Sunday, October 30, 2016

কীটনাশক ছাড়াই বেগুন চাষ

  • Share The Gag
  • যখন কৃষকেরা ফসল উৎপাদনে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করছেন ঠিক তখনই কীটনাশক ছাড়া বেগুন উৎপাদন করছেন ঝিনাইদহের হরিনাকুণ্ডু উপজেলার পার্বতীপুর গ্রামের কৃষকেরা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে তারা আইপিএম (ফেরোমনট্রাপ) পদ্ধতি ব্যবহার করে ভালো ফল পাচ্ছেন বলে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

    পার্বত্যপুর গ্রামের বেগুন চাষী আয়ুব হোসেন জানান, এ পদ্ধতি সম্পর্কে যখন আমাকে প্রথম জানানো হয় তখন পদ্ধতি সম্পর্কে যেন কাল্পনিক একটা ঘটনা বলে মনে হয়েছিল। আমরা দুই ভাই পার্বতীপুরের এই মাঠে একএকর জমিতে বেগুন চাষ করেছি। প্রথম দিকে আইপিএম পদ্ধতি ব্যবহার করার পরও বেগুন নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয়ে গোপনে কীটনাশক স্প্রে করতাম। কিন্তু বেগুনের দাম যখন কমে গেল কীটনাশক স্প্রে করা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। এখন দেখি ভালো বেগুন পাওয়া যাচ্ছে। আমরা সবজিতে প্রতিদিনেই কীটনাশক স্প্রে করে অভ্যস্ত। তাই এ পদ্ধতি প্রথমে মেনে নিতে পারছিলাম না।

    একই গ্রামের বেগুন চাষী ইব্রাহীম, সোলাইমান, ইউনুছ আলি জানান, তারা এ পদ্ধতি ব্যবহার করে ভালো ফলন পাচ্ছেন। তাদের কীটনাশক ছাড়াই এ  পদ্ধতিতে চাষ করা দেখে অনেকেই করলা, লাউ ও শসা চাষে এ পদ্ধতি ব্যবহার করছেন।

    স্কুল শিক্ষক আমিনুল ইসলাম জানান, আমরা যে কীটনাশক ছাড়াই সবজি বা ভেজাল মুক্ত পণ্য খেতে চাই। তা এ বেগুন চাষের দৃশ্য দেখলেই বোঝা যাচ্ছে। কারণ তারা বেগুন বাজারে নিয়ে গেলে দাম একটু বেশি হলেও আগে আগেই বিক্রি হয়। প্রতিটি কৃষকেরই উচিত এ পদ্ধতি ব্যবহার করা এবং পোকার আক্রমণ অতিরিক্ত হলে সেই ক্ষেত্রে কৃষি অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। তাছাড়া যারা বেগুন বা সবজি চাষ করেন প্রতিদিনই ক্ষেতে কীটনাশক স্প্রে করেন। আর এ পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃষকরা যে লাভবান হচ্ছেন এটা কৃষকদের জন্য সুখবর।

    এ বিষয়ে হরিনাকুণ্ডু উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিশংকর জানান, এটাকে সেক্স ফেরোমন লেয়ার পদ্ধতি বলা হয়। ওই বক্সের মধ্যে পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী পোকার গন্ধ দেয়া থাকে। দূর হতে পুরুষ পোকা আকৃষ্ট হয়ে ওই বক্সের মধ্যে চলে আসে এবং বক্সের মধ্যে রাখা সাবান পানিতে পড়ে পোকা মারা যায়। যদি কোনো মাঠের সবজি চাষীরা একত্রিত হয়ে সকলেই এ পদ্ধতি ব্যবহার করে তাহলে শতকরা ৭৫/৮০ ভাগ পোকা দমন করা সম্ভব।

    ছারপোকা তাড়াতে করণীয়

  • Share The Gag
  • ছারপোকা যে কী পরিমান ভয়ঙ্কর, তা এই পোকার কামড় যারা না খেয়েছেন তারা ভাবতেও পারবেন না। অন্যদিকে যারা ভুক্তভোগী অর্থাৎ ছারপোকার যন্ত্রণায় জীবন অতিষ্ঠ যাদের, তারাই ভালো বলতে পারবেন এই পোকার অত্যাচার সম্পর্কে। তবে এই দুষ্টু পোকাটি দমন করতেও আছে বেশ কিছু উপায়। চলুন জেনে নিই-

    ছারপোকা মোটামুটি ১১৩ ডিগ্রি তাপমাত্রাতে মারা যায়। ঘরে ছারপোকার আধিক্য বেশি হলে বিছানার চাদর, বালিশের কভার, কাঁথা ও ঘরের ছারপোকা আক্রান্ত জায়গাগুলোর কাপড় বেশি তাপে সেদ্ধ করে ধুয়ে ফেলুন। ছারপোকা এতে মারা যাবে।

    বিছানাসহ অন্যান্য জায়গা থেকে ছারপোকা তাড়াতে সারা ঘরে ভালো করে ভ্যাকুয়াম করুন। ভ্যাকুয়াম করার সময় খেয়াল রাখুন যাতে ঘরের মেঝেও বাদ না পড়ে। এতে করে আপনার ঘরে ছারপোকার আক্রমণ অনেকটাই কমে যাবে।

    এক লিটার পানিতে ডিটারজেন্ট যেমন সার্ফ এক্সেল ঘন করে মিশিয়ে স্প্রে করুন। এ উপায়ে স্প্রে করার ফলে ছারপোকা সহজেই মারা যাবে।

    ঘরের যে স্থানে ছারপোকার বাস সেখানে ল্যাভেন্ডার অয়েল স্প্রে করুন। দুই থেকে তিনদিন এভাবে স্প্রে করার ফলে ছারপোকা আপনার ঘর ছেড়ে পালাবে।

    আপনার ঘরের ছারপোকা তাড়াতে অ্যালকোহল ব্যবহার করতে পারেন। ছারপোকা প্রবণ জায়গায় সামান্য অ্যালকোহল স্প্রে করে দিন দেখেবেন ছারপোকা মরে যাবে।

    আসবাবাপত্র ও লেপ তোশক পরিষ্কার রাখার সাথে সাথে নিয়মিত রোদে দিন। এতে করে ছারপোকার আক্রমণ কমে যাওয়ার সাথে সাথেই ছারপোকা থাকলে সেগুলো মারা যাবে।

    ছারপোকার হাত থেরে রেহাই পেতে আপনার বিছানা দেয়াল থেকে দূরে স্থাপন করুন। শোয়ার আগে ও পরে বিছানা ভালো করে ঝেড়ে ফেলুন।

    সাতকানিয়ায় সবজি ফলছে কীটনাশক ছাড়াই

  • Share The Gag
  • মাঠজুড়ে সবজি। টমেটো, লাউ ও শিমে ভরপুর জমি। চািষরা ব্যস্ত সবজি তোলায়। এ চিত্র সাতকানিয়ার বাজালিয়া ও ছাদাহা ইউনিয়নের। দুটি এলাকার জন্য এ দৃশ্য নতুন নয়। হামেশাই এখানে নানা সবজির আবাদ হয়। কিন্তু এবার ভিন্ন—বিষমুক্ত সবজির চাষ করছেন এখানকার চাষিরা।
    সাতকানিয়া উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্র জানায়, উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় চলতি মৌসুমে ১ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের সবজির আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে বাজালিয়া ও ছদাহা ইউনিয়নের বুড়ির দোকান, শিশুতল, দক্ষিণ ছদাহা, খোদ্দ কেঁওচিয়া, বিল্লিয়াপাড়া, হোসেনপাড়া ও বাইতুশ শরফপাড়া এলাকার ৩০ হেক্টর জমিতে সেক্স ফেরোমন ফাঁদের মাধ্যমে কীটনাশক ছাড়াই সবজির আবাদ করা হয়েছে।
    ছদাহা ইউনিয়নের শিশুতল ও বাজালিয়া ইউনিয়নের বুড়ির দোকান এলাকায় দেখা গেছে, টমেটো ও শিমখেতের মাঝে মাঝে বাঁশের খুঁটি দিয়ে প্লাস্টিকের পাত্র ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এসব পাত্রের তলায় অল্প পরিমাণ পানিতে মরে আছে কীটপতঙ্গ।
    চাষিরা জানান, পোকার আক্রমণ থেকে বাঁচতে প্রতিবছর সবজিখেতে কীটনাশক ছিটানো হতো। কৃষি বিভাগের লোকজন ঘরে ঘরে এসে অধিক ফলনের উৎসাহ ও ক্ষতির ব্যাপারে অভয় দেওয়ার পর সেক্স ফেরোমন ফাঁদে সবজি উৎপাদনে আগ্রহী হয়েছেন।
    শিশুতল এলাকার সবজিচাষি আবুল হোসেন বলেন, ‘চলতি বছর সাত কানি (এক একর সমান আড়াই কানি) জমিতে টমেটো চাষ করেছি। টমেটোখেতে কোনো ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করিনি। শুধু সেক্স ফেরোমন ফাঁদ বসানো হয়েছে। ওই ফাঁদে পড়ে প্রতিদিন ক্ষতিকর পোকা মারা যাচ্ছে। ফলে কীটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন হচ্ছে না।’
    দক্ষিণ ছদাহা এলাকার চাষি আবুল হাশেম বলেন, প্রতি কানি টমেটো চাষে প্রায় এক লাখ টাকার কাছাকাছি খরচ পড়ে। তবে এ বছর ওই খরচ অনেক কম পড়বে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, পোকার আক্রমণ থেকে সবজি বাঁচাতে প্রতি কানিতে ১০ হাজার টাকার মতো কীটনাশক ব্যবহার করতে হতো। কিন্তু এ বছর কীটনাশক ব্যবহার না করায় ওই খরচটা বেঁচে গেল। সে হিসাবে লাভের পরিমাণ বাড়বে।
    উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আয়ুব আলী প্রথম আলোকে বলেন, বিষমুক্ত সবজিখেতগুলো প্রতিদিনই পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে শিম ও লাউ চাষিরা বাজারে বিক্রি শুরু করেছেন। টমেটো পরিপক্ব হচ্ছে। ১৫-২০ দিনের মধ্যে চাষিরা বিষমুক্ত টমেটো তুলতে পারবেন।
    তিনি জানান, সেক্স ফেরোমন পুরুষ পোকা আকর্ষণের সুগন্ধি। এটির গন্ধ বাতাসে ছড়ালে পুরুষ পোকা এসে পাত্রে পড়ে। এরপর মারা যায়। পুরুষ পোকা মারা গেলে বংশবৃদ্ধি কমতে থাকে।
    উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. খাজানুর রহমান বলেন, প্রথম দিকে উপজেলার কোনো চাষি বিষমুক্ত সবজি চাষে আগ্রহী ছিলেন না। অভয় ও বিভিন্নভাবে উৎসাহ দেওয়ায় কিছু চাষি পরীক্ষামূলকভাবে ৩০ হেক্টর জমিতে বিষমুক্ত টমেটো, লাউ ও শিমের চাষ করেছেন। চাষিরা কীটনাশক ছাড়াই ফেরোমন ফাঁদের মাধ্যমে ভালো সবজি উৎপাদন করতে পারলে ভবিষ্যতে উপজেলার প্রতিটি গ্রামে বিষমুক্ত সবজি চাষের বিপ্লব ঘটে যাবে।

    সূত্রঃ প্রথম আলো

    পলিথিনের শব্দে পালিয়ে যায় ইঁদুর

  • Share The Gag
  • সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় উপদ্রব। সারা রাত ধরে আমনের খেতে গাছের গোড়া কাটে ইঁদুরগুলো। এদের কাছে অসহায় হয়ে পড়েন কৃষকেরা। কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছিলেন না তাঁরা।

    নিজেদের অসহায়ত্বের কথা এভাবেই তুলে ধরেন নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলার আমনচাষিরা। উপজেলায় এবার আমন মৌসুমের শুরুতে প্রচণ্ড খরা আর অনাবৃষ্টি দেখা দেয়। এ অবস্থায় সেচযন্ত্র ব্যবহার করে আমনের চারা রোপণ করেন কৃষকেরা। পরে বেশ বৃষ্টি হয়। লকলক করে বেড়ে ওঠে আমনের খেত। আশ্বস্ত হতে না–হতেই শুরু হয় ইঁদুরের উপদ্রব।


    কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পোকা দমনের কীটনাশক ব্যবহার করেও ইঁদুর তাড়ানো যাচ্ছিল না। সন্ধ্যার পর আমনের খেতে ইঁদুর এসে গাছের গোড়া কেটে দেয়। পরদিন সেই আমনের গাছ গবাদিপশুকে খাওয়ানো ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। এমন অবস্থায় কৃষি বিভাগের দ্বারস্থ হন তাঁরা। কৃষি বিভাগের পরামর্শে পলিথিনের ঝান্ডা তৈরি করে পুঁতে দেন পুরো খেতে। বাতাসে সেই পলিথিন পতপত করে শব্দ করে। এ শব্দে ইঁদুর মনে করে কেউ আসছে, তাই ভয়ে পালিয়ে যায়। এখন আর ইঁদুর ধান কাটছে না।

    উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের বাকডোকরা গ্রামের কৃষক মোজাক্কের বলেন, ‘নদী এলাকার জমিতে ইঁদুরের উপদ্রব সবচেয়ে বেশি হয়। আমনখেতে ইঁদুরের উপদ্রব থেকে বাঁচতে পলিথিনের ঝান্ডা উড়িয়ে উপকার পেয়েছি।’

    উপজেলার কামারপুকুর, কাশিরাম বেলপুকুর, খাতামধুপুর, বাঙালিপুর, বোতলাগাড়ী ইউনিয়ন ও সৈয়দপুর পৌর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় শতাধিক একর জমিতে ইঁদুরের উপদ্রব দেখা দিয়েছে।

    সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হোমায়রা মণ্ডল বলেন, এ বছর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে প্রায় ৮ হাজার ১৯০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে আবাদ হয়েছে আরও বেশি জমিতে। খেতের পোকামাকড় ও ইঁদুরের উপদ্রব থেকে ফসল রক্ষার জন্য মাঠপর্যায়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কাজ করছেন।

