Wednesday, March 29, 2017

ভুট্টার জাবপোকা বা এফিড দমনে করণীয়

  • Share The Gag
  • ভুট্টার জাবপোকা বা এফিড

    পিপিলিকার উপস্থিতি এ পোকার উপস্থিতিকে অনেক ক্ষেত্রে জানান দেয় । এ পোকা গাছের পাতার ও কান্ডের রস খেয়ে ফেলে এবং এক ধরনের মিষ্টি রস নিঃসরণ করে।এর আক্রমন বেশি হলে শুটি মোল্ড ছক্রাকের আক্রমন ঘটে এবং গাছ মরে যায় ।

    এর প্রতিকার হল:

    ১. অল্প আক্রমনের ক্ষেত্রে হাত দিয়ে পিশে পোকা মেরে ফেলা

    ২. আক্রান্ত পাতা অপসারণ করা।

    ৩. পরভোজী পোকা যেমন : লেডিবার্ডবিটল লালন।

    ৪. ডিটারজেন্ট পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা

    ৫. প্রতি গাছে ৫০ টির বেশি পোকার আক্রমণ হলে এডমেয়ার ০.৫ মি.লি. / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে শেষ বিকেলে স্প্রে করা।
    পরবর্তীতে যা যা করবেন না:

    ১. বিলম্বে ভুট্টা বপন করবেন না

    পরবর্তীতে যা যা করবেন:

    ১. আগাম ভুট্টা বপন করুন
    ২. উন্নত জাতের ভুট্টা বপন করুন ।

    Sunday, March 26, 2017

    তরমুজের রেড পামকিন বিটল পোকার সমাধান

  • Share The Gag
  • তরমুজের রেড পামকিন বিটল

    ক্ষতির ধরণ :

    পামকিন বিটলের পূর্ণবয়স্কপোকা চারা গাছের পাতায় ফুটো করে এবং পাতার কিনারা থেকে খাওয়া শুরু করে সম্পূর্ণ পাতা খেয়ে ফেলে।

    0. এ পোকা ফুল ও কচি ফলেও আক্রমণ করে।

    এর প্রতিকার হল:

    ১. চারা আক্রান্ত হলে হাত দিয়ে পূর্ণবয়স্ক পোকা ধরে মেরে হাত দিয়ে মেরে ফেলা

    ২. ক্ষেত সব সময় পরিষ্কার রাখা।

    ৩.কেরোসিন মিশ্রিত ছাই গাছে ছিটানো;

    ৪. ক্ষেতের আশপাশের বিকল্প পোষক কুমড়াজাতীয় সবজি নষ্ট করা;

    ৫. গাছের গোড়ার মাটি কুপিয়ে কীড়া উন্মুক্ত করে দেওয়া এবং ডাল পুঁতে পাখি বসার জায়গা করে দেওয়া;

    ৬. চারা বের হওয়ার পর থেকে ২০-২৫ দিন পর্যন্ত মশারির জাল দিয়ে চারাগুলো ঢেকে রাখলে এ পোকার আক্রমণ থেকে গাছ বেঁচে যায়;

    ৭.এক কেজি মেহগনি বীজ কুচি করে কেটে ৫ লিটার পানিতে ৪-৫ দিন ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর ছেঁকে ২০ গ্রাম সাবান গুঁড়া এবং ৫ গ্রাম সোহাগা মিশিয়ে ২০ মিনিটে ফুটিয়ে ঠাণ্ডা হলে ৫ গুণ পানি মিশিয়ে স্প্রে করুন;

    পেপের মিলিবাগ বা ছাতরা পোকা

  • Share The Gag
  • পেপের মিলিবাগ বা ছাতরা পোকা

    এরা পাতা ও ডালের রস চুষে নেয় ফলে গাছ দুর্বল হয়। পোকার আক্রমনে পাতা, ফল ও ডালে সাদা সাদা তুলার মত দেখা যায়। অনেক সময় পিপড়া দেখা যায়। এর আক্রমণে অনেক সময় পাতা ঝরে যায় এবং ডাল মরে যায়।

    প্রতিকার :

    ১. আকান্ত পাতা ও ডগা ছাটাই করে ধ্বংস করা।
    ২. গাছের গোড়ার মাটি থেকে 15-20 সেমি উপরে স্বচ্ছ পলিথিন দ্বারা মুড়ে দিতে হবে যাতে মিলিমাগ গাছে উঠতে না পারে।

    ৩. সম্ভব হলে হাত দিয়ে ডিম ব বাচ্চার গাদা সংগ্রহ করে ধ্বংস করা।
    ৪. জৈব বালাইনাশক নিমবিসিডিন (0.4%) ব্যবহার করা।
    ৫. আক্রমণ বেশী হলে প্রতিলিটার পানিতে 2 মিলি রগর টাফগর, সানগর বা সুমিথিয়ন 2 মিলি মিপসিন বা সপসিন মিশিয়ে স্প্রে করা।

    পেপের ভাইরাসজনিত মোজাইক রোগ

  • Share The Gag
  • পেপের ভাইরাসজনিত মোজাইক রোগ

    এ রোগ হলে গাছে হলুদ ও গাঢ় সবুজ ছোপ ছোপ মোজাইক করা পাতা দেখা দেয়। পাতা কুচকে যায়।

    এর প্রতিকার হল ১. ক্ষেত থেকে আক্রান্ত গাছ তুলে ফেলা

    ২. ভাইরাসমুক্ত বীজ বা চারা ব্যবহার করা

    ৩. জাপ পোকা ও সাদা মাছি এ রোগের বাহক, তাই এদের দমনের জন্য ইমিডাক্লোরোপ্রিড ১ মি.লি. / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।

    Monday, March 20, 2017

    ঝিঙ্গার ডাউনি মিলডিউ রোগ

  • Share The Gag
  • ঝিঙ্গার ডাউনি মিলডিউ রোগ

    বয়স্ক পাতায় এ রোগ প্রথম দেখা যায়। আক্রান্ত পাতার গায়ে সাদা বা হলদে থেকে বাদামী রংগের তালির মত দাগ দেখা যায়। ধীরে ধীরে অন্যান্য পাতায় ছড়িয়ে পড়ে ।

    প্রতিকার :

    ১. সম্ভব হলে গাছের আক্রান্ত অংশ সংগ্রহ করে ধ্বংস করা ।
    ২. (ম্যানকোজেব+মেটালোক্সিল) গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন: পুটামিল বা রিডোমিল গোল্ড অথবা (ম্যানকোজেব+ ফেনামিডন) গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন: সিকিউর ২ গ্রাম/ লিটার হারে অথবা সালফার গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন: কুমুলাস ২ কেজি/ হেক্টর হারে বা গেইভেট বা মনোভিট বা ম্যাকভিট ২ মিলি. / লি হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা ।

    পরবর্তীতে যা যা করবেন না:

    ১. স্প্রে করার পর ১৫ দিনের মধ্যে সেই সবজি খাবেন না বা বিক্রি করবেন না

    ২. আক্রান্ত ক্ষেত থেকে বীজ সংগ্রহ করবেন না

    এলোপাতারি বালাইনাশক ব্যবহার করে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি করবেন না

    পরবর্তীতে যা যা করবেন:

    ০. প্রথম বার লক্ষণ দেখা যেতেই ব্যবস্থা নিন
    ১. আগাম বীজ বপন করুন
    ২. সুষম সার ব্যবহার করুন
    ৩. রোগ প্রতিরোধী জাত যেমন: বারি উদ্ভাবিত/ অন্যান্য উন্নত জাতের চাষ করুন
    ৪. বিকল্প পোষক যেমন: আগাছা পরিস্কার রাখুন

    আপনার ফসলের সমস্যাটি সম্পর্কে আরো জানতে নিকটস্থ উপজেলা কৃষি অফিস বা উপ সহকারি কৃষি অফিসারের সংগে যোগাযোগ করুন.

    পুইশাকের পাতার দাগরোগ

  • Share The Gag
  • পুইশাকের পাতার দাগরোগ

    ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়ে থাকে। এ রোগে পাতায় বৈশিষ্ট্যপূর্ণ দাগ দেখা যায়।

    এর প্রতিকার হল

    ১. রোগমুক্ত বীজ ব্যবহার করা

    ২. আক্রান্ত পাতা ও ডগা অপসারণ করা।

    ৩. বীজ লাগানোর আগে প্রোভ্যাক্স প্রতি কেজি বীজের জন্য ২.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে বীজ শোধন করা ।

    ৪. কার্বেন্ডাজিম ১ গ্রাম / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে ১০-১২ দিন পরপর ২ বার স্প্রে করা।

    Sunday, March 19, 2017

    ডালিমের মিলিবাগ বা ছাতরা পোকা

  • Share The Gag
  • ডালিমের মিলিবাগ বা ছাতরা পোকা

    এরা পাতা ও ডালের রস চুষে নেয় ফলে গাছ দুর্বল হয়। পোকার আক্রমনে পাতা, ফল ও ডালে সাদা সাদা তুলার মত দেখা যায়। অনেক সময় পিপড়া দেখা যায়। এর আক্রমণে অনেক সময় পাতা ঝরে যায় এবং ডাল মরে যায়।

    প্রতিকার :
    ১. আকান্ত পাতা ও ডগা ছাটাই করে ধ্বংস করা।
    ২. গাছের গোড়ার মাটি থেকে 15-20 সেমি উপরে স্বচ্ছ পলিথিন দ্বারা মুড়ে দিতে হবে যাতে মিলিমাগ গাছে উঠতে না পারে।
    ৩. সম্ভব হলে হাত দিয়ে ডিম বা বাচ্চার গাদা সংগ্রহ করে ধ্বংস করা।
    ৪. জৈব বালাইনাশক নিমবিসিডিন (0.4%) ব্যবহার করা।
    ৫. আক্রমণ বেশী হলে প্রতিলিটার পানিতে ২ মিলি রগর বা টাফগর বা সানগর বা সুমিথিয়ন অথবা ২ গ্রাম মিপসিন বা সপসিন মিশিয়ে স্প্রে করা।

    পেয়ারার সাদা মাছি পোকা

  • Share The Gag
  • পেয়ারার সাদা মাছি পোকা

    লক্ষণ : এরা পাতার রস চুষে খায় ফলে গাছ দুর্বল হয়ে পড়ে। পাতায় অসংখ্য সাদা বা হলদেটে দাগ হয় । সাদা তুলার মত বস্তু ও সাদা পাখাযুক্ত মাছি দেখা যায় ।

    প্রতিকার :
    ১. সাদা আঠাযুক্ত বোর্ড স্থাপন বা আলোর ফাঁদ ব্যবহার করা।
    ২. আক্রান্ত পাতা তুলে ধ্বংস করা।
    ৩. 50 গ্রাম সাবানের গুড়া 10 লিটার পানিতে গুলে পাতার নিচে সপ্তাহে 2/3 বার ভাল করে স্প্রে করা। সাথে 5 কৌটা গুল (তামাক গুড়া) পানিতে মিশিয়ে দিলে ফল ভাল পাওয়া যায়।
    ৪. সর্বশেষ ব্যবস্থা হিসাবে অনুমোদিত বালাইনাশক ব্যবহার করা। যেমন এডমায়ার 0.5 মিলি বা 0.25 মিলি ইমিটাফ বা 2 মিলি টাফগর/রগব/সানগর প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।

