Tuesday, May 17, 2016
আদা চাষ
রসুন চাষ
- বারি রসুন-১: গড় উচ্চতা ২৫ ইঞ্চি, পাতার সংখ্যা (প্রতি গাছে) ৭-৮টি, কোয়ার সংখ্যা (প্রতি কন্দে) ২০-২২টি, কোয়ার দৈর্ঘ্য প্রায় ১ ইঞ্চি, বাল্বের ওজন ২০.০৮ গ্রাম, রোগ ও পোকার আক্রমণ খুব কম, জীবন কাল ১৪০-১৫০ দিন, ফলন (একর প্রতি) ২০০০-৩০০০ কেজি।
- বারি রসুন-২: গড় উচ্চতা ২২ ইঞ্চি, পাতার সংখ্যা (প্রতি গাছে) ৯-১০টি, কোয়ার সংখ্যা (প্রতি কন্দে) ২৩-২৪টি, কোয়ার দৈর্ঘ্য প্রায় ১ ইঞ্চি, রোগ ও পোকার আক্রমণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ও সংরক্ষণ ক্ষমতা ভাল, জীবন কাল ১৪৫-১৫৫ দিন, ফলন (একর প্রতি) ৩০০০-৪০০০ কেজি।
- বাউ রসুন-১: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগ হতে এ নামের একটি রসুনের জাত বের করা হয়েছে। এটি ব্যাকটেরিয়াল সফ্ট-রট প্রতিরোধী, ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত কিছু রোগ প্রতিরোধী, উচ্চ ফলনশীল এবং সংরক্ষণ গুন ভাল।
- বাউ রসুন-২: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগ দীর্ঘদিন যাবত গবেষণা চালিয়ে ভাইরাস প্রতিরোধী এ জাত বের করেছে। এটি উচ্চ ফলনশীল, ভাইরাস রোগ প্রতিরোধী, পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম, সংরক্ষণ গুন ভাল এবং ফলন প্রতি একরে ৫০০০-৬০০০ কেজি।
- ইটালী (দেশী জাত): গাছগুলো শক্ত, চওড়া, পাতাগুলো উপরের দিকে থাকে এবং ফলন বেশি হয়।
- আউশী (দেশী জাত): পাতা অপেক্ষাকৃত ছোট ও চিকন, কন্দ ছোট, ঢলে পড়ে, ফলন কম, বাজারে চাহিদা ও মূল্য কম।
- ছায়াতে শুকাতে পারলে ভাল গুণাগুণ বজায় থাকে।
- রোদে শুকালে রসুন নরম হয়ে যেতে পারে।
- ফুতি পোকার র্লাভা থেকে রক্ষা পেতে হলে সংরক্ষণের সময় সেভিন পাউডার ১০ লিটার পানিতে ২০ গ্রাম করে স্প্রে করে দিতে হবে।
- রসুন খুব ভালোভাবে পরিপক্ক করে নিয়ে ক্ষেত থেকে তুলতে হবে। অপরিপক্ক রসুন তুললে সেটা থেকে বীজ করা যাবে না। জমিতে ফুলকা হলে বুঝতে হবে রসুন পরিপক্ক হয়েছে।
পেঁয়াজ চাষ
- উত্তেজক হিসেবে কাজ করে
- প্রস্রাবের বেগ বাড়ায়
- শ্বাসনালীর মিউকাস কমায়
- ঋতুস্রাব বাড়ায়
- হজমি নালার জ্বালা কমায়
- রক্ত পরিশোধন করে
- এ্যাজমা ও কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়
- পোকার কামড়ে বিশুদ্ধ মধুসহ প্রলেপ দিলে জ্বালা কমায়
- কাঁচা পেঁয়াজের রস চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক
- ভাল বীজ হাত নিয়ে চাপ দিলে চাপ বসবে না। খারাপ বীজ হলে চাপ বসবে।
- মুখে নিয়ে দাঁত দিয়ে চাপ দিলে ভাল বীজ হলে ভেঙ্গে যাবে। খারাপ বীজ হলে চ্যাপ্টা হয়ে যাবে।
- পানিতে দিলে ভাল হলে পানিতে ডুবে যাবে। খারাপ হলে ভেসে উঠবে।
- বারি পেঁয়াজ-২
- বারি পেঁয়াজ-৩
- বারি পেঁয়াজ-৫ (এটি শীত, গ্রীষ্ম সবসময়ই আবাদ করা যায়)
- বসতবাড়িতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদনের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন ও আয় বৃদ্ধি সম্ভব।
- অমৌসুমে এ পিয়াজ উৎপাদন হয় বলে দামও ভাল পাওয়া যায়।
জলবায়ু | তাপমাত্রা | মাটির ধরণ |
গ্রীষ্ম কাল | পেঁয়াজ উৎপাদনের উপযোগী তাপমাত্রা ২৫ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সে.। | পানি জমে না এমন দো-আঁশ, এটেল দো-আঁশ, বেলে দো-আঁশ ও পলিযুক্ত মাটি পেঁয়াজ চাষের জন্য উত্তম। |
বীজতলায় বীজ বপনের সময় | মূল জমিতে চারা রোপণের ৪০ থেকে ৪৫ দিন পূর্বে |
বীজতলার আকার | বীজতলা ৩x১ মিটার বা (১০x৩ ফুট) আকারে হতে হবে |
বীজের প্রয়োজন | প্রতি বীজতলার জন্য ২৫-৩০ গ্রাম |
একর প্রতি বীজ | ১.৫ কেজি |
বীজ গজানোর হার | ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ হতে হবে |
প্রতি একর জমির জন্য বীজতলার প্রয়োজন | ৪০ থেকে ৫০ টি |
বীজ বপনের দূরত্ব | বীজতলায় ২ থেকে ৩ ইঞ্চি পরপর সারি করে বীজ বপন করতে হবে |
রোপণের সময় | আগামঃ ১ ফেব্রুয়ারি হতে ৩০ মার্চ (মধ্য মাঘ-মধ্য চৈত্র) মাসের মধ্যে এবং নাবীঃ ২৫ আগস্ট হতে ১০ অক্টোবর (মধ্য ভাদ্র-আশ্বিনের শেষ) মধ্যে |
