতায় ৫-৬ মিটার হয়। পাতা দেখতে অনেকটা নিম পাতার মতো। পাতায় সালফারঘটিত এক ধরনের উদ্বায়ী তেল থাকার কারণে সুন্দর ঝাঁঝাল গন্ধ আসে। কাঁচা পাতা ডললে পাতা থেকে গোলমরিচ, লবঙ্গ, মরিচ, আদা ইত্যাদি মসলার মিশ্রিত এক প্রকার ঘ্রাণ বের হয়। এই সুগন্ধির জন্যই কারিপাতা রান্নায় মসলাপাতা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। পাতা পক্ষল ও যৌগিক, নিমপাতার মতোই। তবে পাতাগুলো ডালের মাথা থেকে চারদিকে সূর্যের রশ্মির মতো ছড়িয়ে পড়ে। তাই পত্রবিন্যাস সুন্দর দেখায়। প্রতিটি পাতায় অনুপত্রকের সংখ্যা ৯-১৫টি। অনুপত্রকের কিনারা খাঁজকাটা, অগ্রভাগ সূচালো। ডালের মাথায় পুষ্পমঞ্জরীতে সাদা রঙের ফুল ফোটে, ফুলেও সুগন্ধ আছে। ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে ফুল ফোটে। ফুল থেকে নিমের মতো ফল হয়। ফল ডিম্বাকার থেকে গোলাকার, কাঁচা ফলের রঙ সবুজ। পরিপক্ব হওয়ার সাথে সাথে লালচে থেকে কালো হয়ে যায়। বীজ থেকে সহজে চারা হয়।




    ব্যবহার


    সুগন্ধি মসলা হিসেবে সবুজ পাতা রান্নায় ব্যবহার করা যায়। পাতায় ৬.১% প্রোটিন, ১.০% তেল, ১৬% শ্বেতসার, ৬.৪% আঁশ ও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি (৪ মিলিগ্রাম/১০০গ্রাম পাতা) আছে। কাঁচা কারিপাতা কয়েকটা জলতে ধুয়ে রান্নার সময় তার ভেতরে ছিঁড়ে দিলে রান্নায় সুঘ্রাণ ও ঝাঁঝ আসে। গরু ও খাসির গোশত, মিশ্র সবজি, ডাল ইত্যাদি কারিপাতা দিয়ে রান্না করা যায়। কারিপাতা শুকনো করে গুঁড়ো হিসেবে কারি পাউডার তৈরি করা যায়। বোতলে ভরে রেখে রান্নার সময় তা ব্যবহার করা যায়। তবে কাঁচা পাতায় ঘ্রাণ বেশি।


    কারিপাতা, গাছ, শিকড় সবই ভেষজ গুণসম্পন্ন। গাছের শিকড় অর্শ রোগে উপকারী। আমাশয় ও ডায়রিয়া সারাতেও কারিপাতা ওস্তাদ। কয়েকটা সবুজ পাতা চিবিয়ে খেলে এটা সেরে যায়। পাতা সেঁকে ও তা থেকে ক্বাথ তৈরি করে খেলে বমিভাব দূর হয়। রেচনতন্ত্রের ব্যথা দূর করতে পাতার রস সেবন করতে পরামর্শ দেয়া হয়। শরীরের কোথাও কোনো বিষাক্ত পোকা কামড়ালে কাঁচা কারিপাতা ডলে সেখানে লাগালে দ্রুত উপশম হয়। যকৃতের কঠিন ব্যথা সারাতে রোগীদের কারিপাতা গাছের শিকড়ের রস খাওয়ানো হয়। শুধু পাতা নয়, এর ফলও খাওয়া যায়। বীজ থেকে যে তেল পাওয়া যায় তার গন্ধ অনেকটা নারকেল তেলের মতো আর স্বাদ মরিচের মতো ঝাঁঝালো। তেল জিহ্বায় স্পর্শ করলে ঠাণ্ডা মনে হয়।




    চাষাবাদ


    বীজ থেকে প্রথমে চারা তৈরি করে নিতে হবে। বর্ষার শুরুতে ২-৩ মিটার পর পর জমিতে চারা লাগাতে হবে। চারা লাগানোর জন্য সবদিকে আধা মিটার আন্দাজে গর্ত তৈরি করে গর্তের মাটির সাথে এক ঝুড়ি গোবর সার মিশিয়ে সপ্তাহ দুয়েক রেখে দিতে হবে। জুন-জুলাই মাসে চারা লাগাতে হবে। প্রতি বছর জুলাই মাসে একবার গাছপ্রতি ১০০-২০০ গ্রাম ইউরিয়া সার দিতে হবে। খরার সময় সেচ দিলে উপকার হয়। গাছের বয়স ১৫ মাস হলেই গাছ থেকে পাতা তোলা শুর করা যায়। কচি পাতা না তুলে গোড়ার দিক থেকে বয়স্ক পাতা তুলে আঁটি বেঁধে বাজারে বেচতে পাঠাতে হবে। ঘরোয়া ব্যবহারের জন্য একটা দুটো গাছই যথেষ্ট। বাণিজ্যিকভাবে চাষের আগে এর বাজার সম্বন্ধে নিশ্চিত হতে হবে। এ গাছে সহজে কোনো রোগ পোকা আক্রমণ করে না।

    টবে ক্যাপসিকাম মরিচের চাষ

  • Share The Gag
  • টবে ক্যাপসিকাম মরিচের চাষ

    ক্যাপসিকাম বা মিষ্টি মরিচ সারা বিশ্বেই একটি জনপ্রিয় সবজি। বাংলাদেশে খুব একটা পরিচিত না হলেও সম্প্রতি এর জনপ্রিয়তা বেড়েছে। প্রসারিত হচ্ছে মিষ্টি মরিচের চাষ। জমি ছাড়া মিষ্টি মরিচ চাষ করা যাবে না এমন নয়। বাড়ির ছাদে বা বারান্দার টবে মিষ্টি মরিচের চাষ করে নিজের প্রয়োজন মেটানো সম্ভব।


     


    জাত


     


    আমাদের দেশে ইয়োলো ওয়ান্ডার্স, ক্যালিফোর্নিয়া ওয়ান্ডার্স ইত্যাদি জাতের মরিচ চাষ করতে দেখা যায়।


     


    মাটি ও জলবায়ু


     


    বেলে দোআঁশ বা দোআঁশ মাটি মিষ্টি মরিচ চাষের জন্য ভালো। মিষ্টি মরিচ গাছের সহ্যশক্তি কম থাকায় মাটি ঝুরঝুর করে ব্যবহার করা উচিত। মিষ্টি মরিচের গাছ গ্রীষ্ম, বর্ষা, শীত সব মৌসুমে চাষ করা যায়।



    চারা রোপণ ও সার প্রয়োগ


     


    টবে গাছ লাগানো ক্ষেত্রে উপযুক্ত মাটি ও ৩০-৪০দিন বয়সের চারা প্রয়োজন। যে কোনো সাইজের টবে এই গাছ রোপণ করা যায়। তবে একটি টবে একটি গাছ রোপণ করাই উত্তম। মাটি বাছাই করা হলে তার সঙ্গে ১/৩ অংশ গোবর, ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি, জিপসাম এবং জিংক অক্সাইড ভালো করে মেশানোর পর টবে প্রয়োগ করতে হবে। চারা রোপণের পর ইউরিয়া ও এমওপি দু’ভাগে ২০ ও ৩০ দিন পর প্রয়োগ করতে হবে। সূর্যের তাপে চারা রোপণ করলে চারার ক্ষতি হয়। তাই বিকালে চারা রোপণ করাই ভালো।


     


    পরিচর্যা


     


    গাছের গোড়ায় আগাছা জন্মাতে দেয়া যাবে না। আগাছা দেখলেই নিড়ানি দিয়ে ফেলে দিতে হবে। মিষ্টি মরিচ গাছের সহ্যশক্তি কম থাকায় খরা বা জলাবদ্ধতা কোনোটাই সহ্য করতে পারে না। তাই প্রয়োজন মতো পানি দিতে হবে এবং জলাবদ্ধতা রোধে সুষ্ঠু নিষ্কাশন ব্যবস্থা করতে হবে। গাছ হেলে পড়া রোধে খুঁটির ব্যবস্থা করতে হবে।





    বালাই ব্যবস্থাপনা


     


    মিষ্টি মরিচ গাছে সাধারণত কিছু পোকামাকড়, ছত্রাক ও ভাইরাসজনিত রোগের আক্রমণ হয়ে থাকে। পোকার মধ্যে জাবপোকা, এফিড, থ্রিপস, লালমাকড় ও মাইট আক্রমণ করে। ছত্রাকজনিত সাধারণত এনথ্রাকনোজ, উইল্কল্ট রোগে আক্রান্ত হয়। ভাইরাসজনিত রোগে পাতায় হলদে দাগ পড়ে এবং পাতা কুঁকড়ে আসে। এ রোগে গাছ তুলে মাটিতে পুঁতে ফেলা বা পুড়িয়ে ফেলা ছাড়া উপায় নেই। ভাইরাসজনিত রোগের জন্য তেমন কোনো কীটনাশক পাওয়া যায় না। এছাড়া পোকা বা ছত্রাকজনিত রোগের আক্রমণ হলে কৃষিকর্মীর পরামর্শ অনুযায়ী কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে।


     


    ফসল সংগ্রহ





     


    মিষ্টি মরিচ সাধারণত সবুজ অবস্থায় খাওয়া হয়। তাই মরিচের রঙ লালচে হওয়ার আগে পরিপক্ক সবুজ অবস্থা সংগ্রহ করতে হবে। সপ্তাহে একবার মরিচ সংগ্রহই উত্তম।

    Tuesday, May 23, 2017

    ফিঞ্চ পাখি পালন ও ব্যাবসায়িক দিক

  • Share The Gag
  • ফিঞ্চ পাখি পালন ও ব্যাবসায়িক দিক

     

    Finch শব্দটির অর্থ ছোট আকারের গানের পাখি। বৈজ্ঞানিক নাম Taeniopygia guttata।
    এই পাখি অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের একটি নির্দিষ্ট সীমায় উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলের ঠাণ্ডা আদ্রতা থেকে দূরে থাকে। এদেরকে ইন্দোনেশিয়া ও পূর্ব তাইমুরেও দেখা যায়। পুয়েরতো রিকো, পর্তুগাল, ব্রাজিল ও আমেরিকাতেও পরিচিত।
    ছোট্ট পাখি ফিঞ্চ তার নিজগুনে এই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে এবং অন্যান্য সৌখিন পাখির মতই ফিঞ্চএর জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। ফিঞ্চের অনেকগুলো প্রজাতি আছে যেমন ডায়মন্ড ফায়ার টেইল ফিঞ্চ, লং টেল ফিঞ্চ, বাংলিশ ফিঞ্চ, জেব্রা ফিঞ্চ ও লেডি গোল্ডিয়ান ফিঞ্চ এদের মধ্যে অন্যতম। এদের মধ্যে জেব্রা ফিঞ্চ ও লেডি গোল্ডিয়ান ফিঞ্চ অনেক জনপ্রিয়। এদের আদিনিবাস অস্ট্রেলিয়া। তবে সৌখিন পাখি হিসেবে এটি সারা বিশ্বে দেখা যায়।


    ফিঞ্চের প্রজাতিঃ
    1. Gouldian Finch
    2. Zebra Finch
    A. Black Cheek Zebra Finch
    B. Black Face Zebra Finch
    C. Black Face Black Cheek Zebra Finch
    D. Chestnut Flanked White Zebra Finch
    E. Crested Zebra Finch
    F. Fawn Zebra Finch
    G. Florida Fancy Zebra Finch
    H. Orange Breast Zebra Finch
    I. Pied Zebra Finch
    J. Recessive Silver Zebra Finch
    K. Silver Isabel Zebra Finch
    L. Yellow Beak Zebra Finch
    3. Strawberry Finch
    4. European Goldfinch
    5. Society (Bengalese) Finch
    6. Owl (Bicheno) Finch
    7. African Red Headed Finch
    8. Long-Tail Grass finch
    9. Cordon Blue (Bleu) Finches
    10. Black Masked Grass finch
    ফিঞ্চ পাখির স্ত্রী-পুরুষ চেনার উপায়ঃ





    ১/জেব্রা ফিঞ্চঃ


    ফিঞ্চ পাখির অন্যান্য প্রজাতির চেয়ে জেব্রা ফিঞ্চের স্ত্রী-পুরুষ খুব সহজেই নির্ধারণ করা যায়।
    পুরুষঃ ছেলে জেব্রা ফিঞ্চের চোখের কাছে  গোল্ডইন রঙের একটি স্পট থাকে যা মেয়ে জেব্রা ফিঞ্চে দেখা যায় না।এছাড়া প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ জেব্রা ফিঞ্চের ঠোঁট গাঁঢ় লাল বর্ণের হয়ে থাকে।
    স্ত্রীঃ প্রাপ্ত বয়স্ক স্ত্রী জেব্রা ফিঞ্চের ঠোঁট হালকা কমলা বর্ণের হয়ে থাকে...এদের পুরুষদের মতো চোখের কাছে গোল্ডইন রঙের স্পট থাকে না।

    ২/সোসাইটি ফিঞ্চ/ব্যাঙ্গলিঃ


    পাখির বয়স ৩ মাস না হওয়া পর্যন্ত সোসাইটি ফিঞ্চ/ব্যাঙ্গলি ফিঞ্চের স্ত্রী-পুরুষ চেনা খুব কষ্টকর...তবে কিছু বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করে আমরা খুব সহজেই এদের স্ত্রী-পুরুষ নির্ধারণ করতে পারি-
    পুরুষঃ পুরুষ পাখি চেনার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে...পাখি গান করবে...এদের ডাক স্ত্রী পাখির তুলনায় স্পষ্ট হবে এবং পাখির মাঝে চাঞ্চল্যভাব একটু বেশি থাকবে।
    স্ত্রীঃ স্ত্রী পাখি গান করবে না, এদের ডাক পুরুষ পাখির মতো স্পষ্ট হবে না, এদের একটিভিটি ও কম হবে।
    তবে যদি আপনার পাখি যদি গান না করে সেক্ষেত্রে আপনি একটি কাজ করতে পারেন-আপনি যে জোড়াটির স্ত্রী-পুরুষ চিনতে পারছেন না সেই জোড়াটির খাঁচায় অন্য একটি সোসাইটি ফিঞ্চ ছেড়ে দিন, খাঁচায় যদি আগে থেকে পুরুষ পাখি থেকে থাকে তাহলে তা ডেকে উঠবে, সেইটিকে তখন আলাদা করে রিং পরিয়ে দিন, আর যদি পাখি না ডাকে সেক্ষেত্রে আপনার বুঝতে হবে যে আপনার জোড়াটির দুইটি পাখিই ফিমেল।

    ৩/গোলডিয়ান ফিঞ্চঃ


    পুরুষঃ গোলডিয়ান ফিঞ্চের পুরুষ পাখি চেনার উপায় হল এটি গান করবে,শিস দেবে,ব্রিডিং এর সময়েcourtship  নাচ করবে এবং পাখির মাঝে চাঞ্চল্যভাব একটু বেশি হয়ে থাকবে।
    স্ত্রীঃ স্ত্রী পাখি সাধারনত গান করবে না, শিস দেবে না,পাখির মাঝে চাঞ্চল্যভাব একটু কম হয়ে থাকবে।

    ৪/স্টার ফিঞ্চঃ


    একটু ভালভাবে লক্ষ্য করলেই আমরা অতি সহজেই স্টার ফিঞ্চের  স্ত্রী-পুরুষ চিনতে পারি, এদের African Red Headed Finch হিসাবেও আমরা চিনি ।
    পুরুষঃ পুরুষ পাখির ঠোঁট, চোখ এবং মাথার আশেপাশে পুরোটা জুড়েই টকটকে লাল বর্ণ হয়ে থাকে।অন্যান্য পুরুষ ফিঞ্চ পাখি মতো এটি গান করবে এবং চাঞ্চল্যভাব থাকবে।
    স্ত্রীঃ স্ত্রী পাখির ঠোঁট,চোখ এবং মাথা টকটকে লাল বর্ণ হয়ে থাকে কিন্তু এক্ষেত্রে মাথার পুরোটা অংশ(বিশেষকরে মাথার উপরিভাগ)পুরুষ পাখির মতো টকটকে লাল রঙের হবে না।স্ত্রী পাখি গান করবে না সেই সাথে চাঞ্চল্যভাব কম হয়ে থাকবে।

    ৫/ Owl  ফিঞ্চঃ


    Owl ফিঞ্চের ক্ষেত্রে স্ত্রী-পুরুষ চেনা একটু কষ্টকর তবে-
    পুরুষঃ সাধারনত Owl  ফিঞ্চের গলার নিচ থেকে অর্থাৎ বুকে দুইটি সমান্তরাল দাগ থাকে...এই দাগ দুটির মধ্যে দ্বিতীয় দাগ টি পুরুষ পাখির ক্ষেত্রে একটু মোটা হয়ে থাকে।অন্যান্য পুরুষ ফিঞ্চ পাখি মতো এরাও গান করবে এবং চাঞ্চল্যভাব থাকবে।
    স্ত্রীঃ স্ত্রী পাখির ক্ষেত্রে বুকের দাগ দুইটির মধ্যে দ্বিতীয় দাগটি পুরুষ পাখির চেয়ে অপেক্ষাকৃত চিকন হবে।পাখি গান করবে না এবং চাঞ্চল্যভাব থাকবে না।

    ৬/লং টেইল ফিঞ্চঃ


    লং টেইল ফিঞ্চের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র গান শুনে স্ত্রী-পুরুষ নির্ধারণ করা সম্ভব নয়...কেননা এই ফিঞ্চের স্ত্রী- পুরুষ উভয়েই গান করে থাকে। তবে একটি বৈশিষ্ট্য আছে সেটি হল-
    পুরুষঃ লং টেইল ফিঞ্চের একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য হল এদের গলার নিচে একটি বিব(গোলাকার দাগ)থাকে পুরুষ পাখির ক্ষেত্রে এই বিবটি একটু বড় হয়ে থাকে।
    স্ত্রীঃ স্ত্রী পাখির ক্ষেত্রে এই বিবটি পুরুষ পাখির তুলনায় ছোট হয়ে থাকে।

    ৭/জাভা স্প্যারোঃ


    পুরুষঃ শুধুমাত্র পুরুষ জাভা গান করে। ৪ থেকে ৮ সপ্তাহের মধ্যেই এরা গান করা শুরু করে। যে পাখিটি গান করবে সে পাখিটিকে আলাদা করে একটি প্লাস্টিকের রিং পায়ে পরিয়ে দিলে স্ত্রী পুরুষ চেনা সহজ হয়। একই রংয়ের পাখির বাম পায়ে রিং এবং অন্য রংয়ের পাখির ডান পায়ে রিং পরাতে হয়। তবেই সনাক্তকরণে সুবিধা হয়। স্ত্রী ও পুরুষ ভেদে শব্দের মধ্যে তারতম্য লক্ষ করা যায়। প্রজনন উপযোগী পুরুষ জাভার চোখের বৃত্ত গাঢ় রংয়ের হয়। জাভা পাখির ডাক অনেকটা ছিপ্ছিপ্ছিপ্ছিপ্ এর মতো শোনা যায়।
    স্ত্রীঃ স্ত্রী জাভার ক্ষেত্রে-পাখি গান করবে না... চাঞ্চল্যভাব পুরুষের তুলনায় কম হয়ে থাকবে।

    ৮/ স্ট্রাবেরি ফিঞ্চঃ


    এই ফিঞ্চের ক্ষেত্রে পুরো শরীর লাল বর্ণের হয়ে থাকে এবং এই লাল বর্ণের উপরে সাদা বর্ণের স্পট থাকে।এই অনন্য বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করেই স্ত্রী-পুরুষের মাঝে পার্থক্য করা যায়।
    পুরুষঃ পুরুষ পাখির ক্ষেত্রে গাঁয়ের রঙ অনেক গাঁঢ়  হয়ে থাকে...স্পট অপেক্ষাকৃত বেশি থাকে।সাধারনত এরা বর্ষাকালকেই ব্রিডিং এর জন্য উপযুক্ত মনে করে...তাই এসময় এদের গাঁয়ের রঙ সবচেয়ে বেশি গাঁঢ় হয়ে থাকে।
    স্ত্রীঃ স্ত্রী পাখির ক্ষেত্রে গাঁয়ের রঙ তেমন গাঁঢ় নয়...মানে  কম হয়ে থাকে...এবং শরীরে সাদা স্পটও পুরুষ পাখির তুলনায় কম হয়ে থাকে।

    9. European Goldfinch:



    10. Cordon Blue (Bleu) Finches



    11. Black Masked Grass finch



    কেন ফিঞ্চ বেশি জনপ্রিয়ঃ
    সব সৌখিন পাখি পালকেরা সব সময় এক রকম পাখি পালন করেনা। বাজরিগার দিয়ে শুরু করলেও অনেকেই পরে আস্তে আস্তে ককাটেল, ডাভ, লাভ বার্ড বা ফিঞ্চের দিকে যায়। এর কারণ যেটা হতে পারে,ফিঞ্চ মুল্যবান পাখি, সহজেই পোষ মানে, ব্রিডিং সহজ এবং সর্বোপরি অর্থনৈতিক ভাবে বেশ লাভজনক। আর বিচিত্র বর্ণের ফিঞ্চ সহজেই যে কোন পাখি প্রেমিককে কাছে টানে।
    বাংলাদেশে কেইজ বার্ড হিসেবে পরিচিত পাখির মধ্যে জেব্রা ফিঞ্চ  বেশ জনপ্রিয়। এই পাখি ঘাসভূমি ও বনাঞ্চলের প্রশস্থ অঞ্চল ও পানির কাছাকাছি জায়গায় বাস করে।
    ছোট এ গানের পাখির গানের শব্দ স্ত্রী-পুরুষভেদে পার্থক্য আছে। প্র্রাকৃতিক পরিবেশে ৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে। খাঁচাতে কেইজ বার্ড হিসেবে এদের ৫ থেকে ৭ বছর পর্যন্ত বাঁচতে দেখা গেছে।
    এরা ছোট দানাজাতীয় খাবার যেমন চিনা, কাউন, তিল, গুজিতিল— এ ধরনের ছোট বীজদানা খেয়ে থাকে। ৩ মাস বয়স হলেই এরা প্রজনন শুরু করে। ২টা থেকে ৮টা পর্যন্ত ডিম দেয়। ডিমের রং সাদা।
    ডিম ফুটে বাচ্চা বের হতে ১৪ থেকে ১৬ দিন সময় লাগে। বাচ্চা ৩ থেকে ৪ সপ্তাহের মধ্যেই বাসা থেকে বের হয়।
    ফিঞ্চের জীবনচক্রঃ