     

    ঔষধের জন্য যোগাযোগ করুন- কৃষি ষ্টোর- ০১৯৭১৬২৫২৫২।

    পেয়ারার স্কেল ইনসেক্ট বা খোসা পোকা

  • Share The Gag
  • পেয়ারার স্কেল ইনসেক্ট বা খোসা পোকা

    এরা পাতা ও ডালের রস চুষে নেয় ফলে গাছ দুর্বল হয়। পোকার আক্রমণে পাতা, ফল ও ডালে সাদা সাদা তুলার মত দেখা যায়। অনেক সময় পিপড়া দেখা যায়। এর আক্রমণে অনেক সময় পাতা ঝরে যায় এবং ডাল মরে যায়।

    প্রতিকার :
    ১. আকান্ত পাতা ও ডগা ছাটাই করে ধ্বংস করা।
    ২. অল্প আক্রমণের ক্ষেত্রে তুলায় সমান্য অ্যালকোহল লাগিয়ে সেটি দিয়ে ঘষে গাছ পরিস্কার করা
    ৩. সম্ভব হলে হাত দিয়ে ডিম ব বাচ্চার গাদা সংগ্রহ করে ধ্বংস করা।
    ৪. জৈব বালাইনাশক নিমবিসিডিন (0.4%) ব্যবহার করা।
    ৫. আক্রমণ বেশী হলে প্রতিলিটার পানিতে 2 মিলি রগর টাফগর, সানগর বা সুমিথিয়ন 2 মিলি মিপসিন বা সপসিন মিশিয়ে স্প্রে করা।

    Saturday, March 18, 2017

    কাঁঠালের মুচি পঁচা রোগ

  • Share The Gag
  • কাঁঠালের মুচি পঁচা রোগ

    লক্ষণ : প্রথমে ফলের/ মুচির গায়ে বাতামী দাগ হয় তার পর আস্তে আস্তে কালচে হয়ে পঁচে যায় । পঁচা অংশে অনেক সময় ছত্রাকের সাদা মাইসেলিয়াম দেখা যায় ।

    প্রতিকার :
    ১. আক্রান্ত মুচি ও ফল সংগ্রহ করে পুড়ে ফেলা বা মাটি পুতে ফেলা
    ২. ফল বেশি ঘন থাকলে পাতলা করে দেয়া
    ৩. মেনকোজেব গ্রুপের ছত্রাকনাশক ২.৫ গ্রাম / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।

    কৃষকের আচরণগত পরিবর্তন যোগাযোগ (এফবিসিসি)

    পরবর্তীতে যা যা করবেন না

    ১. স্প্রে করার পর ১৫ দিনের মধ্যে সেই ফল খাবেন না বা বিক্রি করবেন না

    পরবর্তীতে যা যা করবেন

    ১. ফল সংগ্রহ করা শেষ হবার পর প্রতিটি গাছের ফলের বোটা, মরা ডাল বা রোগ বা পোকা আক্রান্ত পাতা ও ডাল অপসারণ করে অনুমোদিত একটি ছত্রাক নাশক ও একটি কীটনাশক স্প্রে করে দিন
    ২. বাগান/ গাছ সর্বদা পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন

    টমেটোর বুশি স্টান্ট রোগ

  • Share The Gag
  • টমেটোর বুশি স্টান্ট রোগ

    লক্ষণ

    লিফ হোপার নামক পোকা দ্বারা ভাইরাস ছড়ায় । গাছের উপরের অংশ কুঁকড়ায়ে যায় । পাতা মুড়িয়ে যায় । পাতা মুড়িয়ে যায় ও চামড়ার ন্যায় পরু মনে হয় । গাছ আকৃতিতে ছোট হয় ।

    প্রতিকার

    • আক্রান্ত গাছ সংগ্রহ করে ধ্বংস করা ।
    রোগমুক্ত গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করা ।
    রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন জাত ব্যবহার করা ।
    • ভাইরাসের বাহক পোকা (সাদা মাছি) দমনের জন্য ডায়মেথেয়েট (পারফেকথিয়ন), এসাটাফ, এডমায়ার, টিডো, ইত্যাদি যে কোন একটি ১ মিলি /লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা) ।

    ব্যাকটেরিয়াজনিত পাতা পোড়া রোগ

  • Share The Gag
  • লক্ষণ:
    এটি ঝলসানো রোগ নামেও পরিচিত। শিশির, সেচের পানি, বৃষ্টি, বন্যা এবং ঝড়ো হাওয়ার মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায়। ব্যাকটেরিয়া কোষগুলো একত্রে মিলিত হয়ে ভোরের দিকে হলদে পুঁতির দানার মত গুটিকা সৃষ্টি করে এবং এগুলো শুকিয়ে শক্ত হয়ে পাতার গায়ে লেগে থাকে। পরবর্তীকালে পাতার গায়ে লেগে থাকা জলকণা গুটিকাগুলোকে গলিয়ে ফেলে এ রোগের জীবাণু অনায়াসে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এ রোগের ফলে গাছের বিভিন্ন বয়সে তিনটি ভিন্ন ভিন্ন লক্ষণ (ক্রিসেক, পাতা পোড়া ও ফ্যাকাশে হলুদ) দেখা দেয়। বীজতলা থেকে চারা তোলার সময় যদি শিকড় ছিড়ে যায় তখন রোপণের সময় ব্যাকটেরিয়া সে ক্ষতের মধ্য দিয়ে গাছের ভিতরে প্রবেশ করে। এছাড়া কচি পাতার ক্ষত স্থান দিয়েও প্রবেশ করতে পারে। আক্রান্ত গাছের নিচের পাতা প্রথমে নুয়ে পড়ে এবং শুকিয়ে মারা যায়। এভাবে গোছার সকল পাতাই মরে যেতে পারে। এ অবস্থাকে ক্রিসেক বা নেতিয়ে পড়া রোগ বলা হয়। চারা বা প্রাথমিক কুশি বের হওয়ার সময় গাছের পাতা বা পুরো গাছটি ঢলে পড়ে। মাঝে মাঝে আক্রমণ প্রবণ জাতের ধানে পাতাগুলো ফ্যাকাশে হলদে রঙের হয়। গাছের বয়স্ক পাতাগুলো স্বাভাবিক সবুজ থাকে, কিন্ত কচি পাতাগুলো সমানভাবে ফ্যাকাশে হলদে হয়ে আস্তে আস্তে শুকিয়ে মারা যায়। পাতা পোড়া রোগের লক্ষণের ক্ষেত্রে প্রথমে পাতার কিনারা অথবা মাঝে নীলাভ সবুজ রঙের জলছাপের মত রেখা দেখা যায়। দাগগুলো পাতার এক প্রান্ত, উভয় প্রান্ত বা ক্ষত পাতার যে কোন জায়গা থেকে শুরু হয়ে আস্তে আস্তে সমস্ত পাতাটি ঝলসে বা পুড়ে খড়ের মত হয়ে শুকিয়ে যায়। আক্রমণ প্রবণ জাতের ধানে দাগগুলো পাতার খোলের নিচ পর্যন্ত যেতে পারে। এক সময়ে সম্পূর্ণ পাতাটি ঝলসে যায় বা পুড়ে খড়ের মত হয়ে শুকিয়ে যায়। রোগ সমস্ত জমিতে ছড়িয়ে পড়লে পুড়ে গেছে বলে মনে হয়।

    ব্যবস্থাপনা:
    • ক্রিসেক আক্রান্ত গাছ তুলে ফেলে পার্শ্ববর্তী গাছ থেকে কুশি এনে লাগিয়ে দেয়া।
    • আক্রান্ত ক্ষেতের পানি বের করে দিয়ে জমি ভেদে ৭-১০ দিন শুকানো।
    • আক্রান্ত ক্ষেতে নাইট্রোজেন সার প্রয়োগ না করা।
    • আক্রান্ত ক্ষেতে বিঘা প্রতি ৫ কেজি পটাশ সার প্রয়োগ করে মাটিতে ভালভাবে মিশিয়ে দিলে এ রোগের তীব্রতা কমে।

    পরবর্তীতে যা যা করবেন না



    ১. আক্রান্ত ক্ষেত থেকে বীজ সংগ্রহ করবেন না

    ২. ঝড়ের পরপরই জমিতে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করবেন না।

    পরবর্তীতে যা যা করবেন



    পরবর্তীতে যা যা করবেন



    ১. এ রোগ প্রতিরোধের জন্য বিআর২৬ (শ্রাবণী), ব্রিধান২৭, ব্রিধান৩২, ব্রিধান৩৩, ব্রিধান৩৭, ব্রিধান৩৮, ব্রিধান ৪০, ব্রিধান৪১, ব্রিধান ৪২, ব্রিধান৪৪ ও ব্রিধান৪৬ ইত্যাদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন জাতের ধান চাষ করুন।

    ২. সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ করুন ।
    ৩. ফসল কাটার পর আক্রান্ত জমি ও তার আসে-পাশের জমির নাড়া পুড়িয়ে দিন।

    Friday, March 17, 2017

    লিচুর রোগ ও তার প্রতিকার

  • Share The Gag
  • ১। রোগের নাম: পাতার দাগ (Leaf spot)

    রোগের কারণঃ Pestalotia sp. নামক ছত্রাক

    রোগের বিস্তার:

    গ্রীষ্মকালে রোগের তীব্রতা বাড়ে। আক্রান্ত পাতা থেকে জীবানু বিস্তার লাভ করে।

    রোগের লক্ষণ:

    ১. প্রথমে পাতার উপর ছোট বাদামী রঙের দাগ পড়ে।
    ২. দাগগুলো ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে এবং বড় দাগের সৃষ্টি করে।
    ৩. বয়স্ক পাতায় আক্রমণ বেশী দেখা যায়।

    দমন ব্যবস্থাপনা

    ১. গাছের মরা ডালপালা ছাঁটাই করে ফেলতে হবে।
    ২. পরিচছন্ন চাষাবাদ পদ্ধতি মেনে চলতে হবে।
    ৩. টিল্ট ২৫০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি হারে মিশিয়ে ১০ দিন পর পর স্প্রে করতে হবে।

    ২। রোগের নাম: অ্যানথ্র্রাকনোজ (Anthracnose)

    রোগের কারণঃ Colletotrichum gloeosporioides নামক ছত্রাক

    রোগের বিস্তার:

    আর্দ্র ও গরম আবহাওয়ায় রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়।

    রোগের লক্ষণ:

    ১. সংগ্রহোত্তর লিচুর একটি প্রধান সমস্যা।
    ২. রোগের আক্রমণে ফল-এর উপর বাদামী দাগের সৃষ্টি হয় যাতে ফলের বাজার দর কমে যায়।
    ৩. বেশী আক্রান্ত ফল নষ্ট হয়ে খাওয়ার অনুপযুক্ত হয়ে যায়।

    দমন ব্যবস্থাপনা

    ১. ১০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় গুদামজাত করতে হবে।
    ২. ফল সংগ্রহ, প্যাকেজিং, পরিবহন ও বাজার জাত করার সময় আক্রান্ত ফল বেছে বাদ দিতে হবে।
    ৩. ফল গাছে থাকা অবস্থায় টিল্ট ২৫০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি হারে মিশিয়ে ১০ দিন পর পর স্প্রে করতে হবে।