    মাজরা পোকার আক্রমণে ফলন কমছে

  • Share The Gag
  • চলছে আমন ধানের মৌসুম। ধানের এ বাড়ন্ত সময়ে পোকা দমনে উদ্যোগী না হলে ফলন বহুলাংশে হ্রাস পায়। আমন ধানে যতো ধরনের পোকার আক্রমণ হয়, তার মধ্যে হলুদ মাজরা পোকা সবচেয়ে ক্ষতিকর।

    হলুদ মাজরা পোকার অভিযোজন ক্ষমতা বেশি হওয়ায় আমন মৌসুমে বৃষ্টি বেশি হলেও পানিতে অনায়েসে বেঁচে থাকতে পারে। এ পোকা যে গাছে আক্রমণ করে সেই গাছের শীষ সম্পূর্ণভাবে চিটা হয়। পোকা দমন করা খুবই কষ্টসাধ্য। এর ফলে ফলন কমে যায় শতকরা ৮০ ভাগ পর্যন্ত। অনেক সময় ফলন নেমে আসতে পারে শূন্যের কোটায়।

    এই পোকা সম্পর্কে বাংলানিউজের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) কীটতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান।

    ধানের হলুদ মাজরা পোকা আক্রমণের লক্ষণ সম্পর্কে তিনি জানান,

    শীষ বের হওয়ার আগে: ধানের গোছার মাঝখানের ডিক পাতা হলুদ হয়ে যায়। পোকাটি লার্ভা অবস্থায় কাণ্ডের ভেতরের অংশ খেতে শুরু করে। একপর্যায়ে যখন ডিক পাতা গোড়া থেকে বিছিন্ন হয়ে গেলে পাতাটি মরে যায়। এই মরা ডিগ পাতাটি টান দিলে সহজেই উঠে আসে। যাকে ডেড হার্ট বলে।

    শীষ বের হওয়ার পরে: শীষ আসা অবস্থায় আক্রমণ হলে ধানের শীষগুলো সাদা হয়ে যায়। এ পোকার আক্রমণে শীষের দানাগুলোতে পুষ্টি সরবরাহ হয় না। ফলে শীষের সব দানা চিটায় পরিণত হয়। জুলাই (আষাঢ়) থেকে অক্টোবর (আশ্বিন) মাস পর্যন্ত আমন ধানে মাজরা পোকার আক্রমণ বেশি হয়।

    বিরতিহীন ধান চাষ এ পোকার বংশ বাড়াতে উল্ল্যেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া বন্য ধান গাছ ও অন্যান্য ধান জাতীয় আগাছাও বিকল্প পোষক হিসেবে কাজ করে। মাত্রাতিরিক্ত ইউরিয়া সার প্রয়োগে এ পোকার প্রার্দুভাব ব্যাপক আকার ধারণ করে। জলি আমনে এ পোকার ছয়বার পর্যন্ত বংশ বিস্তার করে।

    এ পোকার আক্রমণে দমন ব্যবস্থা সম্পকে তিনি বলেন, জমিতে শতকরা ১০-১৫ ভাগ মরা ডিগ অথবা শতকরা পাঁচ শতাংশ সাদা শীষ দেখা দিলে অতি দ্রুত কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে। অনুমোদিত কার্যকরী কীটনাশকের মধ্যে রয়েছে ফুরাডান ৫জি, ফিপরোনিল ৩জি। যা প্রতি হেক্টরে ১০ কেজি দিতে হবে।

    এছাড়া প্রতি হেক্টরে পাঁচ কেজি থায়ামেথোক্সাম ও ক্লোরানট্রানিলি (০.৬ জি) প্রয়োগ করেও এ পোকা দমন করা যায়। প্রাকৃতিকভাবে ঘাসফড়িং হলুদ মাজরা পোকার ডিম খেয়ে থাকে। এছাড়া পরজীবী ট্রাইকোগ্রামা হলুদ মাজরা পোকার ডিম থেকে পুষ্টি নিয়ে থাকে। ফলে ওইসব ডিম থেকে লার্ভা জন্মাতে পারে না।

    আলোর ফাঁদ ব্যবহার করে পূর্ণবয়স্ক পোকা দমন করা যায়। এরা গাদা করে ডিম পাড়ে। তাই ডিমের গাদা সংগ্রহ করে এদের ভালোভাবে দমন করা সম্ভব। হলুদ মাজরা পোকা থেকে প্রতিরোধের উপায় প্রসঙ্গে ড. মিজানুর রহমান জানান, বীজতলায় চারা গাছের পাতার আগার দিকে স্ত্রী পোকা ডিম পাড়ে। তাই রোপা ধান খেতে চারা গাছ রোপণ করার আগেই প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। বীজ তলায় চারা গাছের পাতার আগা কাঁচি দিয়ে ছাটলে ডিমগুলো আর মূল মাঠে যেতে পারে না। এভাবে প্রায় ৫০ ভাগ হলুদ মাজরা পোকার ডিম ধ্বংস করা যায়।

    সূত্রঃ বাংলা নিউজ ২৪

    ধানের পোকা দমনে আলোক ফাঁদ

  • Share The Gag
  • ফসলের পোকা দমনে রাসায়নিক সারের বদলে পরিবেশবান্ধব পদ্ধতির দিকে ঝুঁকছেন নওগাঁর কৃষকরা। জেলার রানীনগর উপজেলায় আলোক ফাঁদ ব্যবহার করে পোকা দমন করা হচ্ছে। এতে লাভ হচ্ছে দুই দিকে। পরিবেশ রক্ষা হচ্ছে, পাশাপাশি চাষের খরচ কমছে কৃষকের।
    রানীনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গেলেই এই আলোক ফাঁদের দেখা মেলে। রাতে অন্ধকারের মধ্যে এই ফাঁদগুলো দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠে। স্থানীয় কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের উৎসাহেই এই প্রকল্প চলছে এই উপজেলায়।
    আমন ধানের ক্ষেতের আইলে কোথাও পানিভর্তি পাত্রে, কোথাও কাগজের উপর আলো জ্বেলে ধানে আক্রমণাত্মক বিভিন্ন পোকা ধরেন কৃষক।
    এই পদ্ধতিতে পোকা দমন শুরু হওয়ার পর থেকে কৃষকদের খরচ যেমন কমে আসছে, তেমনি ধানের উৎপাদনও বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণ, এই পদ্ধতিতে ধানের জন্য ক্ষতিকারক পোকা দমন হলেও উপকারী পোকাগুলো রয়ে যাচ্ছে।
    উপজেলার খট্টেশ্বর গ্রামের কৃষক লোকমান, জিসারুল, সিরাজ এবং কাশিমপুর গ্রামের কৃষক জাহেদুল, জাহাঙ্গীর, আব্দুর রাজ্জাকসহ অনেকেই বলেছেন- এই পদ্ধতিতে তারা উপকৃত হয়েছেন। পোকার উপস্থিতি চিহ্নিত করে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছেন।
    উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এস এম গোলাম সারওয়ার বলেন, এটি একটি সহজলভ্য পদ্ধতি। কৃষকরা এই পদ্ধতি ব্যবহার করে খুব সহজেই ধানের ক্ষেতে পোকা মাকড়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারেন।

    সূত্রঃ ঢাকা টাইমস

    Wednesday, October 26, 2016

    কৃষি বিপন্ন হলে গোটা দেশের বিপদ

  • Share The Gag
  • কৃষি মূলগত ভাবে পাল্টে যাচ্ছে। আগে কৃষিতে যে শক্তির প্রয়োগ হত তার গোটাটাই প্রায় ছিল ভারবাহী পশুশক্তি এবং মানুষের পেশিশক্তি। এখন দেশে কৃষিতে যে শক্তির ব্যবহার হয় তার বড়জোর পাঁচ শতাংশ পশুশক্তি, আরও পাঁচ শতাংশ মানুষের পেশিশক্তি, বাকিটা যন্ত্রশক্তি।

    যখন লাঙ্গল করা, গাড়ি টানা, ঘানি এবং পারসিক জলচক্র ইত্যাদির সাহায্যে সেচের কাজে পশুশক্তির বহুল ব্যবহার চালু হয়, তখন বিশুদ্ধ আর্থনীতিক কারণেই গোমাংস ভক্ষণের উপর কিছু নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। আজকের পরিবর্তিত অবস্থায় কৃষি ও পশুপালনের মধ্যেকার সম্পর্ক একটা সংকটের মধ্যে পড়েছে। আগে চাষিদের ঘরে এঁড়ে বাছুরগুলোকে নির্বীজকরণ করে বলদ হিসেবে রেখে দেওয়া হত। যেহেতু কৃষিতে বলদের চাহিদা ছিল বিপুল, এঁড়ে বাছুরেরও মর্যাদা ছিল সমধিক। এখন কৃষিতে পশুশক্তির ব্যবহার খুবই কম, ফলে বলদের সেই চাহিদাও এখন অতীত। এঁড়ে গরুগুলোর কী হবে?

    কাণ্ডজ্ঞান বলে, গোহত্যা বা গোমাংসভক্ষণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা যে আইনগুলো বিভিন্ন রাজ্যে রয়েছে, এখন ভেবে দেখা দরকার যে সেগুলোর আর কোনও প্রয়োজন আছে কি না। কিন্তু হচ্ছে তার উল্টোটা— গোরক্ষার নামে যে তান্ডব চলছে তা সামাজিক ক্ষেত্র ছাড়াও কৃষিক্ষেত্রেও গভীর সংকট ডেকে আনছে।

    ষাটের দশকে আমরা অনেকেই মনে করতাম যে, কৃষকের হাতে জমি দিলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। ১৯৭৭-৭৮ সালে যখন খাসজমি বণ্টন হল, তখন বিলি করার জন্য পাওয়া জমির তুলনায় প্রাপকের সংখ্যা এত বেশি ছিল যে দেখা গেল অনেক জমিতে লাঙ্গলই ঘোরে না— কোদাল দিয়ে চাষ করতে হয়। যখন অ-কৃষক মালিকদের হাতে জমি ছিল, সেই সময়ের তুলনায় এই ব্যবস্থায় গোটা রাজ্যেই প্রভূত উৎপাদন বাড়ল, কিন্তু সেটা বিঘা-প্রতি উৎপাদনের হিসেবে। শ্রমদিবস পিছু উৎপাদনের হার খুব একটা বাড়ল না। সেই উৎপাদনের হার বৃদ্ধির জন্য কৃষিতে যন্ত্রশক্তির বিপ্লবটি খুবই প্রয়োজন ছিল।

    বর্ণাশ্রম না ভেঙে, ভূমিসংস্কার না করেই ষাটের দশকে ভারতের রাষ্ট্রনায়করা সবুজ বিপ্লবের কথা ভেবেছিলেন। গোড়ায় গলদ। কিন্তু, অস্বীকার করা যাবে না যে তাঁরা কৃষির উন্নয়নে রাষ্ট্রের ভুমিকার কথাটিকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল হলেও, রাষ্ট্র কৃষিক্ষেত্রে বিনিয়োগ করেছিল। কৃষি গবেষণার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছিল। গবেষণার ফসল চাষিদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বহু বীজ-খামার গড়ে তোলা হয়েছিল। ভারতের কৃষি-অর্থনীতির ক্ষেত্রে এই খামারগুলির গুরুত্ব অনেক।

    ১৯৯০ দশকের গোড়ায় কেন্দ্রীয় সরকার উল্টো পথে হাঁটতে শুরু করে। কৃষিক্ষেত্রে বিনিয়োগ বন্ধ হল। কৃষি গবেষণার কাজ নাকি করবে বহুজাতিক সংস্থাগুলো। তারাই সরবরাহ করবে বীজ, সার, কীটনাশক ও যন্ত্রপাতি। এই সংস্কার কর্মসূচির দু’ দশক পরে আমরা দেখতে পাচ্ছি আমাদের কৃষি এখন হাতে গোনা কয়েকটি বিদেশি বহুজাতিকের মুখাপেক্ষী। কিছু দিন আগে দুটি বড় বহুজাতিক সংযুক্ত হয়ে এক দৈত্যাকার একচেটিয়া ব্যবসায়িক সংস্থার জন্ম হল। সেটা দুনিয়ার বীজ ও কীটনাশকের বাজারের বিপুলাংশই নিয়ন্ত্রণ করবে, ভারতে তাদের প্রায় কোনও প্রতিদ্বন্দ্বীই থাকবে না। এই একচেটিয়া ক্ষমতাকে তারা ব্যবহার করবে বীজ-সার-কীটনাশকের দাম যথেচ্ছ বাড়িয়ে কৃষকদের লুন্ঠন করার কাজে। এর নীট ফল দাঁড়াবে আরও কৃষকের আত্মহত্যা, আর খাদ্য উৎপাদনে আমরা যেটুকু স্বয়ম্ভরতা অর্জন করতে পেরেছি, তা-ও হারানো।

    এই আগ্রাসন থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার একমাত্র রাস্তা কৃষিক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা, দেশের চাহিদা ও আবহাওয়ার সঙ্গে সংগতি রেখে বীজ তৈরি করা, বীজ খামারে সে সব বীজের কার্যকারিতা পরীক্ষা করা, পরীক্ষিত বীজ কৃষকদের সরব্রাহ করা, এবং চাষিদের উৎপন্ন ফসল  ন্যায্যমূল্যে কিনে নেওয়া। এ জন্য যেমন প্রচুর কৃষি-গবেষণাগার লাগবে, তেমনই প্রয়োজন হবে অনেক কৃষি খামারের।

    ষাটের দশকে যে সব কৃষি খামার গড়ে তোলা হয়েছিল, তাদের মধ্যে একটি ছিল গোয়ালতোড়ে। সেই খামারে এখনও বীজের জন্য কিছু পরিমাণে চাষ হয়, যদিও  এর অন্তর্গত এক হাজার একর জমিকে যে-ভাবে বীজ উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করা সম্ভব ছিল, সেটা করা হয়নি। অথচ, গোয়ালতোড়কে ঘিরে প্রচুর আলুর চাষ হয়, এবং প্রায়ই খারাপ বীজের কারণে উৎপাদন বিপর্যয় ঘটে। এই খামারটিকে ব্যবহার করে আলু বীজের সমস্যাটাকে ভাল ভাবে মোকাবিলা করা যেত।  রাজ্যের আরও অনেক বীজ খামারকে এই রকম নিষ্ফলা ফেলে রাখা হয়েছে, সেগুলিকেও কৃষির উন্নতিতে কাজে লাগানো যেত। বামফ্রন্ট জমানাতেই গোয়ালতোড় কৃষি খামার বন্ধ করে দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা শুরু হয়। ২০১১ তে নতুন সরকার আসার পর এটিকে শিল্প উন্নয়ন নিগমের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে, এবং এই জমি ‘ল্যান্ড-ব্যাঙ্কের’ অন্তর্ভুক্ত বলে দাবি করা হচ্ছে।