    Clutch size: 3-8 eggs (4-6 most common)
    Incubation date: After all eggs are laid (some pairs begin incubating after 3 eggs)
    Hatch date: After 14-16 days of incubation
    Fledge date: At 20 days of age
    Wean date: 6 weeks of age
    Begin molt: 8-10 weeks of age
    Complete molt: 5-6 months of age (sometimes as early as 14-16 weeks)
    Sexual maturity: Although Gouldians may become sexually mature before they obtain their adult plumage, many breeders recommend waiting until the birds are at least 6-9 months of age before breeding them

    Life Cycles: Breeding Time Tables:

    Parameter Species
    Gouldian Cordon Bleu Zebra Society
    Clutch size: 4-6 eggs 4-6 eggs 4-6 eggs 3-9 eggs
    Incubation starts: after all eggs are laid after the fourth egg is laid after the 3rd egg is laid after the 3rd egg is laid
    Incubation period: 14-16 days 12-14 days 12-14 days 16 days
    Fledging age: 20 days 14-16 days 18 days 19 days
    Weaning age: 6 weeks 4 weeks 4 weeks 4 weeks
    First molt: 2-6 months 5-6 months 2 months 3 months
    Sexual maturity: May become sexually mature before they obtain their adult plumage; however, wait until they are 6-9 months of age before breeding them May become sexually mature before they obtain their adult plumage; however, wait until they are 6-9 months of age before breeding them May become sexually mature by 2-3 months of age; however, wait until they are 6-9 months of age before breeding them May become sexually mature before they obtain their adult plumage; however, wait until they are 6-9 months of age before breeding them
    পালন পদ্ধতিঃ
    জেব্রা ফিঞ্চ সাধারণত মধ্য অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়ার উপযোগী। বর্তমানে আমাদের দেশে শৌখিন ও বাণিজ্যিকভাবে পালিত হচ্ছে। পালনের জন্য প্রশিক্ষণের প্রয়োজন নেই। শখের জন্য পালতে চাইলে পাখির দোকানে গেলেই হবে।
    ডিম পাড়ার পাত্র হিসেবে বাঁশের ঝুড়িও ব্যবহার করা যায়। ঝুড়িটি খাঁচার এক কোণে ঝুলিয়ে রাখলেই চলবে। এর মধ্যে শুকনো দূর্বাঘাস ও নারকেলের ছোবড়া দিয়ে রাখলে ওরা সুন্দর করে হাঁড়ির মধ্যে বাসা বাঁধবে। এছাড়া পাটের বস্তা বৃত্তাকারে কেটে ঝুড়িতে বসিয়ে দেওয়া যায়।
    প্রাথমিক অবস্থায় বাণিজ্যিকভাবে পালন করতে তেমন খরচ হবে না। প্রতিজোড়া পাখির জন্য একটি করে ছোট আকারের খাঁচা ব্যবহার করাই ভালো। বড় খাঁচায় একসঙ্গে কয়েক জোড়া পালন করা যায়। তবে এতে ঝুঁকি আছে। কারণ এরা প্রচুর পরিমাণে মারামারি করে। ফলে পাখি ও ডিমের ক্ষতি হয়।
    জেব্রা ফিঞ্চঃ
    অন্যান্য ফিঞ্চের তুলনায় এই ফিঞ্চ সহজলভ্য। এটির দামও অনেক কম এবং পাখিপ্রেমিকদের কাছে বেশি দেখা যায়। এটি খুবই মিশুক প্রকৃতির পাখি। এদের বর্ণিল রঙ এবং সুমিষ্ট ডাক পাখিপ্রেমিকদের কাছে টানে। যারা প্রথম বারের মত ফিঞ্চ পালন করতে যাচ্ছেন তাদের জন্য জেব্রা ফিঞ্চ আদর্শ কারণ জেব্রা ফিঞ্চ লালন-পালন এবং ব্রিড করাটা তুলনামূলক সহজ । যদিও জেব্রা ফিঞ্চ খাঁচার মধ্যে ব্রিড করা সম্ভব , তবুও একটু বড় সেটআপ নেয়াটা ভালো। জেব্রা ফিঞ্চ খাঁচা কিংবা কলোনি দুভাবেই ব্রিড করানো সম্ভব।
    জেব্রা ফিঞ্চের প্রকারবেদঃ
    1. Black Cheek Zebra Finch
    2. Black Face Zebra Finch
    3. Black Face Black Cheek Zebra Finch
    4. Chestnut Flanked White Zebra Finch
    5. Crested Zebra Finch
    6. Fawn Zebra Finch
    7. Florida Fancy Zebra Finch
    8. Orange Breast Zebra Finch
    9. Pied Zebra Finch
    10. Recessive Silver Zebra Finch
    11. Silver Isabel Zebra Finch
    12. Yellow Beak Zebra Finch

    ফিঞ্চের খাদ্যঃ
    খাবার হিসেবে মিলেট, অঙ্কুরিত শিম ,এগ ফুড কিংবা সবুজ শাক-সব্জি ফিঞ্চের খুব পছন্দ কিন্তু ক্যাটল বোন এবং গ্রিট পছন্দের তালিকায় আছে ।ব্রিড করার উপযুক্ত সময়ঃ ফিঞ্চ ব্রিড করার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হচ্ছে বর্ষাকাল কারণ বর্ষাকালে খাদ্যের প্রাচুর্য বেশি থাকে তবে খাঁচার জেব্রা ফিঞ্চ সারা বছরই ব্রিড করে ।
    প্রজনন এ ফিঞ্চঃ
    জেব্রা ফিঞ্চ সাধারণত ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যেই প্রজননের সক্ষমতা অর্জন করে। তবু বেশিরভাগ ব্রিডারই ব্রিড শুরু করার জন্য ৬ থেকে ৯ মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরামর্শ দেন। এতে মা এবং উভয়েই সুস্থ থাকে। এক একটি ফিঞ্চ প্রতি বারে ৩-১২ টি পর্যন্ত ডিম পাড়ে । মধ্যবয়সে ৮-১২ টি পর্যন্ত ডিম পেড়ে থাকে ।
    বিশেষ সতর্কতাঃ
    একটি খাঁচায় এক থেকে তিন জোড়া পর্যন্ত জেব্রা ফিঞ্চ পালন করা যায়, কিন্তু ৪ অথবা ৫ জোড়া পালন করলে এরা প্রায় সবসময়ই ঝগড়া মারারিতে জড়িয়ে পড়বে । কলোনি ব্রিডের ক্ষেত্রেও মাত্রাঅতিরিক্ত পাখী রাখা উচিত নয়।জেব্রা ফিঞ্চ গোসল করা খুব পছন্দ করে তাই খাঁচায় পালন করার সময় এ বিষয়টি খেয়াল রেখে করতে হবে।
    গোল্ডিয়ান ফিঞ্চঃ
    গোল্ডিয়ান ফিঞ্চকে লেডী গোল্ডিয়ান ফিঞ্চ অথবা রেইনবো ফিঞ্চও বলা হয়। ফিঞ্চ প্রজাতিগুলোর মধ্যে গোল্ডিয়ান ফিঞ্চ সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় ।
    গোল্ডিয়ান ফিঞ্চ সাধারণত তিন ধরনেরঃ
    1.  The Red-headed
    2.  The  Black-headed
    3.  The Yellow-headed



    গোল্ডিয়ান ফিঞ্চের খাদ্যঃ
    গোল্ডিয়ান ফিঞ্চ খাবার হিসেবে বিভিন্ন ধরনের ফল যেমন,স্লাইস করা আপেল, কলা,পেয়ারা, আম, তরমুজ,কমলা, আনারস সহ সবুজ সব্জি যেমন, অঙ্কুরিত শিম, বাঁধাকপি, ফুলকপি,গাজর ( স্লাইস করা), স্লাইস করা আঙ্গুর, সবুজ শিম ( রান্না এবং ভর্তা করা), মটরশুটি ( রান্না এবং ভর্তা করা), কুমড়ো, ছাড়াও সেদ্ধ ডিম, গোল আলু ( সেদ্ধ এবং খোসা ছাড়া), মিষ্টি আলু (সেদ্ধ এবং খোসা ছাড়া) এবং ভাত ( সেদ্ধ ) গ্রহণ করে থাকে ।



    ব্রিড করানোর উপযুক্ত সময়ঃ
    গোল্ডিয়ান ফিঞ্চ সাধারণত ৬ থেকে ৯ মাসের মধ্যে প্রজননের সক্ষমতা অর্জন করে থাকে। প্রতিটি গোল্ডিয়ান ফিঞ্চ প্রতিবারে সর্বনিন্ম ৩ টি থেকে সর্বোচ্চ ৮টি ডিম দিয়ে থাকে । মুক্ত বন্য গোল্ডিয়ান ফিঞ্চ যেখানে ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ব্রিড করে থাকে সেখানে উপযুক্ত ব্রিড করার পরিবেশ পেলে খাঁচার গোল্ডিয়ান সারা বছরই ব্রিড করে থাকে ।
    ফিঞ্চ ব্রিড করানোর পূর্বে করনীয়ঃ
    গোল্ডিয়ানকে ব্রীড করানোর পূর্বে আপনাকে ব্রিডিং করার মত যথেষ্ট জায়গা, পর্যাপ্ত সময় ও অর্থ ব্যয় করতে হবে । ব্রিডিং করানোর জন্য অপেক্ষাকৃত তরুণ, বয়স কমপক্ষে ৬ থেকে ৯ মাস, শারীরিক ভাবে সুস্থ সবল আঘাতমুক্ত পাখি বেছে নেয়া উচিত যেটা অবশ্যই ব্রিড করতে পারে এবং তারপর সেটার জন্য আলাদা খাঁচার ব্যাবস্থা করতে হবে। তারপর আপনাকে স্থির করতে হবে কি প্রক্রিয়ায় আপনি ব্রিডিং করবেন খাঁচার মধ্যে রেখে করবেন না কলোনি ব্রিডিং করবেন ।



    ফিঞ্চ খাঁচা ও কলোনি করে দুই ভাবেই পালন করা যায় । খাঁচায় পালন করলে জোড়া মিলানো একটু কঠিন হয়ে পরে । তাই কলোনিতে পালন করলে এই সমস্যা থাকে না ।

    One Pair Per Cage   খাঁচায় পালনে সুবিধা বা অসুবিধা
    Advantages: No fighting with or disturbances from other pairs, easier to observe the birds and perform nest checks, more control over breeding outcome since you control who each bird mates with.3
    Disadvantages: May not stimulate those pairs which seem to breed best in the colony situation.
    • The breeding cage should measure at least 30" (76 cm) long × 18" (46 cm) wide × 18" (46 cm) tall. Box-style breeding cages are preferred, since all of the walls are solid except for the front, which provides more security to the birds.
    • If direct access to natural sunlight is unavailable, provide a full spectrum light on a timer.
    • Consider using tube feeders if you notice your birds trying to nest in their seed cup.
    • Keep the enclosure in a low traffic area where the ambient temperature is at least 65 ° F.
    • Provide a cuttle bone or another safe source of calcium at all times.
    • Provide an appropriate nest and nesting material. Nesting materials which are appropriate to provide for your birds include: coconut fiber, burlap cut into 3" strips, shreds of newspaper, and shreds of facial tissue. Avoid small, synthetic fibers such as yarn, stringy material such as hair, and avoid hay, soil, eucalyptus leaves, and corn cob (which may lead to fungal growth).5 Although gouldians may accept a wide range of nests (from wooden nest boxes to domed bamboo nests), a plastic nest box is prefered because it can be disinfected and reused.
    • If possible, place the nest on the outside front of the cage (this makes nest checks much easier). If this is not an option, the nest may be placed inside the cage (towards one of the upper corners); try to place it so that you can peer into it from outside of the cage.
    • Place some nesting material inside of the nest and the rest on the floor of the enclosure, but not directly under any perches so that it does not become soiled.
    • Provide two perches, one at each end of the cage.
    • When the birds are ready to be added to the enclosure, add the male first and let him investigate the cage for a few days before adding the hen.

    Colony Breeding    কলোনিতে পালনে সুবিধা  বা  অসুবিধা
    Advantages: May help to encourage breeding in those individuals which are stimulated by group interaction.
    Disadvantages: Less control over breeding outcomes, may lead to increased aggression among the inhabitants, may not stimulate those birds which seem to need seclusion from other pairs to breed.
    • Colony breeding is best when limited to one species (as opposed to mixed species).*2
    • *However, if you wish to breed mixed species in a communal aviary, select birds that are compatible yet have very different plumages as well as different nesting habits to reduce the sources of potential fighting3.
    • This set-up requires that at least 3-5 pairs of birds be housed together, so the enclosure must be large enough to accommodate them.
    • Keep the enclosure in a low traffic area where the ambient temperature is at least 65 ° F.
    • Provide a cuttle bone or another safe source of calcium at all times.
    • If direct access to natural sunlight is unavailable, provide a full spectrum light on a timer.
    • Take steps to reduce aggression:
    • Provide at least two nests per pair of finches (all nests should be placed at similar heights in the enclosure).Although gouldians may accept a wide range of nests (from wooden nest boxes to domed bamboo nests), plastic nest boxes are prefered because they can be disinfected and reused.
    • Provide adequate cover (live and/or silk plants, especially around the nesting sites). This allows the birds to be somewhat hidden from one another which is important because some birds become very defensive of their nest and need their area to be visually isolated from other birds.1
    • Provide plenty of perches but do not crowd the enclosure or encroach on flying space.
    • Provide at least two feed and water stations.
    • Watch for hostility and remove any birds which seem to be terrorizing the rest.
    • Place some nesting material inside each nest and the rest on the floor of the enclosure, but not directly under any perches so that it does not become soiled. Nesting materials which are appropriate to provide for your birds include: coconut fiber, burlap cut into 3" strips, shreds of newspaper, and shreds of facial tissue. Avoid small, synthetic fibers such as yarn, stringy material such as hair, and avoid hay, soil, eucalyptus leaves, and corn cob (which may lead to fungal growth).5
    • When the birds (at least 3-5 pairs) are ready to be added to the enclosure, add them all at the same time.

    ব্যাবসায়িক দিকঃ
    ফিঞ্চ পাখি খুব অল্প জায়গায় অল্প খরচে পালন করা যায় । এই পাখির খাবার ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ খুব কম ।
    সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ ও সঠিক পরিচর্যা করলে  প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর প্রতি জোড়া পাখি থেকে ৩ থেকে ৬ টি বাচ্চা পাওয়া যাবে ।

    সুস্থ ছাগলের বৈশিষ্ট্য

  • Share The Gag
  • সুস্থ ছাগলের নাড়ীর স্পন্দন প্রতি মিনিটে ৭০-৯০ বার, শ্বাস-প্রশ্বাস প্রতি মিনিটে ২৫-৪০ বার এবং তাপমাত্রা ৩৯.৫ সেঃ হওয়া উচিত। সুস্থ ছাগল দলবদ্ধভাবে চলাফেরা করে, মাথা সবসময় উঁচু থাকে, নাসারন্ধ থাকবে পরিষ্কার, চামড়া নরম, পশম মসৃন ও চকচকে দেখাবে এবং পায়ু অঞ্চল থাকবে পরিচ্ছন্ন।
    ছাগল সুস্থ রাখতে যেসব ব্যবস্থাদি গ্রহণ করা আবশ্যক সেগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ

    কর্মসূচি অনুযায়ী টিকা প্রদান


    ভাইরাসজনিত রোগ যেমন পিপিআর, গোটপক্স, ক্ষুরারোগ ইত্যাদি এবং ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ যেমন এনথ্রাক্স, ব্রুসেলোসিস ইত্যাদি খুবই মারাত্মক বলে এগুলোর বিরুদ্ধে যথারীতি টিকা প্রদান করতে হবে। যেসব ছাগীকে পূর্বে পিপিআর, গোটপক্স, একথাইমা, ব্রুসেলোসিস ইত্যাদি টিকা দেয়া হয়নি তাদেরকে গর্ভের ৫ম মাসে উক্ত ভ্যাকসিনগুলি দিতে হবে। বাচ্চার বয়স যখন ৫ মাস তখন তাকে পিপিআর ভ্যাকসিন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন দিতে হবে।

    ছাগলের টিকা প্রদান কর্মসূচি

    কৃমিনাশক ঔষধ প্রয়োগ
    সকল ছাগলকে নির্ধারিত মাত্রায় বছরে দুইবার কৃমিনাশক ঔষধ প্রদান করতে হবে। কৃমিনাশক কর্মসূচি অনুসরণের জন্য পশু চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

    মুরগি এবং টার্কির হিটস্ট্রোক এড়ানোর উপায়

  • Share The Gag
  • মুরগি এবং টার্কির হিটস্ট্রোক এড়ানোর উপায়

    প্রচণ্ড গরম পড়েছে সারা দেশে। প্রায় সব খামারেই হিটস্ট্রোকে মারা যাচ্ছে মোরগ-মুরগি। গরমের সময় মোরগ-মুরগি চারপাশের তাপের কারণে তার দেহ থেকে তাপ বের করতে পারে না বলে শ্বাসকষ্ট হয় এবং হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়। একসময় এই মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায় বলে মোরগ-মুরগি হিটস্ট্রোকে মারা যায়।

    প্রচণ্ড গরম পড়েছে সারা দেশে। প্রায় সব খামারেই হিটস্ট্রোকে মারা যাচ্ছে মোরগ-মুরগি। গরমের সময় মোরগ-মুরগি চারপাশের তাপের কারণে তার দেহ থেকে তাপ বের করতে পারে না বলে শ্বাসকষ্ট হয় এবং হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়। একসময় এই মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায় বলে মোরগ-মুরগি হিটস্ট্রোকে মারা যায়।

    হিটস্ট্রোক প্রতিরোধ:

    গরমের সময় রক্ত চলাচল দ্রুততর হওয়ার জন্য হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায় ও কোনো কোনো সময় রক্ত জমাট হতে পারে। এই রক্ত জমাট হওয়াটাই হিটস্ট্রোক। এতে মুরগি মারা যেতে পারে। এ সময় এসপিরিন ও ভিটামিন-সিযুক্ত কোনো মিশ্রণ যেমন এন্টি স্ট্রেস প্রিমিক্স দিনের উষ্ণতম সময় যেমন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পানির মাধ্যমে খাওয়ালে হিটস্ট্রোকের পরিমাণ অনেক কমে যায়। এ ছাড়া ফিডেও ভিটামিন-সিযুক্ত প্রিমিক্স ব্যবহার করা যেতে পারে।

    গরমের বাড়তি যত্ন:

    গরমে পোলট্রি খামারে বিশেষ যত্ন না নিলে ফ্লকে বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। এখনকার তাপজনিত ধকলে মুরগির দৈহিক ওজন কমে যাওয়াসহ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ডিম উৎপাদন কমে যায় এবং মোরগ-মুরগির মৃত্যুও হতে পারে। এ সময় বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে।
    খামারে এক দিনের বাচ্চা আসার আগে পরিষ্কার ও ঠাণ্ডা পানির ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে পানির সঙ্গে ভিটামিন সি, আখের গুড় অথবা ইলেকট্রোলাইটযুক্ত স্যালাইন পানির সঙ্গে দিতে হবে।

    খামার শেডে বাতাসের অবাধ চলাচলের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। মুক্ত বাতাস শেড অভ্যন্তরের তাপমাত্রা শীতল রাখবে, সেই সঙ্গে অ্যামোনিয়াসহ অন্যান্য ক্ষতিকর গ্যাসের বিষক্রিয়াও মুক্ত রাখবে। শেডে সিলিং ফ্যানের পাশাপাশি এগজস্ট ফ্যানের ব্যবস্থা করতে হবে।
    শেডে মোরগ-মুরগি যেন আরামদায়ক পরিবেশে বাস করতে পারে সেদিকে নজর দিতে হবে। অহেতুক এদের বিরক্ত করা যাবে না। প্রতিটি বড় মুরগিকে এক বর্গফুটের অধিক জায়গা দিতে হবে।
    অধিক রোদে টিনের চালা অতিরিক্ত গরম হলে দিনে দুই-একবার চালায় পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করতে হবে। টিনের চালার নিচে চাটাই, হার্ডবোর্ড দিয়ে শিলিংয়ের (চাতাল) ব্যবস্থা করতে হবে।

    শেডের চারপাশে সপ্তাহে দুবার চুন ছিটানোর ব্যবস্থা করতে হবে। ব্রয়লার লিটার ভোর কিংবা রাতে ওলটপালট করে দিতে হবে।
    খাবার পাত্র ও পানির পাত্রসংখ্যা বাড়িয়ে দিতে হবে। পানির পাত্রে দিনে কমপক্ষে তিনবার পরিষ্কার ঠাণ্ডা পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। গরমের ধকলের কারণে মাইকোপ্লাজমা ও কলিব্যাসিলোসিস রোগের আক্রমণ বেড়ে যায়। সে কারণে এ সময় মুরগির স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মেনে চলা প্রয়োজন। বিশেষ করে ফিড ও পানিতে ভিটামিন-সি ও ভিটামিন-ই ব্যবহার করতে হবে।

    গরমকালে বাতাসের আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় শেডের মেঝেয় অনেক সময় লিটার দ্রুত ভিজে যায়। যার ফলে রোগ আক্রমণও বেশি হয়। সে কারণে লিটারে পাউডার চুন ব্যবহার করতে হবে। এ সময় ফিডের বস্তা খোলা রাখা যাবে না। কারণ বাতাসের আর্দ্রতা বেড়ে ফিডে ছত্রাক বা মোল্ড জন্মায়, যা পোলট্রি খাদ্যের উপযুক্ত।