    ৩। রোগের নাম: ডাউনি মিলডিউ (Downy mildew)

    রোগের কারণঃ Peronophythora litchii নামক ছত্রাক

    রোগের বিস্তার:

    আর্দ্র আবহাওয়া রোগের আক্রমণের জন্য অনুকুল অবস্থার সৃষ্টি করে।

    রোগের লক্ষণ:

    ১. রোগের জীবাণুু মুুকুলে, কচি ফলে এবং নতুন ডগায় সাদা পাউডারের আবরণ সৃষ্টি করে।
    ২. দৃশ্যমান সাদা পাউডার প্রকৃৃতপক্ষে ছত্রাকজালিকা এবং বীজঅণুর সমষ্টি।
    ৩. জীবাণু মুকুল থেকে অতিরিক্ত খাদ্যরস শোষণ করার ফলে আক্রান্ত মুুুকুল শুকিয়ে যায়।
    ৪. ফলের উপর পানি ভেজা দাগ দেখা যায়।

    দমন ব্যবস্থাপনা:

    ১. পানি স্প্রে করেও রোগের প্রকোপ কমানো সম্ভব।
    ২. মুুকুলে সাদা পাউডারের আবরণ দেখা দিলেই গন্ধকযুক্ত ছত্রাকনাশক (থিওভিট/কুমুুলাস/রনোাভিট) প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে ১০ দিন পর পর ২ বার স্প্রে করতে হবে।

    ৪। রোগের নাম: ফল ঝরা রোগ (Fruit dropping)

    রোগের কারণঃ ছত্রাক ও শারীরবৃত্তীয়

    রোগের বিস্তার:

    ১. ফল ঝরা লিচুর সাধারণ সমস্যা।
    ২. আবহাওয়া শুষ্ক হলে বা গাছে হরমোনের অভাব থাকলে ফল ঝরে পড়তে পারে।

    রোগের লক্ষণ:

    গুটি অবস্থায় ফল ঝরে পড়ে। ফল বাদামী থেকে কাল রং ধারণ করে।

    দমন ব্যবস্থাপনা:

    ১. শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করলে সেচের ব্যবস্থা করতে হবে।
    ২. ফল মটর দানা এবং মার্বেল আকার অবস্থায় প্লানোফিক্স অথবা মিরাকুলান ৪.৫ লিটার পানিতে ২ মিলি হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
    ৩. গুটি বাধার পর জিংক সালফেট প্রতি লিটার পানিতে ১০ গ্রাম হারে মিশিয়ে গাছে স্প্রে করতে হবে ।
    ৪. রোগ ও পোকার আক্রমণ প্রতিহত করতে হবে।

    ৫। রোগের নাম: ফল ফেটে যাওয়া (Fruit cracking)

    রোগের কারণ: শারীরবৃত্তীয়

    রোগের বিস্তার:

    ১. দীর্ঘ খরার পর হঠাৎ বৃষ্টি, শুষ্ক ও গরম হাওয়া, রোগ ও পোকার আক্রমণ বেশী হয়।
    ২. মাটিতে ক্যালসিয়ামের অভাব হলে ।
    ৩. আগাম জাতে এ সমস্যা বেশী হয়।

    রোগের লক্ষণ:

    ১. দীর্ঘ সময় খরা চলতে থাকলে ফলের বাহিরের খোসা শক্ত হয়ে যায়।
    ২. এরপর হঠাৎ বৃষ্টি হলে ফলের বৃদ্ধি শুরু হয়।
    ৩. বাহিরের খোসা শক্ত থাকায় ফলের ভিতরের অংশের সাথে সুষমভাবে বাড়তে পারে না তাই খোসা ফেটে যায়।

    দমন ব্যবস্থাপনা:

    ১. মাটিতে জৈব সার প্র্রয়োগ এবং খরা মৌসুমে নিয়মিত সেচ প্রদান করতে হবে।
    ২. প্রতি বছর প্রতি গাছের গোড়ায় ক্যালসিয়াম সার (ডলোচুন – ৫০ গ্রাম) প্রয়োগ করতে হবে।
    ৩. গুটি বাধার পর পরই প্লানোফিক্স বা মিরাকুলান ৪.৫ লিটার পানিতে ২ মিলি হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
    ৪. বোরিক এসিড প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে গাছে স্প্রে ও ফল ফেটে যাওয়া রোধ করা যায়।

    ৬। রোগের নাম: ফল শুকিয়ে যাওয়া (Fruit drying)

    রোগের কারণ: শারীরবৃত্তীয় ও প্রখর রোদ।

    রোগের বিস্তার:

    অতিরিক্ত রোদ, শুষ্ক ও গরম হাওয়ায় রোগ বেশী হয়।

    রোগের লক্ষণ:

    ১. এক নাগাড়ে লিচুর এক পাশে রোদ লাগলে লিচুর ত্বক শুকিয়ে যায়।

    দমন ব্যবস্থাপনা:

    ১. গাছের গোড়ায় সপ্তাহে ২ বার পানি প্রয়োগ করতে হবে।

    ২. বিকাল বেলায় গাছে পানি স্প্রে করতে হবে।

     

    ড. কে, এম, খালেকুজ্জামান ।।
    উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব)
    মসলা গবেষণা কেন্দ্র, বিএআরআই
    শিবগঞ্জ, বগুড়া।

    Thursday, March 16, 2017

    সবজি ও ফল চাষের বারো মাসের ক্যালেন্ডার

  • Share The Gag
  • আমাদের দেশে সাধারণত ঋতু বা মৌসুম ছটি। আর কৃষির মৌসুম তিনটি- খরিফ-১, খরিফ-২ ও রবি। উৎপাদনের ওপর ভিত্তি করে যদিও কৃষি মৌসুমকে তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে, কিন্তু ভৌগোলিক অবস্থান, আবহাওয়া, জলবায়ু এবং আমাদের প্রয়োজনের তাগিদে প্রতি মাসের প্রতিটি দিনই কিছু না কিছু কৃষি কাজ করতে হয়।

    সে জন্য বলা যায় বছরের প্রতিটি দিনই কৃষির কার্যক্রমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এখানে চাষিভাইদের উদ্দেশ্যে সংক্ষেপে বাংলা বারো কৃষি ভুবনে করণীয় কাজগুলোর দিক নির্দেশনা দেয়া হলো মাত্র। চাষি ভাইরা নিজস্ব চিন্তাধারা, চাহিদা ও আর্থিক দিক বিবেচনা করে নিজের মত প্রতিদিনের কাজগুলোকে সাজিয়ে নিবেন ও বাস্তবে রূপ দেবেন। তাহলেই লাভবান হবেন এবং কৃষি ভুবন সমৃদ্ধ হবে।

    বৈশাখ (মধ্যএপ্রিল-মধ্যমে):

    লালশাক, গিমাকলমি, ডাঁটা, পাতাপেঁয়াজ, পাটশাক, বেগুন, মরিচ, আদা, হলুদ, ঢেঁড়স বীজ বপন ও গ্রীষ্মকালীন টম্যাটোর চারা রোপণ। মিষ্টিকুমড়া, করলা, ধুন্দুল, ঝিঙা, চিচিংগা, চালকুমড়া, শসার মাচাতৈরি, চারা উৎপাদন, কুমড়া জাতীয় সবজির পোকামাকড় দমন, সেচ প্রদান। খরিফ-১ সবজির বীজ বপন, চারা রোপণ। ডাঁটা, পুঁইশাক, লালশাক, বরবটি ফসল সংগ্রহ। খরিফ-২ সবজির বেড প্রস্তুত ও চারাতৈরি।

    কাঁচা কাঁঠাল সবজি হিসেবে ব্যবহার। কচি সজিনা, তরমুজ, বাঙ্গি সংগ্রহ, আলুর চিপস তৈরি ও রকমারি ব্যবহার। ফল চাষের স্থান নির্বাচন, উন্নতজাতের ফলের চারা/কলম সংগ্রহ, পুরানো ফলগাছে সুষম সার প্রয়োগ, ফলন্ত গাছে সেচ প্রদান।

     

    জ্যৈষ্ঠ (মধ্যমে-মধ্যজুন):

    আগে বীজতলায় বপনকৃত খরিফ-২ এর সবজির চারা রোপণ, সেচ ও সার প্রয়োগ, বিভিন্ন পরিচর্যা, সজিনা সংগ্রহ এবং গ্রীষ্মকালীন টম্যাটোর চারা রোপণ ও পরিচর্যা।

    ঝিঙা, চিচিংগা, ধুন্দুল, পটল, কাঁকরোল সংগ্রহ, পোকামাকড় দমন। নাবী কুমড়া জাতীয় ফসলের মাচা তৈরি, সেচ ও সার প্রয়োগ। ফলের চারা রোপণের গর্ত প্রস্তুত ও বয়স্ক ফল গাছে সুষম সার প্রয়োগ, ফল সংগ্রহ, বাজারজাতকরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ।

     

    আষাঢ় (মধ্যজুন-মধ্যজুলাই):

    গ্রীষ্মকালীন বেগুন, টম্যাটো, কাঁচা মরিচের পরিচর্যা, শিমের বীজ বপন, কুমড়া জাতীয় সবজির পোকামাকড়, রোগবালাই দমন।

    আগে লাগানো বেগুন, টম্যাটো ও ঢেঁড়সের বাগান থেকে ফসল সংগ্রহ। খরিফ-২ সবজির চারা রোপণ ও পরিচর্যা, সেচ, সার প্রয়োগ। ফলসহ ওষুধি গাছের চারা/কলম রোপণ, খুঁটি দিয়ে চারা বেঁধে দেয়া, খাঁচা/বেড়া দেয়া। ফল গাছে সুষম সার প্রয়োগ।

     

    শ্রাবণ (মধ্যজুলাই-মধ্যআগস্ট):

    আগাম রবি সবজি যেমন বাঁধাকপি, ফুলকপি, লাউ, টম্যাটো, বেগুন এর বীজতলা তৈরি, বীজ বপন। খরিফ-২ এর সবজি উঠানো ও পোকামাকড় দমন। শিমের বীজ বপন, লালশাক ও পালংশাকের বীজ বপন। রোপণকৃত ফলের চারার পরিচর্যা, উন্নত চারা/কলম রোপণ, খুঁটি দেয়া, খাঁচি বা বেড়া দেয়া, ফল সংগ্রহ, বাজারজাতকরণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ/ সংরক্ষণ।

     

    ভাদ্র (মধ্যআগস্ট-মধ্যসেপ্টেম্বর):

    অধিকাংশ খরিফ-২ সবজির সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও খরিফ-১ এর সবজি বীজ সংরক্ষণ। আগাম রবি সবজি বাঁধাকপি, ফুলকপি, ওলকপি, সবুজ ফুলকপি, টম্যাটো, বেগুন, লাউ-এর জমিতৈরি, চারা রোপণ, সার প্রয়োগ। মধ্যম ও নাবী রবি সবজির বীজতলাতৈরি, বীজ বপন। নাবী খরিফ-২ সবজি সংগ্রহ, বীজ সংরক্ষণ। আগে লাগানো ফলের চারার পরিচর্যা। ফলের উন্নত চারা/কলম লাগানো, খুঁটি দেয়া, বেড়া দিয়ে চারাগাছ সংরক্ষণ, ফল সংগ্রহের পর গাছের অঙ্গ ছাঁটাই।