    ১৯৮০-র দশকে আংশিক ভূমিসংস্কার ছিল বামফ্রন্টের সাফল্য। কিন্তু সেই সাফল্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে কৃষির উন্নয়নে মনোযোগ দিতে হত। ছোট ছোট ভূমিখণ্ডকে একত্র করার জন্য সমবায় গঠন করা যেত, এবং রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপে কৃষির আধুনিকীকরণের উদ্যোগ নেওয়া যেত। সীমিত ক্ষমতার মধ্যেও যেটুকু করা যেত, বামফ্রন্ট সেটাও করতে বিফল হয়। আবার বাম-রাজত্বের শেষ দিকে কৃষির আধুনিকীকরণের দায়িত্বটা বহুজাতিকদের হাতে তুলে দেওয়ার উদ্যোগ চলে, যদিও সে-প্রস্তাব তখন কার্যকর হয়নি। এখন তৃণমূল সরকার সেই চুক্তি চাষের পথেই এগোবে বলে ঘোষণা করেছে। প্রস্তাবে ঈষৎ নতুনত্ব আছে, কিন্তু অন্তর্বস্তুতে এটা ঔপনিবেশিক যুগের নীলচাষের থেকে আদৌ আলাদা নয়।

    এই পথে, রাজ্যের উন্নয়নের নামে যে ভাবে কৃষি ও শিল্পকে পরস্পর-বিরোধী হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে, শিল্পস্থাপনের অগ্রাধিকার প্রমাণ করার জন্য কৃষিকে যে ভাবে অবহেলা করা হচ্ছে, এবং লুটেরাদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে, তার পরিণাম মারাত্মক হতে বাধ্য। শিল্পের প্রয়োজন  অনস্বীকার্য, কিন্তু শিল্পায়নের প্রক্রিয়াতে কৃষিকে বিস্মৃত হওয়া চলে না। ইউরোপের যে উদাহরণ তুলে ধরা হয়, সেখানে কিন্তু শিল্পের পাশাপাশি কৃষিরও আধুনিকীকরণ ঘটেছিল। মুলত কৃষির চাহিদা মেটাতে গড়ে তোলা হয়েছিল রাসায়নিক শিল্প। চিলিতে প্রশান্ত মহাসাগর উপকূল জুড়ে শত শত বছর ধরে জমা হওয়া বাদুড়ের মল থেকে গড়ে উঠেছিল সোডিয়াম নাইট্রেটের পাহাড়, কেমিস্ট্রি বইতে যাকে বলা হয় চিলি সল্টপিটার। নিখরচায় পেয়ে যাওয়া সেই উর্বরকের ব্যবহার করে ইউরোপ কৃষি উৎপাদনে বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলে ।

    ভারতে কৃষি যে সংকটে পড়েছে তা থেকে বেরোতে গেলে রাষ্ট্রকে কৃষিতে বিনিয়োগ করতেই হবে, রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে চাষিদের উন্নত বীজ সরবরাহ করতে আরও অনেক নতুন খামার গড়ে তুলতে হবে। সে কাজটা সহজ নয়, কারণ বীজ খামার করতে জমি লাগে। তাই রাজ্যের হাতে যে বীজ খামারগুলি আছে তার জমি অন্য কাজে ব্যবহার করাটা সামাজিক দৃষ্টিতে অত্যন্ত অদূরদর্শিতার কাজ হবে।

    কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কিছু আশা করা বৃথা। সে সরকার এক দিকে গো-রক্ষার নামে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ ঘটাবে, আর অন্য দিকে গোটা কৃষি-ব্যবস্থাটাকে বহুজাতিক একচেটিয়া পুঁজির হাতে তুলে দেবে।

    রাজ্যের হাতে ক্ষমতা সীমিত, কিন্তু সেই ক্ষমতাটুকুও বিচক্ষণতার সঙ্গে ব্যবহার করে নতুন দিশা দেখানো যায়। কিন্তু প্রবণতাটি যদি হয় শিল্পের দোহাই দিয়ে পুঁজির একাগ্র আরাধনা, তা হলে কৃষকের সঙ্গে সারা দেশের ভাগ্য-বিপর্যয় এড়ানো কঠিন।

    সুত্রঃ আনন্দবাজার

    নারী কৃষি শ্রমিকরা এখনো মজুরি বৈষম্যের শিকার

  • Share The Gag

  • বাংলাদেশ কৃষি নির্ভরশীল দেশ। ১৬ কোটি মানুষের এদেশে অর্ধেক নাগরিক নারী। সামাজের বিভিন্ন পেশার সঙ্গে সঙ্গে কৃষি কাজেও নারীরা এখন ছেলেদের সঙ্গে সমান পা মেলাচ্ছেন। ক্ষেতে ধানের বীজ বপন থেকে শুরু করে সার দেয়া, আগাছা দমন, কীটনাশক ছিটানো, ধান কেটে ঘরে তোলাসহ সব কাজ তারাই করছেন।

    অনেকে আবার বাড়ির পাশে কিংবা উঠানে অনাবাদি জায়গায় শাক-সবজি, ফল-ফলাদির আবাদ করে সংসারে বড়তি রোজগারের পথ করে নিচ্ছে। এতে পরিবারের খরচ মেটানোর পাশাপাশি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতেও অবদান রাখছে।

    দেশের চা শিল্পের মতো সমৃদ্ধ খাতের পেছনে নারী চা শ্রমিকদের বিশাল অবদান রয়েছে। এছাড়া দক্ষিণাঞ্চলে চিংড়ি চাষ, হাঁস-মুরগি পালন থেকে শুরু করে কৃষির প্রায় সব ক্ষেত্রেই নারীর অবদান রয়েছে। আমাদের দেশে মোট শ্রমশক্তির প্রায় অর্ধেক নারী।

    এছাড়া ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি সবজি চাষ, মসলা উৎপাদন, শুঁটকি ও নোনামাছ প্রক্রিয়াকরণ, মাছ ধরার জাল তৈরি, মাছের পোনা উৎপাদনের কাজও নারীরা করে থাকে। বসতবাড়িতে সামাজিক বনায়ন, গবাদিপশু ও হাঁসমুরগি পালনের কাজও করে নারীরা। কৃষি ও এর উপখাতের মূল চালিকাশক্তি নারী। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক কোনো পরিসংখ্যানে নারীর এ উপস্থিতির হিসাব নাই। এমনকি কৃষিকাজে জড়িত এ বিপুলসংখ্যক নারী শ্রমিকের কোনো মূল্যায়নও হয় না।

    এখন গ্রামীণ সমাজে কৃষি ও চাষের কাজকে নারীর প্রতিদিনের কাজের অংশ বলে বিবেচনা করা হয়। পুরুষ শ্রমিকের সমপরিমাণ কাজ করেও কৃষি খাতে নারী শ্রমিকের বৈধ পরিচিতি নেই। এছাড়া নিয়মহীন নিযুক্তি, দীর্ঘ কর্মঘণ্টা, স্বল্প মজুরি, মজুরি বৈষম্য এবং আরো নানা ধরনের নিপীড়ন তো রয়েছেই। নারী শ্রমিকের ৭২ শতাংশই অবৈতনিক পারিবারিক শ্রমিক। ক্ষুধার বিরুদ্ধে সংগ্রামরত এসব নারীর অবদানের স্বীকৃতি আলোচনার বাইরেই থেকে যায়।

    তবে দেশের কৃষিখাতে নারীর ব্যাপক অবদান থাকলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের স্বীকৃতি ও মূল্যায়ন নেই। সরকারের নীতি-কৌশলের সঙ্গে নারীর কৃষিশ্রমের যোগসূত্র এখনো স্থাপিত হয়নি। ফলে রাষ্ট্রীয় প্রণোদনার অংশ হিসেবে ২০১৫ সালে প্রদত্ত এক কোটি ৩৯ লাখ কৃষক কার্ড বিতরণ করা হলেও নারী কৃষকদের ভাগ্যে তা জোটেনি।

    এদেশের নারী কৃষি শ্রমিকরা এখনো মজুরি বৈষম্যের শিকার। সারাদিন পুরুষের সঙ্গে সমান পরিমাণ শ্রম দিয়ে নারী শ্রমিক আয় করেন মাত্র ১২০ টাকা। একই কাজ করে যেখানে একজন পুরুষ শ্রমিক মজুরি পান ২০০ টাকা।

    বিশ্বব্যাংক পরিচালিত গবেষণা প্রতিবেদন ২০১২ অনুযায়ী অর্থনীতিতে নারীর অবদান সম্পর্কে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, প্রযুক্তির উৎকর্ষতা- সব মিলিয়ে এগিয়েছে মানব সভ্যতা। বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের জীবনমানের পরিবর্তন হলেও সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে নারী এখনো পিছিয়ে রয়েছে। সামগ্রিক কাজের ৬৬ শতাংশ করে নারী, খাদ্যের ৫০ শতাংশও তারাই উৎপাদন করে অথচ তারা পায় কর্মের মাত্র ১০ শতাংশ।

    এছাড়া, ভূমিতেও নারীর সমঅধিকার নেই। বাজারে প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্রেও তাদের রয়েছে নানা প্রতিবন্ধকতা। অথচ নারীর অবদান ও অংশগ্রহণকে অস্বীকার করে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা কিছুতেই সম্ভব নয়। উন্নয়নের অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত করতে নারীর কাজের অর্থনৈতিক মূল্যায়ন ও মর্যাদা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।






     সূত্র- বিডি লাইভ ২৪

    Monday, October 24, 2016

    ছাদে বাগান করার আগে যা করনীয়

  • Share The Gag
  • বাগান হতে পারে ছাদে, বারান্দায়, সিঁড়ির কিনারায়, জানালার পাশে, টি টেবিলের উপরে অথবা বাথরুমের ভেন্টিলেটরেও।

    শহুরে পরিবেশে বাগান করার বিভিন্ন সম্ভাবনা নিয়ে কিছু তথ্য ও পরামর্শ দিয়েছেন শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. এএফএম জামাল উদ্দিন।

    ছাদে বাগান করার আগে

    ধারণ ক্ষমতা: আমরা মনে করি মাটির আর কত ওজন হবে। তবে আপনি যদি একটা বাগান বা বড় গাছ লাগানোর পরিকল্পনা করেন তাহলে যে পরিমাণে মাটি লাগবে তার ওজন নেহায়েত কম নয়। নিয়মিত গাছে পানি দেওয়ার ফলে ভেজা মাটির ওজন আরও বেড়ে যায়।

    তাই যখন ছাদে বাগান করার পরিকল্পনা করবেন অবশ্যই জেনে নেবেন ছাদের ধারণ ক্ষমতা কতটুকু। যেন পরে বাড়ির কোনো ক্ষতি না হয়।

    বাড়ির ধারণ ক্ষমতার উপর নির্ধারণ করতে হবে কোন ধরনের গাছ লাগানো সম্ভব। কোনো কারণে যদি ধারণ ক্ষমতা কম হয় তাহলেও চিন্তার কিছু নেই। অল্প মাটিতে ছোট গুল্মজাতীয় গাছের বাগান করাও সম্ভব।

    সূর্যের অবস্থান: যে কোনো গাছের বেঁচে থাকার জন্য সূর্যালোক একটি অপরিহার্য বিষয়। তাই বাগানের নকশা তৈরি করার আগে ছাদের কোন দিক থেকে রোদ আসে এবং ঋতুভেদে রোদ কোনদিকে সরে যায় ইত্যাদি বিষয় দেখে নেওয়া ভালো।

    বাগানের গাছ বাছাই করতে হবে রোদের অবস্থানের উপর নির্ভর করে। সাধারণত ছাদে সরাসরি সূর্যের আলো অনেক সময় ধরে পাওয়া যায়। তাই সবজির চাষ করা বেশ সুবিধাজনক। তবে রেলিংযের অবস্থান বা পাশের বাড়ির উচ্চতার কারণে বাগানে ছায়া পড়তে পারে। এক্ষেত্রে সারাদিনে কতক্ষণ এবং কোনদিকে বেশি রোদ পাওয়া যাবে এসব বিবেচনা করে তারপর বাগানের নকশা করতে হবে।

    বাতাসের দিক: সাধারণ বাগানের থেকে ছাদের বাগানে বাতাসের চলাচল একটু বেশিই হয়ে থাকে। এমনিতে পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল সব ধরনের গাছের জন্যই ভালো। তবে অতিরিক্ত বাতাস গাছের আর্দ্রতা কমিয়ে দেয়। এছাড়াও ঝড়ো বাতাসে গাছ নুয়ে পড়তে পারে। তাই ছাদে বাগানের নকশায় রোদের অবস্থানের সঙ্গে সঙ্গে বাতাসের দিকও বিবেচনায় রাখা দরকার।

    ছাদ যদি খুব উঁচুতে হয় এবং আশপাশে আর কোনো উঁচু দালান না থাকে তবে বাতাসের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের জন্য বেড়া দিতে হবে। বাতাস যেন মাটির আর্দ্রতাও কেড়ে না নেয় তা নিশ্চিত করতে মাটির উপর খড়ের বা প্লাস্টিক চাদরের আবরণও দিতে পারেন।

    পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা: বাগানের মাটি থেকে বের হওয়া অতিরিক্ত পানি ছাদের কংক্রিটের ক্ষতি করতে পারে। এছাড়াও ছাদে আগাছা জন্মে ছাদের মেঝেকে পিচ্ছিল ও ক্ষয় করে ফেলে তাই যে গাছই বোনা হোক না কেনো এবং যে পদ্ধতিতেই বোনা হোক না কেনো পানি নিষ্কাশনের জন্য সঠিক পরিকল্পনা থাকতে হবে।