চারার বয়স | ৩৫ থেকে ৪০ দিন বয়সের চারা মূল জমিতে রোপণ করতে হয় |
উচ্চতা | ৬ থেকে ৮ ইঞ্চি |
রোপণ দূরত্ব | সারি থেকে সারি ৬ ইঞ্চি এবং চারা থেকে চারা ৩ ইঞ্চি |
রোপণের সময় করণীয় | চারার পাতার ১/৩ অংশ এবং শিকড়ের ৩/৪ অংশ কেটে ফেলতে হবে |
সার | মোট পরিমাণ (একর প্রতি) | শেষ চাষের সময় দেয় | পরবর্তী পরিচর্যা হিসাবে দেয় (২০ দিন পর) |
গোবর | ২০০০ কেজি | সব | - |
ইউরিয়া | ৮২ কেজি | ৫০ কেজি | ৩২ কেজি |
টিএসপি | ১১০ কেজি | সব | - |
এমপি | ৬০ কেজি | সব | - |
জিপসাম | ৪৫ কেজি | সব | - |
মরিচ চাষ
মরিচ চাষ
গোলমরিচ চাষ
- হজমে সহায়তা করে
- স্নায়ু শক্তি বাড়ায়
- দাঁতের ব্যাথা কমানোতে সহায়তা করে
- মাংসপেশী ও হাড়ের জোড়ার ব্যাথা উপশম করে
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
- পাতার উপর কালো দাগ পড়ে এবং পরে দাগ বড় হয়।
- কচি পাতা ও ডগা আক্রমণে কালো হয়ে যায়। অধিক আক্রমণে গাছ মরে যায়।
- গোড়া সহ সকল স্থানে আক্রমণ ছড়াতে পারে।
- বর্ষা মৌসুমের শেষে আক্রমণ হলে গাছ হলুদ হয়ে ঢলে পড়তে পারে।
- মাটিসহ গাছ তুলে ধ্বংস করা
- রোগমুক্ত কাটিং ব্যবহার
- পরিচর্যার সময় শিকড়ে ক্ষত করা যাবেনা
- সাকার (ডগা) মাটিতে বাড়তে দেয়া যাবেনা
- ০.২% হারে কপার অক্সিক্লোরাইড প্রয়োগ
Saturday, May 14, 2016
জেনে নিন পাটশাকের গুনাগুণ
পাটশাক খাবার তাড়াতাড়ি হজম হতে সহায়তা করে এবং খাবারে রুচি বাড়ায়। নিয়মিত পাটশাক খেলে শরীরে বাতের ব্যথা হয় না।
রক্ত পরিষ্কারক হিসেবে পাটশাক কাজ করে। ম্যাগনেসিয়াম ডায়বেটিক ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, অনিদ্রা দূর করে, মানসিক চাপ দূর করে শরীর সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
পাটশাকে বিদ্যমান ফলিক অ্যাসিড ত্বক ও চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে।
খেতে সুস্বাদু আবার সহজলভ্যও। তাই খাবার পাতে প্রতিদিন পাট শাক রাখুন। সুস্থ স্বাভাবিক ও সুন্দর থাকুন।
Wednesday, May 11, 2016
রাউজান থেকে চুরি করা ১৩ গরু বায়েজিদে উদ্ধার
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (১০ মে) দুপুর আড়াইটার দিকে নগরীর অক্সিজেন শহীদনগর এলাকার কসাইপাড়ায় নাসিরের বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ।
অভিযানের আগে কসাই নাসির বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। তবে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নাসিরের ভাতিজাকে আটক করেছে।
বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন বাংলানিউজকে বলেন, এক সপ্তাহ ধরে রাউজানের বিভিন্ন এলাকা থেকে চুরি করে গরুগুলো এনে নিজের বাড়িতে রেখেছে কসাই নাছির। রাউজানের বিভিন্নজন ওই থানায় এসে অভিযোগ করেছে। আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১৩টি গরু উদ্ধারের পর রাউজান থানাকে অবহিত করেছি।
ওসি জানান, কসাই নাসিরের নেতৃত্বে একটি গরু চোর সিণ্ডিকেট আছে। সিণ্ডিকেটের সদস্যরা গরুগুলো চুরি করে এনে বিভিন্ন কসাইয়ের মাধ্যমে কেটে বিক্রি করে দেয়।
কসাই নাসিরের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলে ওসি জানান।
source- banglanews24
কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণের উপর নিষেধাজ্ঞা
কাপ্তাই হ্রদে মাছের বংশবৃদ্ধি, অবমুক্ত করা পোনার বিস্তার ও মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতকরণে প্রতিবছরই তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ রাখা হয়। এবারও ১২ মে থেকে হ্রদের মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। সোমবার রাঙামাটি জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে মৎস্য আহরণ বিষয়ক এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভাপতির বক্তব্যে আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসক মো. সামসুল আরেফিন বলেন, এই হ্রদের ওপর নির্ভর করে অনেক জীবন চলে। তাই সবার কথাই আমাদের ভাবতে হবে। মাছ আহরণ বন্ধ থাকাকালে প্রত্যেক জেলে যাতে রিলিফ কার্ড সঠিকভাবে পান, সেদিকে নজর রাখতে হবে। হ্রদে মাছ ধরা বন্ধে নৌ পুলিশ কাজ করবে বলেও তিনি জানান।
সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, হ্রদের মাছ আহরণ বন্ধের সময়ে যদি কারও অবৈধ জাল পাওয়া যায় তবে তা সঙ্গে সঙ্গেই নষ্ট করে ফেলা হবে। এছাড়া হ্রদে জাঁক দিয়ে মাছ আহরণ করা যাবে না। এভাবে মাছ আহরণ করতে দেখা গেলেও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জানা গেছে, কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ এবছর ১২ মে থেকে তিন মাস বন্ধ থাকবে। খোলার বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। এছাড়া প্রতিবছর পয়লা মে থেকে মাছ ধরা বন্ধ করে ১ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ রাখা হবে বলেও সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের রাঙামাটির শাখার ব্যবস্থাপক ও প্রজেক্ট ডিরেক্টর কমান্ডার মাইনুল ইসলাম (সি) বিএন, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম, জেলা মৎস্য বৈজ্ঞানিক মো. আব্দুল বাশারসহ জেলার বিভিন্ন মৎস্য ব্যবসায়ীরা।
২০ মে থেকে সমুদ্রে মাছ শিকার নিষিদ্ধ
রোববার (০৮ মে) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক তথ্য বিবরণী থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশের সামুদ্রিক অর্থনৈতিক এলাকায় মাছের সুষ্ঠু প্রজনন এবং সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণের লক্ষ্যে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও সামুদ্রিক অর্থনৈতিক জোন এলাকায় সব প্রকার ট্রলারসহ সব প্রজাতির মাছ ও ক্রিস্টাশিয়ান্স (চিংড়ি, লবস্টার, কাটলফিসসহ) আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এছাড়া ২০১৫ সালের ১৭ মে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত গেজেটের (মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এসআরও নং ৯৭-আইন/২০১৫) বিধান অনুযায়ী এ নিষেধাজ্ঞা জারির মাধ্যমে সকল বাণিজ্যিক ট্রলারকে এ নিষেধাজ্ঞা মেনে চলার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে তথ্য বিবরণীতে।
দেশের সামুদ্রিক অর্থনৈতিক এলাকায় কোনো মাছ ধরার ট্রলার এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে সামুদ্রিক মৎস্য অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ এবং সংশ্লিষ্ট বিধিমালানুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে বলেও তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়েছে।
[paypal_donation_button]
গম চাষ
ফসলের নাম: গম
পুষ্টি মূল্যঃ গম হতে যে আটা হয় তার প্রতি ১০০ গ্রাম আটায় আমিষ ১২.১ গ্রাম, শর্করা ৬৯.৪ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৪৮ মিলিগ্রাম, লৌহ ১১.৫ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ২৯ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন বি-১ ০.৪৯ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি-২ ০.২৯ মিলিগ্রাম, আঁশ ১.৯ গ্রাম, খনিজ পদার্থ ২.৭ গ্রাম এবং জলীয় অংশ থাকে ১২.২ গ্রাম।
ভেষজগুনঃ
ব্যবহারঃ গম সাধারণত মানুষের রুটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া গমের কুঁড়া গো-খাদ্য হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
উপযুক্ত জমি ও মাটিঃ উঁচু ও মাঝারি দোআশ মাটি গম চাষের জন্য বেশী উপযোগী। লোনা মাটিতে গমের ফলন কম হয়।
জাত পরিচিতিঃ বর্তমানে এদেশে অধিক আবাদকৃত গম জাতের মধ্যে কাঞ্চন, আকবর, অঘ্রাণী ও প্রতিভা রয়েছে। তাছাড়া সৌরভ (বারি গম-১৯) ও গৌরব (বারি গম-২০) নামে ২টি উচ্চ ফলনশীল নতুন জাত অনুমোদিত হয়েছে।
গমের জাত