    মাছ চাষের র্পূনাঙ্গ ব্যবস্থাপনা

  • Share The Gag
  • মাছ চাষের র্পূনাঙ্গ ব্যবস্থাপনা

    মুরগির মাছ চাষে লাভবান হতে হলে মাছ চাষ পরিকল্পনা থেকে শুরু করে বাজারজাত করা পর্যন্ত প্রতিটি পর্বে চাষিকে কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। মাছচাষির অজ্ঞতা বা অবহেলায় অনেক সময়েই তারা ভুল করে থাকেন এবং পরবর্তীতে ভুলের মাশুল দিতে হয়। চাষিদের এসব ভুল লাভজনক মাছচাষের ক্ষেত্রে অন্তরায়। তাদের এসব ভুল বা অনিয়মগুলো তাদের সুবিধার জন্য আলোচনা করা হচ্ছে।

    সঠিক পরিকল্পনা
    মাছ চাষ শুরু করার আগে প্রয়োজন হচ্ছে সঠিক পরিকল্পনা। কী মাছ চাষ করা হবে, চাষের মেয়াদ কতদিন হবে, কখন বাজার জাত করা হবে এবং এজন্য মোট কত খরচ হতে পারে, অর্থ ব্যয়ের সংস্থান আছে বা করা যাবে কি না এসব বিষয়ে পূর্ব পরিকল্পনা থাকতে হবে। তা না হলে চাষ শুরু করার পর নানা প্রতিবন্ধকতায় চাষি বাধ্য হয়েই মাছ চাষের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেন। এর ফলে, প্রত্যাশিত উৎপাদন হয় না এবং বাজেটে ঘাটতি দেখা দেয়। ফলশ্রুতিতে চাষি লাভের পরিবর্তে ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকেন।

    পুকুর খননে সঠিক ধারণা থাকা
    যেখানে পুকুর খনন করা হবে সেখানকার অবকাঠামো, পরিবেশ, পানির গভীরতা, বর্ষায় বন্যার হুমকি, পুকুর পাড়ের ঢাল, বকচর, শুষ্ক মৌসুমে পানি কতটা থাকে, পানি হ্রাস পেলে বাইরে থেকে পানি দেয়ার ব্যবস্থা আছে কি না ইত্যাদি বিষয়ে সঠিক ধারণা না থাকলে পুকুর খননেই গলদ থেকে যাবে। আর গলদ থাকলে সারা বছর নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। এজন্য প্রথমেই অভিজ্ঞ মৎস্য কর্মকর্তার পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন।

    পুকুর প্রস্তুত যথার্থ না হওয়া
    চাষ শুরু করার আগে বা মাছের পোনা ছাড়ার আগে সঠিক নিয়মে পুকুর তৈরি করা অত্যাবশ্যক। শুরুতে বিজ্ঞান ও পরিবেশসম্মত পুকুর তৈরি করা হলে মাছ চাষের এক তৃতীয়াংশ কাজ সম্পন্ন করা হয়। অথচ অনেক চাষি এক্ষেত্রে অদক্ষতার পরিচয় দেন। ভালভাবে পুকুর শুকানো, রাক্ষুসে মাছ অপসারণ, দূষণ মুক্ত পানি সরবরাহ করা, চুন/জিওলাইট প্রয়োগ, পানিতে প্রাকৃতিক খাবার জন্মানো এবং পুকুরে পানি প্রবেশ এবং নিষ্কাশনের রাস্তা সঠিকভাবে রক্ষা করা অত্যাবশ্যক। এক্ষেত্রে অবহেলা করা হলে পরবর্তীতে নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়।

    পোনা নির্বাচনে ত্রুটি
    পোনার সঠিক মান এবং জাত নিশ্চিত করা না গেলে চাষি অনেক সমস্যায় পড়তে পারে। চাষিকে মানসম্মত ব্রুড থেকে উৎপাদিত এবং অন্তঃপ্রজনন মুক্ত পোনা, একই আকারের ও বয়সের রোগমুক্ত পোনা সংগ্রহ করতে হবে। অদক্ষ এবং অনভিজ্ঞ হ্যাচারী টেকনেশিয়ানরা মৎস্য চাষিদের যেভাবে প্রতারিত করছে তা থেকে চাষিদের রক্ষা পেতে হবে। মনে রাখতে হবে যেমন বীজ তেমন ফল। ভাল পোনা না হলে কেবল খাবারের উপরই দোষ চাপালে ঠিক হবে না।

    পোনা পরিবহন ও অবমুক্তকরণে ত্রুটি
    মানসম্পন্ন পোনা সংগ্রহ করার পর তা সঠিক নিয়মে পরিবহণ এবং পরিবহণের পর যথার্থভাবে পুকুরে অবমুক্ত করতে হবে। কেননা অনেক সময় দেখা যায় পরিবহণজনিত ত্রুটি থাকায় এবং পরিবহণের আগে পোনা সঠিক নিয়মে টেকসই করা হয় না বলে পোনা ব্যাপক হারে মারা যায়। অনেক সময় তাৎক্ষণিক ভাবে মারা না গেলেও পোনা এতই দুর্বল থাকে যে দু'এক দিনের মধ্যে অনেক পোনাই মারা যায়। বিষয়টি মাছ চাষি বুঝতে না পারলে পরবর্তীতে আরো সমস্যা ও ক্ষতি হয়ে থাকে। এ কারণে পোনা পরিবহন ও পোনা ছাড়ার ক্ষেত্রে দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। এ ব্যাপারে অভিজ্ঞ মৎস্য কর্মকর্তার পরামর্শ নেয়া উচিত।

    পোনা সঠিকভাবে নার্সিং
    মাছ চাষি হ্যাচারী থেকে যেসব পোনা সংগ্রহ করেন তার অধিকাংশই সরাসরি চাষ পুকুরে ছাড়ার উপযোগী নয়। চাষ পুকুরে ছোট পোনা সরাসরি ছেড়ে অনেক সময় চাষি ক্ষতিগ্রস্থ হন। এতে ব্যাপক হারে পোনা মারা যেতে পারে। আর বেশি পোনা মারা গেলে চাষি ভুল পথে পরিচালিত হতে পারেন। এ কারণে পোনা ভালভাবে নার্সিং করতে হবে। নার্সিং করার পর পোনা বড় ও টেকসই হলে গণনার মাধ্যমে পোনা মজুত পুকুরে দেয়া যায় এবং পরবর্তীতে খাবার ব্যবস্থাপনার সাথে অন্যান্য ব্যবস্থাপনাও যথার্থ হতে হবে। একক চাষের ক্ষেত্রে বিশেষত শিং, মাগুর, কৈ, তেলাপিয়া প্রভৃতি মাছের পোনা হ্যাচারী থেকে সরাসরি চাষ পুকুরে দিয়ে অনেক চাষি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। এ ক্ষেত্রে তাই নার্সিং বিশেষ জরুরি।

    পোনা মজুতে সংখ্যা ঠিক রাখা
    ইচ্ছেমত বা পুকুরের জায়গার তুলনায় অধিক পরিমাণে পোনা ছাড়া আমাদের মৎস্য চাষিদের একটি প্রচলিত ত্রুটি। তাদের ধারণা বেশি পোনা ছাড়া হলেই বেশি উৎপাদন হবে। অনেক সময় তাদেরকে এ ব্যাপারে পরামর্শ দিলেও তা অনুসারিত হয়নি। চাষের ধরণ, অবকাঠামো, পানি বদলানোর সুবিধা, খাবারের ধরণ, মাছ চাষের মেয়াদ, মাছের প্রজাতি প্রভৃতি বিষয় বিবেচনা করে পোনা মজুতের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। এ ব্যাপারে অভিজ্ঞ চাষি বা অভিজ্ঞ মৎস্য কর্মকর্তার কাছ থেকে তারা পরামর্শ গ্রহণ করতে পারেন। বেশি পোনা নয় বরং পরিমিত পরিমাণে পোনা ছেড়ে অধিক উৎপাদন নিশ্চিত করাই হচ্ছে গুরুত্বপুর্ণ।

    মিশ্রচাষে জাত নির্বাচনে ব্যর্থতা বা অদক্ষতা
    মিশ্রচাষে সাধারণত নানা প্রজাতির মাছ চাষ করা হয়ে থাকে। তবে এ ক্ষেত্রেও নিয়মকানুন রয়েছে। পুকুরে পানির তিনটি স্তরে একই রকমের মাছ থাকে না। এ কারণে মিশ্রচাষে প্রজাতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে উপরের স্তর, মধ্য স্তর এবং নীচের স্তরের বিষয়টি বিবেচনা করে প্রতিটি স্তর সঠিক ব্যবহারের জন্য প্রজাতি নির্বাচন করতে হবে। অনেক সময় মৎস্য চাষিরা কোনো একটি স্তরে অধিক মাছ ছেড়ে দেন অথচ অন্য একটি স্তরের উপযোগী মাছ ছাড়েন না। এতে চাষে ভাল ফলাফল আসে না। তাছাড়া একই স্তরে বসবাসকারী অধিক মাছের জন্য তাদের নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করতে হয়। তাই প্রতিটি স্তরের সর্বোচ্চ ব্যবহারের জন্য আনুপাতিক হারে মাছ ছাড়তে হবে। পরস্পরে প্রতিদ্বন্ধিতা হয় এমন প্রজাতি এড়িয়ে যাওয়া ভাল। যেমন, নীচের স্তরে মৃগেল, মিররকার্প, কার্পিও এ ধরনের মাছ থাকে। পোনা ছাড়ার সময় আনুপাতিক হারেই পোনা ছাড়তে হবে। একই সাথে মৃগেল এবং গলদা চিংড়ি ছাড়া হলে গলদা চিংড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আবার মাংসভোজী অর্থাৎ একে অপরকে খেয়ে ফেলে এ ধরনের প্রজাতি মিশ্রচাষে দেয়া যাবে না। মিশ্রচাষে রাক্ষুসে প্রজাতিকে এড়িয়ে যাওয়া অত্যাবশ্যক।

    পানির গুণাগুণ রক্ষা
    মাছ পানিতে থাকে বলেই পানির গুণাগুণ ও পরিবেশ রক্ষা করাটা জরুরি। অথচ অনেক মৎস্য চাষি পানির গুণাগুণ রক্ষায় সচেষ্ট নন। মাছ চাষের জন্য পানির নির্ধারিত স্থিতিমাপ রয়েছে। এগুলো দক্ষতার সাথে রক্ষা করতে পারলে চাষকালীন সময়ে নানা সমস্যা এড়ানো সম্ভব। পানির পিএইচ (PH), অ্যামোনিয়া, ক্ষারত্ব, দ্রবীভূত অক্সিজেন প্রভৃতির আদর্শ মাত্রা রয়েছে। এ মাত্রা অতিক্রম করলে বা অস্বাভাবিক কমবেশি হলেই বিপত্তি। চাষিরা টেস্ট কিটের (Test kit) এর মাধ্যমে উপরোক্ত মাত্রা পরিমাপ করে পানির গুণাগুণ জানতে পারেন এবং অভিজ্ঞ চাষি করণীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন। এ কারণে চাষিদের জন্য টেস্ট কিট রাখা অতি জরুরি।

    মানসম্মত খাবার দেয়া
    লাভজনক মাছ চাষের জন্য মানসম্মত খাবার প্রদান অন্যতম প্রধান শর্ত। কেননা মাছ চাষে ৭০% এর বেশি খরচ হয় কেবল খাদ্য সরবরাহে। বাজারে নানা কোম্পানীর খাদ্য রয়েছে এবং অনেকে নিজে খাদ্য তৈরি করে সরবরাহ করেন। খাবার যে ভাবেই সরবরাহ করা হোক না কেন তা অবশ্যই মানসম্পন্ন হতে হবে। সঠিক পুষ্টিমান সম্পন্ন এবং মাছের আকার ও বয়স উপযোগী খাবার সরবরাহ না করলে মৎস্য চাষি ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারেন। অনেক চাষি অজ্ঞতা, সস্তা বা বাকীতে পাবার জন্যে খুবই নিম্নমানের খাবার ক্রয় করে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। এ ব্যাপারে তাদের সচেতনতা প্রয়োজন। তাছাড়া পরীক্ষাগারে খাদ্য পরীক্ষা করালে খাদ্যের পুষ্টিমান সম্পর্কে জানা যায়।

    খাবার কম-বেশি সরবরাহ করা
    কম খাবার সরবরাহ করলে যেমন মাছের প্রত্যাশিত উৎপাদন পাওয়া যায় না, তেমনি বেশি পরিমাণে খাবার সরবরাহে চাষি অধিক ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারেন। এতে খাবার ও অর্থ দুই-ই অপচয় হয় এবং পানি দূষণের জন্য মাছ মারা যেতে পারে। অধিকাংশ চাষি এ ভুলটি করে থাকেন। সাধারণত মাছের পোনার সংখ্যা তাদের অজানা থাকায় খাদ্য প্রয়োগের হিসেবে গরমিল থাকায় মাছচাষি সঠিকমাত্রায় খাবার সরবরাহ করতে পারেন না। এজন্য মাছের সংখ্যা এবং গড় ওজন জেনে পানির গুণাগুণের দিক বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় পরিমাণে খাবার সরবরাহ করা অত্যাবশ্যক।

    নিয়মিত খাবার সরবরাহ করা
    অনেক চাষি নিয়মিত খাবার সরবরাহ করার পরিবর্তে মাঝে মাঝে ও অনিয়মিতভাবে খাবার সরবরাহ করে থাকেন। এভাবে খাবার সরবরাহ করলে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করা সম্ভব নয়। তাছাড়া অনেক চাষি অসময়ে আবার কেউ কেউ ইচ্ছেমত খাবার দিয়ে থাকেন বলে মাছের সুষম বৃদ্ধি হয় না এবং অনেক ক্ষেত্রে খাবারের অপচয় হয়ে থাকে। অর্থাভাবে চাষের মাঝামাঝি সময়ে খাবার সরবরাহে ব্যর্থ হলে চাষি লাভবান হতে পারে না। তাছাড়া মাছ খাদ্য খাচ্ছে কি না তা অনেক চাষি লক্ষ্য করেন না।

    নিয়মিত ওজন নেয়া
    ১০/১৫ দিন পর পর মাছের গড় ওজন নেয়া আবশ্যক। তা না হলে চাষি খাবারের পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারেন না। মাছের ওজন না নিলে চাষিও বুঝতে পারেন না যে মাছের বৃদ্ধি সন্তোষজনক নাকি হতাশাব্যঞ্জক। চাষিকে তাই ১০/১৫ দিন পর পর মাছের গড় ওজন নিতে হবে এবং তদনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

    স্বাস্থ্য পরিচর্যা
    পোনা ছেড়ে এবং খাবার সরবরাহ করেই চাষির দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। মাছের স্বাস্থ্য পরিচর্যা ও পর্যবেক্ষণ একটি বড় কাজ। মাছের অস্বাভাবিক আচরণ বা দেহে অস্বাভাবিক কোনো কিছু দেখা গেলে বা ক্ষত হলে মৎস্য বিশেষজ্ঞ বা মৎস্য কর্মকর্তার শরণাপন্ন হতে হবে। তবে মাছের রোগ হলে চিকিৎসার চেয়ে রোগ প্রতিরোধে অধিক মনোযোগী হলে মাছচাষি ক্ষতি এড়াতে পারেন। স্বাস্থ্যসম্মত চাষ ব্যবস্থা বাস্তবায়নে আজকাল মাছ চাষে নানা ঔষধপত্র এবং পুষ্টি পণ্য পাওয়া যাচ্ছে যা চাষি ব্যবহার করে সুবিধা পেতে পারেন।

    অতিরিক্ত সার প্রদান
    মাছ চাষে পানিতে প্রাকৃতিক খাদ্য উৎপাদনে জৈব ও অজৈব সারের ইতিবাচক ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু প্রায়শ দেখা যায় যে অনেক চাষি কেবল সার প্রয়োগের মাধ্যমে মাছ চাষ করতে চান। তাদের ধারণা কেবল সার প্রয়োগ করলে আর সম্পূরক খাবার দেয়া লাগবে না। এ ধারণা থেকে অতিরিক্ত সার প্রয়োগে তারা বিপদ ডেকে আনেন। পানিতে প্লাংক্টন বুম বেশি হয়ে সমস্যার সৃষ্টি করে এক পর্যায়ে পানি নষ্ট হয়ে যায় এবং পুকুরে গ্যাস সৃষ্টি হয়ে মাছ মারা যায়। কেবল প্রয়োজন হলেই সার দেয়া উচিত না হলে দরকার নেই।

    পোল্ট্রি লিটার বা বিষ্ঠা ব্যবহার না করা
    পোল্ট্রি বিষ্ঠাতে খাদ্যমান রয়েছে এ চিন্তা থেকে অনেক মৎস্য চাষি পোল্ট্রি লিটারকেই কেবল মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করছে। কিন্তু লিটার ব্যবহারের কারণে চাষিরা নানা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। অনেক সময় পোল্ট্রি লিটারে কাঠের গুড়া ব্যবহার করা হয় যা মাছ খেয়ে পরিপাক হয় না এবং তা থেকে বদহজম হয়ে পেট ফুলে মাছ মারা যায়। আবার লিটারে কেবল তুষ থাকার কারণে একই সমস্যা হয়। অধিক পরিমাণে লিটার পানির গুণাগুণ নষ্ট করে। পানিতে অ্যামোনিয়া গ্যাসের কারণে ব্যাপকহারে মাছ মারা যায় এবং পানির গুণাগুণ রক্ষা করতে গিয়ে ঔষধপত্র কিনতে প্রচুর অর্থ ব্যয় হয়। তাছাড়া এ লিটারের মাধ্যমে মাছে এন্টিবায়োটিকের উপস্থিতি পাওয়া যায় যা স্বাস্থ্যসম্মত নয়। ইউরোপীয় দেশসমূহে মাছে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। আমাদের দেশেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ কারণে সস্তায় লাভের মানসিকতা পরিহার করতে পোল্ট্রি লিটার মাছ চাষে ব্যবহারে বিরত থাকা উচিত।

    সঠিক নির্দেশনায় ঔষধপত্র ব্যবহার
    আধুনিক মাছ চাষে চিকিৎসা, প্রতিরোধ এবং নানা সমস্যা মোকাবেলায় বিভিন্ন ধরনের ঔষধপত্র এবং পুষ্টিপণ্য বাজারে পাওয়া যায়। আমাদের দেশেও নানা কোম্পানী নানা পণ্য বাজারজাত করছে। তবে অনেক সময় তারা সস্তায় এসব কিনে প্রতারিত হয়ে থাকেন। আবার সঠিক ব্যবহার বিধি না জানা বা সঠিক মাত্রায় ব্যবহার না করায় সুফল পাচ্ছে না। এ কারণে সঠিক মাত্রা এবং প্রয়োগ বিধি অবশ্যই মেনে চলতে হবে।

    একাধারে একই পুকুরে মাছ ধরা
    একই পুকুর থেকে একাধারে কয়েকদিন মাছ ধরলে চাষি ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারেন। কেননা পরপর কয়েকদিন জাল টানলে অন্য মাছ খাদ্য গ্রহণ বন্ধ করে দেয় বলে মাছের ওজন কমে যায় এবং আঘাতজনিত কারণেও কিছু মাছ মারা যেতে পারে। এ কারণে একটানা কয়েকদিন মাছ না ধরে মাঝে বিরতি দেয়া উচিত।

    আহরিত মাছ পরিবহনে সমস্যা
    মাছ ধরে সঠিকভাবে বাজারজাত করতে না পারলে মাছচাষি চাষের শেষ দিকে এসে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারেন। যেসব মাছ জীবিত পরিবহন করা হয় সেগুলো অনেক ক্ষেত্রে অধিক সময় পরিবহন বা অন্য কোনো ত্রুটির কারণে মারা যায়। এ ক্ষেত্রে প্লাষ্টিক ড্রামে পরিষ্কার পানিসহ পরিমিত মাছ পরিবহন করা উচিত। আজকাল ড্রামসহ গাড়ি ভাড়া পাওয়া যায়। শিং, মাগুর, কৈ প্রভৃতি মাছ এভাবে পরিবহন করা হয়। ড্রামে নেয়ার আগে কিছু সময় হাপায় রাখা আবশ্যক। মাছ ধরার ৮/১০ ঘন্টা আগে খাবার দেয়া বন্ধ রাখলে ধৃত মাছ অধিক সময় জীবিত থাকে। অন্যান্য মাছ দূরত্ব ভেদে বরফজাত করা উচিত।
    মাছচাষিরা একটু সতর্ক হলে এবং চাষকালে প্রতিটি ধাপে দক্ষতার পরিচয় দিলে ক্ষতি বা লোকসান থেকে রক্ষা পেয়ে নিশ্চিত লাভবান হতে পারবেন।
    লেখক: মোহাম্মদ তারেক সরকার

