মাটির গুণাগুন ও কৃষি পরিবেশ রক্ষায় জৈব কৃষি নীতি করছে সরকার।
এ লক্ষ্যে ‘জাতীয় জৈব কৃষি নীতি, ২০১৬’ এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সচিবালয়ে সোমবার (৭ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম প্রেস ব্রিফিংয়ে এ অনুমোদনের কথা জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আমাদের জাতীয় কৃষি নীতি, ২০১৩ রয়েছে। এটার আওতায় জৈব কৃষির জন্য এ নীতিটি প্রস্তাব করা হয়েছে।’
‘এটি কয়েকটি অনুচ্ছেদের ছোট একটি নীতি। এতে মোট ছয়টি অনুচ্ছেদ রয়েছে-ভূমিকা, উদ্দেশ্য, জৈব কৃষি নীতিমালা, প্রতিষ্ঠানিক নীতি, আইনগত কাঠামো ও উপসংহার।’
পৃথিবীর ১৭২টি দেশে জৈব চাষাবাদ হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এরমধ্যে ৭৮টি দেশ নিজ নিজ জৈব নীতি প্রবর্তন করেছে। তাদের অনুসরণে সার্কভুক্ত দেশের মধ্যে ভারত ও ভুটান এটা করে ফেলেছে। বাংলাদেশ পাকিস্তান ও নেপালে প্রণয়নের কাজ চলছে। আমাদেরটা আজকে অনুমোদনের প্রেক্ষিতে এটা চূড়ান্ত হলো।’
শফিউল আলম বলেন, ‘এখানে ফোকাস করা হয়েছে রাসায়নিক সারের অসম ব্যবহারের ফলে ভূমির যে অবক্ষয় হয়, উর্বরতা হ্রাস পায় তাকে জৈব ও সুষম সার ব্যবহারের মাধ্যমে কীভাবে কমপেনসেট (কমানো) করা যায়। মাটির গুণাগুন ও কৃষির পরিবেশ এগুলো মধ্যে যাতে কোন নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে সে আঙ্গিকে কাজ করার জন্য কিছু গাইডলাইন দেওয়া হয়েছে নীতিতে।’
বিমসটেক দেশের মধ্যে বিদ্যুৎ ভাগাভাগিতে এমওইউ
শফিউল আলম বলেন, ‘বিমসটেকভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে গ্রিড কানেকশনের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরের জন্য খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।’
তিনি বলেন, ‘বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল, টেকনিক্যান অ্যান্ড ইকনমিক কো-অপারেশন বা বিমসটেকভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে অনেক দিন ধরে এটা কার্যকরের জন্য আলাপ হচ্ছে। বিভিন্ন সেক্টরে কো-অপারেশন (সহযোগিতা), এখন বিদ্যুৎ সেক্টেরে আমরা কিভাবে সহযোগিতা করতে পারি? গ্রিড (বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা) ইন্টারকানেকশনের (এক দেশের সঙ্গে অন্য দেশের সংযোগ) জন্য এ এমওইউটা তৈরি করা হয়েছে। বলতে গেলে সদস্যভুক্ত সব দেশই এই এমওইউটার প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করেছে ‘
‘আমাদের মন্ত্রিসভাও এ এমওইউটা অনুমোদন করেছে, আমরাও একই চুক্তিতে অবদ্ধ হব।’
এ চুক্তি মিয়ানমার থেকে জলবিদ্যুৎ ও গ্যাস আমদানিতে ভূমিকা রাখবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘বিমসটেকে গ্রিড কানেককশন যদি স্থাপিত হয় তবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে ঋতু বৈচিত্রের কারণে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সুবিধা হবে। আমাদের দেশে যখন গরম তখন দেখা যাবে অন্য দেশে শীত। তখন তারা বিদ্যুৎ ট্রান্সফার করে আমাদের দিতে পারবে। এ জাতীয় বিষয়গুলো তখন গুরুত্ব পাবে।’
পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক আইনের সংশোধন অনুমোদন
বৈঠকে ‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০১৬’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের সঙ্গে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের সম্পর্ক রয়েছে। একটি বাড়ি একটি খামার থেকেই ব্যাংকটি ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়।’