কাঞ্চনঃ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট কর্তৃক ইউপি-৩০১ এবং সি-৩০৬ এর মধ্যে সংকরায়ণ করে কাঞ্চন জাত উদ্ভাবন করা হয়। এ জাত ১৯৮৩ সালে অনুমোদিত হয়। গাছের উচ্চতা ৯০-১০০ সেমি। কুশির সংখ্যা ৬-৭টি। গাছের নিশান পাতা খাড়া। শীষ বের হতে ৬০-৬৮ দিন সময় লাগে। প্রতি শীষে ৩৫-৪০টি দানা থাকে। দানা সাদা এবং হাজার দানার ওজন ৪৮-৫২ গ্রাম। অন্যান্য জাতের তুলনায় দানা আকারে বড়। চারা আবস্থায় প্রাথমিক কুঁশি মাটির উপরে অবস্থান করে। বোনা থেকে পাকা পর্যন্ত ১০৬-১১২ দিন সময় লাগে। এ জাতটি দীর্ঘ সময় ধরে চাষাবাদ হচ্ছে। বর্তমানে পাতার মরিচা দাগ রোগে আক্রান্ত হওয়ায় জাতটির ফলন কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। উন্নত পদ্ধতিতে চাষ করলে হেক্টর প্রতি ৩.৫-৪.৬ টন ফলন হয়। জাতটি দেশের সকল অঞ্চলে চাষের জন্য উপযোগী। বর্তমানে সারা দেশে কাঞ্চন গম খুবই জনপ্রিয়। বাংলাদেশে প্রায় ৮০ ভাগ এলাকায় কাঞ্চন গমের আবাদ হচ্ছে।
আকবরঃ আন্তর্জাতিক ভুট্টা ও গম উন্নয়ন কেন্দ্র (ঈওগগণঞ) মেক্সিকোতে ও টোবারী নামাক ২টি জাতের মধ্যে সংকরায়ণের পর একটি কৌলিক সারি ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশে আনা হয়। পরবর্তীতে বাছায় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উদ্ভাবিত জাতটি আকবর নামে ১৯৮৩ সালে অসুমোদিত হয়। এ জাতের গাছের উচ্চতা ৮৫-৯০ সেমি। কুশির সংখ্যা ৬-৭টি। পাতা কিছুটা হেলানো। নিশান পাতা খুবই চওড়া ও লম্বা। শীষ বের হতে ৫০-৫৫ দিন সময় লাগে। প্রতি শীষে ৫০-৫৫টি দানা থাকে। দানা সাদা, আকারে মাঝারি এবং হাজার দানার ওজন ৩৭-৪২ গ্রাম। পাতার গোড়ায় সাদা অরিকল থাকে। ফসল বোনা থেকে কাটা পর্যন্ত ১০৩-১০৮ দিন সময় লাগে। উন্নত পদ্ধতিতে চাষ করে ফলন হেক্টরপ্রতি ৩.৫-৪.৫ টন হয়। জাতটি পাতার দাগ রোগ সহনশীল। বৃহত্তর ময়মনসিংহ, যশোর, কুষ্টিয়া ও খুলনা জেলায় এ জাতের ফলন বেশী হয়। তবে আকবর জাতের গম দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও চাষের জন্য উপযোগী।
অঘ্রাণীঃ আন্তর্জাতিক ভুট্টা ও গম উন্নয়ন কেন্দ্র, মেক্সিকো হতে সনোরা/পি ৪১৬০ ই/ইনিয়া কৌলিক সারিটি ১৯৮২ সালে বাছাইকরণ নার্সারীর মাধ্যমে বাংলাদেশে আনা হয় এবং ১৯৮৭ সালে অঘ্রাণী নামে তা অনুমোদন লাভ করে। এ জাতের গাছের উচ্চতা ৮৫-৯০ সেমি, কুশির সংখ্যা ৫-৬টি। পাতা কিছুটা হেলানো, নিশান পাতা বড়। গাছের পাতা ও কান্ডে পাতলা মোমের আবরণের মতো বস্তু লক্ষ্য করা যায়। শীষ বের হতে ৫৫-৬০ দিন সময় লাগে। প্রতি শীষে ৫০-৫৫টি দানা থাকে। দানার রং সাদা, আকারে মাঝারি এবং হাজার দানার ওজন ৩৮-৪২ গ্রাম। পাতার গোড়ায় বেগুনি অরিকল থাকে। বোনা থেকে পাকা পর্যন্ত ১০৩-১১০ দিন সময় লাগে। উন্নত পদ্ধতিতে চাষ করলে ফলন হেক্টরপ্রতি ৩.৫-৪.০ টন হয়। জাতটি পাতার দাগ (ব্লাইট রোগ সহনশীল)। দেরীতে বপনের জন্য অঘ্রাণী জাতের গম বিশেষভাবে উপযোগী।
প্রতিভাঃ থাইল্যান্ড হতে ১৯৮২ সালে প্রেরিত বাছাইকরণ নার্সারীতে কে-ইউ ১২ নামক একটি কৌলিক সারি বাংলাদেশে বাছায় করা হয় এবং ১৯৮৩ সালে তা প্রতিভা নামে অনুমোদিত হয়। গাছের উচ্চতা ৮৫-৯৫ সেমি। কুশির সংখ্যা ৬-৭টি। গাছের নিশান পাতা খাড়া। শীষ বের হতে ৬০-৭০ দিন সময় লাগে। শীষ লম্বা ও প্রতি শীষে ৩৫-৪৫ টি দানা থাকে। দানা সাদা, আকারে বড় ও হাজার দানার ওজন ৪২-৪৮ গ্রাম। ফসল বোনা থেকে পাকা পর্যন্ত ১০৫-১১০ দিন সময় লাগে। উন্নত পদ্ধতিতে চাষ করলে হেক্টরপ্রতি ৩.৮-৪.৫ টন ফলন পাওয়া যায়। গমের প্রতিভা জাত পাতার মরিচা ও পাতার দাগ রোগ সহনশীল।প্রতিভা জাতের গম দেশের সকল অঞ্চলে চাষ করা যায়।