    দুগ্ধ খামার স্থাপনের গুরুত্ব ও পদ্ধতি

  • Share The Gag
  • মানুষের শারীরিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশের জন্য দুধ ও মাংসের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির জন্য দৈনিক ২৫০ মিলিলিটার দুধ ও ১২০ গ্রাম মাংসের প্রয়োজন। তার বিপরীতে আমরা পাচ্ছি ৫১ মিলিলিটার ও ২০ গ্রাম মাংস। দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে দুধ ও মাংসের চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশে দুধ ও মাংসের ব্যাপক চাহিদা পূরণ করতে হলে আরও অনেক গাভীর খামার স্থাপন করা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ব্যাপক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
    দুগ্ধ খামার বর্তমানে একটি লাভজনক শিল্প। গাভীর খামার বেকারত্ব দূরীকরণ, দারিদ্র্যবিমোচন, আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দেশে দুধের চাহিদা পূরণে বিশাল ভূমিকা রাখছে।
    একটি পারিবারিক গাভীর খামার স্থাপন করতে বেশি জমির প্রয়োজন হয় না। বাড়ির ভেতরেই একটি আধা-পাকা শেড তৈরি করলেই চলে। গাভীর খামার স্থাপনে তেমন কোনো ঝুঁকি নেই। প্রয়োজনে দেশি ঘাস সংগ্রহ করে খাওয়ালেও চলে। অল্প পুঁজি দিয়ে গাভীর খামার শুরু করা যেতে পারে। একটি পারিবারিক গাভীর খামার দেখাশোনা করার জন্য আলাদা শ্রমিকের প্রয়োজন হয় না।
    গাভীর খামার স্থাপনের গুরুত্ব-
    ১. মানুষের অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য দুধ ও মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধি করা;
    ২.খামার থেকে অধিক মুনাফা অর্জন করা;
    ৩. শ্রম ও পুঁজির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা;
    ৪. গাভী দ্বারা আঁশজাতীয় খাদ্য এবং মানুষের খাদ্যের উচ্ছিষ্টাংশকে যথাযথ ব্যবহার করা যায়;
    ৫. ভূমির উর্বরতা সংরক্ষণ ও বৃদ্ধিতে গাভীর খামারের গুরুত্ব অপরিসীম;
    ৬. গাভীর খামার সারা বছরের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে;
    ৭. গাভীর খামার মোটামুটি স্থায়ী ব্যবসা, অন্য যে কোনো কাজ অপেক্ষা শ্রেয়;
    ৮. পর্যাপ্ত দ্রব্য সামগ্রী যেমন- দই, ঘি, মিষ্টি ইত্যাদি উৎপাদনের ফলে দুগ্ধ খামার স্থায়ী ভালো বাজার সৃষ্টি করতে পারে;
    ৯. গোবর দ্বারা বায়োগ্যাস প্লান্ট তৈরি করে জ্বালানি ও আলোর ব্যবস্থা করা যায়;
    ১০. ষাঁড় বিক্রি করে আয় বৃদ্ধি করা যায়।
    তিনটি সংকর গাভী পালন খামারের বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব
    ১. স্থায়ী মূলধন বিনিয়োগ
    ক. জমি- নিজস্ব
    খ. শেড/ঘর- নিজস্ব
    গ. গাভী ক্রয় ৩টিী৬০,০০০/- =১,৮০,০০০/-
    ২. আনুষঙ্গিক ব্যয়
    ক. ঘাস- নিজস্ব
    খ. খড়-  নিজস্ব
    গ. দানাদার খাদ্য (৬ কেজি/৩/দিন)
    (৬ী৩ী৩৬৫ী২০) = ১,৩১,১৪০/-
    ঘ. লেবার- নিজস্ব
    ঙ. ওষুধ, টিকা ইত্যাদি =    ৩,০০০/-
    মোট ব্যয় = ৩,১৪,৪০০/-টাকা
    ৩. আয়-
    ক. দুধ বিক্রি থেকে- ১২ লিটার/গাভী/ দিন
    (১২ী৩ী২৮০ী৩৫) = ৩,৫২,৮০০/-
    খ. বছর শেষে ৩টি বাছুর বিক্রি থেকে আয়
    (৩ী২০০০০)----------=   ৬০,০০০/-
    প্রথম বছর শেষে মোট আয় = ৪,১২,৮০০/-
    প্রথম বছরে মুনাফা = মোট আয়-মোট ব্যয়
    ৪,১২,৮০০- ৩,১৪,৪০০=৯৮,৪০০/- টাকা
    দ্বিতীয় বছরে মুনাফা= ৯৮,৪০০ী১.৫ গুণ= ১,৪৭,৬০০/- টাকা

    খামার স্থাপন পদ্ধতি
    আদর্শ ব্যবস্থাপনার কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও সঠিকভাবে পরিচালনার মাধ্যমেই দুধ, মাংস উৎপাদন তথা গাভীর খামারকে লাভজনক করা সম্ভব।
    ১. খামারের সঠিক স্থান নির্বাচন যেমন-
    - শুষ্ক ও উঁচু ভূমি -পারিপার্শ্বিক অবস্থা ভালো হতে হবে
    - সুষ্ঠু যাতায়াত ব্যবস্থা - প্রয়োজনীয় জমির প্রাপ্যতা
    - সুষ্ঠু নিষ্কাশন ব্যবস্থা- পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ
    - মাটির প্রকৃতি ভালো হতে হবে- আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকা।
    - জনবসতি থেকে দূরে
    - রাস্তা থেকে দূরে
    ২. আধুনিক স্বাস্থ্যসম্মত বাসস্থান তৈরি,
    ৩. উপযোগী জাত ও গাভী বাছাই করা,
    ৪. নিয়মিত টিকা প্রদান, কৃমিনাশক এবং প্রজনন   সমস্যাজনিত চিকিৎসা প্রদান,
    ৫. প্রজননের সঠিক সময় নির্ধারণ,
    ৬. নির্ধারিত রেশন মোতাবেক খাদ্য প্রদান করা,
    ৭. কাঁচা ঘাস ব্যবস্থাপনা,
    ৮. গর্ভবর্তী গাভী ব্যবস্থাপনা,
    ৯. বাছুর ব্যবস্থাপনা,
    ১০. সঠিক দুধ দোহন পদ্ধতি
    ১১. বাছুরের মোটাতাজাকরণ কার্যক্রম বিশেষ করে এঁড়ে বাছুর,
    ১২. বাজার ব্যবস্থাপনা।
    গাভী পালনের মাধ্যমে দারিদ্র্যবিমোচন ও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব।

    গাভীর খামার ব্যবস্থাপনা

  • Share The Gag
  • বাংলাদেশে প্রতিবছর দুধের চাহিদা ১২.৫২ মিলিয়ন মেট্রিক টন, উৎপাদন হচ্ছে প্রতিবছর ২.২৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন, ঘাটতি প্রতিবছর ১০.২৪ মিলিয়ন মেট্রিক টন। চাহিদার আলোকে আমাদের দেশে ছোট-বড় প্রায় ৪৭,৭১০টি ডেইরি খামার গড়ে উঠেছে। বর্তমানে শংকর জাতের গাভী পালনের মাধ্যমে দুগ্ধ খামার স্থাপন একটি লাভজনক ব্যবসা। ফলে গাভী পালনে উন্নত ব্যবস্থাপনা, সঠিক প্রজনন, সুষম খাদ্য, রোগদমন ও প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে আধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে খামারিদের জানা প্রয়োজন।

    ভালজাতের গাভীর বৈশিষ্ট্য মাথা : হালকা ও ছোট আকার, কপাল প্রশসত্দ, উজ্জ্বল চোখ, খাদ্যের প্রতি আগ্রহ। দৈহিক বৈশিষ্ট্য : দেহের সামনে দিক হালকা, পিছনের দিক ভারী ও সুসংগঠিত, দৈহিক আকার আকর্ষণীয়, শরীরের গঠন ঢিলা। পাজর : পাজরের হাড় স্পষ্ট, হাড়ের গঠন সামঞ্জস্যপুর্ণ। চামড়া : চামড়া পাতলা, চামড়ার নীচে অহেতুক চর্বি জমা থাকবে না, চামড়ার রঙ উজ্জ্বল, লোম মসৃণ ও চকচকে হবে। ওলান : ওলান বড় সুগঠিত ও দেহের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, বাটগুলো একই আকারের হবে। চারবাট সমান দূরত্বে ও সমানত্দরাল হবে। দুগ্ধশিরা : দুগ্ধশিরা মোটা ও স্পষ্ট, তলপেটে নাভীর পাশ দিয়ে দুগ্ধশিরা আঁকাবাঁকাভাবে বিস্তৃত থাকবে।

    খামার ব্যবস্থাপনা: খামার ব্যবস্থাপনা এক প্রকার কৌশল যার মাধ্যমে খামারের সম্পদ, সুযোগ ও সময়ের সমন্বয় ঘটানো যায়। সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনার সুফল হল-
    ১. সম্পদের মিতব্যয়িতা
    ২. স্বল্প সময়ে ফললাভ
    ৩. স্বল্প সময়ে অধিক উৎপাদন
    ৪. শক্তি ও শ্রমের অপচয় রোধ
    ৫. উৎপাদনে গুণগতমান ও উৎকর্ষতা লাভ।

    সাধারণ ব্যবস্থাপনা: গাভী তার গুণগতমান উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়ে থাকে। কিন্তু গাভীর বংশানুক্রমিক গুণগতমান যতই ভাল হোক এর ব্যবস্থাপনা সমন্ধে বিশেষ যত্নবান হওয়া প্রয়োজন। দৈনন্দিন পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা রক্ষা, বিজ্ঞান সম্মত বাসস্থান, সুষম খাদ্য সরবরাহ, সঠিক প্রজনন, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ইত্যাদি উন্নত গাভী পালনের মৌলিক বিষয়।

    বাসস্থান: পারিবারিক পর্যায়ে বা খামার পর্যায়ে গাভী পালন করতে হলে গাভীর জন্য ভাল বাসস্থান প্রয়োজন। গাভীকে বিভিন্ন প্রতিকূল অবস্থা যেমন- ঝড়, বৃষ্টি, অতিরিক্ত ঠাণ্ডা ও গরম এবং অন্যান্য নৈসর্গিক দৈব দুর্বিপাক, পোকামাকড়, চোর, বন্য-জীবজন্তু হতে রক্ষা করার জন্য যথোপযুক্ত বাসস্থান বা গোয়ালঘর প্রয়োজন। আমাদের আবহাওয়ার আলোকে ঘরে প্রচুর আলো বাতাস চলাচলের জন্য ঘরটি উত্তর-দক্ষিণমুখী হওয়া বাঞ্চনীয়। কোন অবস্থাতেই যেন ঘরে স্যাঁতস্যাঁতে অবস্থা যেন না থাকে। এতে ঘরের মেঝেটি ইট বিছানো থাকলে ভাল হয়। ঘরের দুর্গন্ধ ও মশামাছি দমনের জন্য মাঝে মাঝে জীবাণুনাশক দ্বারা ধোয়া প্রয়োজন।

    গবাদিপশুর বাসস্থান দুই ধরণের হতে পারে : ১. উন্মুক্ত বা উদাম ঘর ২. বাঁধা ও প্রচলিত ঘর।

    বাঁধা ঘরের বৈশিষ্ট্য: এই পদ্ধতিতে গরুর গলায় দড়ি বা লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে পালন করা যায়। গাভীর খাদ্য, পানি গ্রহণ এবং দুধ দোহন একই স্থানে করা যায়।

    সুবিধা : বাঁধা থাকে বিধায় গাভীর দুধ দোহন সহজ হয়, প্রতিকূল আবহাওয়ায় পশু নিরাপদ থাকে, কৃত্রিম প্রজননের জন্য বেশ সুবিধাজনক, নির্ধারিত অল্প জায়গায় পশু পালন করা যায়।

    অসুবিধা: এই পদ্ধতিতে ঘর তৈরি খরচ বেশি, পশুর সহজে ঘোরাফেরার ব্যবস্থা থাকে না, এতে পশুর ব্যয়াম না হওয়াতে বিভিন্ন ধরনের রোগ হবার সম্ভাবনা থাকে, একই জায়গায় দিনরাত্রি বাঁধা থাকে বলে মেঝে স্যাঁতস্যাঁতে থাকে।

    বাঁধা ঘরের নকশা: এই পদ্ধতির গো-শালায় পশু সব সময় বাঁধা অবস্থায় থাকে। এজন্য গো-শালা যাতে সহজে পরিস্কার করা যায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে ঘর তৈরি করা প্রয়োজন। প্রচলিত গো-শালা দুই ধরনের হয়-

    একসারি বিশিষ্ট গো-শালা: অল্প সংখ্যক গবাদি পশুর জন্য একটি লম্বা সারিতে বেঁধে পালনের জন্য এই গো-শালা তৈরি করা হয়। প্রতিটি পশুকে পৃথক রাখার জন্য জিআইপাইপ দিয়ে পার্টিশন দেয়া হয়, পার্টিশনের পাইপ লম্বায় ৯০ সে.মি. এবং উচ্চতায় ৪৫ সে.মি. হওয়া প্রয়োজন, একটি গরুর দাঁড়াবার স্থান ১৬৫ সে.মি., পাশের জায়গা ১০৫ সে.মি., খাবার পাত্র ৭৫ সে.মি. এবং নালা ৩০ সে.মি. হওয়া প্রয়োজন, একই মাপে পশুর সংখ্যা অনুযায়ী জায়গা নির্ধারণ করে গো-শালা তৈরি করা হয়, গো-শালা হবে একচালা বিশিষ্ট ঘর, ঘরের ছাদ প্রায় ৩০০ সে.মি. উঁচুতে করতে হয়।

    দুই সারি বিশিষ্ট গো-শালা: অল্প জায়গায় অধিক পশুপালনের জন্য এ ধরণের গো-শালা তৈরি করা হয়, এ ধরনের গো-শালায় পশুকে দুভাবে রাখা যায়, মুখোমুখি পদ্ধতি ও বাহির মুখ পদ্ধতি। মুখোমুখি পদ্ধতিতে দুই সারি পশু সামনাসামনি থাকে। দুইসারি খাবারের পাত্রের মাঝখানে ১২০ সে.মি. চওড়া রাসত্দা থাকে- যা পাত্রে খাবার দেবার জন্য ব্যবহার করা হয়, একটি গরুর জন্য দাঁড়ানোর জায়গা ৫.৫ ফুট, পাশের জায়গা ৩.৫ ফুট।

    সুবিধা: একই সাথে দুইসারি পশুকে সহজে খাবার ও পানি সরবরাহ করা যায়, দুধ দোহনের জন্য অধিকতর আলো পাওয়া যায়, পশু নিজ জায়গায় স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে, পরিচর্যাকারী সহজে চলাফেরা করতে পারে।

    একটি গাভীকে নিম্ন তালিকা অনুসারে খাদ্য সরবরাহ করতে হবে :
    কাঁচা ঘাস (সবুজ ঘাস) ২০-৩০ কেজি, দানাদার খাদ্য মিশ্রণ: ১৮-২০% প্রোটিন সমৃদ্ধ: ১ম ৩ কেজি দুধ উৎপাদনের জন্য- ০৩ কেজি, পরবর্তী প্রতি কেজি দুধ উৎপাদনের জন্য-০.৫ কেজি, লবণ-৫০-৬০ গ্রাম, পরিস্কার পানি-প্রয়োজন মত।

    পরিচর্যা: গাভীর সঠিক পরিচর্যা না করলে উন্নত জাতের গাভী পালন করেও গাভীকে সুস্থ সবল উৎপাদনক্ষম রাখা সম্ভব হবে না। ফলে গাভী হতে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ দুধ, মাংস পাওয়া যাবে না এবং গাভী পালন অলাভজনক হবে।

    দুধ দোহন: গাভীর দুধ দৈনিক ভোরে একবার এবং বিকালে একবার নির্দিষ্ট সময়ে দোহন করতে হবে। দুধ দোহনের পূর্বে গাভীর উলান ও দোহনকারীর হাত পরিস্কার পানি দিয়ে ভালভাবে ধুয়ে নিতে হবে।

    প্রজনন: গাভীর বংশানুক্রমিক গুণগতমান উন্নয়নের জন্য সুষ্ঠু পরিকল্পিত প্রজনন ব্যবস্থা অবলম্বন করতে হবে। যে ষাড়ের মা, দাদী, নানী যত বেশি পরিমাণ দুধ দেয় তার বাচ্চার দুধ উৎপাদনের ক্ষমতা ততই বেশি হয়। তাই যখন গাভী গরম হবে তখন গুণগতমানসম্পন্ন ষাড়ের বীজ দ্বারা নিকটস্থ কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র হতে গাভীকে প্রজনন করিয়ে নেওয়া প্রয়োজন।

    খামারের রেকর্ড সংরক্ষণ: খামারের লাভক্ষতি নিরূপণ আয়-ব্যয়ের সঠিক হিসাবের উপর নির্ভরশীল। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য পরিকল্পনা ও লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বিয়য়ে মূল্যায়ন করা দরকার। খামারের উৎপাদিত পণ্যের হিসাব, ক্রয়, বিক্রয়, জন্ম, মৃতু্য এবং কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রমের জন্য সঠিক তথ্য রক্ষাকল্পে রেকর্ড সংরক্ষণ করা অত্যাবশ্যকীয়।

    উন্মুক্ত বাসস্থানে নিম্নোক্ত হারে জায়গার প্রয়োজন:
    পশুর ধরণ ঘরে প্রতি পশু স্থান প্রতি পশুর জন্য মুক্ত স্থান খাদ্যপাত্র
    বাড়ন্ত বাছুর ২.৫-৩ বর্গ মিটার ৫-৬ বর্গ মিটার ৩৭-৫০ সেন্টিমিটার
    গাভী ৩-৩.৫ বর্গ মিটার ৮-১০ বর্গ মিটার ৫০-৬০ সেন্টিমিটার
    গর্ভবতী গাভী ১০-১২ বর্গ মিটার ১৮-২০ বর্গ মিটার ৬০-৭০ সেন্টিমিটার

    লেখক: কৃষিবিদ সোহরাব জিসান

    গাভী পালন : আয় বাড়তে করণীয়


    হয়তো আপনার বাসা সংলগ্ন কিছু জায়গা পতিত অবস্থায় রয়েছে। সেখানে গাভী, হাঁস-মুরগির খামার ও মাছ চাষ করে বাড়তি টাকা উপার্জন করতে পারেন। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করে নিতে পারেন। একদিকে ৮৪ ফুট, আরেক দিকে ৬০ ফুট—এমনি একটি জায়গায় কী কী করবেন, কত পুঁজি নিয়ে নামবেন এবং কবে থেকে লাভবান হতে থাকবেন তার একটি বর্ণনা দেয়া হলো।
    সংখ্যা ৮টি। জায়গার পরিমাণ ১৬ ফুট – ৫০ ফুট।

    খরচের হিসাব :
    ১. গাভীর ঘর নির্মাণ (উপরে টিন, চারদিকে দেয়াল) ১০,০০০ টাকা;
    ২. ৮টি গাভী ক্রয় (বাছুরসহ দুধের গাভী) প্রতিটি ৫০,০০০ করে ৪,০০,০০০ টাকা;
    ৩. খানার পাত্রসহ আনুষঙ্গিক খরচ ৪,০০০ টাকা;
    ৪. প্রতিদিন খাদ্য খরচ (১টির জন্য ১০০ টাকা) ৮টির জন্য (৮০০ × ৩০) ২৮,০০০ টাকা (প্রতি মাসে);
    ৫. ওষুধ, ভিটামিন (মাসিক) ১৫০০ টাকা;
    ৬. টিউবওয়েল স্থাপন ৮,০০০ টাকা;
    ৭. পানি সাপ্লাইয়ের মোটর ৮,০০০ টাকা;
    ৮. ৪টি ফ্যান ১৬,০০০ টাকা; মোট খরচ ৯,৮৫,০০০ টাকা।

    গাভীর খামার থেকে আয় : প্রতিটি গাভী দৈনিক ১৮ কেজি দুধ দেবে। প্রতি কেজির দাম ৩০ টাকা। একটি গাভীর দুধ থেকে প্রতিদিন গড়ে পাওয়া যাবে ৩০ × ১৮ = ৫৪০ টাকা। তাহলে ৮টি গাভীর দুধ থেকে প্রতিদিন ৫৪০ × ৮ = ৪৩২০ টাকা আয় হবে। ফলে ৩০ দিনে ৮টি গাভীর দুধ বিক্রি থেকে ৪৩২০ × ৩০ = ১,২৯,৬০০ টাকা। গাভী প্রায় ৮ মাস ধরে গড়ে ১৮ কেজি দুধ দেবে। এরপর দুধের পরিমাণ কমতে থাকবে। দুধ বিক্রি থেকে ৮ মাসে আয় ১,২৯,৬০০ × ৮ = ১০,৩৬,৮০০ টাকা। প্রাথমিক খরচ ৯,৮৫,০০০ টাকা; মোট আয় = ৫১,৮০০ টাকা। ৮ মাস পর নিট লাভ ৫১,৮০০ টাকা।

    ৮ মাস পর দুধ দেয়ার পরিমাণ কমে যাবে। গড়ে ৮ কেজিতে নেমে আসবে। তাহলে ৮টি গাভী থেকে ৬৪ কেজি দুধ পাওয়া যাবে। ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলে ৬৪ কেজি দুধ থেকে দৈনিক আয় ১৯২০ টাকা। ৩০ দিনে আয় ১৯২০ × ৩০ = ৫৭,৬০০। ৮ মাসের আয় ৫৭,৬০০ × ৮ = ৪,৪০,৮০০ টাকা। তাহলে প্রথম ৮ মাসে দুধ বিক্রি থেকে আয় ১০,৩৬,৮০০ টাকা + পরবর্তী ৪ মাসে আয় ৪,৪০,৮০০ টাকা। মোট দুধ বিক্রি থেকে আয় ১৪,৭৭,৬০০ টাকা।

    ৮ মাস পর দুধ দেয়ার পরিমাণ কমে যাবে। তখন কৃত্রিম প্রজনন দিতে হবে। কৃত্রিম প্রজনন দেয়ার প্রায় ৮ মাস পর গাভী বাচ্চা দেবে। এরপর প্রতিবার ২০ কেজি করে দুধ দেবে। এ গাভী ৪ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত পোষা যাবে। ১ বছর পর এক-একটি বাছুর প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করা যাবে। ৩ বছর পর বাছুরগুলো আবার গর্ভবতী হবে। তখন এক-একটির দাম ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় দাঁড়াবে। এ কারণে বাছুরগুলো রেখে ষাঁড়গুলো বিক্রি করে দিতে হবে।