    আশ্বিন (মধ্যসেপ্টেম্বর - মধ্যঅক্টোবর):

    আগাম রবি সবজির চারা রোপণ, চারার যত, সেচ, সার প্রয়োগ, বালাই দমন, নাবী রবি সবজির বীজতলাতৈরি, বীজ বপন, আগাম টম্যাটো, বাঁধাকপি, ফুলকপি, সবুজ ফুলকপি, ওলকপির আগাছা দমন ও গোড়া বাঁধা। শিম, লাউ, বরবটির মাচাতৈরি ও পরিচর্যা। রসুন, পেঁয়াজের বীজ বপন, আলু লাগানো। ফল গাছের গোড়ায় মাটি দেয়া, আগাছা পরিষ্কার ও সার প্রয়োগ।

    কার্তিক (মধ্যঅক্টোবর - মধ্যনভেম্বর):

    আলুর কেইল বাঁধা ও আগাম রবি সবজির পরিচর্যা ও সংগ্রহ। মধ্যম রবি সবজি পরিচর্যা, সার প্রয়োগ, সেচ প্রদান। নাবী রবি সবজির চারা উৎপাদন, জমিতৈরি/চারা লাগান। বাঁধাকপি, ফুলকপি, ওলকপির গোড়া বাঁধা/ আগাছা পরিষ্কার করা। মরিচের বীজ বপন/চারা রোপণ। ফল গাছের পরিচর্যা,সার প্রয়োগ না করে থাকলে সার ব্যবহার ও মালচিং করে মাটিতে রস সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া।

     

     

    অগ্রহায়ণ (মধ্যনভেম্বর - মধ্যডিসেম্বর):

    মিষ্টি আলুর লতা রোপণ, পূর্বে রোপণকৃত লতার পরিচর্যা, পেঁয়াজ, রসুন ও মরিচের চারা রোপণ, আলুর জমিতে সার প্রয়োগ, সেচ প্রদান। অন্যান্য রবি ফসল যেমনঃ ফুলকপি, বাঁধাকপি, টম্যাটো, বেগুন ওলকপি, শালগম-এর চারার যত্ন, সার প্রয়োগ, সেচ প্রদান, আগাছা পরিষ্কার, সবজি সংগ্রহ। ফল গাছের মালচিং এবং পরিমিত সার প্রয়োগ।

     

    পৌষ (মধ্যডিসেম্বর - মধ্যজানুয়ারি):

    আগাম ও মধ্যম রবি সবজির পোকামাকড় ও রোগবালাই দমন, সবজি সংগ্রহ। নাবী রবি সবজির পরিচর্যা, ফল গাছের পোকামাকড় ও রোগবালাই দমন এবং অন্যান্য পরিচর্যা।

    যারা বাণিজ্যিকভাবে মৌসুমি ফুলে চাষ করতে চান তাদেরকে এ সময় ফুল গাছের বেশি করে যত্ন নিতে হবে বিশেষ করে সারের উপরি প্রয়োগ করতে হবে।

     

    মাঘ (মধ্যজানুয়ারি - মধ্যফেব্রুয়ারি):

    আলু, পেঁয়াজ, রসুন-এর গোড়ায় মাটি তুলে দেয়া, সেচ, সার প্রয়োগ, টম্যাটোর ডাল ও ফল ছাঁটা, মধ্যম ও নাবী রবি সবজির সেচ, সার, গোড়া বাঁধা, মাচা দেয়া এবং আগাম খরিফ-১ সবজির বীজতলাতৈরি বা মাদা তৈরি বা বীজ বপন।

    বীজতলায় চারা উৎপাদনে বেশি সচেতন হতে হবে। কেননা সুস্থ-সবল রোগমুক্ত চারা রোপণ করতে পারলে পরবর্তীতে অনায়াসে ভাল ফসল/ফলন আশা করা যায়। ফল গাছের পোকামাকড়, রোগাবালাই দমন ও অন্যান্য পরিচর্যা।

     

    ফাল্গুন (মধ্যফেব্রুয়ারি - মধ্যমার্চ):

    নাবী খরিফ-১ সবজির বীজতলা তৈরি, মাদাতৈরি, বীজ বপন, ঢেঁড়স, ডাঁটা লালশাক এর বীজ বপন। আগাম খরিফ-১ সবজির চারা উৎপাদন ও মূল জমিতৈরি, সার প্রয়োগ ও রোপণ। আলু, মিষ্টি আলু সংগ্রহ, রবি সবজির বীজ সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বাগানের অন্যান্য ফসলের পরিচর্যা। আলু সংরক্ষণে বেশি যত্নবান হোন। এক্ষেত্রে জমিতে আলু গাছের বয়স ৯০ দিন হলে মাটির সমান করে সমুদয় গাছ কেটে গর্তে আবর্জনা সার তৈরি করুন।

    এভাবে মাটির নিচে ১০ দিন আলু রাখার পর অর্থাৎ রোপণের ১০০ দিন পর আলু তুলতে হবে।

    এতে চামড়া শক্ত হবে ও সংরক্ষণ ক্ষমতা বাড়বে। ফল গাছের গোড়ায় রস কম থাকলে মাঝে মধ্যে সেচ প্রদান, পোকামাকড় ও রোগবালাই দমন করা দরকার।

     

    চৈত্র (মধ্যমার্চ - মধ্যএপ্রিল):

    গ্রীষ্মকালীন বেগুন, টম্যাটো, মরিচ- এর বীজ বপন/চারা রোপণ। নাবী জাতের বীজতলাতৈরি ও বীজ বপন। যে সব সবজির চারা তৈরি হয়েছে সেগুলো মূল জমিতে রোপণ। সবজি ক্ষেতের আগাছা দমন, সেচ ও সার প্রয়োগ, কুমড়া জাতীয় সবজির পোকামাকড় ও রোগ বালাই দমন। নাবী রবি সবজি উঠানো, বীজ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ। মাটিতে রসের ঘাটতি হলে ফলের গুটি/কড়া ঝরে যায়। তাই প্রয়োজনীয় সেচ প্রদান, পোকামাকড় ও রোগবালাই দমন জরুরি।

     

    চৈত্র মাসের কৃষি -আপনার করণীয়

  • Share The Gag
  • চৈত্র মাসের কৃষি

    চৈত্র বাংলা বছরের শেষ মাস। কিন্তু কৃষির শেষ বলে কিছু নেই। এ মাসে রবি ফসল ও গ্রীষ্মকালীন ফসলের প্রয়োজনীয় কার্যক্রম এক সঙ্গে করতে হয় বলে বেড়ে যায় কৃষকের ব্যস্ততা। এ মাসে কৃষিতে কী কী গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করতে হবে আসুন তা জেনে নেই।

    বোরো ধানঃ

    যারা শীতের কারণে দেরিতে চারা রোপণ করেছেন তাদের ধানের চারার বয়স ৫০-৫৫ দিন হলে ইউরিয়া সারের শেষ কিস্তি উপরিপ্রয়োগ করতে হবে। ক্ষেতে গুটি ইউরিয়া দিয়ে থাকলে ইউরিয়া সারের উপরিপ্রয়োগ করতে হবে না।
    সার দেয়ার আগে জমির আগাছা পরিষ্কার করতে হবে এবং জমি থেকে পানি সরিয়ে দিতে হবে।
    এলাকার জমিতে যদি সালফার ও দস্তা সারের অভাব থাকে এবং জমি তৈরির সময় এ সারগুলো না দেয়া হয়ে থাকে তবে ফসলে পুষ্টির অভাবজনিত লক্ষণ পরীক্ষা করে শতাংশপ্রতি ২৫০ গ্রাম সালফার ও ৪০ গ্রাম দস্তা সার উপরিপ্রয়োগ করতে হবে।
    ধানের কাইচ থোড় আসা থেকে শুরু করে ধানের দুধ আসা পর্যন্ত ক্ষেতে ৩-৪ ইঞ্চি পানি ধরে রাখতে হবে।
    পোকা দমনের জন্য নিয়মিত ক্ষেত পরিদর্শন করতে হবে এবং সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে আলোর ফাঁদ পেতে, পোকা ধরার জাল ব্যবহার করে, ক্ষতিকর পোকার ডিমের গাদা নষ্ট করে, উপকারী পোকা সংরক্ষণ করে, ক্ষেতে ডাল-পালা পুঁতে পাখি বসার ব্যবস্থা করার মাধ্যমে ধানক্ষেত বালাইমুক্ত করতে পারেন।

    এসব পন্থায় রোগ ও পোকার আক্রমণ প্রতিহত করা না গেলে শেষ উপায় হিসেবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে সঠিক বালাইনাশক, সঠিক সময়ে, সঠিক মাত্রায় প্রয়োগ করতে হবে।

    এ সময় ধান ক্ষেতে উফরা, ব্লাস্ট, পাতাপোড়া ও টুংরো রোগ দেখা দেয়।

    জমিতে উফরা রোগ দেখা দিলে যে কোনো কৃমিনাশক যেমন ফুরাডান ৫ জি বা কিউরেটার ৫ জি প্রয়োগ করতে হবে।
    ব্লাস্ট রোগ দেখা দিলে ইউরিয়া সারের উপরিপ্রয়োগ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে হবে এবং শতাংশপ্রতি ১.৬ গ্রাম ট্রপার বা জিল বা নেটিভ ১০-১৫ দিনের ব্যবধানে দুইবার প্রয়োগ করতে হবে।
    জমিতে পাতা পোড়া রোগ হলে অতিরিক্ত ১.৫ কেজি/শতাংশ হারে পটাশ সার উপরিপ্রয়োগ করতে হবে এবং জমির পানি শুকিয়ে ৭-১০ দিন পর আবার সেচ দিতে হবে।

    টুংরো রোগ দমনের জন্য এর বাহক পোকা সবুজ পাতা ফড়িং দমন করতে হবে।

    গমঃ
    দেরিতে বপন করা গম পেকে গেলে কেটে মাড়াই, ঝাড়াই করে ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হবে।
    শুকনো বীজ ছায়ায় ঠাণ্ডা করে প্লাস্টিকের ড্রাম, বিস্কুটের টিন, মাটির কলসি ইত্যাদিতে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।

    ভুট্টা (রবি)ঃ
    জমিতে শতকরা ৭০-৮০ ভাগ গাছের মোচা খড়ের রঙ ধারণ করলে এবং পাতার রঙ কিছুটা হলদে হলে মোচা সংগ্রহ করতে হবে।
    বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগে শুকনো আবহাওয়ায় মোচা সংগ্রহ করতে হবে।
    সংগ্রহ করা মোচা ভালোভাবে শুকিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে।
    ভুট্টার দানা মোচা থেকে ছাড়ানো অনেক কষ্টের কাজ। অনেকে এ কাজটি হাত দিয়ে করে থাকেন। খুব অল্প খরচে ভুট্টা মাড়াই যন্ত্র কিনে অনায়াসে মোচা থেকে ভুট্টা ছাড়াতে পারেন।

    ভুট্টা (খরিফ)ঃ
    গ্রীষ্মকালীন ভুট্টা চাষ করতে চাইলে এখনই বীজ বপন করতে হবে।
    শতাংশপ্রতি ১০০-১২০ গ্রাম বীজ লাগবে।
    প্রতি শতাংশ জমিতে ইউরিয়া ৩৬৫ গ্রাম, টিএসপি ২২২ গ্রাম, এমওপি ১২০ গ্রাম, জিপসাম ১৬০ গ্রাম এবং দস্তা সার ১৬ গ্রাম প্রয়োগ করতে হবে ।