সৌরভঃ আন্তর্জাতিক ভুট্টা ও গম উন্নয়ন কেন্দ্রে নেকোজারী ও ভেরী জাতের মধ্যে সংকরায়ণকৃত একটি কৌলিক সারি ১৯৮৯ সালে এদেশে এনে বাছাই করা হয় যা ১৯৯৮ সালে সৌরভ (বারি গম-১৯) নামে চাষাবাদের জন্য অনুমোদিত হয়। গাছের উচ্চতা ৯০-১০০ সেমি। কুশির সংখ্যা ৫-৬টি। পাতা চওড়া, হেলানো ও গাঢ় সবুজ। নিশান পাতা চওড়া ও হেলানো। নিশান পাতার নীচের তলে মোমের মতো পাতলা আবরন থাকে। কান্ড মোটা ও শক্ত, ঝড় বৃষ্টিতে হেলে পড়ে না। নীচের গ্লুমের ঠোঁট বড়, প্রায় ৫ মিমি। শীষ বের হতে ৬০-৭০ দিন সময় লাগে। শীষ লম্বা, প্রতিটি শীষে দানার সংখ্যা ৪২-৪৮টি, দানার রং সাদা এবং হাজার দানার ওজন ৪০-৪৫ গ্রাম। বোনা থেকে পাকা পর্যন্ত ১০২-১১০ দিন সময় লাগে। উন্নত পদ্ধতিতে আবাদ করলে হেক্টরপ্রতি ফলন ৩.৫-৪.৫ টন পাওয়া যায়। জাতটি পাতার দাগ রোগ সহনশীল এবং পাতার মরিচা রোগ প্রতিরোধী। সৌরভ গম দেশের প্রায় সকল অঞ্চলে চাষের জন্য উপযোগী।
গৌরভঃ আন্তর্জতিক ভুট্টা ও গম উন্নয়ন কেন্দ্রে টুরাকো ও চিলেরো জাতের মধ্যে সংকরায়ণকৃত একটি কৌলিক সারি ১৯৯১ সালে বাংলাদেশে আনা হয়। খুব উৎপাদনশীল জাত হিসেবে সারিটি বাছায় করা হয় যা ১৯৯৮ সালে গৌরব (বারি গম-২০) নামে সারা দেশে চাষাবাদের জন্য অনুমোদন লাভ করে। গাছের উচ্চতা ৯০-১০২ সেমি। কুশি ৫-৬টি। পাতা গাঢ় সবুজ। নিশান পাতা খাড়া, সরু ও ইষৎ মোড়ানো। নীচের গ্লুমের ঠোঁট ছোট প্রায় ২ মিমি। শীষ বের হতে ৬০-৬৫ দিন সময় লাগে। শীষ লম্বা, অগ্রভাগ সরু। প্রতি শীষে ৪৫-৫০টি দানা থাকে। দানার রং সাদা এবং হাজার দানার ওজন ৪০-৪৮ গ্রাম। জীবনকাল ১০০-১০৮ দিন। উন্নত পদ্ধতিতে চাষ করলে হেক্টরপ্রতি ৩.৬-৪.৮ টন ফলন পাওয়া যায়। জাতটি পাতার মরিচা রোগ প্রতিরোধী এবং পাতার দাগ রোগ সহনশীল। এ জাতটি তাপ সহিষ তাই দেরীতে বপন করলে ভাল ফলন দেয়। বর্তমানে গম জাতসমূহের তুলনায় এ জাত ১০-১২ ভাগ বেশী ফলন দেয়।
বপনের সময়ঃ গমের উচ্চ ফলনশীল জাতসমূহের বপনের উপযুক্ত সময় হল কার্তিক মাসের শেষ থেকে অগ্রহায়ণর তৃতীয় সপ্তাহ (নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ হতে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত)। যে সব এলাকায় ধান কাটতে ও জমি তৈরী করতে বিলম্ব হয় সে ক্ষেত্রে কাঞ্চন,আকবর, অঘ্রাণী, প্রতিভা ও গৌরব বপন করলে ভাল ফলন পাওয়া যায়।
বপনের পদ্ধতিঃ সারিতে বা ছিটিয়ে গম বীজ বপন করা যায়। সারিতে বপনের জন্য জমি তৈরীর পর লাঙ্গল দিয়ে সরু নালা তৈরী করে ২০ সেমি দূরত্বের সারিতে ৪-৫ সেমি গভীরে বীজ বুনতে হয়। সার ব্যবস্থাপনাঃ সেচসহ চাষের ক্ষেত্রে নির্ধারিত ইউরিয়া সারের দুই তৃতীয়াংশ এবং সম্পূর্ণ টিএসপি, এমওপি ও জিপসাম শেষ চাষের পূর্বে প্রয়োগ করে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। বাকী এক তৃতীয়াংশ ইউরিয়া প্রথম সেচের সময় উপরি প্রয়োগ করতে হবে। সেচছাড়া চাষের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ সার অর্থাৎ ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি ও জিপসাম শেষ চাষের সময় জমিতে প্রয়োগ করতে হবে। গম চাষে নীচে উল্লেখিত হারে সার ব্যবহার করা প্রয়োজন।
সারের নাম সারের পরিমান/শতকে সেচসহ সেচছাড়া সারের পরিমান/হেক্টর সেচসহ সেচছাড়া ইউরিয়া ৭২৯-৮৯১ গ্রাম ৫৬৭-৭২৯ গ্রাম ১৮০-২২০ কেজি ১৪০-১৮০ কেজি টিএসপি ৫৬৭-৭২৯ গ্রাম ৫৬৭-৭২৯ গ্রাম ১৪০-১৮০ কেজি ১৪০-১৮০ কেজি এমপি ১৬২-২০২ গ্রাম ১২১-১৬২ গ্রাম ৪০-৫০ কেজি ৩০-৪০ কেজি জিপসাম ৪৪৫-৪৮৬ গ্রাম ২৮৩-৩৬৪ গ্রাম ১১০-১২০ কেজি ৭০-৯০ কেজি গোবর/কম্পোষ্ট ২৮-৪০ কেজি ২৮-৪০ কেজি ৭-১০ টন ৭-১০ টন
সেচও আগাছা ব্যবস্থাপনাঃ মাটির প্রকার ভেদে সাধারণত ২-৩টি সেচের প্রয়োজন হয়। প্রথম সেচ চারার তিন পাতার সময় (বপনের ১৭-২১ দিন পরে), দ্বিতীয় সেচ গমের শীষ বের হওয়ার সময়। (বপনের ৫৫-৬০ দিন পর) এবং তৃতীয় সেচ দানা গঠনের সময় (বপনের ৭৫-৮০ দিন পর) দিতে হবে। জমিতে আগাছা দেখা দিলে সাথে সাথে আগাছা দমনের ব্যবস্থা নিতে হবে।
পোকামাকড়ব্যবস্থাপনাঃ
রোগব্যবস্থাপনাঃ
গমের পাতার মরিচা রোগ দমনঃ পাক্সিনিয়া রিকন্ডিটা নামক ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়ে থাকে। প্রথমে পাতার উপর ছোট গোলাকার হলুদাভ দাগ পড়ে। শেষ পর্যায়ে এই দাগ মরিচার মত বাদামি বা কালচে রংয়ে পরিনত হয়। হাত দিয়ে আক্রান্ত পাতা ঘষা দিলে লালচে মরিচার মত গুড়া হাতে লাগে। এ রোগের লক্ষণ প্রথমে নিচের পাতায়, তারপর সব পাতায় ও কান্ডে দেখা যায়। দেশের উত্তরাঞ্চলে এ রোগ বেশী হয়ে থাকে।