    গাভীকে দানাদার খাদ্য, কাঁচা ঘাস, খড়, চালের কুঁড়া ও প্রচুর পরিমাণে পানি দিতে হবে। পরবর্তী বছরগুলোতে ঘর নির্মাণ খরচ লাগবে না, গাভীও কিনতে হবে না। ৮ মাস পর আবার গাভীগুলো দুধ দেবে। আগের বাছুর বড় হবে। এসময় ঘর নির্মাণ খরচ, গাভী ক্রয় খরচ, টিউবওয়েল নির্মাণ খরচ আর লাগবে না, তবে খাদ্য খরচ বেড়ে যাবে। আগের ৮টি গাভী, ৮টি বড় বাছুর, নতুন ৮টি ছোট বাছুর সব মিলে ২৪টি গরু হবে। আগের বাছুরের মধ্যে যদি ষাঁড় থাকে তাহলে বিক্রি করে দিতে হবে। ৮টি বাছুরের মধ্যে যদি ৪টি ষাঁড় থাকে তাহলে প্রতিটি ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করলে ১৫,০০০ × ৪ = ৬০.০০০ টাকা আয় হবে। এর বেশিও আয় হতে পারে।

    ৮ মাস পর বাছুর প্রসবের পরে খরচ : খাদ্য খরচ বেড়ে গিয়ে দাঁড়াবে দৈনিক ১,৫০০ টাকা। তাহলে এক মাসে খাদ্য খরচ ১,৫০০ × ৩০ = ৪৫,০০০ (প্রতি মাসে)। বিদ্যুত্, পানি, ওষুধ, ভিটামিন ৫,০০০ টাকা। মোট ব্যয় ৫০,০০০ টাকা।

    আয় : দুধ বিক্রি থেকে এক মাসে আয় ১,২৯,৬০০ টাকা; ১,২৯,৬০০ - ৫০,০০০ = ৭৯,৬০০ টাকা নিট লাভ। এছাড়া প্রতি বছর বাছুর বিক্রি থেকে এবং গোবর বিক্রি করেও টাকা অর্জন করা যাবে। গাভীগুলো ৪ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত দুধ দেয়ার পর এগুলো বিক্রি করে দিতে হবে। এ ধরনের একটি গাভী ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করা যাবে।
    লেখক: মোহাম্মদ মোস্তফা
    এগ্রোবাংলা ডটকম

    দুধ উত্পাদন বৃদ্ধির তিনটি কৌশল


    গাভী পালনের অন্যতম উদ্দেশ্য দুধ উত্পাদন। আর তার জন্য প্রয়োজন সুষম খাবার সরবরাহ, রোগাক্রান্ত হওয়ার সাথে সাথে যথাযথ চিকিত্সাসহ অন্যান্য দৈনন্দিন পরিচর্যা। তবে এর সাথে আরো কিছু সহজ বিষয়ের দিকে নজর দিলে দুধের উত্পাদন আশানুরূপ মাত্রায় বাড়ানো সম্ভব। দুধে আশি ভাগের বেশি পানি থাকে। বাকি ১২.৫ ভাগ ফ্যাট নয় এমন শক্ত পদার্থ যেমন- ভিটামিন, মিনারেল ইত্যাদি। অবশিষ্টাংশ ফ্যাট। এক লিটার দুধ উত্পাদনের জন্য গাভীর প্রায় চার লিটার পানির প্রয়োজন হয়। অথচ অধিকাংশ সময় গাভীকে পর্যাপ্ত পানি দেয়া হয় না। যেমন- রাতের বেলা পিপাসা লাগলেও গাভী পানি পান করতে পারে না। পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গাভীকে পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি দিলে দুধের উত্পাদন প্রায় ২০ শতাংশ বেড়ে যায়। তাই গাভী যেন প্রয়োজনমত পানি পান করতে পারে সে জন্য চব্বিশ ঘণ্টা পানির পাত্রে পানি দিতে হবে। প্রচলিত ধারণা হচ্ছে গাভীকে বেশি খাবার দিলে দুধ উত্পাদন বেশি হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে সুষম, পুষ্টিকর খাবার গাভীর শারীরবৃত্তীয় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এবং দুধ উত্পাদনের জন্য অপরিহার্য কিন্তু অতিরিক্ত খাবার কখনোই নয়। বরং এতে হিতে বিপরীত হয়।

    খাবার হজমের জন্য পাকস্থলীর রাসায়নিক পরিবেশ হচ্ছে ক্ষারীয়। গাভী যত বেশি জাবর কাটবে খাবারের সাথে বেশি লালা মিশ্রিত হবে এতে খাবার বেশি হজম হবে। গাভী জাবর কাটার সময় না পেলে খাবার হজম হবে না। আর এ কারণে পুষ্টিও কম পাবে। আর পুষ্টি কম পেলে দুধ উত্পাদনও কমে আসবে। তাই খাবার হজমের জন্য গাভীকে কমপক্ষে আট ঘণ্টা জাবর কাটার সময় দিতে হবে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর আর কোনো খাবার দেয়া ঠিক হবে না। গাভীকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করতে হবে। প্রতি লিটার দুধে প্রায় ১.২ গ্রাম ক্যালসিয়াম থাকার কারণে দুগ্ধবতী গাভীর দুধ উত্পাদনের জন্য বেশি পরিমাণে ক্যালসিয়াম প্রয়োজন হয়। খাবারের সাথে ক্যালসিয়াম সরবরাহ না করলে গাভীর হাড় থেকে ক্যালসিয়াম ব্যবহার করে থাকে। এতে হাড়ে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দিলে গাভী দুর্বল ও অসুস্থ হয়ে পড়ে। দুধ উত্পাদনও কমে যায়।

    উপরের বিষয়গুলোর দিকে নজর দিলে খরচ কমের পাশপাশি দুধ উত্পাদন বৃদ্ধি পাবে। খামারি লাভবান হবে।

    সূত্র- এগ্রো বাংলা

    বাংলাদেশে ডেইরী সেক্টর নিয়ে কিছু স্বপ্ন, কিছু কথা

  • Share The Gag
  • বাংলাদেশে ডেইরী সেক্টর নিয়ে কিছু স্বপ্ন, কিছু কথা।

    স্বপ্ন তা সে যেটাই হোক, আমরা ছোট নয়, অনেক বড় করে স্বপ্ন দেখতে চাই। আমরা বিশ্বাস করি হাতেহাত রেখে এগিয়ে গেলে কোন বাধাই বাধা নয়, যার অসংখ্য প্রমান রেখে গিয়েছেন আমাদের বাংলাদেশের অনেক বড় বড় উদ্যোগক্তারা। কৃষিপ্রধান এই বাংলাদেশে অনেক দেরী করে হলেও ডেইরী সেক্টরে যে বিপ্লব শুরু হয়ে গেছে তা সবাই একবাক্যে মেনে নেবে। এই বিল্পবের পেছনে যেমন রয়েছে তথ্য প্রযুক্তির উতকর্ষের সাধন, ঠিক তেমন রয়েছে দেশের শিক্ষিত এবং প্রবাসী বেকার জনগোষ্ঠীর নতূন উতসাহ এবং বিনিয়োগ। আমরা সবাই এক হতে পেরেছি এটাই এই মূহুর্তের সব থেকে বড় পাওয়া। সবাই সংবদ্ধ হয়ে যেকোন একটা কাজে উদ্যোগ নিলে সেখানে সফল হওয়া শুধুমাত্র সময়ের ব্যাপার। একটা দেশের ভিত মজবুতের জন্য ক্ষুদ্র এবং মাঝারী বিনিয়োগ বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই। একটা দেশ তখনই সাবলম্বী হবে যখন দেশের প্রতিটা পরিবার, প্রতিটা জনগন জিডিপিতে তাদের ভূমিকা রাখবে। ডেইরী সেক্টর এমনই একটা সম্ভাবনাময় শিল্পখাত যা পরনির্ভরতা দূর করে একটা পরিবারে আর্থিক সাচ্ছন্দ এনে দেবে, পরিবারে সুখ আসবে, সন্তানরা লেখাপড়ার সুযোগ পাবে এবং দেশের পুষ্টিহীনতা দূর করে সুস্থ সবল জাতিও তৈরী করবে।

    বর্তমান ডেইরী সেক্টরের সার্বিক অবস্থান বিবেচনা করে যে প্রধান সমস্যা চোখে পড়ে, যে সমস্যার কারনে খামারীরা ডেইরী সেক্টরের প্রতি উতসাহ হারিয়ে ফেলে তা হলো দুধের ন্যায্য দাম। আমাদের দেশে মোট চাহিদার ৮০% দুধ যেখানে আমদানী নির্ভর সেখানে কি সমস্যার কারনে খামারীরা দুধের দাম থেকে বঞ্চিত এটাই এখন ভাবার বিষয়। প্রতি বছর ৬৫-৭০ হাজার মেট্রিক টন গুড়াদুধ আমদানী হয় যা ১৭ লাখ লিটার তরল দুধের সমপরিমান এবং এর আনুমানিক মূল্য ২.৫ হাজার কোটি টাকা। প্রতিদিন ১৮ মিলিয়ন লিটার দুধ আমাদের দেশে উতপাদন হচ্ছে যার মাত্র ৭% যাচ্ছে মিল্ক প্রসেসরদের কাছে, বাকীটা লোকালি ব্যবহারিত হচ্ছে। এত বিপূল পরিমান চাহিদা থেকে সত্তেও খামারীরা দুধের দাম থেকে বঞ্চিত এটা অত্যান্ত দুক্ষের এবং পরিতাপের বিষয় শুধু সরকারের জন্য নয় বরং জাতিগতভাবে আমাদের প্রত্যেকের ও। আমরা কেউই পারিনি এই শিল্পের সাথে জড়িত ব্যবসায়ীদের সঠিক পথ দেখাতে এবং তাদেরকে সহযোগিতার হাত বাড়াতে। যা হবার হয়েছে এখন আমরা আর অতীত নিয়ে পড়ে থাকতে চাইনা, আমরা চাই ডেইরী সেক্টর নিয়ে একটি সুষ্ঠ পরিকল্পনা এবং এর সঠিক বাস্তবায়ন। এই লক্ষ্যে দুগ্ধ খামারী থেকে শুরু করে ট্রেডার, কালেকটর, প্রসেসর, সরকারী, বেসরকারী বিভিন্ন সংস্থাসমুহের সহযোগিতা ছাড়া কোনভাবেই সম্ভব নয়।

    দুধের দাম এলাকা অঞ্চলভেদে ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে একজন খামারীকে বিক্রয় করতে হয় যা খাদ্যের দাম বা সার্বিক ব্যায়ের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। অন্যান্য খাদ্য দ্রব্যের উচ্চমূল্য, টাকার অবমূল্যায়ন, জীবনযাত্রার ব্যয় হিসাব করলে দুগ্ধ খামারীদের অবস্থান অত্যান্ত নাজুক। আমরা স্বপ্ন দেখি আবার গ্রামের প্রতিটা ঘরে ঘরে একটি খামার থাকবে, মানুষ পরনির্ভরশীলতা দূর করে সাবলম্বী হবে, দেশে বেকার সমস্যার সমাধান হবে।

    ঠিক এই অবস্থায় আমাদের এবং সরকারের কি করনীয় হতে পারে এটাই ভাববার বিষয়। সরকার এবং খামারীদের একত্র হয়ে কাজ করতে হবে এর কোন বিকল্প নেই, তারপর যে যার অবস্থানে কিছু কাজ করার আছে। রাতারাতি সব কিছু পরিবর্তন করা সম্ভব নয়, তবে বর্তমান যে অবকাঠামো আছে সেটেকে ব্যবহার করেই সরকারকে নেমে পড়তে হবে উন্নয়নমূলক কাজে। সরকারের সহযোগি মনোভাব এবং সহযোগিতা ছাড়া কোন ভাবেই এই সেক্টরের উন্নতি সাধিত হবেনা। বিশেষ যে কাজগুলোর প্রতি এখনই সরকারের গুরুত্ত দেয়া উচিত তা হলো:

    সবার প্রথম সরকারের উচিত হবে দুগ্ধ খামারীদের দুধ বিক্রির বাজারের যে অবকাঠামো আছে তা পুনরায় ঢেলে সাজানো। মিল্ক ভিটা, আড়ং, ফার্মফ্রেস সহ যারা যারা দুগ্ধ প্রসেসর কোম্পানী এবং কালেক্টর আছে তারা তরল দুধের যে দাম দিচ্ছে তা বাজারের মূল্যস্ফীতি, উচ্চ দ্রব্যমূল্য, জীবন যাত্রা ব্যয় এসবের সাথে সামঞ্জস্য রেখে পুনরায় একটি দাম সবার জন্য নির্ধারন করে দেয়া। প্রতিদিন দুধ তাদের কালেক্ট করতে হবে, যদি না করে এই কোম্পানীগুলোর পক্ষ থেকে খামারীদের ক্ষতিপূরনের ব্যবস্থা করার আইন করা। এখানে সরকারের মিল্ক ভিটাকে সর্বপ্রথম উদ্যোগ নিতে হবে। মিল্কভিটাকে সারা দেশে প্রতিটা গুরুত্তপূর্ন বিভাগীয় শহর গ্রাম পর্যায়ে কুলিং প্লান্ট এবং কালেকশন পয়েন্ট করে দিতে হবে যেন খামারীদের দুধ বিক্রি করতে অসুবিধা না হয়।

    বিগত ২০০০ সনে বাংলাদেশে বছরে দুধ উতপাদন হতো ২ লক্ষ মেট্রিক টন। বর্তমানে ২০১৭ তে বেড়ে দাড়িয়েছে ৭২-৭৪ লক্ষ মেট্রিক টন। এত পরিমান উতপাদন বাড়ার পরও সরকার আমদানীকৃত গুড়া দুধের উপর শুল্ক কর বাড়াতে পারেনি। দেশে খামারীরা যদি না বাচে, ধংস হয়ে যায় কত মানুষ বেকার হবে, কত পরিবার না খেয়ে থাকবে সরকারের কাছে অবশ্যই সেই হিসাব আছে। সরকারের উচিত গুড়া দুধের উপর শুল্ক পরিমান কিছুটা বাড়ানো এবং উন্নত বিশ্বে আমদানী করা গুড়া দুধ যে তেজষ্ক্রিয়াতার মাত্রায় আমদানীর অনুমতি আছে তা আমাদের দেশেও মেনে চলা। আমরা কেন অধিক তেজক্রিয় মাত্রার আমদানী করা দুধ খেতে যাবো, যা অন্যকোন দেশ করেনা? গত ৫ বছরে দুগ্ধ শিল্পের অভূতপূর্ব উন্নয়নের পরও যদি আমদানী কমানো না হয়, অধিক তেজক্রিয়তার মাত্রার দুধ আমদানীর উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা না হয় তা সরকার ও দেশের জন্য হবে আত্মঘাতী।

    দেশে গুড়াদুধের আমদানী কমানোর সাথে সাথে নিজের দেশের ভিতরেই কি করে কম দামে গুড়াদুধ তৈরী করা যায় তার দিকে বিশেষ গুরুত্ত আরোপ করতে হবে। শুধু মিল্কভিটা এবং আড়ং আমাদের দেশে গুড়া দুধ তৈরী করছে। ধীরে ধীরে দেশে দুধের প্রোডাকশন বাড়ার সাথে সাথে গুড়া দুধের প্রসেসিং প্ল্যান্টও বাড়াতে হবে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এখন দেরী না করে সর্বপ্রথম মিল্কভিটার গুড়াদুধের প্ল্যান্টকে অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন করে পুনরায় চালু করে প্রয়োজনে খামারীদের এবং প্রসেসিং কোম্পানীকে ভর্তুকি দিয়ে ধীরে ধীরে আগানোর উদ্যোগ সরকারের নেয়া উচিত। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতও খামারীদের এবং মিল্ক প্রসেসিং কোম্পানীদের বিভিন্ন স্কিম এর আওতায় যেমন মেশিনারীজের উপর, নতূন ফার্ম করার উপর ভর্তুকি দিয়ে যদি আসতে পারে আমাদের ও সে ব্যবস্থা করতে হবে। উন্নত দেশগুলো যেমন আমেরিকা, কানাডা, নিউজিল্যান্ড তাদের খামারীদের সার্থ রক্ষার্থে প্রয়োজনের বেশী উতপাদন হবার পরও তাদের খামারীদের ভর্তুকি দেয় আর আমাদের দেশে দুধের এত চাহিদা থাকা সত্তেও আমরা খামারীদের কোন প্রকার সহযোগিতা করতে পারছিনা। গুড়া দুধের নিজেদের দেশে প্ল্যান্ট তৈরী করা ছাড়া দুগ্ধ শিল্পের বাজার কোনভাবেই ঠিক করা সম্ভব হবেনা।

    উপরের এই কাজগুলো যত দ্রুত সম্ভব সরকারের উচিত বাস্তবায়নে যাওয়া। পাশাপাশি আরো যে কাজগুলোকে গুরুত্ত সহকারে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে তা হলো:

    ডেইরী ভ্যালু চেইন এর রিলেটেড প্রোডাক্টসের উপর অধিক গুরুত্ত আরোপ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে দুগ্ধজাত পন্য প্রস্তুতকারক কোম্পানীদেরকে বিদ্যুৎ, গ্যাস, ভ্যাট সহ নানাবিধ সুযোগ সুবিধা দিয়ে তাদের অধিক প্রেরনা দিতে হবে যেন তারা মানসম্পন্ন দুগ্ধজাত পন্য প্রস্তুত করে, জনগনকে দুগ্ধজাত পন্য কেনায় উতসাহ প্রদান করে। আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন দুগ্ধজাত পন্য উতপাদনে আমরা অনেক পিছিয়ে। ক্রেতার নানাবিধ চাহিদা অনুযায়ী নানাবিধ মান সম্পন্ন পন্য ক্রেতাদের হাতে তুলে দিতে পারলেই দুধের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাবে। সে ক্ষেত্রে কার্যকরী বাজারজাতকরন নীতি গ্রহন না করতে পারলে সকল চেস্টাই ব্যার্থ হবে। প্রথমত, জনগনকে বোঝাতে হবে কেন তারা দুধ খাবে, দুধের উপকারীতা কি। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্যাম্পেইন করে তাদের খাদ্য তালিকায় দুধকে প্রাধান্য দিয়ে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সরকারী বেসরকারী পর্যায়ের উদ্যোগক্তাদের নিয়ে টিভি, পত্রিকা বিজ্ঞপনের মাধ্যমে জনগনের সামনে দুধের উপকারিতা তুলে ধরে সচেতন করতে হবে। পাশাপাশি ক্রেতাদের পছন্দমত নানাবিধ আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন দুগ্ধজাত পন্য তৈরী করতে হবে।

    দুগ্ধ খামার বেড়ে ওঠার পাশাপাশি খামারীদের জন্য পশু ডাক্তারদের সংখ্যা আরো অধিক সংখ্যায় বাড়াতে হবে। বর্তমানে যে সংখ্যা আছে তা হলো ১০,০০০ পশুর জন্য ১ জন ডাক্তার। এটা খুবই অপ্রতুল, এটা কোন সেবার পর্যায়ে পরেনা। যার ফলে অনভিজ্ঞ ডাক্তার নামধারী লোকজনের ভূল চিকিতসায় খামারীরা নানানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এবং লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছে। দুগ্ধ খামারীদের জন্য সরকারের এই সেবার মান অধিক মাত্রায় নিশ্চিত করতে হবে। অনলাইন স্বাস্থ্য সেবা, বিনামূল্যে কার্যকরী সকল ভ্যাকসিন, মেডিসিন, চিকিতসা, খামারী দোড় গোড়ায় পৌছে দেবার ব্যবস্থা করতে হবে।

    পশুখাদ্য পন্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখার জন্য সরকারকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রতি বছর একটা নির্দিষ্ট সময় বাজারে গোখাদ্যের মজুত করে কৃত্রিম গো খাদ্যের সংকট তৈরী করে খামারীদের পকেট থেকে ঠকায়ে অধিকমূল্য নিয়ে যাচ্ছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। সরকারকে এদের ব্যাপারে কঠোর আইনের ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। পাশাপাশি দেশের ভিতরে সরকারী পতিত যে জমি পড়ে আছে তা এলাকা ভিত্তিক খামারীদের সমিতি আকারে ঘাস চাষের প্রকল্পের আওয়াত সহজ শর্তে লীজ দেবার ব্যবস্থা করা যেতে পারলে খামারীরা গোখাদ্য খরচ অনেকটা কমিয়ে আনতে পারবে। খামারীদের ঘাস চাষে উতসাহিত করার জন্য সরকার থেকে প্রনোদনা, এবং আর্থিক সহযোগিতার ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়াও পশু খাদ্য আমদানীতে সরকারকে বিনা শুল্কে আমদানীকারকদের সহযোগিতা করা খুবই গুরুত্তপূর্ন।

    যে শিল্প এখন মাত্র উঠতি অবস্থায় সেখানে আয়ের উপর সরকারী সকল ট্যাক্স প্রত্যাহার না করলে খামারীরা ছোট বড় দুগ্ধ শিল্প গড়ে তুলতে উতসাহিত বোধ করবেনা। এখনও একটা ছোট মাঝারী দুগ্ধ খামারে বিদ্যুৎ বিল ইন্ডাস্ট্রিয়াল হিসাবে গন্য করা যা অত্যান্ত দুক্ষজনক। এটাকে অনতিবিলম্বে কৃষিখাতের আওতায় এনে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে আনার ব্যবস্থা গ্রহন করা দরকার।

    অধিক শংকর জাতের দুগ্ধবান গাভী প্রস্তুতের জন্য সঠিক এবং কার্যকরী প্রজনন নীতিমালা তৈরী করতে হবে। দেশে এমন একটি ব্রিডকে সামনে আনতে হবে যা দিয়ে আমাদের ডুয়েল পারপাস, যেমন দুধ ও মাংস উভয় সার্থই রক্ষা করবে, দেশের আবহাওয়ার সাথে মানানসই হবে। দুগ্ধ খামারীদের সাথে আলোচনা না করে বাংলাদেশে যে ব্রাহমান জাতের আবির্ভাব হয়েছে তা ছিল সরকারের ভূল সিদ্ধ্যান্ত। এই জাত আমাদের দেশের দুগ্ধ শিল্পকে ধংসের পথে নিয়ে যাবে।