    পাটঃ

    চৈত্র মাসের শেষ পর্যন্ত পাটের বীজ বপন করা যায়। পাটের ভালো জাতগুলো হলো ও-৯৮৯৭, ওএম-১, সিসি-৪৫, বিজেসি-৭৩৭০, সিভিএল-১, এইচসি-৯৫, এইচ এস-২৪। স্থানীয় বীজ ডিলারদের সাথে যোগাযোগ করে জাতগুলো সংগ্রহ করতে পারেন।
    পাট চাষের জন্য উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমি নির্বাচন করে আড়াআড়িভাবে ৫-৬টি চাষ ও মই দিয়ে জমি তৈরি করতে হবে।
    সারিতে বুনলে প্রতি শতাংশে ১৭ থেকে ২০ গ্রাম বীজ প্রয়োজন হয়। তবে ছিটিয়ে বুনলে ২৫-৩০ গ্রাম বীজ প্রয়োজন হয়।
    পাটের জমিতে সারি থেকে সারির দূরত্ব ৩০ সেন্টিমিটার এবং চারা থেকে চারার দূরত্ব ৭-১০ সেন্টিমিটার রাখা ভালো।
    ভালো ফলনের জন্য শতাংশপ্রতি ৩০০ গ্রাম ইউরিয়া, ৬০০ গ্রাম টিএসপি, ১০০ গ্রাম এমওপি সার শেষ চাষের সময় মাটিতে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। জমিতে সালফার ও জিংকের অভাব থাকলে জমিতে সার দেয়ার সময় ৪০০ গ্রাম জিপসার ও ২০ গ্রাম দস্তা সার দিতে হবে।
    চারা গজানোর ১৫ থেকে ২০ দিন পর শতাংশপ্রতি ৩০০ গ্রাম ইউরিয়া সার উপরিপ্রয়োগ করেত হবে। এর ৩০ থেকে ৪০ দিন পর দ্বিতীয়বারের মতো শতাংশপ্রতি ৩০০ গ্রাম ইউরিয়া সার উপরিপ্রয়োগ করেত হবে।

    অন্যান্য মাঠ ফসলঃ

    রবি ফসলের মধ্যে চিনা, কাউন, আলু, মিষ্টিআলু, চীনাবাদাম, পেঁয়াজ, রসুন যদি এখনো মাঠে থাকে তবে দেরি না করে সাবধানে তুলে ফেলতে হবে।
    কাটা/তোলা, বাছাই, মাড়াই, পরিষ্কার, শুকানো এবং সংরক্ষণসহ প্রতিটি ধাপে লাগসই পদ্ধতি বাস্তবায়ন করলে খরচ কমে যাবে, লাভ বেশি হবে।
    এ সময়ে বা সামান্য পরে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পচনশীল ফসল সেজন্য তাড়াতাড়ি কেটে ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে।

    শাকসবজিঃ

    গ্রীষ্মকালীন শাকসবজি চাষ করতে চাইলে এ মাসেই বীজ বপন বা চারা রোপণ শুরু করতে হবে।
    সবজি চাষে পর্যাপ্ত জৈবসার ব্যবহার করতে হবে।
    এসময় গ্রীষ্মকালীন টমেটো, ঢেঁড়স, বেগুন, করলা, ঝিঙা, ধুন্দুল, চিচিঙ্গা, শসা, ওলকচু, পটোল, কাঁকরোল, মিষ্টিকুমড়া, চালকুমড়া, লালশাক, পুঁইশাক এসব চাষ করতে পারেন।

    গাছপালাঃ

    এ সময় বৃষ্টির অভাবে মাটিতে রসের পরিমাণ কমে আসে। এ অবস্থায় গাছের গোড়ায় নিয়মিত পানি দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
    আম গাছে হপার পোকার আক্রমণ হলে অনুমোদিত কীটনাশক যেমন-সিমবুস/ফেনম/ ডেসিস ২.৫ ইসি প্রভৃতি প্রয়োগ করে নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নিতে হবে। আম গাছে মুকুল আসার ১০ দিনের মধ্যে কিন্তু ফুল ফোটার পূর্বেই একবার এবং এর একমাস পর আর একবার প্রতি লিটার পানির সাথে ১.০ মিলি সিমবুস/ফেনম/ডেসিস ২.৫ ইসি মিশিয়ে গাছের পাতা, মুকুল ও ডালপালা ভালোভাবে ভিজিয়ে ¯েপ্র করতে হবে।
    এ সময় আমে পাউডারি মিলডিউ ও অ্যান্থাকনোজ রোগ দেখা দিতে পারে। টিল্ট, রিডোমিল গোল্ড বা ডায়থেন এম ৪৫ অনুমোদিত মাত্রায় প্রয়োগ করতে হবে।

    কলা বাগানের পার্শ্ব চারা, মরা পাতা কেটে দিতে হবে।
    পেঁপের চারা রোপণ করতে পারেন এ মাসে।
    নার্সারিতে চারা উৎপাদনের জন্য বনজ গাছের বীজ বপন করতে পারেন।
    যাদের বাঁশ ঝাড় আছে তারা বাঁশ ঝাড়ের গোড়ায় মাটি ও জৈব সার প্রয়োগ করতে পারেন।

    প্রাণিসম্পদঃ

    শীতকাল শেষ হয়ে গরম পড়ার সময়টিতে পোলট্রি খামারি ভাইদের বেশ সর্তক থাকতে হবে। কারণ শীতকালে মোরগ-মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কমে যায়। সে কারণে রানীক্ষেত, মাইকোপ্লাজমোসিস, ফাউল টাইফয়েড, পেটে পানি জমা এসব রোগ দেখা দিতে পারে। তাই আগ থেকেই টিকা প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।

    ভিটামিন সি ও ভিটামিন ই এর অভাব দেখা দিতে পারে। সেজন্য খাবারের সাথে ভিটামিন সরবরাহ করতে হবে।
    তাপমাত্রার বৃদ্ধি ও কমে যাওয়ার কারণে বিরূপ আবহাওয়ায় মোরগ-মুরগীর খাবার গ্রহণেও অনীহা দেখা দেয়।
    চৈত্র মাসে বেশ গরম পড়ে, তাই গবাদিপশুর এ সময় বিশ্রামের প্রয়োজন। আপনার গবাদিপশুকে ছায়ায় রাখতে হবে এবং বেশি বেশি পানি খাওয়াতে হবে, সেই সাথে নিয়মিত গোসল করাতে হবে।
    গবাদিপশুর গলাফুলা, তড়কা, বাদলা রোগ প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
    মৎস্যসম্পদ

    মাছের আঁতুড় পুকুর তৈরির কাজ এ মাসে শেষ করতে হবে।

    পুকুরের পানি শুকিয়ে গেলে নিচ থেকে পচা কাদা তুলে ফেলতে হবে এবং শতাংশপ্রতি ১ কেজি চুন ও ১০ কেজি গোবর বা কম্পোস্ট সার প্রয়োগ করতে হবে।

    পানি ভর্তি পুকুরে প্রতি শতাংশে ৬ ফুট পানির জন্য ১ কেজি চুন গুলে ঠাণ্ডা করে দিতে হবে।
    বিস্তারিত জানার জন্য আপনার কাছের উপজেলা কৃষি অফিস/উপজেলা মৎস্য অফিস/উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস বা কৃষি বিশেষজ্ঞ, মৎস্য বিশেষজ্ঞ ও প্রাণিসম্পদ বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করে জেনে নিতে হবে অথবা কৃষি কল সেন্টারের ১৬১২৩ নম্বরে কল করে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে পারেন।

    কৃষিবিদ মোহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন*

    Tuesday, March 14, 2017

    নান্দাইলে কৃষক স্কুল

  • Share The Gag
  • উপজেলায় কৃষকের স্কুল জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। সেখানে ইন্টিগ্রেটেড ফার্ম ম্যানেজমেন্ট কম্পোনেন্ট (আইএফএমসি) প্রকল্পের আওতায় পাঁচটি ইউনিয়নে এই স্কুল পরিচালিত হচ্ছে। এতে হাতে কলমে আধুনিক প্রযুক্তির কৃষি বিষয়ে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। ফলে বদলে যাচ্ছে কৃষি উত্পাদনের পুরনো ধরন। নান্দাইলে কৃষক মাঠ স্কুলের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন শত শত কৃষক-কৃষাণী। তারা এ স্কুল থেকে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ওপর প্রশিক্ষণ নিয়ে তা বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করছেন। এর ফলে কৃষি প্রযুক্তির আলো ছড়িয়ে পড়ছে প্রত্যন্ত এলাকায়। উন্নত হচ্ছে কৃষি সমাজ। বেকার যুব সমাজও খুঁজে পাচ্ছে কর্মসংস্থানের নতুন নতুন পথ।

    উপজেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, নান্দাইলে আইএফএমসি প্রকল্পের আওতায় ৫টি ইউনিয়নে চলতি রবি মৌসুমে ৮টি কৃষক মাঠ স্কুল পরিচালিত হচ্ছে। বেতাগৈর ইউনিয়নের চরশ্রীরামপুর, নান্দাইল ইউনিয়নের রসুলপুর ও সাভার, চণ্ডীপাশা ইউনিয়নের লংপুর ও ডাংরি, আচারগাঁও ইউনিয়নের হাওলাপাড়া ও চানপুর এবং খারুয়া ইউনিয়নের বেলতৈল গ্রামে এ ধরনের স্কুল পরিচালিত হচ্ছে। ডিএই-ডানিডা ডেনমার্ক সরকারের আর্থিক সাহায্যে এই প্রকল্পটি ২০১৪ সালের জুন থেকে চালু হয়েছে। তা চলবে ২০২২ সাল পর্যন্ত। এই স্কুলগুলো ব্যাক স্টপিং এবং মনিটরিং করছে কৃষি বিভাগ, মত্স্য অধিদফতর ও প্রাণিসম্পদ অধিদফতর।

    প্রতি স্কুলে সপ্তাহে দুই দিন ২৫টি কৃষক পরিবারের দুইজন করে (নারী ও পুরুষ) মোট ৫০ জনকে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে কৃষি বিষয়ে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। ওই হিসেবে নান্দাইলে ৮টি ইউনিয়নের চারশত কৃষক-কৃষাণী এ সুবিধা পাচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা বসত বাড়িতে সবজি চাষ, ফল গাছের পরিচর্ষা, আধুনিক পদ্ধতিতে ধান চাষ, গবাদি পশু পালন, মাছ চাষ, পোকামাকড় দমন ও এর উপকার-অপকারিতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন। তারা বিভিন্ন আবাদ ও গবাদী পশুর রোগ বালাই সর্ম্পকেও জানতে পারছেন। শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্যে কৃষি বিভাগ থেকে বই, খাতা, কলম, ক্যাপ, নারীদের স্কার্ফ, গাছের চারা ও উপকরণ সহায়তা হিসেবে ১৫শ টাকা এবং একটি সার্টিফিকেট প্রদান করা হচ্ছে। প্রতি স্কুলে প্রশিক্ষক হিসেবে কৃষি বিষয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছয়জন কৃষক সহায়তাকারী (এফএফ) ক্লাস নিচ্ছেন। সেখানে টিম লিডার হিসেবে একজন দায়িত্ব পালন করেন। ট্যাগ হিসেবে কাজ করেন সংশ্লিষ্ট ব্লকের উপসহকারী কর্মকর্তা। সর্বোপরি উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষক স্কুলগুলো তদারকি করেন।