প্রতিকারঃ ১. রোগ প্রতিরোধী গমের জাত কাঞ্চন, আকবর, অঘ্রাণী, প্রতিভা, সৌরভ ও গৌরবের চাষ করতে হবে। ২. সুষম হারে সার প্রয়োগ করতে হবে। ৩. টিল্ট ২৫০ ইসি ছত্রাক নাশক (০.০৪%) ১ মিলি আড়াই লিটার পানিতে মিশিয়ে ১২-১৫ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে
গমের পাতার দাগ রোগ দমনঃ বাইপোরারিস সরোকিনিয়ানা নামক ছত্রাক এ রোগ ঘটায়। গাছ মাটির উপর আসলে প্রথমে নীচের পাতাতে ছোট ছোট বাদামি ডিম্বাকার দাগ পড়ে। পরবর্তীতে দাগ সমূহ আকারে বাড়তে থাকে এবং গমের পাতা ঝলস দেয়। রোগের জীবাণু বীজে কিংবা ফসলের পরিত্যক্ত অংশে বেঁচে থাকে। বাতাসের অধিক আদ্রতা এবং উচ্চ তাপমাত্রা (২৫ ডিগ্রী সে.) এ রোগ বিস্তারের জন্য সহায়ক।
প্রতিকারঃ
১. রোগমুক্ত জমি হতে বীজ সংগ্রহ করতে হবে। ২. গাছের পরিত্যক্ত অংশ সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। ৩. প্রতি কেজি গম বীজে ২.৫-৩.০ গ্রাম ভিটাভেক্স-২০০ মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে। ৪. টিল্ট-২৫০ ইসি (০.০৪%) এক মিলি প্রতি আড়াই লিটার পানিতে মিশিয়ে ১২ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।
গমের গোড়া পচা রোগ দমনঃ স্কেলেরোশিয়াম রলফসি নামক ছত্রাক দ্বারা গমের এ রোগ হয়। এই রোগের ফলে মাটির সমতলে গাছের গোড়ায় হলদে দাগ দেখা যায়। পরে তা গাঢ় বাদামি বর্ণ ধারণ করে এবং আক্রান্তস্থানের চারিদিক ঘিরে ফেলে। পরবর্তীতে পাতা শুকিয়ে গাছ মারা যায়। রোগের জীবাণু মাটিতে কিংবা ফসলের পরিত্যক্ত অংশে দীর্ঘ দিন বেঁচে থাকে। সাধারণত বৃষ্টির পানি, সেচের পানি দ্বারা এক জমি হতে অন্য জমিতে বিস্তার লাভ করে।
প্রতিকারঃ
১. রোগ প্রতিরোধী কাঞ্চন, আকবর, অঘ্রাণী, প্রতিভা, সৌরভ ও গৌরব জাতের চাষ করতে হবে। ২. মাটিতে সব সময় পরিমিত আর্দ্রতা থাকা প্রয়োজন। ৩. ভিটাভেক্স-২০০ নামক ঔষধ প্রতি কেজি বীজে ২.৫-৩.০ গ্রাম হারে মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।
গমের আলগা ঝুল রোগ দমনঃ আসটিলেগো ট্রিটিসি নামক ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়। গমের শীষ বের হওয়ার সময় এ রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। উক্ত ছত্রাকের আক্রমণের ফলে গমের শীষ প্রথম দিকে পাতলা পর্দা দিয়ে আবৃত থাকে। পরে তা ফেটে যায় এবং দেখতে কালো ঝুলের মত দেখায়। ছত্রাকের বীজকণা সহজেয় বাতাসের মাধ্যমে অন্যান্য গাছে এবং অন্য জমির গম গাছে সংক্রমিত হয়। রোগের জীবাণু বীজের ভ্রুণে জীবিত থাকে। পরবর্তী বছর আক্রান্ত বীজ জমিতে বুনলে বীজের অংকুরোদগমের সময় জীবাণুও সক্রিয় হয়ে উঠে।
প্রতিকারঃ
১. রোগ প্রতিরোধী কাঞ্চন, আকবর, অঘ্রাণী, প্রতিভা, সৌরভ ও গৌরব জাতের চাষ করতে হবে। ২. রোগমুক্ত জমি হতে বীজ সংগ্রহ করতে হবে। ৩. ভিটাভেক্স-২০০ ঔষধ প্রতি কেজি বীজে ২.৫-৩.০ গ্রাম হারে মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।
গম বীজের কালো দাগ রোগ দমনঃ ডেক্সলেরা প্রজাতির ও অলটারনারিয়া প্রজাতির ছত্রাক দ্বারা গমের এ রোগ হয়। এ রোগের ফলে গমের খোসায় বিভিন্ন আকারের বাদামি অথবা কালো দাগ পড়ে। বীজের ভ্রুণে দাগ পড়ে এবং পরবর্তীতে দাগ সম্পূর্ণ বীজে ছড়িয়ে পড়ে। এ রোগের জীবাণু বীজের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়ে থাকে।
প্রতিকারঃ
১. সুস্থ্য বীজ সংগ্রহ করে বপন করতে হবে। ২. ভিটাভেক্স-২০০ নামক ঔষধ প্রতি কেজি বীজে ২.৫-৩.০ গ্রাম হারে মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।
ফসল সংগ্রহঃ চৈত্র মাসের প্রথম থেকে মধ্য-চৈত্র (মার্চের শেষ থেকে এপ্রিলের প্রথম) পর্যন্ত কেটে গম সংগ্রহ করতে হয়।
তিসি চাষ
ফসলের নাম-তিসি (Linseed)
উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম: Linum Utitatissimum Linn.
পরিবার: Linaceae.