    একটা নতূন খামার করার জন্য ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক খুব অল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদী খামার বান্ধব ঋন সহজে দেবার জন্য সরকারী এবং বেসরকারী ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান সমুহকে সুনির্দিষ্ট কিছু নীতিমালা করে দিতে হবে। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায় এই ঋনের ১০% শতাংশ খামারীরা পায়না বরং রাজনৈতিক, এলাকার প্রভাবশালী লোকজন নানান রকম ভূয়া আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ম্যানেজ করে নিয়ে যাচ্ছে এবং এতে করে প্রকৃত খামারীরা বঞ্চিত হচ্ছে। সরকারকে এই খামারীদের ঋন দেবার ব্যাপারে সঠিক যাচাই বাছাই করে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে।

    সুনির্দিষ্ট খামার বান্ধব ডেইরী নীতিমালা অত্যান্ত জরুরী। পুরানো নীতিমালাকে ঘষামাজা করে নয়, আমরা চাই সরকার প্রকৃত ডেইরী খামারীদের সাথে বসে তাদের সমস্যা সমূহ পর্যালোচনার নিরিখে সিদ্ধ্যান্ত নেয়া হোক। আমরা সরকারের দায়িত্তপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানকে দেখি মিল্ক প্রসেসরদের সাথে কথে বলে বাজেট সহ নানাবিধ কর্মকান্ড পরিচলনা করতে। মিল্ক প্রসেসর কখনই একটা দেশের ডেইরী খামারীদের সমস্যা, দুক্ষ, দুর্দশার চিত্র তুলে ধরতে পারবেনা। আমরা চাই সরকার পরবর্তি সিদ্ধ্যান্তগুলো সঠিকভাবে নেবেন অতীতের সকল ভূল থেকে শিক্ষা নিয়ে। আমরা আর পেছনে পড়ে থাকতে চাইনা। পৃথিবীর অন্যান্য দেশ ও জাতির মত আমরাও আমাদের দেশের অবস্থান জানান দিতে চাই, আমরা বলতে চাই শুধু পোষাক শিল্পে নয়, ডেইরীতে আমরা এখন আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন।

     

    ধন্যবাদ

    শাহ এমরান
    জেনারেল সেক্রেটারি
    বাংলাদেশ ডেইরী ফার্মারস এসোসিয়েশন

    Saturday, May 20, 2017

    নিরাপদ সবজির উৎস হোক ছাদ কৃষি

  • Share The Gag
  • নিরাপদ সবজি উৎপাদন ছাদ কৃষির উৎস

    ঢাকাশহর শুধু না বাংলাদেশের প্রায় শহরেই এখন ছাদ কৃষি বহুল আলোচিত। বাংলাদেশের বহুল টিভি চ্যানেল ও এখন হৃদয়ে মাটি ও মানুষের ডাকের পাশাপাশি ছাদ কৃষি নিয়েই আলাদাভাবে টিভি প্রতিবেদন করছে যার ফলশ্রুতিতে দেশের প্রায় অঞ্চলেই বৃদ্ধি পাচ্ছে ছাদে বাগান। অল্প পরিসর জায়গাতেই অনেকেই গড়ে তুলেছে সুন্দর সুন্দর বাগান। কেউ করছে ফুলের বাগান কেউ করছে ফলজ বাগান আবার কেউ ছাদেই উৎপাদন করছে নিয়মিতভাবে সারা বছরের সবজি। এই যে যারা বাগান করছে তারা প্রায়শ বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয় যেমন গাছের পাতার রঙ পরিবর্তন হওয়া, বিভিন্ন পোকামাকড় এর উপদ্রব আর যারা বাগান করছে তারাও থাকেন ব্যাপক বিপাকে কোথায় মিলবে এর যথোপযুক্ত সমাধান। আবার সমাধান পেলেও কোথায় মিলবে এই পণ্যাদি??

    প্রায় ছাদ বাগানেই চায় নিরাপদ ছাদ বাগান আর সেই ছাদ বাগান থেকেই পাবে কিছু নিরাপদ সবজি কিন্তু নিরাপদ সবজি উৎপাদন করতে হলে কিছু পণ্যাদি দরকার হবে যা কিনা রাসায়নিক উপাদান ছাড়া তাহলে কোথায় মিলবে এই পণ্যাদি?? আসুন জেনে নেই কোথায় কি কি পণ্যাদি পাবেন নিরাপদ রাসায়নিক মুক্ত চাষাবাদ করার জন্য।

     

    বাংলাদেশের বহুল পরিচিত কোম্পানি ইস্পাহানী এগ্রো লিমিটেড নিরাপদ কৃষির জন্য কাজ করছে অনেকদিন ধরে গড়ে তুলেছে ইস্পাহানী বায়োটেক লিমিটেড আর তাদের কিছু পণ্যাদি সারা দেশ জুড়ে নিরাপদ রাসায়নিক মুক্ত ফসল উৎপাদনে রাখছে বিশাল ভুমিকা আর হ্যা আসুন তাদের এমন কিছু পণ্যাদি সম্পর্কে কিছুটা পরিচিত হয়ে নেই।

     

    বায়োনিম প্লাস (Bio Neem Plus)

     



    নিম ভিত্তিক ইসি অ্যাজাডিরেকটিন ১% সমৃদ্ধ।

     

    • বেগুনের জাব পোকা (এফিড) দমনে কার্যকরী

    • এটি একটি পরিবেশ বান্ধব কীটনাশক।

    • আই পি এম এর সাথে ব্যবহার যোগ্য।


     

    যে সকল ফসলের জন্য উপযোগীঃ

    বেগুণ, টমেটো, সিম, করলা, পটল, কাঁকরোল, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ঢেঁড়স, মরিচ, পেঁয়াজ এছাড়াও বিভিন্ন প্রকার ফুল, ফল, তুলার জন্য অনেক উপযোগী একটি পরিবেশ বান্ধব পণ্য।

     

    প্যাঁক সাইজ- ৫০ মিলি, ১০০ মিলি,

     

    ইকোম্যাক (Ecomac)



    ইকোম্যাক ১.৮ ইসি একটি বায়োপেস্টিসাইড যা এবামেকটিন সমৃদ্ধ। এটি একটি এন্টিবায়োটিক যা ক্ষতিকর পোকা, মাকড় ও নেমাটোড দমনে কার্যকরী এবং পরিবেশ বান্ধব।

    যে সকল ফসলের জন্য উপযোগীঃ

    বেগুণ, টমেটো, সিম, করলা, পটল, কাঁকরোল, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ঢেঁড়স, মরিচ, পেঁয়াজ এছাড়াও বিভিন্ন প্রকার ফুল, ফল, তুলার জন্য অনেক উপযোগী একটি পরিবেশ বান্ধব পণ্য।

     

    প্যাঁক সাইজ- ৫০ মিলি, ১০০ মিলি,

    ঢাকা শহরে এই পণ্য গুলো বিক্রি করছে কৃষি ষ্টোর - ০১৭৭১৬২৫২৫২।

    Friday, May 19, 2017

    ​পাটের কালো পট্টি রোগে করণীয়

  • Share The Gag
  • পাটের কালো পট্টি রোগ

    কালো পট্রি রোগের লক্ষণ প্রায় কান্ড পচা রোগের মতই। তবে এতে কান্ডে কাল রং এর বেষ্টনীর মত দাগ পড়ে। আক্রান্ত স্থানে ঘষলে হাতে কালো গুড়ার মত দাগ লাগে। সাধারণতঃ গাছের মাঝামাঝি বয়স থেকে রোগ বেশী দেখা দেয়। এ রোগে গাছ ভেঙ্গে পড়ে না তবে গোটা গাছটি শুকিয়ে মরে যায়, ফলে আঁশ নিম্নমানের হয় ও ফলন কম হয়। সাধারণত তোষা পাটে এ রোগের প্রকোপ বেশী দেখা যায়। খরার সময় এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশী হয়। সাধারণত জুন মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্তে এ রোগের প্রকোপ দেখা যায়। 

    প্রতিকার:

    ১. এ রোগের প্রতিকারের জন্য জমি পরিষ্কার পরিছন্ন এবং আগাছা ও আর্বজনামুক্ত রাখতে হবে। 

    ২. শুরুর দিকে আক্রান্ত গাছগুলোকে তুলে দূরে মাটিতে পুতে ফেলে কিংবা পুড়ে ফেলে এ রোগ দমন করা যায়। 

    ৩. মেনকোজেন গ্রুপের ছত্রাক নাশকযেমন: ডাইথেন এম-৪৫ প্রতি ১০ লিটার পানিতে ২০ গ্রাম মিশিয়ে গাছের গোড়ায় পর পর দু’দিন প্রয়োগ করলে রোগের ব্যাপকতা কমে যায়।

    পরবর্তীতে যা যা করবেন না:

    ১. ক্ষেতের আশ পাশ অপরিচ্ছন্ন রাখবেন না

    পরবর্তীতে যা যা করবেন:

    ০. বীজ বপনের আগে বীজ শোধন করে নিতে হবে। বীজ শোধনের জন্য ভিটাভেক্স ২০০ (০.৪%)/প্রোভেক্স-২০০ (০.৪%) এর ব্যবহারে যথেষ্ট সুফল দেয়। পাটের প্রধান ছত্রাকজনিত রোগগুলো বীজ ও মাটিবাহী। বপনের আগে বীজ শোধনের ফলে রোগের প্রকোপ অনেক কমে যায়। শোধন করা সম্ভব না হলে বপনের আগে বীজ রোদে ভালভাবে শুকাতে হবে। 

    ১. পাটের জমির পানি নিস্কাসনের ব্যবস্থা রাখুন 

    ২.আক্রান্ত জমিতে ২-৩ বছর তোষা পাটের আবাদ না করে দেশী পাটের আবাদ করা যেতে পারে।

    ৩. পাট কাটার পর গাছের গোড়া, শিকড় ও অন্যান্য পরিত্যাক্ত অংশ সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। 

    ৪. নীরোগ পাট গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করতে হবে। গাছের ৭০% ফল পাকলেই বীজ কেটে ফেলা উচিত। দেরী করলে ছত্রাক সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

    ছাদ বাগানের জন্য যা এখন দরকার

  • Share The Gag
  • ঢাকাশহর শুধু না বাংলাদেশের প্রায় শহরেই এখন ছাদ কৃষি বহুল আলোচিত। বাংলাদেশের বহুল টিভি চ্যানেল ও এখন হৃদয়ে মাটি ও মানুষের ডাকের পাশাপাশি ছাদ কৃষি নিয়েই আলাদাভাবে টিভি প্রতিবেদন করছে যার ফলশ্রুতিতে দেশের প্রায় অঞ্চলেই বৃদ্ধি পাচ্ছে ছাদে বাগান। অল্প পরিসর জায়গাতেই অনেকেই গড়ে তুলেছে সুন্দর সুন্দর বাগান। কেউ করছে ফুলের বাগান কেউ করছে ফলজ বাগান আবার কেউ ছাদেই উৎপাদন করছে নিয়মিতভাবে সারা বছরের সবজি।



    এই যে যারা বাগান করছে তারা প্রায়শ বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয় যেমন গাছের পাতার রঙ পরিবর্তন হওয়া, বিভিন্ন পোকামাকড় এর উপদ্রব আর যারা বাগান করছে তারাও থাকেন ব্যাপক বিপাকে কোথায় মিলবে এর যথোপযুক্ত সমাধান। অনলাইনে অনেক ফেসবুক গ্রুপ এবং পেইজ ও তৈরি হয়েছে সময়ের সাথে যারা বাগান পরিচর্যা নিয়ে নিয়মিত আর্টিকেল লিখে একে অপরের বাগান পরিদর্শন করছে অভিজ্ঞতা বিনিময় করছে শুধু তাই নয় কেউ কেউ গাছ আদান-প্রদান ও করছে।

     বাগান নিয়ে যারাই কাজ করছে তাদের প্রায় সকলেই কম বেশী বাগান করতে পারেন এবং বাগান করার সাহায্য সহযোগিতাও পাচ্ছে কিন্তু কেউ কেউ পাচ্ছে না বাগানের নিয়মিত বিভিন্ন সমস্যার সমাধান। অনলাইনে কেউ কেউ সমাধান হয়তো বলে দিচ্ছে কিন্তু কেউ পণ্যাদি সহযোগিতা দিতে পাড়ছে না যার কারনে কেউ কেউ শরণাপন্ন হচ্ছে এলাকাভিত্তিক বিভিন্ন নার্সারির উপরে যাদের অনেকেই হয়তো লাগবে একটি পণ্য অথচ ধরিয়ে দিচ্ছে এক সাথে অনেক গুলো পণ্য আবার কেউ কেউ পণ্যাদি দিচ্ছে কিন্তু এর সঠিকডোজ কি হবে তাও সঠিক তথ্যগত ভুল করছে। তাহলে এই সকল সমস্যার সমাধান আসলে কি?? 



    হ্যা সমাধান একটি সুষ্ঠু নেটওয়ার্ক এবং নিয়মিতভাবে নিরাপদ বাগান নিয়ে অভিজ্ঞজন নিয়ে আড্ডা আর এই আড্ডা থেকেই বের হয়ে আসবে একদল স্বেচ্ছাসেবক যারা অনলাইন এবং অফলাইনে নিয়মিতভাবে সকলের সমস্যাদির সমাধান দিবে আর কেউ কেউ হয়তো দিবে পণ্যাদির জোগান।

     
    বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে এবং ঢাকা শহরস্থ এলাকাভিত্তিক হতে পারে এই আড্ডা আর যেহেতু বর্তমান সময়ে প্রযুক্তিগত মানুষ অনেক সচেতন এবং প্রায় মানুষের কাছেই স্মার্ট ফোন তাই ফেসবুক ভিত্তিক ও হতে পারে এই আড্ডা আর এই আড্ডা হতে পারে নিরাপদ সুষ্ঠুগঠন একটি মনের মত বাগান। 
    আসুন সকলে একত্রিত হই আর সুন্দর সুন্দর বাগান উপহার দেই সকলে মিলে; গড়ে তুলি একটি সুন্দর সবুজ পরিবেশ।

    বাগানের সকল সেবা পেতে ভিজিট করুন

    এই লিনকে গিয়ে লাইক দিন -এখানে ক্লিক 

    ​পাটের বিছা পোকা দমন

  • Share The Gag
  • ​পাটের বিছা পোকা দমন

    পাতার উল্টো পিঠের সবুজ অংশ খেয়ে পাতাকে সাদা পাতলা পর্দার মত করে ফেলে।এরা সারা মাঠে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো পাতা খেয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে। 

    প্রতিকার:

    ১. প্রাথমিক পাটের পাতায় ডিমের গাদা বা পোকা দেখলে তা তুলে ধ্বংস করা।

    ২. ডিম অথবা আক্রমণের প্রথম অবস্থায় কীড়াগুলো যখন পাতায় দলবদ্ধ অবস্থায় থাকে তখন পোকা সমেত পাতাটি তুলে পায়ে মাড়িয়ে বা গর্তে চাপা দিয়ে মারা।

    ৩.পাট ক্ষেতের আশে পাশে বা অন্য আগাছা থাকলে তা পরিস্কার করা।

    ৪.বিছা পোকা যাতে এক ক্ষেত হতে অন্য ক্ষেতে ছড়াতে না পারে সে জন্য প্রতিবন্ধক নালা তৈরী করা যায়।

    ৫. অধিক আক্রমণের ক্ষেতে কার্বারিল গ্রুপের কীটনাশক যেমন: ভিটাব্রিল বা ক্যালভিন বা র‌্যাভিন প্রতি লিটার পানির সাথে ৩ গ্রাম বা কুবারিল ২ গ্রাম অথবা ক্লোরপাইরিফস গ্রুপের কীটনাশক যেমন: কম্পল বা কিংগোল্ট ১ মিলি/ লি হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা 

    পরবর্তীতে যা যা করবেন না:

    ১. ক্ষেতের আশ পাশ অপরিচ্ছন্ন রাখবেন না

    পরবর্তীতে যা যা করবেন: 

    ১. নিয়মিত মাঠ পরিদর্শন করে আক্রমণের শুরুতেই ব্যবস্থা নিন। 

    ছাদে ও বারান্দায় টবে শাক সবজি চাষ পদ্ধতি

  • Share The Gag
  • টবে শুধু ফুল ফল নয় চাষ করতে পারেন শাক-সবজিও। সঠিক উপায়ে টবে শাক-সবজি চাষ করে টাটকা শাক-সবজি যেমন পাওয়া যায় তেমনি পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা পূরণ করা যায়। খুব অল্প পরিশ্রমে চাইলেই আপনি বাড়ির ছাদে, বারান্দায় কিংবা কার্ণিশে আপনার পছন্দমত শাক-সবজির আবাদ করতে পারবেন। কিন্তু সবজির ভালো ফলনের জন্যে দরকার সঠিক ব্যবস্থাপনা। সঠিক পদ্ধতিতে চাষ ও পরিচর্চা করলে অল্প পরিসরেও ভালো ফলন পাওয়া যায়।

    টবে আবাদ যোগ্য শাক ও সবজি:

    যেসব সবজি সংখ্যায় কম লাগে এবং একবার লাগিয়ে ক্রমাগত অনেকদিন ধরে খাওয়া যায় সেই সমস্ত সবজিরই আবাদ করলে ভালো হয়। টবে আবাদযোগ্য সবজির মধ্যে টমেটো, বেগুন, মরিচ, শসা, ঝিংগা, মিষ্টি কুমড়া, মটরশুটি, কলমি, কলমি শাক, লাউ, পুইশাক, লেটুস, ধনেপাতা, পুদিনা, থানকুনি, তুলসী ও ব্রোকলী ইত্যাদি টবে ফলানো যেতে পারে।

    টবে সবজি চাষ পদ্ধতি:

    গাছের আকার ও বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বিভিন্ন সাইজের টব ব্যবহার করতে হবে। টবের নিচে ছিদ্রগুলোর উপর ইটের টুকরো বা মাটির চারা বসানোর পর টবের তলায় প্রথম ১ ইঞ্চি ইটের সুরকি বা খোয়া, তার উপরে ১ ইঞ্চি পঁচা গোবর সার দিতে হবে যাতে সহজেই অতিরিক্ত পানি বের হয়ে যেতে পারে। টবে গাছ লাগানোর আগে ২ ভাগ দো-আঁশ মাটি ও ১ ভাগ পঁচা গোবর সার এবং এর সঙ্গে ১০০ গ্রাম টিএসপি ও ৫০ গ্রাম এমওপি সার ভালভাবে মিশিয়ে টব ভর্তি করে ১০ থেকে ১২ দিন রেখে দিতে হবে। তবে গাছের ধরণ ও টবের আকার-আকৃতির উপর ভিত্তি করে সারের পরিমান কিছুটা কম বেশি হতে পারে। টবে মাটি ভরাট করার সময় টবের উপর দিক থেকে ১ ইঞ্চি খালি রাখবে হবে। নার্সারী থেকে উন্নত মানের চারা কিনে টবে লাগাতে পারেন কিংবা ভালো মানের বীজ কিনেও আপনি চারা তৈরি করে টবে লাগাতে পারেন।

    শুধু টব নয় চাইলে ঘরের অব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের পাত্র ও সরঞ্জামাদি ব্যবহার করেও তাতে সবজির গাছ লাগিয়ে খরচ কমিয়ে আনা যায়। সেইক্ষেত্রে টবের মতই নিময় মেনে মাটি ভরে গাছ লাগাতে হবে। আর অবশ্যই পাত্রের নিচের দিকে ছিদ্র থাকতে হবে যেন অতিরিক্ত পানি বের হয়ে যাবার সুযোগ থাকে।

    বীজতলা তৈরি করে চাষ:

    আপনার যদি যথেষ্ট পরিমান জায়গা থাকে, তাহলে ছাদে বীজতলা তৈরি করেও সবজির চাষ করতে পারেন। জায়গা বেশি থাকলে নানা ধরণের গাছ লাগিয়ে বেশি ফলন পেতে পারেন। শাক-সবজির বীজতলার জন্য মাটি হতে হবে ঝুরঝুরে, হালকা অথচ পানি ধরে রাখার ক্ষমতা সম্পন্ন মাটি চালুনি দিয়ে চেলে জীবানুমুক্ত করে নেয়া উত্তম। দুই ভাগ বেলে-দোআশ বা দোঁআশ মাটির সঙ্গে দুই ভাগ পাতাসার মিশিয়ে নিয়ে বীজতলার মাটি তৈরি করে নিলে হয়। মাটি যদি এটেল হয় তাহলে বীজের অঙ্কুরোদগমের সুবিধার জন্য একভাগ বালি মিশিয়ে হালকা করে নিতে হবে।

    সবজি চাষের পরিচর্যা:

    টবের মাটিতে বীজ বপনের আগে বিভিন্ন প্রকার আগাছা জন্মাতে পারে। আগাছাগুলো নিড়ানি দিয়ে খুঁচিয়ে তুলে ফেলে দিতে হবে। টবে চারা জন্মালে চারার গোড়ায় যেন আঘাত না লাগে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে, শাক-সবজির টবগুলোতে অবশ্যই আলো-বাতাস পায় এমন জায়গায় রাখা দরকার। কিছুদিন পর পর গাছের গোড়ার মাটি নিড়ানি দিয়ে খুঁচিয়ে ঝুরঝুরে করে দিলে ভালো হয়। অনেক শাক-সবজির চারা, বিভিন্ন প্রকার পাখি, পিপড়া, মাকড়শা, ইত্যাদি নষ্ট করে। হেপ্টাক্লোর ৪০ পরিমান মত দিয়ে যাবতীয় পিপড়া ও মাকড়শা নিবারণ করা যায়। অতিরিক্ত ঝর বৃষ্টি, রোদ বা তাপ থেকে রক্ষা করার জন্য সাময়িক ভাবে টব নিরাপদ স্থানে রাখা যেতে পারে।

    সবজি সংগ্রহ:

    সবজি বেশি দিন গাছে না রেখে বেশি পোক্ত না করে নরম থাকতেই তুলে খাওয়া ভালো তাতে এক দিকে যেমন নরম খাওয়া যায় অপর দিকে গাছে আরো বেশি ফলনে সাহায্য করা হয়ে মচরে বা থেতলে সবজি সংগ্রহ করা উচিৎ নয়। সবজি তোলার জন্যে কাঁচি দিয়ে কেটে তুললে ভালো হয়।