    যদি টবে গাছ বোনা হয় তাহলে এর নিচে আরও একটি মাটির ট্রে রাখা হয়। এটি অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের জন্য পর্যাপ্ত নয়। উপরন্তু মাটির ট্রে পানি শোষণ করে সেটিকে ছাদের মেঝেতেই পৌঁছে দেয়। সবচেয়ে ভালো হয় যদি ছাদের মেঝেতে পানি নিরোধক কোনো রং, টাইলস বা আলকাতরার একটা স্তর তৈরি করে তার উপরে যথাযথ একটা নিষ্কাশন নালার ব্যবস্থা করা যায়। নালার উপরে একটা ছাঁকনি রাখা যেতে পারে। এতে পানির সঙ্গে ধুয়ে যাওয়া মাটি নিষ্কাশন নালা বা ছাদে না পড়ে ছাঁকনিতে আটকে থাকবে। এভাবে মাটি এবং ছাদ উভয়ের ক্ষয় রোধ করা যাবে।

    অনেকেই পানি নিষ্কাশনের জন্য ছাদের এক কিনারা সামান্য ঢালু রাখেন এটিও বেশ ভালো উপায়। তবে কিছুতেই ছাদের কোনো কিনারা ভেঙে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা যাবে না। এতে স্থাপনার বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।

    বাগান করা

    মাটি দেওয়া: ছাদের বাগানে দুভাবে মাটি স্থাপন করা যায়। কোনো পাত্র বা টবের মধ্যে অথবা ছাদকে পানিরোধী করে সরাসরি মাটি ফেলে।

    দ্বিতীয় ক্ষেত্রে পানি নিষ্কাশন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা খুবই জরুরি। প্রথম ক্ষেত্রে ছোট ছোট টব বাছাই না করে বড় ট্রে বা প্লাস্টিকের বাক্স নেওয়া যেতে পারে। অনেকেই সিমেন্টে ঢালাই করা বড় টব বানিয়ে নেন। তবে এ ধরণের টবের ওজন অনেক বেশি হয় ফলে ছাদের ধারণ ক্ষমতার বড় অংশই কংক্রিটের টব দখল করে ফেলে।

    টব বা সরাসরি মেঝে যেভাবেই মাটি ফেলা হোক না কেন, মাটির ধরণ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সাবধান হতে হবে। ছাদের বাগানের মাটি এমন হতে হবে যেন তা হালকাও হয় এবং পানিও ধরে রাখতে পারে।

    বেলে মাটির সঙ্গে সবুজ সার মিলিয়ে তৈরি করা মাটিই এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হয়।

    গাছ বাছাই: সব কিছু সঠিকভাবে করার পর এখন গাছ বাছাইয়ের পালা। যেহেতু বাগানটা ছাদে হবে তাই অন্য সব কিছুর মতো গাছ বাছতে হবে ভেবে চিনতে। ছাদের বাগানে ফুল, ফল বা সবজি যে ধরণের গাছই লাগান না কেনো গাছের আকার যতটা সম্ভব ছোট রাখবেন। যদি ফল গাছ বোনার পরিকল্পনা থাকে তবে গাছের উচ্চতা কম রেখে, বেশি ডালপালার ঝাড় রাখুন।

    লম্বা কাণ্ডের কম ডালপালার গাছের অসুবিধা হচ্ছে এই ধরনের গাছ অল্প বাতাসেই নুয়ে যাওয়ার বা কাণ্ড ভেঙে যেতে পারে। ছাদে বোনার জন্য লতানো এবং কম উচ্চতার গাছ নেওয়া সবদিক দিয়ে ভালো সিদ্ধান্ত।

    যেসব গাছের শিকড় বেশি গভীরে প্রবেশ করে সেসব গাছও ছাদের বাগানে লাগাবেন না। শিকড় পাশের দিকে বেশি ছড়ায় এমন গাছই ছাদের বাগানের জন্য উৎকৃষ্ট।

    ছাদের বাগানে লাগানোর মতো কিছু গাছ

    ফল: পেয়ারা, পেঁপে, কলা ইত্যাদি হালকা ওজনের গাছ লাগানো যেতে পারে। বড় গাছ যেমন আম বা লিচু লাগালে গাছের আকার যতটা সম্ভব ছোট হতে হবে। এছাড়াও আঙুরের মতো লতানো বা স্ট্রবেরির মতো একদম মাটিতেই জন্মানো গাছ বেছে নেওয়া যেতে পারে।

    সবজি: প্রায় সব ধরনের সবজিই ছাদের বাগানে বোনা যায়। সব ধরনের শাক, লতানো-সবজি যেমন লাউ, কুমড়া, শিম থেকে শুরু করে মূলা, গাজর, ফুলকপি, ব্রোকলি, ক্যাপসিকাম, মরিচ বেগুন সবই বোনা সম্ভব।

    ফুল: ফুলের বড় গাছ এড়িয়ে যে কোনো ধরনেরর ছোট ফুলের গাছ লাগানো যায়। গোলাপ, গাদা, বেলির মতো ছোট গাছের ফুল অথবা অপরাজিতা, মর্নিং গ্লোরি ইত্যাদি লতানো গাছ বেড়া তুলে দিয়ে চাষ করা সম্ভব।

    ছাদের গাছের যত্ন

    ছাদের গাছের যত্নের মূল বিষয় হচ্ছে পর্যাপ্ত সূর্যলোক এবং পর্যাপ্ত পানি। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় মাটির আর্দ্রতা দেখে পানি দিতে হবে। এছাড়াও ছাদের গাছে পোকা মাকড়ের আক্রমণ কম হলেও পাখি এবং বাদুরের উৎপাত খুব বেশি হয়। পাখির আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য ফল বা সবজির উপর জাল দিয়ে দেওয়া যায়।

    এত পরিশ্রমের পরে নিজের বাগানে যখন ফুল ফল আসে তখন মন খুশিতে ভরে ওঠে। গাছের যত্ন একজন করলেও ফসলের খুশি পৌঁছে যায় সবার কাছে। যান্ত্রিক জীবনে সবুজের আনন্দ ছুঁয়ে যাবে সকলের হৃদয়। ধোঁয়া দূষণের শহরে প্রতিটি বাড়ির ছাদ হবে একটি করে অক্সিজেনের ছোট্ট কারখানা। এভাবেই হয়তো দূষণ থেকে শহরকে রক্ষা করার সামান্য একটি অবদান রাখতে পারি আমরা সবাই।

    শাহী পেঁপে বিস্তারিত ও চাষাবাদ

  • Share The Gag
  • শাহী পেঁপে:::

    বৈশিষ্ট্য : উচ্চ ফলনশীল একলিঙ্গী জাত। গাছের উচচতা ১.৬-২.০ মি., কান্ডের খুব নীচু থেকে ফল ধরা শুরু হয়। ফল ডিম্বাকৃতির, ফলের ওজন ৮০০-১০০০ গ্রাম, ফলপ্রতি বীজের সংখ্যা ৫০০-৫৫০ টি। শাসের পুরুত্ব ২ সে.মি., রং গাঢ় কমলা থেকে লাল। ফল মিষ্টি (ব্রিক্সমান ১২%) ও সুস্বাদু।

    উপযোগী এলাকা : দেশের সর্বত্র চাষ উপযোগী।
    বপনের সময় : আশ্বিন(সেপ্টেম্বর-অক্টোবর) এবং পৌষ (ডিসেম্বর-জানুয়ারি) মাস পেঁপের বীজ বপনের উত্তম সময়। বপনের ৪০-৫০ দিন পর চারা রোপণের উপযোগী হয়।

    মাড়াইয়ের সময়: সবজি হিসেবে ব্যবহারের জন্য ফলের কষ যখন হালকা হয়ে আসে এবং জলীয়ভাব ধারণ করে তখন পেঁপে সংগ্রহ করা উত্তম। অন্য দিকে ফলের গায়ে যখন হালকা হলুদ রং দেখা দেবে তখন ফল হিসেবে সংগ্রহ করতে হবে।

    শাহী পেঁপের রোগবালাই ও দমন ব্যবস্থা::

    রোগবালাই::
    চারা ঢলে পড়া ও কান্ড পঁচা রোগঃ মাটি স্যাঁতস্যাঁতে থাকলে বীজতলায় চারা ঢলে পড়া এবং বর্ষাকালে কান্ডপচা রোগ দেখা দিতে পারে।

    এ্যানথ্রাকনোজঃ এ রোগের কারণে ফলের গায়ে বাদামী পচন রোগ দেখা দেয়। ফল খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে যায়।

    পেঁপের মোজাইকঃ এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ। এ রোগ হলে পাতায় হলুদ রং এর ছোপ ছোপ দাগ পড়ে, পাতার বোঁটা বেঁকে যায় এবং গাছের বৃদ্ধি কমে যায়। বিভিন্ন ধরনের জাব পোকা দ্বারা এ রোগ ছড়ায়।

    পাতা কোঁকড়ানো ভাইরাসঃ এ রোগ হলে পাতা কুঁকড়িয়ে এবং মুচড়িয়ে যায় এবং পত্রফলক ছোট হয়ে যায়। আক্রমণ তীব্র হলে গাছের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়। জাব পোকার মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায়।

    শিকড়গীট রোগঃ এটি কৃমিজনিত রোগ। আক্রান্ত শিকড় ফুলে উঠে এবং গীটের সৃষ্টি করে। গাছ দূর্বল, খাট ও হলুদাভ হয়ে পড়ে। সাধারণত আক্রান্ত চারা, বৃষ্টি বা সেচের পানি ও কৃষি যন্ত্রপাতির সাহায্যে এ রোগ বিস্তার লাভ করে।

    দমন ব্যবস্থা:

    চারা ঢলে পড়া ও কান্ড পঁচা রোগপ্রতিকারঃ এ রোগ প্রতিকারের তেমন সুযোগ থাকে না। তাই প্রতিরোধের ব্যবস্থা করা উত্তম। আশ্বিন (সেপ্টেমবর-অক্টোবর) মাসে বীজতলা তৈরি করতে হলে বীজ বপনের পূর্বে বীজতলার মাটি ভালভাবে শুকানোর ব্যবস্থা করতে হবে। সিকিউর নামক ছত্রাকনাশক ২-৩ গ্রাম প্রতি কেজি বীজের সাথে মিশিয়ে শোধন করলে ভাল ফল পাওয়া যায়। জমি তৈরির পর ৬ সে.মি. পুরু করে শুকনো কাঠের গুড়া বা ধানের তুষ বীজতলায় বিছিয়ে পোড়াতে হবে। পরে মাটি কুপিয়ে বীজ বপন করতে হবে। বীজতলায় হেক্টরে ৫ টন হারে আধাপঁচা মুরগীর বিষ্ঠা ব্যবহার করতে হবে। বীজবপনের পূর্বে ১৫-২১ দিন জমিতে বিষ্ঠা পঁচানোর পর বীজ বপন করলে ভাল ফলাফল পাওয়া যায়। প্রতি লিটার পানির সাথে ২ গ্রাম হারে সিকিউর মিশিয়ে ড্রেঞ্চিং করে এ রোগের বিস্তার কমানো যায়। চারা লাগানোর ৩ সপ্তাহ পূর্বে হেক্টর প্রতি ৩ টন আধা পঁচা মুরগীর বিষ্ঠা অথবা ৩০০ কেজি খৈল জমিতে প্রয়োগ করে মাটির সাথে ভালভাবে মিশাতে হবে। এতে কান্ডপঁচা রোগের উপদ্রব কম হবে।

    এ্যানথ্রাকনোজ প্রতিকারঃ নোইন/ব্যাভিস্টিন/কেডাজিম প্রতি লিটার পানির সাথে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে ১০-১৫ দিন অন্তর ২/৩ বার ফলের গায়ে স্প্রে করলে উপকার পাওয়া যায়।

    পেঁপের মোজাইক,পাতা কোঁকড়ানো ভাইরাস রোগ নিয়ন্ত্রণঃ আক্রান্ত গাছ তুলে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। রোগ বিস্তারকারী পোকা দমনের মাধ্যমে এ রোগের বিস্তার রোধ করা যায়।

    শিকড়গীট রোগঃ

    প্রতিকারঃ শুষ্ক মৌসুমে জমি পতিত রেখে ২/৩ বার চাষ দিয়ে মাটি ওলট-পালট করে দেওয়া। রোপণের সময় গর্ত প্রতি ২৫ গ্রাম ফুরাডান ৫ জি প্রয়োগ করা। আধা পঁচা মুরগীর বিষ্ঠা ৩ টন/হেক্টর বা সরিষার খৈল ৩০০ কেজি/হেক্টর চারা লাগানোর ৩ সপ্তাহ পূর্বে জমিতে প্রয়োগ করে মাটির সাথে ভালভাবে মিশাতে হবে

    পোকামাকড় ও দমন ব্যবস্থা

    পোকামাকড়::

    মিলি বাগঃ সাম্প্রতিক সময়ে মিলি বাগ পেঁপের একটি মারাত্বক পোকা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। আক্রান্ত পাতা ও ফলে সাদা পাউডারের মত আবরণ দেখা যায়। আক্রান্ত গাছের পাতা ও ফলে শুটি মোল্ড রোগের সৃষ্টি হয়। আক্রমণের মাত্রা বেশী হলে গাছ মারা যেতে পারে।

    দমন ব্যবস্থা::

    মিলি বাগ প্রতিকারঃ আক্রমনের প্রথম দিকে পোকাসহ আক্রান্ত পাতা/কান্ড সংগ্রহ করে ধ্বংস করে ফেলতে হবে অথবা পুরাতন টুথব্রাশ দিয়ে আঁচড়িয়ে পোকা মাটিতে ফেলে মেরে ফেলতে হবে।আক্রমণ বেশী হলে প্রতি লিটার পানিতে ৫ গ্রাম সাবান পানি অথবা এডমায়ার ২০০এসএল ০.২৫ মি.লি. হারে মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।

    সার ব্যবস্থাপনা:::

    ভাল ফলন পেতে হলে পেঁপেতে সময়মত সার প্রয়োগ করতে হবে। উপরি হিসেবে গাছ প্রতি ৪৫০-৫০০ গ্রাম ইউরিয়া এবং ৪৫০-৫০০ গ্রাম এমওপি সার প্রয়োগ করতে হবে। চারা রোপণের এক মাস পর হতে প্রতি মাসে গাছ প্রতি ৫০ গ্রাম ইউরিয়া ও ৫০ গ্রাম এমওপি সার প্রয়োগ করতে হবে। গাছে ফুল আসার পর এই মাত্রা দ্বিগুণ করতে হবে। মাটিতে রস না থাকলে পানি সেচের ব্যবস্থা করা আবশ্যক।