    সুবিধাভোগী চরশ্রীরামপুর গ্রামের কৃষক মো. আবুল মনসুর ও হাওলাপাড়া গ্রামের কৃষাণী মোছা. হারেছা বলেন, ‘কৃষক স্কুলের মাধ্যমে আধুনিক কৃষি পদ্ধতি ও প্রযুক্তি সম্পর্কে জেনে নিজেদের জমিতে তা প্রয়োগ করছি। এতে আমরা দিন দিন লাভবান হচ্ছি।’ টিম লিডার হিসেবে দায়িত্বরত উপজেলা উদ্ভিদ ও বীজ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. আবু সাঈদ বলেন, এ ধরনের প্রকল্প কৃষক-কৃষাণীদের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিচ্ছে। আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর এ ধরনের প্রকল্পে নান্দাইলের কৃষক সমাজ আগ্রহী হয়ে উঠছে।

    উপজেলা কৃষি অফিসার মো. নাসির উদ্দিন বলেন, আধুনিক কৃষি পদ্ধতি ও প্রযুক্তি গ্রামের কৃষকদের মাঝে পৌঁছে দেয়ার জন্যেই বর্তমান সরকার এ প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

    দিনাজপুরে বানিজ্যিকভাবে কমলার চাষে সাফল্য

  • Share The Gag
  • দিনাজপুরে বাণিজ্যিকভাবে কমলা চাষ শুরু হয়েছে। শখের বসে কমলা চাষ করে আশাতীত সাফল্য পাওয়ায় এখন অনেকে বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদে এগিয়ে আসছেন। দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলায় কমলার চাষ কৃষকদের মাঝে আশার সঞ্চারন জাগিয়েছে। এখানকার আবহাওয়া ও মাটি কমলা চাষে অনুকুলে থাকায় অনেকেই কমলা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

    সবুরে মেওয়া ফলে অথবা অপেক্ষার ফল মিঠা হয়, কথাটি মিলে গেছে বীরগঞ্জের মরিচা গ্রামের কৃষক মো. রজিবুল আজম চৌধুরীর কমলা গাছের সাথে। ১৯৮১ সালে শখ করে বাড়ীর উঠানে একটি কমলা গাছ লাগিয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘ প্রায় ১২ বছর পর গাছটিতে ফল ধরে। এই ১২ বছর তিনি চেষ্টা চালিয়েছেন, মাঝে মধ্যে হতাশ হয়েছেন, বিরক্ত হয়েছেন কিন্তু হাল ছাড়েননি বা ধর্যচ্যুত হননি। তাই আজ তিনি খুশিতে আতœহারা, মনের সুখে মিষ্টি কমলা খাচ্ছেন। তিনি একটি গাছ থেকে চারা করে আরো একটি গাছ লাগিয়েছেন। ৪ বছর ধরে চারা গাছটিতে কমলা ধরছে। এ বছর গাছটিতে প্রায় এক হাজার কমলা ধরেছে। এখন তিনি ৯টি গাছের চারা লাগিয়ে বানিজ্যিকভাবে কমলার বাগান করছেন। তার কমলা চাষ এখন এলাকার অনেকের কাছে অনুকরনীয় হয়ে উঠেছে।

    বর্ষা কালে আম, লেচুর সাথে মুকুল আসে কিন্তু পরিপুর্ণ কমলা পেকে হলুদ হতে ৬ মাস সময় লাগে। অপরদিকে পরীক্ষামূলকভাবে কমলা গাছ লাগিয়ে সফলতা লাভের পর বীরগঞ্জের কৃষক সফিকুল ইসলাম কলমচারা করে বানিজ্যিকভাবে কমলার চাষ শুরু করেছেন। কৃষক সফিকুল ইসলাম বীরগঞ্জের সুজালপুর ইউপির বড় শীতলাই মাস্টারপাড়া গ্রামের মৃত সাহাবুদ্দিনের ছেলে। কিছুটা কাকতালীয়ভাবে শুরু হয়েছে তার এ কমলা চাষ।

    এ ব্যাপারে কমলা চাষী সফিকুল ইসলাম জানান, ২০০৪ সালে চট্রগ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়ীতে বেড়াতে যান। সেখানে কমলার গাছের চারা দেখে পছন্দ হলে তাকে একটি ছোট চারা দেন। এরপর এই চারাটি নিয়ে এসে বাড়ীর পার্শ্বে রোপন করেন। কিন্তু গাছটি হবে কিনা এ ভেবে ততটা গুরুত্ব দেয়নি। কোন যতœ ছাড়াই গাছটি বড় হয় এবং প্রচুর ফল ধরে। তিনি খুব খুশি। গাছটিতে ফল মিষ্টি হওয়ায় এলাকার সবাই খেয়ে যতœ নিতে বলে। ওই বার গাছে ৩০ টি ফল ধরেছিল। এরপর ১০০টি। পওে আরও কয়েকটি গাছের চারা রোপন করেন তিনি।

    তিনি জনান, এবার একটি গাছে ১২৫ থেকে ১৩০টি ফল ধরেছে। ইতিমধ্যে তা বিক্রিও করা হয়েছে। কোন খরচ নেই। তারপরও ৫০ টাকা করে প্রতি হালি কমলা বিক্রি করেছেন তিনি।

    কমলা মিষ্টি এবং চাহিদা থাকায় এটা যে এখানে লাভজনক হবে বুঝতে পেরে এর চারা তৈরী করে ব্যাপকভাবে চাষাবাদের পরিকল্পনা নেন তিনি। তার এই সফলতায় এখন এলাকার অনেকে চারা নেয়ার জন্য তার সাথে যোগাযোগ করছেন।

    ২০১১ সালে উপজেলা কৃষি অফিসের তত্তাবধায়নে সাতোর ইউনিয়নের চৌপুকুরিয়া গ্রাম তলীতে মনোরঞ্জন রায় (৩৭) বাজ্যিকভাবে কমলা চাষ শুরু করেন। তিনি পরীক্ষামুলকভাবে ৩০ শতক জমিতে ৩২টি উন্নত জাতের কমলা গাছের চারা রোপন করেন। নিবিড় পরিচর্যার ফলে গাছগুলি বেশ পরিপূর্ণতা লাভ করেছে। কমলা চাষে সফলতা লাভ করবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।

    এ এলাকায় কমলা চাষ হচ্ছে এমনটি জানতে পেরে পৌর শহরের মো. নমিরুল ইসলাম চৌধুরী সেনা ২টি কমলার গাছ রোপন করেছেন। তিনি জানান, পরীক্ষামূলকভাবে গাছ দু’টি রোপন করেছি। যদি ফল মিষ্টি হয় তাহলে আরো বেশী জমিতে বাগান করার পরিকল্পনা আছে।

    এরই মধ্যে কমলা চাষের সফলতার খবর পেয়ে সাংবাদিক, উপজেলা কৃষি অফিসারসহ অনেকে ওই এলাকা পরিদর্শন করেছেন। প্রতিনিয়তই কেউ না কেউ এই বাগান দেখতে এখানে আসছেন এবং অনেকে কমলার চারা ক্রয়ের ইচ্ছা প্রকাশ করছেন। তারা মনে করেন কমলার গুণগত মান তুলনামূলক ভাল। কৃষি বিভাগ এগিয়ে এলে এ অঞ্চলে ব্যাপক কমলা চাষের সম্ভাবনা রয়েছে। যাতে করে অর্থনৈতিকভাবে এ অঞ্চলের চাষীরা উপকৃত হবেন।

    উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. আবুল কালাম আজাদ জানান, হিমালয়ের পাদদেশে দিনাজপুরের অবস্থান হওয়ায় ভৌগলিক কারণে এ এলাকার কমলা চাষের উজ্জ্বল সম্ভবনা রয়েছে। উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা গেলে বানিজ্যিকভাবে কমলা চাষে কৃষককেরা সফলতা পেতে পারেন। এ বিষয়ে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা আগামীতে উদ্যোগী চাষীদের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের জন্য কমলা চাষে সফলতা অর্জনকারী কৃষকদের নিয়ে উপজেলা পর্যায়ে সভা-সেমিনার করার পরিকল্পনা করেছি।

    বগুড়ার চরাঞ্চলে মরিচের ফলন ভালো পাওয়ায় চাষীদের মুখে হাসির ঝিলিক

  • Share The Gag
  • বগুড়ার সারিয়াকান্দির যমুনার চর অঞ্চলে এবার মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। কাঁচা মরিচের দাম কম থাকলেও শুকনা মরিচের ব্যাপক চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় চাষীদের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে। চরাঞ্চলের চাষীরা অধিকহারে মরিচ চাষ করার পর প্রতিবছর দাম ভালো পেয়ে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বি হয়ে উঠছেন। উপজেলা কৃষি অফিস ও স্থানীয় মরিচ চাষীরা জানিয়েছেন, উপজেলার ১২ ইউনিয়নের সব জায়গায় মরিচ চাষ হয়ে থাকে। তবে সবচেয়ে বেশি চাষ হয়ে থাকে বাঙ্গালী ও যমুনা নদীর চরাঞ্চলে। উর্বর চরাভূমিতে তিল, তিশি, জাউন-কাউন, সরিষা, গম, ভুট্টা সহ বিভিন্ন জাতের কালাই থেকে শুরু করে এমন কোন ফসল নেই যে তার চাষ হচ্ছে না। তবে এরমধ্য সম্প্রতি বছর গুলোতে উল্লেখ যোগ্য হারে চাষ করছেন মরিচ ফসল।

    উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানিতে সৃষ্ট বন্যার পানি দ্রুত নেমে যাওয়ার পরপরই ভাদ্র মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু করে আশ্বিনের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত মরিচের বীজ বপন করা হয়। যে বছর বন্যায় সমস্ত জমি পানিতে তলিয়ে থাকে সে বছরই সব চেয়ে বেশি মরিচের ফলন পাওয়া যায়। এবছর তেমনটি হওয়ায় চাষীরা ওই সময় অধিক জমিতে মরিচের চাষ করেন। সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে মরিচের লক্ষমাত্রা নির্ধার করা হলেও চাষ করা হয়েছে এবার ৪ হাজার ২শ হেক্টর জমিতে। ফসলও হয়েছে খুব ভালো। প্রতিটি গাছে প্রায় ৫০/৫৫টি করে মরিচ ধরা পড়েছে। মাস দুুয়েক পূর্ব থেকে কাঁচা মরিচ উত্তোলন শুরু করা হলেও মাঝ পথে এসে কাঁচা মরিচের দাম অনেক হ্রাস পেয়েছে। তবে লাল টুকটুকে পাকা মরিচ জমি থেকে তোলার পর ১৬/১৭ দিন রোদ্রে শুকানোর পর তা বাজার জাত করা হচ্ছে। আর এই শুকনা মরিচের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। স্থানীয় হাট-বাজারে খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, প্রতিমন শুকনা মরিচ প্রায় ৪৮শ টাকা থেকে শুরু করে ৫হাজার টাকা মন দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি বিঘা জমি থেকে শুকনা মরিচ পাওয়া যাচ্ছে প্রায় ১০/১১ মন করে। খরচ হচ্ছে প্রতি বিঘায় সর্বসাকুল্যে ৮/৯ হাজার টাকা। ওই দরে বিক্রি করে খরচ বাদে প্রতি বিঘায় প্রায় ৪০ হাজার টাকা ঘরে তোলা সম্ভব হচ্ছে। মরিচ চাষের সাথে যুক্ত রয়েছেন প্রায় ১৭ হাজার চাষী। তারা ওই পরিমান জমি থেকে ৪০ ভাগ কাঁচা মরিচ উত্তোলন করবেন। অর্থাৎ চাষীরা ১৭ হাজার মেঃটন কাঁচা মরিচ বাজারে বিক্রি করে ঘরে তুলবেন প্রায় ২৫ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। আর ৬০ ভাগ পাকা মরিচ উত্তোলনের পর তা শুকিয়ে শুকনা মরিচ পাওয়া যাবে প্রায় ৪ হাজার ৩শ মেঃটন। উল্লেখিত দরে বিক্রি করলে টাকার অংক দাড়াবে প্রায় ৫৫ কোটি টাকা।