    Monday, May 15, 2017

    অভ্যন্তরীণ কৃষি যন্ত্রাংশের ৮০ ভাগ চাহিদা মেটায় বগুড়া

  • Share The Gag
  • অভ্যন্তরীণ কৃষি যন্ত্রাংশের ৮০ ভাগ চাহিদা মেটায় বগুড়া

    রাস্তার সরু গলির দু-পাশে ছোট ছোট ঝুপড়ি ঘর। প্রতিটি ঘরেই লোহা-লক্করের ঢুং ঢাং শব্দ। যেখানে কাজ করছেন সনদবিহীন একদল প্রকৌশলী। উৎপাদন করছেন পানির পাম্প, টিউবওয়েল, সেন্টিফিউগাল পাম্প, লাইনার, পিস্টন, শ্যালো ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ, সাইকেল, রিকশা পার্টস, জুট মিলের যন্ত্রাংশ, পিনারসহ নানা ধরনের কৃষি যন্ত্রাংশ। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় বগুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্রে সাতমাথা এলাকায় একটি সরু গলিতে গড়ে উঠেছে বিশাল এই শিল্পাঞ্চল। যা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ কৃষি যন্ত্রপাতি এবং যন্ত্রাংশের শতকরা ৮০ ভাগ চাহিদা মেটায়।

    বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প মালিক সমিতির তথ্যমতে, বগুড়ার এই শিল্পাঞ্চলে প্রায় ১ হাজার ছোট, বড় ও মাঝারি মানের কৃষিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ও ওয়ার্কসপ রয়েছে। যেখানে প্রায় ১ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান। বগুড়ায় তৈরি এসব কৃষি যন্ত্রপাতি বিক্রয় করার জন্য বগুড়া শহরে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি মার্কেট। যেখানে রয়েছে প্রায় ৩০০ টিরও বেশি বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান। যাদের বার্ষিক বিক্রয় হাজার কোটি টাকার উপরে। বগুড়ার এই শিল্পাঞ্চল দেশের অভ্যন্তরীণ কৃষি যন্ত্রপাতি এবং যন্ত্রাংশের শতকরা ৮০ ভাগ পূরণ করে। এছাড়া পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতেও বগুড়ায় তৈরি বেশ কিছু যন্ত্রাংশ রপ্তানি হয় বলে সমিতি সূত্রে জানা যায়।

    এসব কারখানায় তৈরি যন্ত্রাংশের মধ্য আরও রয়েছে মিলিং যন্ত্র, সেপার, বোরিং মেশিন, বিভিন্ন ধরনের লেদ মেশিন, পাওয়ার টিলার, ধান ও ভুট্টা মাড়াই মেশিনসহ কৃষি উপকরণাদি।

    বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি ও মেসার্স কামাল মেশিন টুলসের স্বত্ত্বাধিকারী কামাল মিয়া অর্থসূচককে বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে এখানকার স্থানীয় কারিগররা চট্টগ্রাম ডকইয়ার্ডসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ভাঙ্গা জাহাজের লোহা লক্কড়সহ পরিত্যক্ত লোহা সংগ্রহ করে। তারপর এসব লোহা গলিয়ে নানা ধরনের কৃষি যন্ত্রাংশ তৈরি করা হয়। এসব যন্ত্রাংশের চাহিদা এখন সারাদেশের কৃষকদের কাছে।

    কৃষিভিত্তিক এই শিল্পের ব্যাপক সম্ভাবনা থাকলেও নানান সমস্যার কারণে তা দ্রুত এগিয়ে যেতে পারছে না। এসব সমস্যা সমাধান এবং সরকারি সহযোগিতা পেলে এই শিল্প দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব বলে মনে করছেন উদ্যোক্তারা।

    বেলাল ইঞ্চিনিয়ারিং ওয়ার্কসের স্বত্ত্বাধিকারী আলাউদ্দিন বেলাল ১৯৯১ সাল থেকে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত। লায়নার, পিষ্টন, শ্যালো, ডিপ মেশিনের যাবতীয় খুচরা যন্ত্রাংশ তৈরি করেন তিনি। জানতে চাইলে তিনি অর্থসূচককে বলেন, রংপুর, দিনাজপুর, ঢাকা, পটুয়াখালী, বরগুনা এবং খুলনাসহ দেশের প্রায় প্রতিটি জেলাতেই আমাদের কৃষি যন্ত্রাংশের চাহিদা রয়েছে।

    কৃষি যন্ত্রাংশের সমস্যার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, চায়নার যন্ত্রাংশের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় আমরা টিকতে পারছি না। কেননা, চায়নার যন্ত্রাংশ দেখতে আমাদের যন্ত্রাংশের তুলনায় অনেক চকচকে ও মসৃণ। তাই ক্রেতারা আমাদের পণ্যের চেয়ে চায়নার পণ্য কিনতেই বেশি আগ্রহী। তাই দেশে যে সব কৃষি যন্ত্রাংশ তৈরি করা হয় তা আমদানি নিষিদ্ধ করার দাবি জানান তিনি।

    বগুড়ার কৃষি যন্ত্রাংশ শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলেন, আমরা দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখলেও এই খাত এখন অবহেলার শিকার। এই শিল্পের জন্য একটি জোন তৈরি করা অনেকদিনের দাবি। আমাদের কারখানায় লোহার যন্ত্রাংশ তৈরি করা হলেও মেটালকে ট্রিটমেন্ট করা হয় না বলে অনেক উৎপাদিত পণ্যের মধ্যে অপূর্ণতা থেকে যায়। হিট ট্রিটমেন্ট-এর অভাবে তার সঠিক স্থায়িত্ব থাকে না। তাই বগুড়ায় একটি হিট ট্রিটমেন্ট (এক ধরনের যন্ত্র) অত্যন্ত জরুরি। সরকার কৃষি খাতে ভর্তুকি দিচ্ছে। যদি এই শিল্পে এরকম কোনো সুবিধা দেওয়া হয়, তাহলে উৎপাদিত কৃষি যন্ত্রপাতির উৎপাদন খরচ কম হবে। কৃষক কম মূল্যে যন্ত্রপাতি পাবে। এছাড়া এই শিল্প কারখানায় চাহিদামতো গ্যাসের সরবরাহ দেয়ার আহ্বান জানান তারা।

    সোর্স- অর্থসূচক।

    Sunday, May 14, 2017

    ছাগল ও ভেড়ার পিপিয়ার

  • Share The Gag
  • ​পি পি আর 

    ইহা ভাইরাসজনিক একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ। সকল বয়সের ছাগল-ভেড়া এ রোগে আক্রান্ত হয় এবং আমাদের দেশে ছাগলের এ রোগ যথেষ্ট হয়ে থাকে। 

    লক্ষণঃ 
    আক্রান্ত ছাগলের অবসাদ, ক্ষুদামন্দা হয়। শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। মুখে ক্ষত হয় এবং নাক দিয়ে প্রচুর শ্লেম্মা বের হয়। শ্বাস-প্রশ্বাস কষ্টকর ও দুর্গন্ধযুক্ত হয়। তীব্র ডায়েরিয়া দেখা দেয় এবং মৃত্যু ঘটে। 

    করণীয়ঃ 

    অসুস্থ পশুকে দ্রুত সুস্থ পশুকে আলাদা করতে হবে। বাসস্থান পরিস্কার রাখতে হবে। ভাইরাসজনিত রোগ হওয়ার এ রোগের কোন সফল চিকিৎসা নেই। সুস্থ পশুকে নিয়মিত টিকা দিয়ে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়। 

    চিকিৎসাঃ 

    প্রকৃত চিকিৎসা না থাকলেও সহায়ক চিকিৎসা হিসাবে এন্টিবায়োটিক, এন্টিহিস্টামিনিক এবং প্রয়োজনে স্যালাইন ব্যবহার করে ফল পাওয়া যেতে পারে।

    গবাদিপশুর জলাতঙ্ক লক্ষণ ও করণীয়

  • Share The Gag
  • জলাতংক 

    মানুষসহ সকল গবাদিপশুর ভাইরাসজনিত একটি মারত্মক রোগ। আক্রান্ত পশুর লালাতে এ রোগজীবাণু থাকে এবং আক্রান্ত পশুর কামড়ে সুস্থ পশু বা মানুষ এ রোগ জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হয়। লক্ষণ দেখা দিলে বুঝতে হবে মৃত্যুই এ রোগের নিশ্চিত পরিনতি। শিয়াল ও বাঁদুর এ রোগজীবাণুর বাহক এবং প্রধানতঃ কুকুর আক্রান্ত প্রাণী। 

    লক্ষণঃ 



    পশু কান সজাগ ও চোখ বড় করে রাখে। মুখ দিয়ে প্রচুর লালা ঝরে। পানি পিপাসা হয়, তবে পান করতে পারে না। ভীষণভাবে অশান্ত হয়ে উঠে। শক্ত রশি ছাড়া আটকে রাখা যায় না। সামনে যা পায় তা’ই কামড়ানোর চেষ্টা করে। আক্রান্ত পশু পরিশেষে নিস্তেজ ও অবশ হয়ে মারা যায়। 

    করণীয়ঃ 

    আক্রান্ত পশুকে মেরে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে। বেওয়ারিশ কুকুর নিধন করতে হবে। গৃহপালিত কুকুরকে নিয়মিত প্রতিষেধক টিকা প্রদান করতে হবে। চিকিৎসা অর্থহীন এবং কোন অবস্থায়ই ঔষধ খাওয়ানোর জন্য পশুর মুখে হাত দেয়া যাবে না। 

    প্রতিশেধকঃ 

    পোষা কুকুর / বিড়ালকে নিয়মিত প্রতিশেধক টিকা দিতে হবে। টিকা দেয়া হয়নি এমন পশুর কামড়ে মানুষ / পশু আক্রানত্ম হলে অনতিবিলম্বে নির্ধারিত মাত্রায় প্রতিশেধক টিকা দিতে হবে।

    ক্ষুরা রোগ লক্ষন ও করণীয়

  • Share The Gag
  • ​ক্ষুরা রোগ 

    ইহা সকল বয়সের গরু-মহিষ ও ছাগল-ভেড়ার ভাইরাসজনিক একটি মারাত্মক অতি ছোঁয়াছে রোগ। 
    লক্ষণঃ 

    শরীরের তাপমাত্রা অতি বৃদ্ধি পায়। জিহ্বা, দাঁতের মাড়ি, সম্পূর্ণ মুখ গহ্বর, পায়ের ক্ষুরের মধ্যভাগে ঘা বা ক্ষত সুষ্টি হয়। ক্ষত সৃষ্টির ফলে মুখ থেকে লালা ঝরে, সাদা ফেনা বের হয়। কখনও বা ওলানে ফোসকার সৃষ্টি হয়। পশু খোঁড়াতে থাকে এবং মুখে ঘা বা ক্ষতের কারণে খেতে কষ্ট হয়। অল্প সময়ে পশু দূর্বল হয়ে পরে। এ রোগে গর্ভবর্তী গাভীর প্রায়ই গর্ভপাত ঘটে। দুধালো গাভীর দুধ উৎপাদন মারাত্মক ভাবে হ্রাস পায়। বয়স্ক গরুর মৃত্যুহার কম হলেও আক্রান্ত বাছুরকে টিকিয়ে রাখা কঠিন। 

    করণীয়ঃ 



    আক্রান্ত পশুকে সুস্থ পশু থেকে আলাদা রাখতে হবে। অসুস্থ পশুর ক্ষত পটাশ বা আইওসান মিশ্রিত পানি দ্বারা ধৌত করে দিতে হবে। ফিটকিরির পানি ১০ গ্রাম (২ চা চামচ) ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে মুখ পরিষ্কার করতে হবে। সোহাগার খৈ মধু মিশিয়ে মুখের ঘায়ে প্রলেপ দিতে হবে। নরম খাবার দিতে হবে। পশুকে শুস্ক মেঝেতে রাখতে হবে কোন অবস্থায়ই কাদা মাটি বা পানিতে রাখা যাবেনা। সুস্থ অবস্থায় গবাদিপশুকে বছরে দুইবার প্রতিষেধক টিকা দিতে হবে। খাওয়ার সোডা ৪০ গ্রাম ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে পায়ের ঘা পরিষ্কার করে সালফানাসাইড পাউডার লাগাতে হবে। সালফানামাইড / টেট্রাসাইক্লিন অথবা উভয় ঔষধ ৫- ৭ দিন ব্যবহার করা যাবে।

    হরমোনের ব্যবহার ছাড়া গরু মোটাতাজাকরণ

  • Share The Gag
  • গ্রোথ হরমোনের ব্যবহার ছাড়া গরু মোটাতাজাকরণ

    কোনোভাবেই ইনজেকশন বা কোনো গ্রোথ হরমোন ব্যবহার করে গবাদিপশু মোটাতাজাকরণের উদ্যোগ নেওয়া যাবে না। এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার ছাড়াও স্বাভাবিক ও জৈব পদ্ধতিতেই গরু মোটাতাজাকরণ সম্ভব। এজন্য দরকার শুধু কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলা। কোনো গ্রোথ হরমোন ব্যবহার ছাড়াই যেভাবে গবাদিপশুর বেশি মাংস নিশ্চিত করা যায়,

    সে সম্পর্কে কিছু পদ্ধতি স্বল্প পরিসরে আলোকপাত করা হল: অধিক মাংস উৎপাদনের জন্য ২ থেকে ৩ বছর বয়সের শীর্ণকায় গরুকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় খাদ্য সরবরাহ করে হৃষ্টপুষ্ট গরুতে রূপান্তরিত করাকে গরু মোটাতাজাকরণ বলে।

    এটির গুরুত্ব হচ্ছে- দারিদ্রতা হ্রাসকরণ, অল্প সময়ে কম পুঁজিতে অধিক মুনাফা অর্জন, অল্প সময়ের মধ্যে লাভসহ মূলধন ফেরত পাওয়া, প্রাণীজ আমিষের ঘাটতি পূরণ, স্বল্পমেয়াদি প্রযুক্তি হওয়ার কারণে পশু মৃত্যুর হার কম, কৃষিকার্য হতে উৎপাদিত উপজাত পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে সহজেই মাংস উৎপাদন করা, বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে আয় বৃদ্ধি করা প্রভৃতি।

    মোটাতাজাকরণের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান পদ্ধতি:মোটাতাজাকরণের সঠিক সময়: বয়সের উপর ভিত্তি করে সাধারণত ৩ থেকে ৪ মাসের মধ্যে গরু মোটাতাজাকরণ করা যায়। অনেক সময় ৫ থেকে ৬ মাসও সময় লাগতে পারে। গরু মোটাতাজাকরণের জন্য সুবিধাজনক সময় হচ্ছে বর্ষা এবং শরৎকাল যখন প্রচুর পরিমাণ কাঁচাঘাস পাওয়া যায়। চাহিদার উপর ভিত্তি করে কোরবানী ঈদের ৫ থেকে ৬ মাস পূর্ব থেকে গরুকে উন্নত খাদ্য ও ব্যবস্থাপনা দিয়ে মোটাতাজাকরণ লাভজনক।

    স্থান নির্বাচন: গরু রাখার স্থান নির্বাচনে নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর দিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে: ১. শুষ্ক ও উঁচু জায়গা হতে হবে, যাতে খামার প্রাঙ্গণে পানি না জমে থাকে ২. খোলামেলা ও প্রচুর আলো বাতাসের সুযোগ থাকতে হবে। ৩.খামারে কাঁচামাল সরবরাহ ও উৎপাদিত দ্রব্যাদি বাজারজাতকরণের জন্য যোগাযোগ সুবিধা থাকতে হবে ৪. পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহের সুষ্ঠু ব্যবস্থা থাকতে হবে; ৫. সুষ্ঠু পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা থাকতে হবে।

    গরু নির্বাচন: উন্নত দেশের মাংসের গরুর বিশেষ জাত রয়েছে। বিদেশি গরুর জন্য উন্নত খাদ্য ও ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। তাই দেশীয় গরু মোটাতাজাকরণ অলাভজনক। ২ থেকে ২.৫ বছরের গরুর শারীরিক বৃদ্ধি ও গঠন মোটাতাজাকরণের জন্য বেশি ভাল। এঁড়ে বাছুরের দৈহিক বৃদ্ধির হার বকনা বাছুরের চেয়ে বেশি হয়ে থাকে। তবে বাছুরের বুক চওড়া ও ভরাট, পেট চ্যাপ্টা ও বুকের সাথে সমান্তরাল, মাথা ছোট ও কপাল প্রশস্ত, চোখ উজ্জ্বল ও ভেজা ভেজা, পা খাটো প্রকৃতির ও হাড়ের জোড়াগুলো স্ফীত, পাজর প্রশস্ত ও বিস্তৃত, শিরদাড়া সোজা হতে হবে।

    গরুর খাদ্যের ধরণ: খাদ্যে মোট খরচের প্রায় ৬০ থেকে ৭০ ভাগ ব্যয় হয়। তাই স্থানীয়ভাবে প্রাপ্ত খাদ্য দ্বারা খরচ কমানো সম্ভব। এজন্য গরু মোটাতাজাকরণের একটি সুষম খাদ্য তালিকা নিচে দেওয়া হল:

    ক) শুকনো খড়: দুই বছরের গরুর জন্য দৈহিক ওজনের শতকরা ৩ ভাগ এবং এর অধিক বয়সের গরুর জন্য শতকরা ২ ভাগ শুকনো খড় ২ থেকে ৩ ইঞ্চি করে কেটে একরাত লালীগুড়/চিটাগুড় মিশ্রিত পানিতে ভিজিয়ে প্রতিদিন সরবরাহ করতে হবে। পানি: চিটাগুড় = ২০ : ১।

    খ) কাঁচাঘাস: প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ কেজি তাজা ঘাস বা শস্যজাতীয় তাজা উদ্ভিদের উপজাত দ্রব্য যেমন- নেপিয়ার, পারা, জার্মান, দেশজ মাটি কালাই, খেসারি, দুর্বা ইত্যাদি সরবরাহ করতে হবে।

    গ) দানাদার খাদ্য: প্রতিদিন কমপক্ষে ১ থেকে ২ কেজি দানাদার খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। নিচে ১০০ কেজি দানাদার খাদ্যে তালিকা দেওয়া হল:১. গম ভাঙা/গমের ভূসি-৪০ কেজি; ২. চালের কুঁড়া-২৩.৫ কেজি; ৩. খেসারি বা যেকোনো ডালের ভূসি-১৫ কেজি: ৪. তিলের খৈল/সরিষার খৈল-২০ কেজি; লবণ-১.৫ কেজি। তাছাড়াও বিভিন্ন রকমের ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি হচ্ছে ৩৯ ভাগ চিটাগুড়, ২০ ভাগ গমের ভূসি, ২০ ভাগ ধানের কুঁড়া, ১০ ভাগ ইউরিয়া, ৬ ভাগ চুন ও ৫ ভাগ লবণের মিশ্রণ।

    রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসা:

    ক. প্রতিদিন নিয়মিতভাবে পশুর গা ধোয়াতে হবে;

    খ. গো-শালা ও পার্শ্ববর্তী স্থান সর্বদা পরিস্কার রাখতে হবে:

    গ. নিয়মিতভাবে গরুকে কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়াতে হবে;

    ঘ. বাসস্থান সর্বদা পরিস্কার রাখতে হবে।

    ঙ. স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পরিমিত পরিমাণে পানি ও সুষম খাদ্য প্রদান করতে হবে।

    চ. রোগাক্রান্ত পশুকে অবশ্যই পৃথক করে রাখতে হবে।

    ছ. খাবার পাত্র পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

    জ. খামারের সার্বিক জৈব নিরাপত্তা রক্ষা করতে হবে।

    ঝ. পশু জটিল রোগে আক্রান্ত হলে পশুচিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

    বাজারজাতকরণ: মোটাতাজাকরণ গরু লাভজনকভাবে সঠিক সময়ে ভাল মূল্যে বাজারজাতকরণের ব্যবস্থাগ্রহণ হচ্ছে আরেকটি উল্লেখ্যযোগ্য বিষয়। বাংলাদেশে মাংসের জন্য বিক্রয়যোগ্য গবাদিপশুর বাজারমূল্যেও মৌসুমভিত্তিক হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে। কাজেই একজন প্রতিপালককে গরু মোটাতাজাকরণের জন্য অবশ্যই গরুর ক্রয়মূল্য যখন কম থাকে তখন গরু ক্রয় করে বিক্রয়মূল্যের উর্ধ্বগতির সময়ে বিক্রয়ের ব্যবস্থা নিতে হবে। সাধারণত কোরবানীর ঈদের সময়ে গরুর মূল্য অত্যাধিক থাকে এবং এর পরের মাসেই বাজার দর হ্রাস পায়। তাই এখন গরু মোটাতাজাকরণের উপযুক্ত সময় এবং কোরবানীর সময় তা বিক্রি করে দেওয়া ভাল।

    বাণিজ্যিক পোল্ট্রি খামার পরিকল্পনা

  • Share The Gag
  • আমাদের দেশে প্রাণীজ আমিষের অভাব খুবই প্রকট। আমিষের এ অভাব মেটাতে মুরগি পালনের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান বিশেষ জরুরী। খুব অল্প সময়ে অল্প পুঁজি বিনিয়োগ করে সাম্প্রতিক সময়ে মুরগি পালন একটি লাভজনক ও সম্ভাবনাময় কৃষি শিল্প হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে সঠিক পরিকল্পনায় মুরগি খামার স্থাপনের মাধ্যমে মুরগি পালনকে লাভজনক করে তোলা যায়। মুরগি খামার দু’ধরনের হতে পারে। যেমন-পারিবারিক মুরগি খামার ও বাণিজ্যিক মুরগি খামার। পারিবারিক মুরগি খামারে অল্পসংখ্যক মুরগি পালন করে সে অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে পরবর্তীতে বাণিজ্যিক মুরগি খামার গড়ে তোলা যায়। উৎপাদনের উদ্দেশ্যের ওপর ভিত্তি করে মুরগির খামার বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। মাংস উৎপাদনের জন্য মুরগি পালন করলে একে বলা হয় ব্রয়লার খামার। আবার ডিম উৎপাদনের জন্য খামার করলে একে বলা হয় লেয়ার খামার। তবে যে খামারই স্থাপন করা হোক না কেন তা লাভজনক করতে চাইলে প্রয়োজন সুষ্ঠু পরিকল্পনা, বিজ্ঞানসম্মত ব্যবস্থাপনা ও সঠিক পরিচালনা।