    তথ্য সহযোগিতায়: বারি, জয়দেবপুর, গাজিপুর।

    শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত কৃষকরা

  • Share The Gag
  • ঋতু বৈচিত্র্যের ধারায় এসেছে হেমন্ত। সঙ্গে কড়া নাড়ছে শীত। ভোরের বাতাস কুয়াশাসিক্ত। সবুজে সবুজে ভরে উঠেছে মাঠ। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে শোভা পাচ্ছে ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, শিম, বেগুন, ম‍ুলা, করলা, পটল, পালং ও লাল শাকসহ রকমারি শীতকালীন সবজি।

    ক্ষেতের এসব ফসল পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষকেরা। কাকডাকা ভোরে কোদাল, পাচুন, মাথাইল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন তারা। ক্ষেতে নেমে পড়েন সবজি পরিচর্যায়। রোদের তীব্রতা বাড়তেই মাথায় পরে নেন মাথাইল।

    তাদের কেউ দাঁড়িয়ে কোদাল চালাচ্ছেন, অনেকেই গাছের গোঁড়ালির পাশ দিয়ে ঘোরাচ্ছেন পাচুন, কেউবা খালি হাতেই গাছগুলো ঠিক করছেন। এভাবে শীতকালীন সবজি নিয়ে চলছে কৃষকের কর্মযজ্ঞ।

    রোববার (২৩ অক্টোবর) বগুড়া জেলার বেশ কয়েকটি উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে শীতকালীন সবজি নিয়ে কৃষকের কর্মযজ্ঞের এমন দৃশ্য চোখে পড়ে।

    বেড়েই চলছে মানুষের কাজের চাপ। গড়ে তোলা হচ্ছে স্থায়ী-অস্থায়ী অসংখ্যা স্থাপনা। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে কৃষি জমিতে। কমে যাচ্ছে আবাদি জমি। ধান চাষেও তেমন একটা সুবিধা করতে পারছেন না কৃষক। কোনোভাবেই লোকসান ঠেকাতে পারছেন না তারা। তাই রকমারি সবজি চাষে ঝুঁকে পড়েছেন কৃষকরা।

    বাংলানিউজকে এমনটা জানালেন হায়দার আলী, আমজাদ হোসেন, বুলু মিয়াসহ একাধিক কৃষক। তারা বলেন, সবজি চাষের জন্য খুব বেশি জমির প্রয়োজন হয় না। তুলনামূলক মূলধনও কম লাগে। পরিশ্রমও তুলনামূলক কম। তবে সেবা যত্নে ক্রটি করা যাবে না। কিন্তু রোগবালাই দমনে সবজি ক্ষেতে কীটনাশক বেশি প্রয়োগ করতে হয়।

    তারা বলেন, স্বল্প সময়েই সবজি বিক্রি উপযোগী হয়ে ওঠে। প্রায় দিনই বাজারে সবজি বিক্রি করা যায়। পরিবারের চাহিদাও মেটানো যায়। ক্ষেতে সবজি থাকা পর্যন্ত প্রত্যেক কৃষকের হাতে কমবেশি টাকা থাকে। যা অন্য ফসলের বেলায় সম্ভব না। এছাড়া চলতি মৌসুমে সবজির দামও বেশ ভালো। সবমিলিয়ে সবজি চাষকেই এসব কৃষকরা লাভজনক মনে করছেন।

    জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে এ জেলার ১২টি উপজেলায় ১২ হাজার ৪শ’ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। রোববার (২৩ অক্টোবর) পর্যন্ত ৭ হাজার ৩শ’ ৭০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের সবজি লাগানো হয়েছে।

    এরমধ্যে সদর উপজেলায় ১ হাজার ৫শ’ হেক্টর, শেরপুরে ১ হাজার ৩শ’ ৫০ হেক্টর, ধুনটে ১ হাজার ১শ’ হেক্টর, সারিয়াকিন্দতে ১শ’ ৫০হেক্টর, সোনাতলায় ৩শ’ ১০ হেক্টর, শিবগঞ্জে ৭শ’ ৫০ হেক্টর, নন্দীগ্রামে ৮০ হেক্টর, কাহালুতে ২শ’ ৫০ হেক্টর, আদমদীঘিতে ২শ’ ৮০ হেক্টর, দুপচাঁচিয়ায় ২শ’ হেক্টর, শাজাহানপুরে ৩শ’ হেক্টর ও গাবতলী উপজেলায় ১ হাজার ১শ’ হেক্টর জমিতে লাগানো হয়েছে রকমারি শীতকালীন সবজি।

    জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক আব্দুর রহিম বাংলানিউজকে বলেন, সবজিখ্যাত গ্রামগুলোয় নিয়মিত স্ব-স্ব উপজেলার কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা পরিদর্শনে যান। রোগবালাই সম্পর্কে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন। তিনিসহ কৃষি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রায়ই মাঠে যান বলেও জানান তিনি।

    সবজি চাষে যুক্ত জেলার কৃষকরা এবার বেশ উৎফল্ল। কারণ তারা উৎপাদিত ফসলের দাম বেশ ভালো পাচ্ছেন বলেও জানান কৃষি বিভাগের উর্ধ্বতন এই কর্মকর্তা।

    সূত্র ঃ বাংলা নিউজ ২৪

    Sunday, October 23, 2016

    পিরোজপুরে মালটা চাষে বিপ্লব

  • Share The Gag
  • পিরোজপুরে মালটা চাষে বিপ্লব

    পিরোজপুরের মাটি আর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এখানকার কৃষকরা চাষাবাদে যেমন এনেছেন বৈচিত্র, তেমনি এগিয়ে যাচ্ছেন নতুন নতুন প্রযুক্তি নির্ভর কৃষি বিপ্লবে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মালটার বিপ্লব। আর এই বিপ্লবকে আরেক ধাপ এগিয়ে নিতে বড় ধরনের ঝুঁকি নিয়েছেন শেখ হুমায়ুন কবির নামে সদর উপজেলার বড় খলিশাখালী গ্রামের এক ব্যবসায়ী।

    মালটা চাষি শেখ হুমায়ুন কবির (৪৫) জানান, ২০১৫ সালে নিজ গ্রামে ৭৫ বিঘা জমির উপর গড়ে তোলেন তার মাল্টা বাগান। এটাই দেশের সবচেয়ে বৃহত্তম মালটার বাগান বলে তার দাবি। তার বাগানে ২১ হাজার মালটা গাছের সঙ্গী ফসল হিসেবে রয়েছে আমসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় ফলের গাছ।

    পিরোজপুরের মাটি আর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এখানকার কৃষকরা চাষাবাদে যেমন এনেছেন বৈচিত্র, তেমনি এগিয়ে যাচ্ছেন নতুন নতুন প্রযুক্তি নির্ভর কৃষি বিপ্লবে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মালটার বিপ্লব। আর এই বিপ্লবকে আরেক ধাপ এগিয়ে নিতে বড় ধরনের ঝুঁকি নিয়েছেন শেখ হুমায়ুন কবির নামে সদর উপজেলার বড় খলিশাখালী গ্রামের এক ব্যবসায়ী।

    মালটা চাষি শেখ হুমায়ুন কবির (৪৫) জানান, ২০১৫ সালে নিজ গ্রামে ৭৫ বিঘা জমির উপর গড়ে তোলেন তার মাল্টা বাগান। এটাই দেশের সবচেয়ে বৃহত্তম মালটার বাগান বলে তার দাবি। তার বাগানে ২১ হাজার মালটা গাছের সঙ্গী ফসল হিসেবে রয়েছে আমসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় ফলের গাছ।

    কৃষিতে হুমায়ুনের এই উদ্যোগ নেয়ার পেছনে তার স্ত্রী শামসুন্নাহারের রয়েছে বিশেষ অবদান। স্ত্রীর প্রেরণায়ই তিনি ফলের চাষের প্রতি আরও আগ্রহী হয়ে ওঠেন বলে জানান হুমায়ুন।

    স্ত্রী শামসুন্নাহার জানান, বিদেশে চিকিৎসা নেয়ার সময় তার স্বামী সেখানকার বিষমুক্ত ফল খেয়ে অধিক সুস্থ হয়ে ওঠেন। তাই তিনিও স্বামীর সিদ্ধান্তে একমত হন ফল চাষের জন্য। সরকারি চাকরির পাশাপাশি তিনিও ফলের বাগান দেখভাল করার জন্য সময় দেন।

    এ অঞ্চলে মালটা চাষকে আরও ছড়িয়ে দেয়ার জন্য এ বছরই টিস্যু কালচারের মাধ্যমে এক লাখ মালটা চারা উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে তার। বর্তমানে তার বাগানে তিনি ৩২ জনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করেছেন।

    সম্প্রতি হুমায়ুনের মালটা বাগানে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে দেখা হয় সদর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহমান এর সঙ্গে। তিনি জানান, অন্যান্য ফসল সর্বোচ্চ ডিএস ৪ মাত্রার লবণ সহ্য করতে পারে। কিন্তু মালটা গাছ সর্বোচ্চ ১২ ডিএস মাত্রার লবণ সহ্য করতে পারার কারণে লবণাক্ততার ঝুঁকিতে থাকা অন্যতম উপকূলীয় জেলা পিরোজপুরে নিশ্চিন্তে মালটা চাষ করা সম্ভব।

    পিরোজপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক এমডি আবুল হোসেন তালুকদার জানান, বিগত কয়েক বছরে মালটার বিপ্লব ঘটায় জেলায় বর্তমানে ৪৫ হেক্টর জমিতে ৩১৯টি মালটার বাগান তৈরি হয়েছে। আর এই বিপ্লবের সঙ্গে যোগ হয়েছে হুমায়ুনের করা দেশের সবচেয়ে বড় মালটা বাগান।

    কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, মালটার কলম করা হয় বাতাবি লেবু গাছের সঙ্গে। আর বাতাবি লেবু দেশের সর্বত্র হওয়ায়, মালটার চাষও পিরোজপুরসহ সারা দেশে করা সম্ভব। এছাড়া নিচু ও পতিত জমি পাইপের মাধ্যমে খুব সহজেই লোকাল বালু দিয়ে ভরাট করার পর সেখানে খুব সহজে অন্যান্য গাছ না জন্মালেও, মালটা গাছ অতি সহজেই জন্মানো সম্ভব। তবে বালুর উপর কিছুটা মাটির আবরণ রাখতে হয়।

    বর্তমানে হুমায়ুনের মালটা বাগানের খবর ঢাকা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরেও পৌঁছে গেছে। সম্প্রতি ওই দফতরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. হামিদুর রহমান হুমায়ুনের মালটা বাগান পরিদর্শন করেছেন।

    তিনি মোবাইল ফোনে এ প্রতিবেদককে জানান, পিরোজপুরে হুমায়ুনের মালটা বাগান সারা দেশের ফল চাষিদের জন্য একটি দৃষ্টান্ত এবং এটি এই মুহূর্তে বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় মালটা বাগান।

    তিনি আরও জানান, পিরোজপুরে যেভাবে মালটার বিপ্লব ঘটছে, তা সারাদেশে সম্প্রসারিত হলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে আমরা বিদেশেও মালটা রফতানি করতে পারবো। এছাড়া দেশীয় মালটায় সহনীয় মাত্রায় সুগার থাকায় তা ডায়াবেটিক আক্রান্ত রোগীরাও খেতে পারেন।

    সুত্র- জাগোনিউজ ২৪

    নোয়াখালীতে কৃষক-ক্ষেতমজুর সমাবেশ

  • Share The Gag
  • নোয়াখালীতে কৃষক-ক্ষেতমজুর সমাবেশ



    প্রকৃত ভূমিহীন-বর্গাচাষি-ক্ষুদ্র কৃষকদের মধ্যে কৃষিকার্ডের মাধ্যমে কৃষিঋণ, টিআর, কাবিখা, স্বল্পমূল্যে কৃষি উপকরণ সরবরাহসহ নানা দাবিতে নোয়াখালীতে কৃষক-ক্ষেতমজুর সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট জেলা শাখার উদ্যোগে আজ রবিবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

    পরে জেলা প্রশাসকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এর আগে একই দাবিতে শহরে ব্যানার, ফেস্টুন ও লাল পতাকা সজ্জিত একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয়। সংগঠনের জেলা আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা তারকেশ্বর দেবনাথ নান্টুর সভাপতিত্ব সমাবেশে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মনজুর আলম মিঠু, বাসদ (মার্কসবাদী) জেলা কমিটির আহ্বায়ক দলিলের রহমান দুলাল, নবগ্রাম অঞ্চলের কৃষক প্রতিনিধি মো. ইব্রাহিম, চরকলমীর কৃষক প্রতিনিধি আরশাদ আলী প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন কৃষক ফ্রন্টের জেলা সংগঠক বিটুল তালুকদার।

    বক্তারা দেশব্যাপী সকল বিভাগে অনিয়ম, ঘুষ-দুর্নীতি; মাদক-জুয়া ও চাঁদাবাজি বন্ধ; প্রকৃত ভূমিহীন-বর্গাচাষি-ক্ষুদ্র কৃষকদের মধ্যে কৃষিকার্ডের মাধ্যমে কৃষিঋণ প্রদান; টিআর, কাবিখা, স্বল্পমূল্যে কৃষি উপকরণ সরবরাহ; খাস জমি প্রকৃত ভূমিহীনদের বরাদ্দ দেওয়া; ইউনিয়নভিত্তিক সরকারি ক্রয়কেন্দ্র স্থাপন; আর্মি রেটে রেশনিং প্রদান; উপকূলীয় অঞ্চলে পর্যাপ্ত আশ্রয়ন প্রকল্প স্থাপন এবং নদী ভাঙনরোধসহ ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