    অর্থাৎ চলতি মৌসুমে একমাত্র এ উপজেলার চাষীরাই ঘরে তুলেবেন প্রায় ৮০ কোটি টাকা। এব্যাপারে হাটশেরপুর ইউনিয়নের মরিচ চাষী ফজলুল করিম শেখ জানান, তিনি এবার ৮ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছেন। দামও পাচ্ছেন বেশ ভালো। বাড়ি থেকেই ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন পাইকরেরা। ওই দামে বিক্রি করে তিনি অনেক লাভবান হবেন। এব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ শাহাদুতজামান বলেন, এ এলাকার চাষীরা অনেক পরিশ্রমি। এজন্য মসলা জাতীয় এ ফসলটি চাষ করে অধিক লাভবান হচ্ছেন। অধিক ফলনের জন্য আমরাও তাদের বিভিন্ন ভাবে পরামর্শ দিয়ে আসছি ।ফলন হয়েছে। কাঁচা মরিচের দাম কম থাকলেও শুকনা মরিচের ব্যাপক চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় চাষীদের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে। চরাঞ্চলের চাষীরা অধিকহারে মরিচ চাষ করার পর প্রতিবছর দাম ভালো পেয়ে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বি হয়ে উঠছেন।

    উপজেলা কৃষি অফিস ও স্থানীয় মরিচ চাষীরা জানিয়েছেন, উপজেলার ১২ ইউনিয়নের সব জায়গায় মরিচ চাষ হয়ে থাকে। তবে সবচেয়ে বেশি চাষ হয়ে থাকে বাঙ্গালী ও যমুনা নদীর চরাঞ্চলে। উর্বর চরাভূমিতে তিল,তিশি, জাউন-কাউন, সরিষা, গম,ভুট্টা সহ বিভিন্ন জাতের কালাই থেকে শুরু করে এমন কোন ফসল নেই যে তার চাষ হচ্ছে না। তবে এরমধ্য সম্প্রতি বছর গুলোতে উল্লেখ যোগ্য হারে চাষ করছেন মরিচ ফসল।

    উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানিতে সৃষ্ট বন্যার পানি দ্রুত নেমে যাওয়ার পরপরই ভাদ্র মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু করে আশ্বিনের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত মরিচের বীজ বপন করা হয়। যে বছর বন্যায় সমস্ত জমি পানিতে তলিয়ে থাকে সে বছরই সব চেয়ে বেশি মরিচের ফলন পাওয়া যায়। এবছর তেমনটি হওয়ায় চাষীরা ওই সময় অধিক জমিতে মরিচের চাষ করেন। সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে মরিচের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও চাষ করা হয়েছে এবার ৪ হাজার ২শ হেক্টর জমিতে। ফসলও হয়েছে খুব ভালো। প্রতিটি গাছে প্রায় ৫০/৫৫টি করে মরিচ ধরা পড়েছে। মাস দুুয়েক পূর্ব থেকে কাঁচা মরিচ উত্তোলন শুরু করা হলেও মাঝ পথে এসে কাঁচা মরিচের দাম অনেক হ্রাস পেয়েছে। তবে লাল টুকটুকে পাকা মরিচ জমি থেকে তোলার পর ১৬/১৭ দিন রোদ্রে শুকানোর পর তা বাজার জাত করা হচ্ছে। আর এই শুকনা মরিচের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। স্থানীয় হাট-বাজারে খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, প্রতিমন শুকনা মরিচ প্রায় ৪৮শ টাকা থেকে শুরু করে ৫হাজার টাকা মন দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি বিঘা জমি থেকে শুকনা মরিচ পাওয়া যাচ্ছে প্রায় ১০/১১ মন করে। খরচ হচ্ছে প্রতি বিঘায় সর্বসাকুল্যে ৮/৯ হাজার টাকা। ওই দরে বিক্রি করে খরচ বাদে প্রতি বিঘায় প্রায় ৪০ হাজার টাকা ঘরে তোলা সম্ভব হচ্ছে। মরিচ চাষের সাথে যুক্ত রয়েছেন প্রায় ১৭ হাজার চাষী।

    তারা ওই পরিমান জমি থেকে ৪০ ভাগ কাঁচা মরিচ উত্তোলন করবেন। অর্থাৎ চাষীরা ১৭ হাজার মেঃটন কাঁচা মরিচ বাজারে বিক্রি করে ঘরে তুলবেন প্রায় ২৫ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। আর ৬০ ভাগ পাকা মরিচ উত্তোলনের পর তা শুকিয়ে শুকনা মরিচ পাওয়া যাবে প্রায় ৪ হাজার ৩শ মেঃটন। উল্লেখিত দরে বিক্রি করলে টাকার অংক দাড়াবে প্রায় ৫৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ চলতি মৌসুমে একমাত্র এ উপজেলার চাষীরাই ঘরে তুলেবেন প্রায় ৮০ কোটি টাকা। এব্যাপারে হাটশেরপুর ইউনিয়নের মরিচ চাষী ফজলুল করিম শেখ জানান, তিনি এবার ৮ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছেন। দামও পাচ্ছেন বেশ ভালো। বাড়ি থেকেই ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন পাইকরেরা। ওই দামে বিক্রি করে তিনি অনেক লাভবান হবেন। এব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ শাহাদুতজামান বলেন, এ এলাকার চাষীরা অনেক পরিশ্রমি। এজন্য মসলা জাতীয় এ ফসলটি চাষ করে অধিক লাভবান হচ্ছেন। অধিক ফলনের জন্য আমরাও তাদের বিভিন্ন ভাবে পরামর্শ দিয়ে আসছি ।

    সাপাহারে আমের চারা রোপনের হিড়িক

  • Share The Gag
  • নওগাঁ জেলার ঠাঁঠাঁ বরেন্দ্র অঞ্চল হিসেবে পরিচিত সাপাহার উপজেলায় চলতি মৌসুমে বিভিন্ন প্রজাতীর দেশীয় ফলের পাশাপাশি সুমিষ্ট রসালো ফল আমের চারা রোপন ও বাগান তৈরীর হিড়িক পড়েছে।
    সাপাহার উপজেলার এঁটেল মাটিতে উৎপাদিত বিভিন্ন প্রজাতীর আম অত্যান্ত মিষ্টি ও সুস্বাদু হওয়ায় ইতোমধ্যে দেশের মানুষের নিকট এই এলাকাটি বেশ পরিচিতি লাভ করেছে।

    এখানে অতি অল্প সময়ের মধ্যে গড়ে উঠেছে উত্তর বঙ্গের সর্ব বৃহত আমের মোকাম। এ উপজেলায় আমের মোকাম তৈরী হওয়ায় সাধারণ কৃষকগণ ধানের জমিতে এখন আমের বাগান তৈরী করে অধিক মুনাফা অর্জন করছে।

    আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছে। আম চাষিরা জানান ৩৩ শতক(একবিঘা) জমিতে সর্বোচ্চ ২০মণ ধান উৎপাদন হতে পারে যার বর্তমান বাজার মুল্যে ১৫-১৬হাজার টাকা। অপর দিকে ওই জমিতে যদি ২০টি ফজলী,নেংড়া ও খিরশাপাত জাতের আমের চারা রোপন করা যায় তাহলে ৩-৪ বছরের মধ্যে প্রতিটি গাছ থেকে কমপে ১০মণ করে আম পাওয়া যাবে।

    আবার ওই জমিতে রোপনকৃত বড় জাতের আম গাছের নিচে সাথী হিসেবে ১০০টি আম্রপালী,মল্লিকা,বারী,হাই ব্রীড-১০ জাতের আমের চারা রোপন করা সম্ভব। হাইব্রীড ১০০টি গাছ থেকে অতিরিক্ত আরো ১৫-২০মণ আম পাওয়া যাবে। যার বাজার মুল্যে ৫০ হাজার থেকে ১ল টাকা হতে পারে। এক বিঘা জমিতে আম বাগান করা হলে বছরে কমপে ৫০ হাজার টাকা সেখান থেকে আয় হবে।

    প্রতিটি গাছে প্রতি বছর আমের উৎপাদন বাড়তে থাকবে। আবার রোপনকৃত আম গাছের নিচে প্রায় ৫-৬ বছর ধরে ধান চাষাবাদ করে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন করা যাবে। উপজেলা কৃষি অফিসার এ এফ এম গোলাম ফারুক হোসেন জানান এ উপজেলায় ছোট বড় মিলে বর্তমানে প্রায় ৬ হাজার আমবাগান রয়েছে।

    বাগান গুলোতে প্রায় ৫ লাধীক বিভিন্ন প্রজাতীর আমগাছ রয়েছে। এ ছাড়া এখানে হাইব্রীড বরই,কুল,জলপাই, ডালিম,আনার,আমড়া সহ দেশীয় ফলের চারা রোপনের হিড়িক পড়েছে।

    চলতি মৌসমে উপজেলায় কৃষকগণ বাজার থেকে ব্যাপক হারে আমের চারা ক্রয় করছে। সাপাহার উপজেলা সদরের সামনে গড়ে উঠেছে আমের চারার বিশাল হাট। এলাকার সকল শ্রেনীর মানুষ বাজার করতে এসে অন্তত একটি করে আমের চারা ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে। এলাকার সর্বত্র আমরে চারা রোপনের ধুম পড়েছে। প্রতিদিন ধানী জমিতে নতুন নতুন আমের বাগান তৈরী হচ্ছে।

    Saturday, March 11, 2017

    হাইড্রোপনিক ঘাস চাষ

  • Share The Gag
  • উপকরণ :

    (৩ টি ভিডিও সংযুক্ত নীচে লিঙ্ক আছে)

    ১) এক দিকে ঢালু মাটির বেড
    ২) পলিথিন সিট
    ৩) চট বা কাপড়
    ৪) গম
    ৫) পানি

    পদ্ধতি :
    A .