    বাণিজ্যিক মুরগি খামারের জন্য স্থান নির্বাচন


    মুরগির খামার একটি স্থায়ী ব্যবস্থা। খামার বলতে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে মুরগি প্রতিপালন করার জন্য নির্দিষ্ট স্থানকে বুঝায়। মুরগির খামার বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে, যেমন ডিম উৎপাদন খামার, মাংস উৎপাদন খামার, প্রজনন খামার, ব্রিডার খামার, বাচ্চা উৎপাদন খামার ইত্যাদি। যে ধরনের মুরগি খামারই স্থাপন করা হোক না কেন সাফল্যজনকভাবে খামার পরিচালনার জন্য এর স্থান নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কৌশল। খামারের জন্য স্থান নির্বাচনের সময় নিচের বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখতে হবে। যেমন-




    • খামারের স্থান উঁচু হওয়া উচিত। খামার এমন স্থানে গড়তে হবে যেখানে বন্যার পানি কখনও প্রবেশ করতে না পারে।

    • যে স্থানে খামার করা হবে সেখানকার মাটি বালু ও কাঁকর মিশ্রিত হতে হবে এবং মাটির পানি শোষণ ক্ষমতা থাকতে হবে।

    • খামার স্থাপনের জন্য নির্বাচিত স্থানে পানি নিষ্কাশনের সুষ্ঠু ব্যবস্থা থাকতে হবে।

    • খামারের স্থানটি মানুষের বাড়িঘর থেকে দূরে কোলাহলমুক্ত জায়গায় হতে হবে।

    • যে স্থানে খামার করা হবে সেখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হতে হবে। মানুষের চলাচলের জন্য ব্যবহৃত মূলপথ থেকে অন্তত আধা কিলোমিটার দুরে খামারের স্থান নির্বাচন করা উচিত।

    • যেখানে খামার করা হবে সেখানে বিদ্যুৎ ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে।

    • খামারের স্থান নির্বাচনের সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যেন আশেপাশে সস্তায় ও সহজে মুরগির খাদ্য ক্রয় করার সুযোগ-সুবিধা থাকে।

    • খামারে উৎপাদিত পণ্য, যেমন-ডিম, মুরগি ইত্যাদি সহজে বাজারজাতকরণের সুযোগ থাকতে হবে।

    • খামার স্থাপনের জন্য নির্বাচিত স্থানের মূল্য তুলনামূলকভাবে কম কি না সেটাও বিবেচনা করতে হবে।


    বাণিজ্যিক মুরগি খামার পরিকল্পনায় বিবেচ্য বিষয়সমূহ


    যে কোন খামার বা শিল্পে বাণিজ্যিকভাবে সফলতা লাভের জন্য চাই সুষ্ঠু পরিকল্পনা। বাণিজ্যিক মুরগি খামার ব্যবস্থাপনায় তিনটি মৌলিক চাহিদা পূরণের নিশ্চয়তা বিধান করতে হয়, যথা-




    • মুরগির খাদ্য

    • বাসস্থান ও

    • রোগ দমন। মুরগির খামার একটি বিশেষ ধরনের শিল্প।


    তাই এ খামার প্রতিষ্ঠার জন্য মূল বিষয় ছাড়াও আনুসাঙ্গিক বিষয়গুলো বিশেষ বিবেচনায় রাখতে হয়। মুরগির খামার পরিকল্পনার সময় নিম্নবর্ণিত বিষয়গুলো অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে।


    জমির পরিমাণ


    বার্ষিক যত সংখ্যক ডিম/ব্রয়লার উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হবে তদনুযায়ী লেয়ার/ব্রয়লার প্রতিপালনের ঘর এবং অন্যান্য সুবিধা, যেমন- অফিস, শ্রমিক ঘর, খাদ্য গুদাম, মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণের ঘর, সংরক্ষণাগার ইত্যাদি তৈরির জন্য মোট জায়গার সঙ্গে আরও প্রায় ১.৫ গুণ ফাঁকা জায়গা যুক্ত করে খামারের মোট জমির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়।


    মুরগির বাসস্থান


    নিরাপদ ও আরামে থাকার জায়গার নাম বাসস্থান। বাসস্থান নিরাপদ রাখতে হলে নির্বাচিত স্থানের উপযোগী দ্রব্যসামগ্রী দিয়ে তা এমনভাবে তৈরি করতে হবে যাতে ঝড়বৃষ্টি বা প্রাকৃতিক দূর্যোগে সহজে ক্ষতিগ্রস্থ না হয়। বাসস্থানের অভ্যন্তরীণ চাহিদা, যেমন-পরিমাণমতো থাকার জায়গা, প্রয়োজনীয় সংখ্যক খাদ্য ও পানির পাত্র, তাপ ও আলো এবং বায়ু চলাচলের সুব্যবস্থা থাকতে হবে। পালনকারীর সামর্থ্যরে ওপর নির্ভর করে ঘর পাকা, কাঁচা বা টিনের হতে পারে। প্রজাতি বা স্ট্রেইন অনুযায়ী যতগুলো মুরগি রাখা হবে এদের মোট জায়গার পরিমাণ হিসেব করে ঘর তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি দুইটি ঘরের মাঝে ২৫-৩০ ফুট বা ততোধিক জায়গা আলো ও মুক্ত বাতাস প্রবাহের জন্য খালি রাখা দরকার।




    • ঘর তৈরিঃ বাজারজাত করার বয়স পর্যন্ত প্রতিটি ব্রয়লারের জন্য ১ বর্গফুট জায়গার প্রয়োজন। এভাবে হিসেব করে ব্রয়লার উৎপাদনের সংখ্যার উপর ভিত্তি করেই ঘরের সংখ্যা নির্ধারণ করতে হবে। সাদা খোসার ডিম উৎপাদনকারী প্রতিটি মুরগির জন্য ৩ বর্গফুট জায়গা এবং বাদামি খোসার ডিম উৎপাদনকারী মুরগির জন্য ৪ বর্গফুট জায়গা হিসেব করে থাকার ঘর তৈরি করতে হবে। এসব মুরগি খাঁচায়, মাচায় অথবা লিটার পদ্ধতিতে পালন করা যায়। পালন পদ্ধতির উপর নির্ভর করে ঘরের পরিমাণ ভিন্ন ধরনের হতে পারে। খাঁচা পদ্ধতিতে প্রতিটি উৎপাদনশীল মুরগির জন্য কেইজে ৬০-৭০ বর্গইঞ্চি জায়গা প্রয়োজন হবে। কাজেই এ হিসেবে খাঁচা তৈরি করা হয়। খাঁচার সারি লম্বালম্বিভাবে এক সারি বা একটার উপর আরেকটা রেখে ৩/৪ সারি করা যায়। আবার সিঁড়ির মতো করে সাজিয়ে উভয় পার্শ্বেও সারি করা যায়। প্রতিটি উৎপাদনশীল মুরগির জন্য প্রয়োজনীয় জায়গার পরিমাণ মাচায় ১.২-১.৩ বর্গফুট এবং লিটারে ১.৫-১.৭৫ বর্গফুট। মুরগির দৈহিক ওজন এবং আবহাওয়াভেদে এই পরিমাপের পরিবর্তন হতে পারে। লিটার পদ্ধতিতে সাধারণত প্রতি ১০ বর্গফুট মেঝের জন্য ৫ কেজি লিটার প্রয়োজন হয়। এ পদ্ধতিতে পালন করতে মুরগির ঘরের মেঝে পাকা হলে ভালো হয়। কাঁচা মেঝের ক্ষেত্রে শক্ত এঁটেল মাটির মেঝে হলেও চলবে। তবে এ ধরনের মেঝে বর্ষাকালে স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে যেতে পারে। শুকনো বালির মেঝের ক্ষেত্রে বর্ষাকালে সমস্যা হতে পারে।


    • ঘরের চালা ও বেড়ার নমুনাঃ বাংলাদেশের পরিবেশে দোচালা বা গেবল টাইপ চালই মুরগির জন্য বেশি আরামদায়ক। লেয়ারের ঘরের বেড়ার উচ্চতার পুরোটাই তারজালি দিয়ে তৈরি করতে হবে। বেশি বাতাস বা বেশি শীত হতে মুরগিকে রক্ষা করার জন্য বেড়ার ফাঁকা অংশ প্রয়োজনে ঢেকে দেয়ার জন্য চটের পর্দার ব্যবস্থা করতে হবে। ব্রয়লার লালন-পালনের সুবিধার্থে প্রথম সপ্তাহে ৯৫০ ফা থেকে কমাতে কমাতে ষষ্ঠ সপ্তাহে ৭০০ ফা-এ নামিয়ে আনার জন্য বেড়ায় বেশি ফাঁকা জায়গা রাখা যাবে না। কিন্তু প্রয়োজনীয় বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এজন্য দেয়ালের উচ্চতার ৬০% তারজালি দিয়ে তৈরি করতে হয়। তবে শীতের দিনে তারজালির এ অংশটুকু চটের বস্তা দিয়ে ঢাকার ব্যবস্থা করতে হবে।

    • ডিম পাড়ার বাসাঃ মাচা অথবা লিটারে পালন পদ্ধতিতে প্রতি ৫টি মুরগির জন্য ১টি করে ডিম পাড়ার বাসা সরবরাহ করতে হয়। প্রতিটি বাসা দৈর্ঘ্যে ১ ফুট, প্রস্থে ১ ফুট ও গভীরতায় ১.৫ ফুট হওয়া প্রয়োজন। খাঁচা পদ্ধতিতে পালন করলে আলাদাভাবে ডিম পাড়ার বাসা বা বাক্স লাগে না। খাঁচাগুলো ঢালসহ এমনভাবে তৈরি করা হয় যাতে করে মুরগি ডিম পাড়া মাত্রই ডিমগুলো গড়িয়ে গড়িয়ে খাঁচার সামনে গ্রিলের ফাঁক দিয়ে বাইরের বর্ধিত অংশ এসে জড়ো হতে পারে।

    • আলোকায়নঃ লেয়ারে দৈনিক (২৪ ঘন্টায়) আলোর প্রয়োজন হবে ১৬ ঘন্টা। কৃত্রিম আলোর ব্যবস্থা বছরের ছোট-বড় দিন অনুযায়ী দৈনিক ২.৫ ঘন্টা হতে ৪ ঘন্টা পর্যন্ত হবে। আলোর উৎস বৈদ্যুতিক বাল্ব। যেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই সেখানে উজ্জ্বল হারিকেনের আলোর ব্যবস্থা করতে হবে। বাল্বের শক্তি হবে ৪০ ওয়াট, আলোর রং স্বাভাবিক, আলোর তীব্রতা মৃদু (২০ লাক্স) হবে। ১টি বাল্বের আলোকায়ন এলাকা ১০০০ বর্গ ফুট। বাল্ব স্থাপনের এক পয়েন্ট হতে আরেক পয়েন্টের দূরত্ব হবে ২০ফুট। প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম যে কোনো উৎস থেকেই ব্রয়লার গৃহে আলোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে। প্রথম সপ্তাহে ব্রয়লার গৃহে খাবার ও পানি দেখার জন্য সারারাত আলোর ব্যবস্থা করতে হবে। দ্বিতীয় সপ্তাহ হতে রাতের বেলায় মাঝে মাঝে আলো নিভিয়ে আবার জ্বালাতে হবে এবং এভাবে সারারাত মৃদু আলো জ্বালিয়ে রাখতে হবে। সাধারণত প্রতি ১০ বর্গফুটের জন্য ৫ ওয়াট পরিমাণ আলো প্রয়োজন।


    মুরগির খাদ্য ব্যবস্থাপনাঃ


    খাদ্যের গুণগত মান, খাদ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা, খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ, প্রতি কেজি খাদ্যের দাম, খাদ্য হজমের দক্ষতা প্রভৃতি খাদ্য ব্যবস্থাপনার অন্তর্ভূক্ত। খাদ্য খরচ মোট উৎপাদন ব্যয়ের প্রায় ৬০-৭৫% এবং খাদ্যের গুনাগুণ ও মূল্যের ওপর লাভলোকসান নির্ভর করে। সেজন্য খামার ব্যবস্থাপনায় খাদ্যের গুরুত্ব অনেক বেশি। কিন্তু বাসস্থানের পরিবেশ অনুকূল ও আরামদায়ক না হলে শুধু খাদ্য দিয়ে তার অভিষ্ট লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব নয়। তেমনি খামার রোগমুক্ত না হলেও তা লাভজনক হবে না। তাই খাদ্য সংগ্রহ করা সহজ কি না এবং খাদ্যের মূল্য ন্যায্য কি না তা বিবেচনা করে খামার স্থাপন করতে হবে।


    লেয়ার মুরগির সংখ্যা অনুসারে প্রতিটি মুরগির জন্য দৈনিক ১১০-১২০ গ্রাম খাদ্যের প্রয়োজন হিসেবে কমপক্ষে ২ মাসের খাদ্য সংরক্ষণাগার তৈরি করতে হয়। প্রতিটি ব্রয়লার ৮ সপ্তাহ পর্যন্ত ৪ কেজি খাদ্য খাবে। তাই এ পরিমাণকে ব্রয়লারের মোট সংখ্যা দিয়ে গুণ করে যে ফল দাঁড়াবে সে পরিমাণ খাদ্য ধারণক্ষমতাসম্পন্ন গুদাম তৈরি করতে হবে। বয়সভেদে ব্রয়লারের জন্য ২.৫-১০ সেন্টিমিটার লম্বা খাদ্যের পাত্র বা ফিড ট্রাফের প্রয়োজন। সাধারণত ৫০টি বাচ্চার জন্য একটি খাদ্যের লম্বা ট্রে বা পাত্র এবং তদনুযায়ী পানির পাত্র প্রতি ১০০টি বাচ্চার জন্য প্রবহমাণ পানির ১টি ড্রিংকার প্রয়োজন হয়।


    মুলধনের অবস্থা কী? নিজের টাকা আছে না কি এসব হিসাব করে ব্যাংক থেকে ঋণ করতে হবে। মূলধনের উপর ভিত্তি করেই খামার স্থাপনের জমি, বাসস্থানের আকার ও সংখ্যা, প্রয়োজনীয় খাদ্যের পরিমাণ অনুসারে গুদামের ব্যবস্থা, প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পানির পাত্র, ব্র“ডিং যন্ত্রপাতি, খামার পরিচালনার লোকজনের জন্য অফিসসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করতে হবে।


    খামার স্থাপন ও পরিচালনার হিসাব:


    খামার স্থাপন ও পরিচালনার খরচ দুইভাগে বিভক্ত। যথা-


    ক) স্থায়ী খরচঃ স্থায়ী খরচের খাতওয়ারী হিসেব নিম্ন্নরূপ-


    খামারভুক্ত জমির মূল্যঃ


    এলাকা অনুযায়ী প্রতি বিঘা জমির মুল্য কমবেশি হয়ে থাকে।


    মুরগির গৃহায়ণ ব্যবস্থা বাবদ খরচঃ ঘর তৈরির সাজসরঞ্জাম বিভিন্ন রকমের হতে পারে। যথা-বাঁশ, টিন বা বিচালী, মাটির ঘর, ইট, সিমেন্ট বা পাকা দালান ঘর। ঘর তৈরির সাজসরঞ্জাম অনুযায়ী প্রতি বর্গফুট ঘর তৈরির খরচ, তা যেভাবেই ঘর তৈরি করা হোক না কেন প্রতি বর্গফুট হিসেবে খরচ ধরে ঘরের মোট খরচ বের করতে হবে।


    ম্যানেজারের অফিস, ডিম/মাংস সংরক্ষণাগার, খাদ্য গুদাম, খাদ্য ছাড়া অন্যান্য জিনিসপত্র রাখার স্থান, শ্রমিকদের বিশ্রাম ঘর, অসুস্থ ও মৃত মুরগি রাখার জায়গা নির্মানবাবদ খরচ।


    আসবাবপত্র ক্রয় বা তৈরি ও যানবাহন ক্রয়বাবদ খরচ, খাবার ও পানির পাত্রের দাম, ডিম পাড়ার বাক্সের দাম ও ডিম রাখার ঝুড়ি কেনার জন্য খরচ।


    খ) আবর্তক বা চলমান বা চলতি খরচঃ আবর্তক খরচের খাতওয়ারী হিসেব নিম্নরূপ-


    মুরগি সংক্রান্ত খরচঃ ডিমের ব্যবহার অনুযায়ী ডিমপাড়া মুরগির খামার দু’প্রকার। যথা-নিষিক্ত বা বাচ্চা ফুটানোর ডিম উৎপাদন খামার এবং অনিষিক্ত বা খাবার ডিম উৎপাদন খামার। খাবার সাদা বা বাদামি খোসার ডিম বা বাচ্চা ফুটানোর ডিম উৎপাদনকারী মুরগি বা বাচ্চা কোথায় পাবেন, আপনি সেগুলো আনতে পারবেন কি না সে ব্যাপারেও নিশ্চিত হতে হবে। নিষিক্ত ডিম বা ডিমের জন্য প্রজননক্ষম পুলেট ও ককরেলের মূল্য, অনিষিক্ত বা খাওয়ার ডিম উৎপাদনের জন্য উন্নতমানের হাইব্রিড পুলেটের মূল্য অথবা একদিন বয়সের ব্রয়লার বাচ্চা ক্রয়ের খরচ।


    সুষম খাদ্যের মূল্যঃ


    মাথাপিছু দৈনিক ১১০-১২০ গ্রাম হিসাবে।


    লিটার কেনাবাবদ খরচ। খাঁচায় মুরগি পালন করলে মেঝে পাকা হলেই ভালো।


    প্রতিষেধক টিকা এবং চিকিৎসায় ওষুধপত্রের মূল্য।


    খামার পরিচালনায় জনবলের বেতনভাতা খরচ, ম্যানেজারের বার্ষিক বেতনভাতা, অফিস স্টাফের বার্ষিক বেতনভাতা ও শ্রমিকদের বার্ষিক বেতনভাতা।


    পরিবহন ও যাতায়াত খরচ, বিভিন্ন কাজে ম্যানেজারের যাতায়াত খরচ এবং খাদ্য সংগ্রহ, ডিম বাজারজাতকরণ ও ডিমপাড়া শেষে মুরগি বিক্রির জন্য পরিবহন খরচ।


    মুলধনের সুদঃ ব্যাংক ঋণের ক্ষেত্রে মূলধনের উপর বার্ষিক সুদ।


    ডিপ্রিসিয়েসন বা অপচয় খরচঃ জমিবাদে স্থায়ী খরচের অপচয়ের শতকরা হার ইত্যাদি যত খরচ হয় সব যোগ করে বার্ষিক খরচ/ মোট খরচের হিসেব রাখতে হবে।




    • মেরামত খরচ এবং বিদ্যুৎ ও পানির বিল বাবদ

    • এডভারটাইজিং বা বিজ্ঞাপন বাবদ ব্যয়

    • নষ্ট বা বাদ যাওয়া ডিমের মূল্য, ডিম বাছাই ও ছাঁটাই খরচ, যতগুলো ডিম বিক্রির অনুপযুক্ত হলো তার মূল্য।

    • অসুস্থ বা মৃত মুরগির মূল্য

    • খামার হতে সম্ভাব্য বার্ষিক আয়


    ডিম বিক্রিঃ


    লেয়ার খামারের ক্ষেত্রে বার্ষিক গড়ে ৭০-৭৫% হারে উৎপাদন ধরে বর্তমান বাজার দরে ডিমের মোট মূল্য।


    ডিম পাড়া শেষে মুরগির মূল্যঃ




    • শতকরা ৮৮টি মুরগি সুস্থ অবস্থায় বেঁচে থাকার ক্ষমতা আছে এ হিসেবে ডিম পাড়া শেষে বাজার দরে মোট মূল্য।

    • ব্রয়লার খামারের ক্ষেত্রে গড়ে ৮ সপ্তাহ পর পর মাংসের জন্য মুরগি বিক্রি।

    • প্রতিটি মুরগি থেকে বছরে প্রায় ৩০ কেজি বিষ্ঠা পাওয়া যেতে পারে। এভাবে হিসেব করে বর্তমান বাজার দরে মোট বিষ্ঠা বা সারের মূল্য।

    • অকেজো আসবাবপত্র বিক্রিবাবদ মোট আয়।


    খামার হতে বার্ষিক কত টাকা লাভ হতে পারে তা নির্ধারণ করতে হবে। অনুমেয় অর্থ মুনাফা করতে হলে খামারজাত পণ্য হতে শতকরা ১০-১২ হারে টাকা হারে লাভে মোট কত টাকা আয় হতে পারে তা হিসেব করতে হবে। বর্তমান বাজার দরে কতগুলো ডিম বিক্রি করলে এ নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা আয় করা যায় তা হিসেব করতে হবে। একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। যেমন-বার্ষিক গড়ে ৭০-৭৫% হারে খাবার ডিম বা অনিষিক্ত ডিম উৎপাদন এবং ৬০-৬৫% হারে বাচ্চা ফুটানো বা নিষিক্ত ডিম উৎপাদন ধরে, প্রতিটি ডিম গড়ে ২.৫০-৩.০০ টাকা হিসেবে বিক্রি করা গেলে এবং বছর শেষে ৮৮% মুরগি নীরোগ ও স্বাস্থ্যবান থাকলে আর অবশিষ্ট অনুৎপাদনশীল মুরগি বিক্রি করে ও উৎপাদন খরচ বাদে ১০-১২% লাভ থাকবে। এ জাতীয় হিসেব করে পরিকল্পনা করতে হবে। এভাবে মোট আয় থেকে মোট ব্যয় বাদ দিয়ে প্রকৃত লাভ-লোকসান নির্ধারণ করতে হবে। উপরোক্ত বিষয়সমূহ ভালোভাবে চিন্তাভাবনা করে খামার স্থাপনের পরিকল্পনা করা উচিত।