১. পুষ্টিমূল্য/উপাদান : প্রোটিন, তেল, কার্বোহাইড্রেট, ছাই, আঁশ বিদ্যমান।
৩. ব্যবহার : যন্ত্রপাতির জন্য গ্রিজ ও সাবান তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।
৪. উপযুক্ত জমি ও মাটি : এঁটেল মাটি তিসি চাষের জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী। পলি দো-আঁশ ও এঁটেল দো-আঁশ মাটিতেও এর চাষ করা যায়।
৫. জাত পরিচিতি : নীলা (লিন-১)
জাতটি বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচন করা হয়েছে এবং ১৯৮৮ সালে জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত হয়। জাতটির বৈশিষ্ট্য হলো-বীজ ছোট ও চেপ্টা। ফল ১০০০ বীজের ওজন ৩.০-৩.৫ গ্রাম। ফুলের রং নীল। বীজ হাতে ধরলে পিচ্ছিল অনুভূত হয়। বীজে তেলের রিমাণ শতকরা ৩৮ ভাগ। হেক্টর প্রতি ফলন ৮৫০-৯৫০ কেজি।
৬. বীজ বপন : কার্তিক মাস (মধ্য অক্টোবর হতে বীজ ছিটিয়ে বপন করতে হয়। তবে সারিতে বপন করলে সারি থেকে সারির দূরত্ব হবে ৩০ সে.মি.।
৭. বীজের হার : ৭-৮ কেজি/হেক্টর।
৮. সারব্যবস্থাপনা : সাধারণত তিসি বিনা সারে চাষ করা হয়। তবে ভালো ফলন পেতে হলে নিম্নরূপ হারে সার প্রয়োগ করতে হবে।
সার হেক্টর প্রতি সারের পরিমাণ (কেজি)
ইউরিয়া ৭০-৮০
টিএসপি ১১০-১৩০
এমওপি ৪০-৫০
ইউরিয়া সার অর্ধেক ও বাকি অন্যসব সার শেষ চাষের সময় জমিতে মিশিয়ে দিতে হবে। বাকি অর্ধেক ইউরিয়া বীজ বপনের ২৫-৩০ দিন পর প্রয়োগ করতে হবে।
৯. সেচ ও আগাছা ব্যবস্থাপনা : প্রয়োজনে ১-২ বার সেচ দিতে হবে। আর জমিতে আগাছা থাকলে সময়মতো আগাছা দমন করতে হবে।
১০. পোকা মাকড় ব্যবস্থাপনা : পোকামাকড়ের আক্রমণ উল্লেখযোগ্য নহে।
১১. রোগ ব্যবস্থাপনা:
রোগের নাম: পাতা ঝলসানো রোগ
ভূমিকা: অলটারনেরিয়া লিনি নামক একপ্রকার ছত্রাকের সাহায্যে এ রোগ ছড়ায়। এটি একটি বীজবাহিত রোগ।
ক্ষতির নমুনা : প্রথমে পাতার উপর ঘন বাদামী বর্ণের অসম আকৃতির দাগ পড়ে। রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেলে পাতা শুকিয়ে যায়।
অনুকূল পরিবেশ :আর্দ্র আবহাওয়া
বিস্তার: বাতাসের সাহায্যে এ রোগ বিস্তার লাভ করে।
ব্যবস্থাপনা:
ক) বীজ শোধন : বীজ বপনের পূর্বে প্রতি কেজি বীজে ২.৫ গ্রাম ভিটাভেক্স-২০০ দিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।
খ) আগাছা দমনসহ ফসলের পরিচর্যার মাধ্যমে রোগের প্রাদুর্ভাব কমানো যায়।
গ) গাছে এ রোগের লক্ষণ দেখা দেয়া মাত্র প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম রোভরাল-৫০ ডব্লিউপি মিশিয়ে ১০ দিন পরপর ৩ বার স্প্রে করতে হবে।
১২. ফসল তোলা : তিসি ফাল্গুন-চৈত্র মাসে পাকে। পাকলে গাছ এবং ফল সোনালী বা কিছুটা তামাটে রং ধারণ করে। ফল ভালভাবে পাকার পরই গাছ কাটা বা উপড়ানো উচিৎ। ফসল কেটে বা উপড়িয়ে নেয়ার পর গাছগুলো ছোট ছোট আঁটি বেঁধে বাড়ির আঙ্গিনায় স্তুপ করে রাখা যায়। জীবনকাল ১০০-১১৫ দিন।
[paypal_donation_button]
সূর্যমুখী চাষ বিস্তারিত
সারের নাম | সারের পরিমাণ/হেক্টর |
ইউরিয়া | ১৮০-২০০ কেজি |
টিএসপি | ১৫০-২০০ কেজি |
এমওপি | ১২০-১৫০ কেজি |
জিপসাম | ১২০-১৭০ কেজি |
জিংক সালফেট | ৮-১০ কেজি |
বরিক এসিড | ১০-১২ কেজি |
ম্যাগনেসিয়াম সালফেট | ৮০-১০০ কেজি |
কৃষি শ্রমিকদের সংগঠন কৃষি শ্রমিক অধিকার ফোরামের যাত্রা শুরু
বুধবার (১১ মে) সকাল ১২টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বাংলাদেশ লেবার ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন (বিএলএফ) এবং বাংলাদেশ অকুপেশনাল সেফটি, হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট (ওশি) যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
কৃষির সব শ্রমিকদের এক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মিকাইল শিপার বলেন, কৃষি শ্রমিকরা সংগঠিত নয়। তারা সংগঠিত না হলে অধিকার আদায় করা সম্ভব নয়।
এ সময় সচিব দেশের সব ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠনগুলোকে সংগঠিত হয়ে এক প্লাটফর্মে কাজ করার অনুরোধ জানান।
তিনি বলেন, দেশের শ্রমিকদের যান্ত্রিক জ্ঞান নেই। এ কারণে যদি তাদের দক্ষ করে গড়ে তোলা যায় তবে তারা ভালো করতে পারবে।
সংগঠনটি সম্পর্কে প্রস্তাবনা তুলে ধরেন ওশির নির্বাহী পরিচালক এ আর চৌধুরী রিপন এবং এর আগে সংগঠনটির পক্ষ থেকে দেশের কৃষি শ্রমিকদের দুর্দশা, তাদের সমস্যা নিয়ে একটি ভিডিও তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
বাংলাদেশ লেবার ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবদুস সালামের সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য রাখেন ওশি ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন সাকী রিজওয়ানা, বিএলএফের মহাসচিব জেড এম কামরুল আনাম, ড. ওয়াজেদুল ইসলাম, কামরুল হাসান, আবদুল মুকিত খান, অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন ও হেদায়াতুল ইসলাম প্রমুখ।
পঞ্চগড়ে হাইব্রিড জাতের বেগুন চাষ বেড়েছে