‘এই আইনে (পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক আইন) একটি সমস্যা আছে যে ২০১৬ সালের ৩০ জুনের পর একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পটি বিলুপ্ত হয়ে ব্যাংকের সঙ্গে মার্জ (একীভূত) হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে প্রস্তুতি সম্পন্ন না হওয়ায় সময়ের বাধা উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
শফিউল আলম বলেন, ‘৩৯ ধারার উপধারা-১ এর (ক) এ পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। আগে যেখানে ৩০ জুন ছিল সেটা উঠে গিয়ে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সময়ে উক্ত প্রকল্পগুলো ব্যাংকে চলে আসবে।’
প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী ২০১৬ সালের ৩০ জুন থেকে এ সংশোধন কার্যকর হবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আরেকটি (সংশোধিত আইনে) প্রভিশন আনা হয়েছে, মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি আইন-২০০৬ এর আওতায় (ব্যাংক) থাকবে না। এটা সমবায় ব্যবস্থাপনায় নিজস্বভাবে চলবে।’
এখন সংসদ অধিবেশন না থাকায় এটা অধ্যাদেশ আকারে জারি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
বিদ্যালয়ে থাকবে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত
‘জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড আইন, ২০১৬’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এ আইনটি মূলত ইংরেজি আইনের বাংলা অনুবাদ। ১৯৮৩ সালের অধ্যাদেশ ছিল, যেহেতু এটা সামরিক শাসনামলের অধ্যাদেশ এজন্য এটিকে ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ করে সামান্য পরিবর্তন সহকারে নতুন আইন হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে।’
বিদ্যালয়ের সংজ্ঞায় পরিবর্তন আনা হয়েছে জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, ‘বিদ্যালয়ের অর্থে আগে মাদ্রাসা ব্যতিত শব্দটি ছিল। এখন তা উঠিয়ে দিয়ে বলা হয়েছে, এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যা কোন আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত বা স্বীকৃত হোক বা না হোক যেখানে প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা দেওয়া হয়।’
‘পাঠ্যপুস্তকের সংজ্ঞাটি আরও পরিস্কার করে বলা হয়েছে, পাঠ্যপুস্তক অর্থ প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত যে কোন শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক।’
‘জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০’ অনুযায়ী প্রাথমিক অষ্টম শ্রেণি ও মাধ্যমিক শিক্ষার স্তর দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত। সে অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট আইনগুলো সংশোধন আনা হচ্ছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘সংশোধিত আইনে বোর্ডে সদস্য প্রস্তাব করা হয়েছে ৯ জন। এরমধ্যে ৮ জন সদস্য একজন চেয়ারম্যান হবেন। এরমধ্যে কমপক্ষে চারজন সদস্য উপস্থিত থাকলে কোরাম হবে। চেয়ারম্যান না থাকলে জ্যেষ্ঠ সদস্য সভায় সভাপতিত্ব করবেন। বোর্ডে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা থেকেও দু’জন সদস্য প্রতিনিধিত্ব করবেন।’
সূত্রঃ দি রিপোর্ট ২৪
Monday, November 7, 2016
Tagged Under: কৃষি পরিবেশ রক্ষায় জৈব কৃষি নীতি অনুমোদন, কৃষি প্রযুক্তি, কৃষি বিষয়ক সংবাদ, কৃষির তথ্য, জৈব কৃষি নীতি অনুমোদন
কৃষি পরিবেশ রক্ষায় জৈব কৃষি নীতি অনুমোদন
By:
এক ঘরে সব কিছু
On: 9:19 AM
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
0 comments:
Post a Comment