    বক্তারা বলেন, দেশের প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ কৃষির সঙ্গে যুক্ত। দেশের মানুষের খাদ্য এবং শিল্পের কাঁচামালের উৎস এ কৃষি। অথচ সরকারের নানামুখী গণবিরোধী সিদ্ধান্তের কারণে কৃষক-ক্ষেতমজুরদের জীবন আজ সর্বশান্ত। সরকারি মহলের বাক-চাতুর্য্যের আড়ালে চলছে কৃষি ব্যবস্থা ধ্বংসের আয়োজন। প্রতিবছর বাজেটে কৃষিখাতে বরাদ্দ কমছে। বন্যা-খরায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হয়ে নিঃস্ব হচ্ছে। খাস জমি প্রকৃত ভূমিহীনদের বঞ্চিত করে মৎস্য প্রজেক্টের নামে প্রভাবশালীরা আত্মসাত করছে, ভূমিহীনদের খাস জমি বরাদ্দের নামে চলছে ব্যাপক হয়রানি ও ঘুষ-দুর্নীতি। কৃষিঋণ, টিআর, কাবিখা, খাদ্যবান্ধব কমসূচির নানা অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনা পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। যে কৃষকরা ফসল উৎপাদন করে অথচ তারা অনাহারে অর্ধাহারে জীবন কাটাচ্ছে, তাঁদের জন্য রেশনিং, অবসর ভাতা নেই।

    সমাবেশ থেকে কৃষি-কৃষক তথা ১৬ কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষার্থে জেলা কৃষক ফ্রন্ট উত্থাপিত দাবি আদায়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়।

    সূত্রঃ কালেরকন্ঠ

    Friday, October 21, 2016

    চাষ করুন জাম্বো ঘাস

  • Share The Gag
  • চাষ করুন জাম্বো ঘাস

    জাম্বো ঘাস

    দুগ্ধ খামারীদের মধ্যে জাম্বো ঘাসের চাষ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভাঙ্গুড়া উপজেলা পাবনা জেলার একটি ছোট উপজেলা যা প্রায় প্রতি বছর বন্যা কবলিত হয়ে থাকে। ফলে কৃষকদের গাভী পালনে খুব সমস্যা দেখা দেয়। এতদ্বসত্বেও তারা অন্ততপক্ষে গোয়াল ঘরের স্থান বন্যামুক্ত রাখার জন্য মাটি ফেলে উঁচু করেছে। বন্যার পানি সাধারণত জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত থাকে এবং অক্টোবর থেকে আবার নামতে শুরু করে। ফলে, কৃষকরা তাদের জমিতে মাস কলাই, খেসারী ইত্যাদি ছিটিয়ে বপন করে যা গরুকে খাওনোই ছিল তাদের ঐতিহ্য। কিন্তু গত ২০০৭ সালে কৃষকরা উচ্চ মূল্যে যে মাস কলাই ও খেসারী বীজ ক্রয় করে বপন করেছিল তা পর পর দু’বার বন্যার পানিতে ডুবে তাদের মারাত্নক আর্থিক ক্ষতি হয়। কৃষকরা এতে অত্যন্ত হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ে এবং গাভী পালনের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব গড়ে উঠতে থাকে। এই অবস্থায় তাদেরকে উচ্চ ফলনশীল ঘাস চাষের প্রতি আহবান জানানো হয়। এরই ফলশ্রুতিতে এখানে উচ্চফলনশীল জাম্বো ঘাস চাষ শুরু হয় ব্যাপকভাবে। কৃষক ভাইয়েরা নতুন ঘাস জাম্বো চাষ করে আর্থিকভাবে যথেষ্ট লাভবান হয়েছেন। জাম্বো ঘাস একটি স্থায়ী সবুজ ঘাস যা যে কোনো আবহাওয়াতে জন্মাতে পারে। তবে যেখানে অল্প বৃষ্টিপাত হয় সেখানে ভাল হয়।

    জাম্বো ঘাস চাষ প্রক্রিয়া:

    মাটি:
    বেলে মাটি ব্যতীত সব ধরনের মাটিতেই জাম্বো ঘাস চাষ করা যায়। তবে এটেল ও দোআঁশ মাটিতে ফলন বেশি হয়। মাটির PH ৬-৮ এর মধ্যে হলে ভাল হয়।

    বপনের সময়:
    সারা বৎসর এই ঘাস চাষ করা যায়। তবে নভেম্বর-ডিসেম্বরে চাষ করলে বন্যার পানি আসার পূর্ব পর্যন্ত প্রায় চার থেকে পাঁচ বার কাটা যায়।

    জমি তৈরি:
    ২-৩ বার মাটি চাষ করে ঘাস রোপণ করলে ভাল ফলন পাওয়া যায়।

    বপন পদ্ধতি ও বীজের পরিমাণ:
    এই ঘাসের বীজ ১ ফুট পরপর লাইন করে ৬ ইঞ্চি পরপর ২টি বীজ প্রতি গর্তে বপন করা যায়। এছাড়া ছিটিয়েও বপন করা যায়। প্রতি বিঘা জমিতে লাইন করে বপন করলে ৩-৪ কেজি বীজ লাগে। এছাড়া ছিটিয়ে বোনা হলে ৫-৬ কেজি বীজের দরকার হয়।

    সার প্রয়োগ:
    বিঘা প্রতি গোবর সার ১৫০০-২০০০ কেজি, ডিএপি সার ১৫-২০ কেজি ও ইউরিয়া সার ৫ কেজি প্রয়োগ করতে হয়। প্রতি মাসে ঘাস কাটার পর ৫ কেজি ইউরিয়া সার ছিটিয়ে সেচ দিলে ভাল ফলন পাওয়া যায়।

    কাটিং:
    বপন করার ৪৫/৫০ দিন পর প্রথম বার কাটা যায় এবং পরে প্রতি মাসে ১ বার করে কাটা যায়। ১ বিঘা জমিতে উৎপাদন প্রায় ৮০০০-১০০০০ কেজি হয়ে থাকে যার মূল্য প্রায় ৫০০০-৬০০০ হাজার টাকা।

    ঘাসের পরিচর্চা:
    এই ঘাসের জন্য কোনো পরিচর্যার প্রয়োজন পড়ে না। প্রতিবার কাটার ৭ দিন পর সেচ দিতে হয় এবং ইউরিয়া সার দিলে ভাল ফলন পাওয়া যায়।

    ঘাসের গুণাগুণ:
    জাম্বো ঘাস গরুর খাদ্য হিসাবে অতি উত্তম। এ ঘাস ৯-১৮% আমিষ সমৃদ্ধ এবং এর পরিপাচ্যতা (digestibility) ৫৬-৬২%। প্রতি ৩০ দিন অন্তর ২-৩ ফুট হলে কাটা যায়। গরুকে ছোট করে কেটে খাওয়ানো উচিত। এই ঘাসকে সাইলেজ করেও সংরক্ষণ করা যায়। এই ঘাস গরুকে খাওয়ানো হলে গরুর দুধ বৃদ্ধি পায় এবং দুধের চর্বির পরিমাণ (fat %) বেশি হয়। ফলে কৃষকরা লাভবান হন।

    খেসারীর সাথে জাম্বো ঘাস চাষ:
    বন্যার পানি যখন নেমে যায় তখন জমিতে পলিমাটি পড়ে। কৃষকরা সাধারণত সেখানে খেসারী ছিটিয়ে বপন করেন। সেই বিনা চাষে খেসারীর সাথে প্রতি বিঘা জমিতে দুই-আড়াই কেজি জাম্বো ঘাসের বীজ ছিটিয়ে বপন করলে খেসারী ও জাম্বো ঘাসের উৎপাদন ভাল হয়। পরীক্ষামূলকভাবে দেখা গেছে, জাম্বো ঘাসকে অবলম্বন করে লতিয়ে লতিয়ে খেসারী গাছ বড় হতে থাকে। খেসারী এবং জাম্বো ঘাস ৪৫/৫০ দিনে কাটা যায়। খেসারী লিগুউমিনাস জাতীয় হওয়ায় এদের শিকড়ে প্রচুর পরিমাণে নাইট্রোজেন বিদ্যমান থাকে। ফলে, কম পরিমাণ ইউরিয়া সার ব্যবহার করে বেশি পরিমাণ জাম্বো ঘাস উৎপাদন করা সম্ভব। এজন্য কৃষকদের উচিত বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় সাথে সাথে খেসারী ও জাম্বো ঘাসের বীজ বপন করা। এতে গো-খাদ্যের অভাব দূর করা যায়। কারণ বন্যার সময় ঘাস নষ্ট হয়ে যায় এবং গবাদিপশু ঠিক মতো খাদ্য পায় না। এছাড়া পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন প্রতিকূলতার ফলে এদের স্বাস্থ্যও খারাপ হয়ে যায়। এ কারণে এদের দুধ উৎপাদনও হ্রাস পায়। তাই খেসারী ও জাম্বো ঘাস এক সাথে চাষ করলে কৃষকের গো-সম্পদ রক্ষা করা যাবে।

    ভুট্টার সাথে জাম্বোর চাষ:
    যে সমস্ত জমিতে আমন ধান কাটা হয় সে সমস্ত জমিতে কৃষকরা ভুট্টার সাথে জাম্বো ঘাসের চাষ করতে পারেন। জমি তৈরি করে ২-৩ চাষ দিয়ে প্রয়োজনীয় গোবর ও ইউরিয়া সার ব্যবহার করতে হবে। জাম্বো ঘাসের বীজ বিঘা প্রতি ৫/৬ কেজি ও ভুট্টার বীজ ৩/৪ কেজি ছিটিয়ে রোপণ করলে ৪৫/৫০ দিনের মধ্যে প্রথম কাটা যায়। ভুট্টা ও জাম্বো ঘাসের উৎপাদন বিঘা প্রতি ২০০ কেজি করা সম্ভব। যেহেতু জাম্বো ঘাসের প্রথমে বীজ থেকে একটি কুঁড়ি বের হয় সেজন্য প্রথম কাটায় উৎপাদন কম হয়। কিন্তু জাম্বো ও ভুট্টা ঘাসের মিশ্র চাষে প্রথম।

    বীজের জন্য যোগাযোগ করুন- কৃষি ষ্টোর- ০১৭৭১৬২৫২৫২ অথবা ০১৯৭১৬২৫২৫২।

    রেডলেডি পেঁপে চাষ পদ্ধতি

  • Share The Gag
  • বাংলাদেশে পেঁপে খুবই জনপ্রিয় ও গুরুত্বপূর্ন। পেঁপের কতগুলো বৈশিষ্ট রয়েছে- প্রথমত এটা একটা স্বল্প মেয়াদী, দ্বিতীয়ত ইহা কেবল ফলই নয় সবজি হিসেবেও এর ব্যপক ব্যবহার রয়েছে,তৃতীয়ত পেঁপে অত্যান্ত সুসাদু , পুষ্টিকর এবং ঔষধি গুন সম্পন্ন। এদেশে বর্তমানে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁপে চাষ হয় এবং মোট উৎপাদন প্রায় ৪৮ হাজার টন। কাঁচা পেঁপেতে পেপেইন নামক হজমকারী দ্রব্য আছে।

    রেডলেডি হাইব্রিড পেঁপে জাতের বৈশিষ্ট্যঃ-


    • এটি তাইওয়ানের উচ্চ ফলনশীল বামন প্রজাতির পেঁপে।

    • রেডলেডি জাতের প্রত্যেক টি গাছে পেঁপে ধরে ।

    • রেডলেডি জাতের পেঁপে গাছ সর্বচো ১০’ ফিট হয়।

    • গাছের উচ্চতা ৬০-৮০ সেঃ মিঃ হয় তখন ফল ধরা শুরু হয়।

    • প্রতিটি গাছে ৫০-১২০ পর্যন্ত ফল ধারন করে।

    • ৫-৬ মাসের মধ্য ফুল আসে এবং প্রথম ফল পাওয়া যায় ৭-৯ মাসের মধ্য।

    • এই জাতের পেঁপে গুলি বেশ বড়।

    • ফলের রং লাল-সবুজ।

    • এক একটি ফলের ওজন ১..৫ থেকে ২ কেজি।

    • মাংস বেশ পুরু, গাঢ় লাল, স্বাদে বেশ মিষ্টি ও সুগন্ধিযুক্ত।

    • কাঁচা ও পাকা উভয়ভাবে বাজারজাত করা যায়।

    • পাকা অবস্থায় সহজে নষ্ট হয় না বলেই, দূর দুরান্তে বাজারজাত করা যায়।

    • এই জাতের পেঁপে রিং স্পট ভাইরাস রোগ সহ্য ক্ষমতা আছে।

    • এই জাতের জীবন কাল ২ বছর অধিক।





    বীজ সংরহঃ- ঢাকার ফুলবাড়িয়ার বীজ বিক্রয়ের মার্কেট সিদ্দিক বাজারে রেড লেডি পেঁপের বীজ পাওয়া যায়। অনেক কোম্পানী নিন্মমানের বীজ প্যাকেট জাত করে রেড লেডি বলে বিক্রি করে প্রতারনা করছে। তাই বীজ কেনার সময় ভাল ভাবে যাচাই বাছাই করে ক্রয় করতে হবে।  চায়না ও তাইওয়ানের রেড লেডি বীজ পাওয়া যায় তবে তাইওয়ানের বীজ ফলাফল অনেক ভাল। তাই তাইওয়ানের বীজ ক্রয় করা ভাল।

    বীজের মূল্যঃ- তাইওয়ানের রেড লেডি.২ গ্রাম বীজের প্রতি প্যাকেট ৫০০-৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

    বীজের হারঃ- প্রতি গ্রামে বীজের সংখ্যা ৬০-৭০টি। হেক্টর প্রতি ৭০-১০০ গ্রাম বীজের প্রয়োজন। সে হিসেবে ৩০০০-৩২০০ চারা দিয়ে ১ হেক্টর জমিতে পেঁপে চারা লাগানো যায়।

    চারা তৈরিঃ- বীজ থেকে বংশ বিস্তার করা যায়। বীজের প্যাকেট কেটে ২ ঘন্টা রোদে শুকানোর পর ২ ঘন্টা রোদে শুকানোর পর ঠান্ডা জায়গায় রেখে ঠান্ডা করে ১০ থেকে ১২ ঘন্টা পানিতে ভেজানোর পর পলেথিন ব্যাগে চারা তৈরি করতে হবে। পলিথিন ব্যাগে চারা তৈরি করলে রোপনের পর চারা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ৫X৬ সেঃ মিঃ আকারে ব্যাগে সম পরিমাণ বেলে দোয়াশ মাটি ও পচা গোবরের মিশ্রণ ভর্তি করে, ব্যাগের তলায় ২-৩ টি ছিদ্র করতে হবে। তারপর এতে সদ্য সংগৃহীত বীজ হলে একটি এবং পুরাতন বীজ হলে ২টি বীজ বপন করতে হবে। ১টি ব্যাগে এক এর অধিক চারা রাখা উচিৎ নয়।