    A .ছায়াযুক্ত স্থানে একদিকে ঢালুকরে মাটির এমন ভাবে বেড তৈরী করতে হবে , যাতে পানি না জমে থাকে
    B . বাশ বা কাঠ দিয়ে প্রয়োজনমতো প্লটে ভাগ করতে হবে
    C .পলিথিন শিট বিছিয়ে দিতে হবে
    D . সকালে গমের বীজ ধুয়ে পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে

    E . বিকালে ভেজানো গম ৮-১০ m m পুরু করে একটি প্লটে বিছিয়ে দিতে হবে
    F . এরপর চট দিয়ে ঢেকে দিতে হবে
    E . প্রতিদিন নিয়মিতভাবে চটের উপড় পানি ছিটিয়ে দিতে হবে .
    একদিন পরেই বীজগুলো অঙ্কুরিত হবে এবং
    ১-১/২" হলে চট সরিয়ে ফেলতে হবে .
    পানি দেয়ার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যেনো পানি জমে না থাকে বা একদম শুকিয়ে না যায় .
    এভাবে ৭ থেকে ১০ দিন পরেই পশুকে খাওয়ানো যাবে .

    এভাবে অন্যান্য প্লটেও পর্যায়ক্রমে ঘাস উত্পাদন করতে হবে

    আমের ক্ষতিকর পোকামাকড় ও রোগবালাই

  • Share The Gag
  • আম ফলের রাজা। সারা বিশ্বে ১৫০টির অধিক জাতের আম পাওয়া যায়। স্বাদে, গন্ধে, রঙে, রসনা তৃপ্তিতে আম সত্যিই অতুলনীয়। কাঁচা অবস্থায় ভর্তা, আচার, জ্যাম, জেলি, আমচুর, আমসত্ত্ব, আমদুধ, আমজুসসহ নানাভাবে আম খাওয়া যায়। এ ছাড়া আমের কাঠ দিয়ে আসবাবপত্র ও আমপাতা দিয়ে দাঁতের মাজন তৈরি, রাতকানা/অন্ধত্বরোধে পাকা আম, রক্ত পড়া বন্ধ করতে কচি পাতার রস, প্রস্রাবের জ্বালা, পাতলা পায়খানা ও পুরাতন আমাশয় রোধে আমের মুকুল, চর্ম রোগে আম গাছের আঠা, জ্বর, বহুমূত্র ও বুকের ব্যথায় আমপাতার রস দারম্নণ উপকারী। আমাদের দেশের প্রায় সব এলাকায় কম-বেশি আম গাছ জন্মে। তবে বৃহত্তর রাজশাহী এলাকা আম চাষের জন্য বিখ্যাত।

    পুষ্টিগুণ বিবেচনায় খাদ্য উপযোগী ১০০ গ্রাম আমের মধ্যে রয়েছে-৮ হাজার ৩০০ মাইক্রোগ্রাম কেরোটিন, ৯০ কিলোক্যালরি শক্তি, ২০ গ্রাম শর্করা, ১৬ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম এবং ৪১ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’। আম চাষের প্রধান শত্রম্ন হলো এর ড়্গতিকর পোকামাকড় ও রোগবালাই। এখানে আমের কয়েকটি পোকামাকড় ও রোগ সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো।

    আমের ক্ষতিকর পোকামাকড়

    আমের ক্ষতিকর পোকামাকড়ের মধ্যে রয়েছে- হপার পোকা, মাছি পোকা, গল এবং উইভিল।

    ১। হপার পোকা : আম গাছে মুকুল আসার সময় এদের আক্রমণ দেখা যায় । পূর্ণবয়স্ক এবং বাচ্চা (নিম্ফ) অবস্থায় এ পোকা মুকুলের রস চুষে খায় এবং মুকুল শুকিয়ে ঝরে পড়ে।

    দমন : আমের হপার দমনের জন্য বুস্টার ১০ ইসি ১০ লিটার পানিতে ১০ মিলি কিংবা স্টার্টার ৪০ ইসি ১০ লিটার পানির সাথে ২০ মিলি পরিমাণ তরল কীটনাশক ফুট পাম্পের সাহায্যে অন্তত দু’বার সম্পূর্ণ গাছে ছিটিয়ে দিতে হবে।

    ২। মাছি পোকা: আমের মুকুল ফোটার ১৫-২০ দিন পর মার্বেল আকার ধারণ করার সময় থেকেই মাছি আসা শুরম্ন করে। এরপর এক মাস বয়সে আমের গায়ে মাছি বসা শুরু করে। আরো ১০-১২ দিন পর আমের নিচে ছিদ্র করে মাছি ডিম পাড়ে। ডিম পাড়ার পর আঠালো পদার্থ নিঃসরণের মাধ্যমে ছিদ্র বন্ধ হয়ে যায় এবং আমের ভেতরে কীড়া বড় হতে থাকে। এক সময় আম ফেটে পচে যায়। এ অবস্থায় কোনো কীটনাশক ব্যবহার করে লাভ নেই।

    দমন: মুকুল ফোটার ১৫-২০ দিনে প্রথম বার আক্রমণ দেখা দেয়ার সাথে সাথে মর্টার ৪৮ ইসি প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০ মিলি ভালোভাবে মিশিয়ে সম্পূর্ণ গাছ ভিজিয়ে সেপ্র করতে হবে। এভাবে প্রথমবার সেপ্র করার এক মাস পর দ্বিতীয় বার এবং আরো ১৫ দিন পর তৃতীয় বার একই মাত্রায় মর্টার ৪৮ ইসি সেপ্র করতে হবে।

    ৩। ডগার গল সৃষ্টিকারী ‘সাইলিড’: এ পোকার আক্রমণে আম গাছে নতুন পাতা ও ফুলের কুঁড়ি বদলে সবুজ রঙের শক্ত এবং সূঁচালো মুখ গলের সৃষ্টি হয়। এসব গল থেকে কোনো পাতা বা ফুল বের হয় না।

    দমন: ভাদ্র মাসের প্রথম সপ্তাহে যখন আক্রানত্ম গাছের পাতায় পোকার ডিম পাড়ার গর্ত থেকে মোমের গুঁড়োর মতো মল বের হতে দেখা যায় তখন থেকে শুরম্ন করে ১৫ দিন পর পর ২-৩ বার স্টার্টার ৪০ ইসি প্রতি ২ লিটার পানিতে ৫ মিলি কীটনাশক মিশিয়ে গাছে সেপ্র করে ভিজিয়ে দিতে হবে।

    ৪। উইভিল বা ভোমরা পোকা: উইভিল বা ভোমরার স্ত্রী পোকা কাঁচা আমের গায়ে ডিম পাড়ে। আমের মধ্যে ডিম ফুটে কীড়া বের হয় এবং ফলের শাঁস খায়। ফল বড় হওয়ার সাথে সাথে ছিদ্রটি বন্ধ হয়ে যায়। এরফলে বাইরে থেকে আমটি ভালো দেখালেও ভেতরে কীড়া পাওয়া যায়।

    দমন: প্রতিরোধ ব্যবস্থা হিসেবে মরা ও অপ্রয়োজনীয় শাখা ছেঁটে ফেলা এবং পোকাক্রানত্ম ফল মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে। এ ছাড়া আমের আঁটি শক্ত হওয়ার সময় মর্টার ৪৮ ইসি প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০ মিলি কীটনাশক গাছে সেপ্র করে ভিজিয়ে দিতে হবে।

    আমের রোগবালাই

    আমের ক্ষতিকর রোগবালাইয়ের মধ্যে ফোস্কা বা অ্যানথ্রাকনোজ, শুঁটিমোল্ড বা মহালাগা এবং পাউডারি মিলডিউ অন্যতম।

    ১। ফোস্কা বা অ্যানথ্রাকনোজ: ফোস্কা বা অ্যানথাকনোজ রোগের আক্রমণে গাছের পাতা, কাণ্ড, মুকুল ও ফলে ধূসর বাদামি রঙের দাগ পড়ে। মুকুলগুলো ঝরে যায়। এ ছাড়া আমের গায়ে কালো দাগ পড়ে, আম পচে যায়। কুয়াশাচ্ছন্ন ও ভেজা আবহাওয়ায় এ রোগ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

    প্রতিকার: এ রোগ দমনের জন্য আক্রানত্ম পাতা, ডাল, পুষ্প মঞ্জরি সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। আম বাগান সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে, গাছের নিচের মরা পাতা পুড়িয়ে ফেলতে হবে, গাছে মুকুল আসার পর ফুল ফোটার আগে বেনডাজিম ৫০ ডবিস্নউপি প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০ গ্রাম মিশিয়ে সেপ্র করতে হবে। এ ছাড়া এন্টিসিকা ২৫০ ইসি প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০ মিলি ব্যবহার করা যেতে পারে। আমের আকার মটর দানার মতো হলে দ্বিতীয় বার বালাইনাশক ব্যবহার করতে হবে।

    ২। শুঁটি মোল্ড বা মহালাগা: এ রোগের আক্রমণে আম পাতা ও ফলের ওপর কালো আবরণ পড়ে। আম গাছে মিলিবাগ অথবা হপার পোকায় আক্রমণ করলে এরা হানিডিউ বা মধু নিঃসরণ করে, ফলে হানিডিউতে শুঁটি মোল্ড সৃষ্টিকারী ছত্রাক জন্মায় এবং পাতা, মুকুল এবং ফলে তা বিসত্মার লাভ করে।

    প্রতিকার: এ রোগে আক্রানত্ম গাছে বেনডাজিম ৫০ ডবিস্নউপি প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০ গ্রাম মিশিয়ে সেপ্র করতে হবে। গাছে হপার পোকার আক্রমণ হলে সাথে সাথে তা দমন করতে হবে।

    ৩। পাউডারি মিলডিউ: এ রোগের আক্রমণে আমের মুকুলে সাদা পাউডারের মতো আবরণ দেখা যায়। এ রোগের ফলে মুকুল ঝরে যায়। আক্রানত্ম আমের চামড়া খসখসে হয় এবং কুঁচকে যায়।

    প্রতিকার: গাছের মুকুল আসার পর একবার এবং ফল মটর দানা আকারের হলে আরো একবার বেনডাজিম ৫০ ডবিস্নউপি প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০ গ্রাম এবং হেমেঙিল ৭২ এম জেড ডবিস্নউপি ১০ লিটার পানিতে ২৫ গ্রাম একত্রে মিশিয়ে সেপ্র করতে হবে।

    আমের গুণগত মান ও ফলন বৃদ্ধিতে করণীয়


    • আমের মুকুল আসার আগে এবং আম মটর দানার মতো হলে প্রতি লিটার পানিতে ১০ গ্রাম লিবরেল জিঙ্ক ও ২০ গ্রাম লিবরেল বোরণ সার উত্তমরূপে মিশ্রিত করে সেপ্র করতে হবে। এ দুটি সার আমসহ অন্যান্য ফলের গুণগতমান ও ফলন বৃদ্ধির জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি করা হয়েছে।


    • আমের মুকুল আসার সময় মুকুল শুকিয়ে ঝরে পড়লে ১০ লিটার পানিতে ১০ মিলি বুস্টার ১০ ইসি এবং বেনডাজিম ৫০ ডবিস্নউপি প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০ গ্রাম হারে মিশিয়ে সেপ্র করতে হবে।


    • আমের মুকুল ফোটার ১৫-২০ দিন পর মটর দানার সময় মাছি পোকার আক্রমণ হলে প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০ মিলি, মর্টার ৪৮ ইসি সেপ্র করতে হবে।




    লেখক: কৃষিবিদ মো. কামরুল আহসান ভূঁইয়া