জানা গেছে, উপজেলায় ছয় থেকে সাত ধরনের হাইব্রিড জাতের বেগুন চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে লুনা, তারাপুরী বারি-২, কাজলা বারি-৪, নয়ন তারা ও বারি-৫ ও বিজয়। সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে হাইব্রিড লুনা ও কাজলা জাতের বেগুন।
কৃষকরা জানান, এই দুই জাতের বেগুন সারাবছর উৎপাদন করা যায়। এ ছাড়া গাছের সব শাখা প্রশাখায় বেগুন ধরে। চারা রোপণের দুই মাসের মধ্যে বেগুন উত্তোলন করা যায় এবং প্রচুর পরিমাণ ফলন দেয়।
ঝলই শালশিড়ি ইউনিয়নের কামারপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে তিনি চার বিঘায় হাইব্রিড লুনা ও কাজলা বারি জাতের বেগুন চাষ করেছেন। তিনি বলেন, হাইব্রিড জাতের বেগুন চাষ খুব লাভজনক। এটি দ্রুত বেড়ে ওঠে ও অধিক ফলন হয়। তবে বেগুনটি চাষে খরচ একটু বেশি হয় বলেও তিনি জানান।
বেংহারি ইউনিয়নের ফুলতলা গ্রামের চাষি বাবুল হোসেন জানান, তিনি তিন বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের বেগুন চাষ করেছেন। উৎপাদন খরচ বাদে ৮০ হাজার টাকার বেগুন তিনি বিক্রি করেছেন। তিনি আরও ৪০ হাজার টাকার বেগুন বিক্রির আশা করছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ২১০ হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার এনামুল হক জানান, এ জাতের বেগুন বছরের সবসময় কম বেশি চাষ হয়ে থাকে। হাইব্রিড জাতের চারা রোপনের সঙ্গে সঙ্গে সেচ,সার ও কীটনাশক অতি জরুরি। তিনি বলেন বেগুনের শশ্রু ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা। এসব দমন না করতে পারলে চাষির ব্যাপক ক্ষতি হয়ে যায়। ফলে ব্যাপক পরিচর্যা করার জন্য খরচ একটু বেশি হয়ে থাকে।
ঘিওরে মিষ্টি কুমড়ায় কৃষকের মুখে মিষ্টি হাসি
অন্যান্য ফসলের সাথে কুমড়া আবাদ করায় এতে কৃষকদের আলাদা কোনো খরচ করতে হয় না। সরোজমিনে দেখা গেছে, জেলার প্রতিটি উপজেলাতেই কমবেশি মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়ে থাকে। তবে ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া, চঙ্গশিমুলিয়া, মাইলাগি, বড়বিলা, নীলা, বাঙ্গালা, বালিয়াখোড়া, বরুরিয়া, পয়লা, কুইষ্টা গ্রামে উল্লেখযোগ্য হারে কুমড়ার আবাদ হয়।
এখানকার উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া মানিকগঞ্জ কাঁচা বাজার আড়ত, আশুলিয়ার বাইপাইল সবজী আড়ত ও রাজধানীর কাওরান বাজারে পাইকারী দরে বিক্রি করছেন কৃষকরা। চলতি বছর ৯০ শতাংশ জমিতে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ করেছেন উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের পুরাণ গ্রামের কৃষক মইজুদ্দিন মিয়া। তিনি জানান, কুমড়া চাষে জমিতে বিঘাপ্রতি খরচ প্রায় চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। আর প্রতি বিঘাতে কুমড়া বিক্রি করে লাভ হয় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা।
পয়লা গ্রামের কৃষক হেলাল উদ্দিন জানান, এক বিঘা জমি থেকে সবোর্চ্চ ১১শ’ থেকে ১২শ’ কুমড়া পাওয়া যায়। প্রতিটি কুমড়ার দাম আকার ভেদে ১০ টাকা থেকে ৪০ টাকা দরে ক্ষেত থেকেই পাইকারী ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যায়। তাই আমাদের বাড়তি কোনো ঝামেলা পোহাতে হয় না। পাইকারী ক্রেতা মজনু বিশ্বাস জানান, অন্যান্য এলাকার চেয়ে এখানকার উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া সুস্বাদু ও আকৃতিতে বড় হয় বলে চাহিদা বেশি। এবছর তিনি তিন লাখ টাকার মিষ্টি কুমড়া পাইকারী কিনেছেন। লক্ষাধিক টাকার ওপরে লাভের আশা করছেন তিনি। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবীদ আশরাফ উজ্জামান জানান, কৃষকরা ফুলকপি, আলু, আখ চাষের সাথে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করছে।
কম খরচে ভালো লাভ পাচ্ছেন। তাই দিন দিন এখানকার কৃষকরা মিষ্টি কুমড়া আবাদে ঝুঁকে পরছে। এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে আসছে।
[paypal_donation_button]
Tuesday, May 10, 2016
ধানসহ কৃষি পণের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতের দাবি
এ সময় প্রতি ইউনিয়নে সরকারি ক্রয় কেন্দ্র খুলে প্রকৃত কৃষকের কাছে থেকে সরাসরি ধান ক্রয়ের দাবিও জানান সংগঠনের নেতারা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, কৃষকদের ফসল উঠতে শুরু করেছে।কৃষকদের কাছে এই মাস সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।ফসল বিক্রর টাকা দিয়ে কৃষক পরিবার সারা বছর সংসার পরিচালনা করে।
ধান উৎপাদনে খরচ যা হয়, তার চেয়ে অনেক কম দাম পাচ্ছে কৃষকরা। ফলে তারা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন বক্তারা।
সরকার নির্ধারিত মূল্য কৃষকের জন্য মোটেও যথাযথ নয় উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে ক্রয়কেন্দ্র খুলে ন্যায্য মূল্যে ধান কিনতে হবে।
সংগঠনের সভাপতি বজলুল রশিদ ফিরোজের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন শামছুন আরা জোসনা, বাসদ নেতা জুলফিকার আলী সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের নেতা কর্মীরা।