    চারা রোপনঃ- ১.৫ থেকে ২ মাস বয়সের চারা রোপন করা হয়। ২ মিটার দূরে দূরে ৬০X৬০X৬০ সেঃ মিঃ আকারে গর্ত করে রোপনের ১৫ দিন পূর্বে গর্তের মাটির সার মিশাতে হবে। পানি নিষ্কাশনের জন্য ২ সারির মাঝখানে ৫০ সেঃ মিঃ নালা রাখতে হবে।

    সারের পরিমানঃ- প্রতি পেঁপে গাছে নিন্মরূপ সার ব্যবহার করতে হবে।

    রোপনের সময়ঃ- চারা লাগানোর পর নতুন পাতা আসলে ইউরিয়া ও এমপি সার ৫০ গ্রাম করে প্রতি ১ মাস অন্তর প্রয়োগ করতে হবে। গাছে ফুল আসলে এ মাত্রা দ্বিগুণ হবে। শেষ ফল সংরহের পূর্বেও সার প্রয়োগ করতে হবে।

    অন্তবর্তীকালীন পরিচর্যাঃ- বাগান সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। গাছের গোড়া থেকে আগাছা তুলে ফেলে দিতে হবে। গাছের গোড়া মাটি কোদাল দিয়ে হালকা করে দিতে হবে। গাছে অতিরিক্ত ফল ধরলে কিছু ফল পেরে নিয়ে হালকা করে দিলে, বাকি ফল গুলো বড় হওয়ার সুযোগ পাবে। পেঁপে গাছে বিভিন্ন হরমোন প্রয়োগ করে বেশ সুফল পাওয়া যায়।

    ফল সংরহঃ- পেঁপে গাছে সাধারণত ৫-৬ মাসের মধ্য ফুল আসে এবং প্রথম ফল পাওয়া যায় ৭-৯ মাসের মধ্যে। পুষ্ট হওয়ার সময় কোন কোন ফলে হলুদ রং ধারন করবে। পুষ্ট ফলে কিছু দিয়ে খোচা দিলে থেকে পানির মত তরল আঠা বের হবে। অপুষ্ট ফল থেকে দুধের মত ঘন আঠাবের হবে।

    ফলনঃ- রেডলেডি জাতের পেঁপে থেকে ৫০-১২০ টি ফল পাওয়া যায়।

    বীজের জন্য যোগাযোগ করুন কৃষি ষ্টোর - ০১৭৭১৬২৫২৫২

    বরবটি চাষ

  • Share The Gag
  • বরবটি


    Vigna sesquipedalis


    বরবটি আমিষ সমৃদ্ধ একটি সবজি। প্রায় সারা বছরই এটি ফলানো যায়। তবে খরিপ তথা গ্রীষ্মকালে ভাল হয়। খুব শীতে ভাল হয় না।



    মাটিঃ


    দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ মাটি বরবটি চাষের জন্য উপযোগী।



    জাতঃ


    কেগরনাটকীই অনেকদিন পর্যন্ত বরবটি একটি উন্নত জাত হিসেবে চাষ হয়ে আসছে। এখন অবশ্য বেশ কয়েকটি জাত চলে এসেছে। লাল বেণী,তকি, ১০৭০, বনলতা, ঘৃতসুন্দরী, গ্রীন লং, গ্রীন ফলস এফ১, সামুরাই এফ১ ইত্যাদি কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কয়েকটি  জাত। কেগরনাটকী জাতটি পৌষ-মাঘ মাস ছাড়া সারা বছরই চাষ করা যায়। মধ্য মাঘ থেকে মধ্য আশ্বিনে চাষ করা যায় ঘৃতসুন্দরী, গ্রীন লং। মধ্য ফাল্গুন থেকে মধ্য আশ্বিন পর্যন্ত চাষ করা যায় ১০৭০ জাতটি। উল্লেখিত জাতগুলোর রমধ্যে কেগরনাটকী ও লাল বেণী জাতের ফলন সবচেয়ে বেশি। তবে খেতে ভাল ঘৃতসুন্দরী।


    সময়ঃ


    বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে সাধারণতঃ বীজবপন করা হয়। তাছাড়া আশ্বিন-অগ্রাহায়ণ মাসেও বীপবপন কর হয়। অন্যান্য সময়ও  বোনা যেতে পারে।


    বীজের পরিমাণঃ
    প্রতি শতকে ১০০-১২৫ গ্রাম, হেক্টর প্রতি ৮-১০ কেজি।


    জমি তৈরিঃ

    ৪ - ৫ টি চাষ ও মই দিয়ে ভালভাবে জমি তৈরি করতে হয়।


    সারের মাত্রাঃ

    সারের নাম           সারের পরিমাণ  

                                প্রতি শতকে          প্রতি হেক্টরে

    ইউরিয়া                ১০০ গ্রাম            ২৫০ কেজি

    টি এস পি               ৯০ গ্রাম          ২২৫ কেজি

    এমওপি                 ৭৫ গ্রাম           ১৮৫ কেজি

    গোবর               ২০ কেজি            ৫ টন

    সার প্রয়োগ পদ্ধতিঃ


    গোবর, টিএসপি সম্পূর্ণ পরিমাণ ও অর্ধেক এমওপি সার শেষ চাষের সময় জমিতে প্রয়োগ করতে হয়। পরে বীজ বোনার ২০ দিন পর ১০০ গ্রাম ইউরিয়া ও বাকি অর্ধেক এমওপি সার জমিতে উপরি প্রয়োগ করতে হবে।


    বীজ বপনঃ

    ২ মিটার দূরত্বে সারি করে ২৫-৩০ সেমি. দূরে দূরে বীজ বুনতে হয়। জাত হিসেবে সারির দূরত্ব ১ মিটার বাড়ানো বা কমানো যায়।


    পারিচর্যাঃ

    চারা বড় হলে মাচা বা বাউনি দিতে হবে। জমিতে পানির যাতে অভাব না হয় সে জন্য প্রয়োজন অনুসারে সবসময় সেচ দিতে হবে। আগাছা পরিষ্কার রাখতে হবে। পোকামাকড় ও রোগ ব্যবস্থাপনা শিমের মতই। জাব পোকা, ফল ছিদ্রকারী পোকা ও মোজেইক রোগ বরবটি চাষের বড় সমস্যা।

    ফসল সংগ্রহ ও ফলনঃ

    বীজ বোনার ৫০ - ৬০ দিন পর থেকেই বরবটি সংগ্রহ করা যায়। শতক প্রতি ফলন ৩০ - ৬০ কেজি, হেক্টর প্রতি১০ - ১২ টন।


    Friday, October 7, 2016

    সয়াবিন চাষ

  • Share The Gag
  • বাংলাদেশে সয়াবীন একটি সম্ভাবনাময় ফসল। আমিষ ও ভোজ্য তেল উৎপাদনে সয়াবীন এখন অনেক দেশেই একটি প্রধান ফসল।




    পুষ্টি উপাদান/মূল্য ও ভেষজগুণঃ প্রোটিন বিদ্যমান। অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড থাকে বিধায় হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্ত চাপ রোগীদের জন্য বিশেষ উপকারী।




    ব্যবহারঃ সয়াবিন ডাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া পিয়াজু, বড়া, দুধ, চাপাতি, পরটা, পাউরুটি, বিস্কুট, পিঠাসহ আরও অনেক খাবার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে পোল্ট্রি শিল্পে সয়াবিন ব্যবহৃত হচ্ছে।




    উপযুক্ত জমি ও মাটিঃ দো-আঁশ, বেলে-দো-আঁশ ও এঁটেল দো-আঁশ মাটি সয়াবিন চাষের উপযোগী।




    জাত পরিচিতিঃ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট সয়াবিনের ৩টি জাত উদ্ভাবন করেছেন। জাতগুলোর বৈশিষ্ট্য নিম্নে উল্লেখ করা হলো।




    সোহাগ (পিবি-১): সংগৃহীত জার্মপ্লাজম থেকে বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ১৯৯১ সালে সরকার কর্তৃক জাতটির  অনুমোদন দেয়া হয়।ফুলের রং বেগুনী। বীজের রং উজ্জ্বল হলদে। বীজ সংরক্ষণ ক্ষমতা ভালো। ১০০ বীজের ওজন ১১-১২ গ্রাম। এজাতটি পাতার হলদে মোজাইক রোগ সহনশীল। জীবনকাল রবি মৌসুমে ১০০-১১০ দিন এবং খরিপ মৌসুমে ৮০-৯০ দিন। হেক্টর প্রতি ফলন ১.৫-২.০ টন।




    বাংলাদেশ সয়াবিন-৪ (জি-২): ১৯৯৪ সালে জাতটির অনুমোদন দেয়া হয়। এ জাতের বীজের আকার ছোট।  ১০০ বীজের ওজন ৫-৭ গ্রাম। বীজের রং হলদে। জাতটি পাতার হলদে মোজাইক রোগ সহনশীল। জাতটির জীবনকাল ৯০-১২০ দিন। হেক্টর প্রতি  ফলন ১.৮-২.০ টন।




    বারি সয়াবিন-৫: ২০০২ সালে জাতটির অনুমোদন দেয়া হয়। এজাতটি সব মৌসুমেই চাষ করা যায়।  এ জাতের প্রতিটি গাছে ফলের সংখ্যা ২৫-৩২ টি। শুটিতে বীজের সংখ্যা ২-৩  টি। বীজের আকার সোহাগের চেয়ে সামান্য ছোট এবং বাংলাদেশ সয়াবিন-৪ এর  বীজের চেয়ে বড়। বীজের রং ক্রীম এবং শত বীজের ওজন ৯-১৪ গ্রাম। জীবনকাল ৯০- ১০০ দিন। হেক্টর প্রতি ফলন ১.৬-২.০ টন।




    বারি সয়াবীন-৬: জাতটি বাংলাদেশের সব জায়গায় রবি ও খরিফ-২ মৌসুমে চাষ উপযোগী। রবি মৌসুমে মধ্য ডিসেম্ভর থেকে মধ্য জানুয়ারি এবং খরিফ-২ মৌসুমে জুলাই মাসে বপনের উপযুক্ত সময়। জাতটি বপন থেকে পরিপক্ক হতে ১০০-১১০ দিন সময় লাগে। জাতে ২০-২১% তেল এবং ৪২-৪৪% প্রোটিন থাকে। জাতটিতে মোজাইক ভাইরাসের আক্রমণ কম হয়। জাতটির হেক্টর প্রতি ফলন ১.৮০-২.২০ টন।




    বীজ বপনঃ বাংলাদেশে রবি এবং খরিপ উভয় মৌসুমেই সয়াবিনের চাষ করা যায়। তবে পৌষ মাসে (মধ্য ডিসেম্বর থেকে মধ্য জানুয়ারী) বপন করা ভাল। অন্যদিকে বর্ষা মৌসুমে শ্রাবণ মাস থেকে মধ্য  ভাদ্র মাস পর্যন্ত বপন করা যায়।




    বীজের হারঃ সোহাগ- ৮০ কেজি/হেঃ। জি-২ - ৪০-৪৫ কেজি/হেঃ।




    বপন পদ্ধতিঃ সয়াবিন সারি করে বপন করা ভালো। তবে ছিটিয়েও বুনা যায়। সারিতে বপন করলে সারি  থেকে সারির দূরত্ব রবি মৌসুমে ৩০ সে.মি. এবং খরিপ মৌসুমে ৪০ সে.মি. দিতে  হবে। গাছ থেকে গাছের দূরত্ব হবে ৫-৬ সে.মি.। বীজ বপনের গভীরতা হবে ৩-৪ সে.মি.।




    সার ব্যবস্থাপনাঃ




    হেক্টর প্রতি সারের পরিমাণ নিম্নরূপঃ


























    সারের নাম

    প্রতি হেক্টরে (কেজি)

    ইউরিয়া

    ৫০-৬০ কেজি

    টিএসপি

    ১৫০-১৫ কেজি

    এমওপি

    ১০০-১২০ কেজি

    জিপসাম

    ৮০-১১৫ কেজি




    শেষ চাষের সময় সবটুকু সার জমিতে প্রয়োগ করে মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে।




    অণুজীব সার প্রয়োগঃ ছায়াযুক্ত স্থানে এক কেজি বীজের মধ্যে ৬৫-৭৫ গ্রাম অণুজীব সার মিশিয়ে ভালোভাবে নাড়াচাড়া করে বীজ সাথে সাথে বপন করতে হবে। সাধারণত এই সার ব্যবহার করলে ইউরিয়া সার ব্যবহারের প্রয়োজন হয়না।




    সেচ ও আগাছা ব্যবস্থাপনাঃ রবি মৌসুমে বীজ বপনের ২৫-৩০ দিনের মধ্যে (ফুল আসার সময়)। প্রথম সেচ  এবং দ্বিতীয় সেচ বীজ বপনের ৫৫-৬০ দিনের মধ্যে (শুটি গঠনের সময়) দিতে   হবে। খরিপ মৌসুমে সেচের প্রয়োজন হয়না তবে প্রয়োজনে সম্পূরক সেচ দেয়া যেতে পারে। চারা গজানোর ২০-২৫ দিন পর আগাছা দমন করতে হবে।




    রোগবালাই ব্যবস্থাপনাঃ




    পোকার নামঃ  বিছা পোকা


    সয়াবিনের একটি মারাত্মক পোকা। ছোট অবস্থায় এরা দলবদ্ধভাবে থাকে। কীড়া বা বিছা হলুদ রংয়ের এবং গায়ে কাঁটা থাকে। এরা সাধারণত গাছের পাতায় আক্রমণ করে। এ পোকার কীড়া দলবদ্ধভাবে থেকে পাতার  সবুজ অংশ খেয়ে পাতাকে পাতলা সাদা পর্দার মতো করে ফেলে।




    ব্যবস্থাপনাঃ পোকা দেখার সংগে সংগে গাছ থেকে পোকাসহ পাতা সংগ্রহ করে পোকা মেরে ফেলতে হবে। সেচ নালায় কেরোসিন মিশ্রিত পানি থাকলে কীড়া পানিতে পড়ে মারা যায়। প্রতি লিটার পানিতে ডায়াজিনন-৬০ ইসি ২ মিলি হারে মিশিয়ে বিকালে জমি করতে হবে।




    রোগের নামঃ হলুদ মোজাইক ভাইরাস


    সয়াবিনের সবুজ পত্র ফলকের উপরিভাগে উজ্জ্বল সোনালী বা হলুদ রংয়ের চক্রাকার দাগের উপস্থিতি দেখা যায়। তখন হলদে পাতাযুক্ত আক্রান্ত গাছ সাধারণত খাটো এবং বামনাকৃতি হয়ে থাকে। মেঘলা আবহাওয়ায় এ রোগটি বৃদ্ধি পায়। জাব পোকার মাধ্যমে বিস্তার ঘটে।




    ব্যবস্থাপনাঃ বালাই সহনশীল জাত যেমন বাংলাদেশ সয়াবিন-৪এর আবাদ করা। আক্রান্ত গাছ বাছাই করে (রগিং) তুলে মাটির নিচে পুঁতে রাখা। রোগমুক্ত বীজ বপন। ২ মিলি হারে মিশিয়ে জমিতে ভালোভাবে সেপ্র করতে হবে।




    রোগের নামঃ কান্ড পঁচা রোগ


    এ রোগ সাধারণত স্কেলেরোশিয়াম রলফসি/ফিউজারিয়াম/রাইজোকটনিয়া নামক ছত্রাকের সাহায্যে রোগ ছড়ায়। আক্রান্ত গাছের কান্ড এবং মূলে কালো দাগ পড়ে। পরবর্তীতে চারা বা গাছ ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায় এবং অবশেষে মারা যায়। ছত্রাকের সাহায্যে বিসত্মার।




    ব্যবস্থাপনাঃ বীজ বপনের পূর্বে ভিটাভেক্স-২০০ দিয়ে (২.৫ গ্রাম/কেজি) বীজ শোধন করে বীজ বপন করতে হবে। গভীরভাবে জমি চাষ করতে হবে। জমি হতে ফসলের পরিত্যক্ত আঁশ, আগাছা, আবর্জনা পরিষ্কার করে রোগের উৎস নষ্ট করতে হবে।




    ফসল তোলাঃ সয়াবীন বীজ বোনা থেকে ফসল কাটা পর্যন্ত ৯০-১২০ দিন সময় লাগে। ফসল পরিপক্ক হলে শুটিসহ গাছ হলদে হয়ে আসে এবং পাতা ঝড়ে পড়তে শুরু করে। এ সময় গাছ কেটে ফসল সংগ্রহ করতে হয়।

    Wednesday, October 5, 2016

    কাঁঠাল চাষ

  • Share The Gag
  • পুষ্টি মূল্য: আমিষ ও ভিটামিন এ সমৃদ্ধ।
    ভেষজ গুণ: কাঁঠালের শাঁস ও বীজকে চীন দেশে বলবর্ধক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কাঁঠালের শিকড়ের রস জ্বর ও পাতলা পায়খানা নিরাময়ে ব্যবহার করা হয়।
    উপযুক্ত জমি ও মাটি:পানি দাঁড়ায় না এমন উঁচু ও মাঝারি সুনিষ্কাষিত উর্বর জমি কাঁঠালের জন্য উপযোগি।

    জাত পরিচিতি: কাঁঠালের কোনো অনুমোদিত জাত নেই। তবে তিন ধরণের কাঁঠাল চাষ হয়-খাজা, আদারসা ও গালা।
    চারা তৈরি: সাধারণত কাঁঠালের বীজ থেকেই চারা তৈরি করা হয়। ভাল পাকা কাঁঠাল থেকে পুষ্ট বড় বীজ বের করে ছাই মাকিয়ে ২/৩ দিন ছায়ায় শুকিয়ে বীজতলায় বপন করলে ২০-২৫ দিনে চারা গজাবে। জ্জ মাসের চারা সতর্কতার সাথে তুলে মূল জমিতে রোপণ করতে হয়। এছাড়া গুটি কলম, ডাল কলম, চোখ কলম, চারা কলম এর মাধ্যমেও চারা তৈরি করা যায়।

    চারা রোপণ:
    ষড়ভূজী পদ্ধতিতে সুস', সবল ও রোগমুক্ত চারা বা কলম মধ্য জ্যৈষ্ঠ থেকে মধ্য শ্রাবণ মাসে রোপণ করতে হয়। গাছ ও লাইনের দূরত্ব ১২ মিটার করে রাখা দরকার।

    সার ব্যবস্থাপনা: রোপণের সময় প্রতি গর্তে গোবর ৩৫ কেজি, টিএসপি সার ২১০ গ্রাম, এমওপি সার ২১০ গ্রাম সার প্রয়োগ করতে হয়। তবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে প্রতি গাছের জন্র সারের পরিমান বৃদ্ধি করা দরকার।

    সেচ ও আগাছা ব্যবস্থাপনা: চারা/ কলমের তাড়াতাড়ি বাড়বাড়তি হওয়ার জন্য পরিমিত ও সময় মতো সেচ প্রদান করা দরকার।

    পোকা মাকড় ব্যবস্থাপনা:
    কাঁঠাল পচা রোগ: এক ধরণের ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয। এ রোগের আক্রমণে কচ  ফলের গায়ে বাদমি রঙের দাগের সৃষ্টি হয় এবং শেষ পর্যন্ত আক্রান্ত ফল গাছ থেকে ঝড়ে পড়ে।

    প্রতিকার: গাছের নিচে ঝড়ে পড়া পাতা ও ফল পুড়ে ফেলতে হয়। ফলিকুর ছত্রাকনাশক ০.০৫% হারে পানিতে মিশিয়ে গাছে ফুল আসার পর থেকে ১৫ দিন পর পর ৩ বার সেপ্র করা দরকার।

    মুচিঝরা রোগ: ছত্রাকের আক্রমণের কারনে ছোট অবস্থাতেই কালো হয়ে ঝড়ে পড়ে।
    প্রতিকার: ডাইথেন এম ৪৫ অথবা রিডোমিল এম জেড ৭৫, প্রতিলিটার পানিতে ২.৫ গ্রাম করে মিশিয়ে সেপ্র করতে হবে।
    ফসল তোলা: ফল পাকতে ১২০-১৫০ দিন সময় লাগে। সাধারণত জ্যৈষ্ঠ- আষাঢ় মাসে কাঁঠাল সংগ্রহ করা হয়।

    Monday, October 3, 2016

    এ সি আই ওয়েষ্ট কন্সার্ন জৈব সার মাটির প্রাণ

  • Share The Gag
  • এ সি আই ওয়েষ্ট কন্সার্ন জৈব সার মাটির প্রাণ 

    অর্গানিক জৈবসার।

    উপাদানঃ কার্বনঃ

    নাইট্রোজেন অনুপাত (সর্বোচ্চ) – ২০ঃ১

    জৈব কার্বন- ১০-২৫%, পি এইচ মান- ৬.০-৮.৫ আদ্রতা (সর্বোচ্চ) – ১৫-২০%।

    নাইট্রোজেন- ০.৫-৪.০% , ফসফরাস- ০.৫-৩%, সালফার -০.১-৫%, পটাশিয়াম- ০.৫-৩.০% ও অন্যান্য অনুখাদ্য সমূহ।

    প্রয়োগ মাত্রাঃ ফসল ভেদে হেক্টর প্রতি৪৫০-৫০০ কেজি জৈবসার জমি তৈরি করার শেষ চাষে বা ফসলের প্রয়োজন অনুযায়ী প্রয়োগ করতে হবে। ফল ও অন্যান্য গাছের ক্ষেত্রে বয়স ভেদে ২-৫ কেজি প্রয়োগ করতে হবে। তবে উর্বরতার তারতম্য অনুযায়ী জৈব সার ব্যব০হারের পরিমান কম-বেশী হতে পারে।

    প্রয়োগ পদ্ধতিঃ জমি তৈরির শেষ চাষে অথবা ফসলের প্রয়োজন অনুযায়ী প্রয়োগ করে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। ফল ও অন্যান্য গাছের ক্ষেত্রে চারা রোপন করার সময় ও বর্ষা শুরুর আগে বা বর্ষার শেষে গাছের চারপাশে বৃত্তাকারে প্রয়োগ করে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।

    প্যাক সাইজ- ১ কেজি, ৫ কেজি এবং ৪০ কেজি।

    উপকারিতাঃ ফসলের পুষ্টি উপাদানের আঁধার ঘর হিসেবে কাজ করে। প্রয়োগকৃত অন্যান্য সার গাছ সহজে গ্রহণ করতে পারে, ফলে ২০-২৫ ভাগ রাসায়নিক সার কম লাগে। উপকারী অনুজীবের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। মাটির পানি ধরন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। অত্যন্ত উন্নত্মানের বিধায় প্রয়োগমাত্রা কম ও খরচ কম।

    ১ কেজি প্যাকের দাম - ৪৫ টাকা যা ছাঁদ বাগান প্রেমী বন্ধুদের জন্য অনেক উপযোগী একটি জৈবসার, ৫ কেজি প্যাক এর দাম ১৩৫ টাকা এবং এই জৈব সার যাদের পরিমাণে বেশী প্রয়োজন হয় তাদের জন্য এ সি আই করেছে ৪০ কেজির বস্তা এবং দাম ও অনেক সাশ্রয়ী দাম ৬০০ টাকা। ঢাকা সিটিতে যাদের এই জৈব সার প্রয়োজন হয় তারা অনেকেই অনলাইনে বিডি গার্ডেনার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ক্রয় করে থাকেন তারা সারা বাংলাদেশে ও অর্ডার অনুযায়ী কুরিয়ারের মাধ্যমে পণ্য পাঠিয়ে থাকেন।

    এই সার ক্রয়ে ইচ্ছুক বন্ধুরা যোগাযোগ করুন - ০১৯৮৬২০২৫৮৫ নাম্বারে।

     

     

     

    Saturday, October 1, 2016

    করবো বাগান সারা দেশ, গড়বো সবুজ বাংলাদেশ

  • Share The Gag
  • করবো বাগান সারা দেশ, গড়বো সবুজ বাংলাদেশ শ্লোগান নিয়ে যাত্রা শুরু করলো  “বিডি গার্ডেনার্স” BD GARDENERS নামে একটি সামাজিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশের সকল বাগান প্রেমীদের বগান করণে সার্বিক সহযোগিতা এবং পণ্য সেবা দেয়ার লক্ষ্যেই বিডি গার্ডেনার্সের এই যাত্রা। প্রতিষ্ঠানটি ২৫৭-২৫৮ নাম্বার দি গ্রান্ড প্লাজা শপিং মল (তৃতীয় তলা) ওয়্যারলেস, মগবাজারে বাগান সহযোগিতা নেয়ার জন্য একটি লাইভ হেল্প সেন্টার এবং বাগান করার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ সেবার জন্য একটি পণ্যের আউটলেট ও থাকছে। প্রতিষ্ঠানটি, গত  ১ অক্টোবর, ২০১৬ ইং সকাল ১১ ঘটিকায় ঢাকার ওয়্যারলেস, মগবাজার থেকে তাদের নিজস্ব আউটলেট চালু করেন। উক্ত আউটলেট টি সবুজ ফিতা কেটে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে উদ্ভোদন করবেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এর ৩৫ নাম্বার ওয়ার্ড এর কাউন্সিলর জনাব, ফয়জুল মুনির চৌধুরী, এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন এ সি আই লিমিটেড এর জনাব, কৃষিবিদ বশির আহমেদ, বিজনেস ডিরেক্টর “এ সি আই ফার্টিলাইজার” বিশিষ্ট কলামিষ্ট এবং উন্নয়ন কর্মী জনাব, আতাউর রহমান মিটন, কান্ট্রি ডিরেক্টর হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ, আরোও উপস্থিত ছিলেন মনোজগৎ সেন্টার এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর জনাবা ফেরদৌস আরা চৌধুরী।

    20161001_124334

    প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে স্বাগত বক্তব্য দেন জনাব ইকবাল হোসেন শিমূল, নির্বাহী প্রধান বিডি গার্ডেনার্স। তিনি দেশের সকল স্তরের জনগণকে আহ্বান করেন নগর কৃষি শুধু নয় সমগ্র বাংলাদেশেই বাড়ীর ছাঁদ এবং পরিত্যক্ত স্থানে বাগান গড়ে তোলার জন্য। নগর এখন উত্তপ্ত এর জন্য গাছ লাগাতে হবে এমনটি বলেন –মনোজগৎ এর নির্বাহী প্রধান, জনাবা ফেরদৌস আরা চৌধুরী।

    বিডি গার্ডেনার্স এর যাত্রা শুরু উপলক্ষ্যে নগরবাসীকে বাগান করণে উৎসাহিত করার জন্য একটি রক মেলন ফলের চারা এবং এ সি আই ফার্টিলাইজার এর পক্ষ থেকে এক প্যাকেট জৈবসার ফ্রি বিতরণ করা হয়। বিডি গার্ডেনার্স এর আহ্বানে আগত নগর কৃষক এবং বাগান প্রেমী বন্ধুদের মাঝে স্বশরীরে উপস্থিত থেকে এই রক মেলন চারা এবং এ সি আই ফার্টিলাইজার এর ১ কেজি জৈবসার তুলে দেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এর ৩৫ নাম্বার ওয়ার্ড এর কাউন্সিলর জনাব, ফয়জুল মুনির চৌধুরী সাহেব, এ সি আই লিমিটেড এর জনাব, কৃষিবিদ বশির আহমেদ, বিজনেস ডিরেক্টর “এ সি আই ফার্টিলাইজার” বিশিষ্ট কলামিষ্ট এবং উন্নয়ন কর্মী জনাব, আতাউর রহমান মিটন, কান্ট্রি ডিরেক্টর হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ, আরোও উপস্থিত ছিলেন মনোজগৎ সেন্টার এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর জনাবা ফেরদৌস আরা চৌধুরী।

    20161001_123001

    “করবো বাগান সারা দেশ, গড়বো সবুজ বাংলাদেশ” আর সুন্দর সবুজ নগর গড়ে তোলার সার্বিক সহযোগিতা এককভাবে কোন প্রতিষ্ঠানের পক্ষেই সম্ভব নয়, তার জন্য এগিয়ে আসতে হবে দেশের সর্ব স্তরের মিডিয়া এবং অভিজ্ঞজনকে এমন আশা ব্যক্ত করে অনুষ্ঠানটি সমাপ্তি করেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এর ৩৫ নাম্বার ওয়ার্ড এর কাউন্সিলর জনাব, ফয়জুল মুনির চৌধুরী সাহেব।