Wednesday, July 20, 2016

Tagged Under: , , , , ,

সমন্বিত বালাই দমন ব্যবস্থা

  • Share The Gag
  • সমন্বিত বালাই দমন ব্যবস্থা



    আইপিএম বা সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা বলতে পরিবেশকে দুষণমুক্ত রেখে প্রয়োজনে এক বা একাধিক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে ফসলের ক্ষতিকারক পোকা ও রোগ বালাইকে অর্থনৈতিক ক্ষতি সীমার নিচে রাখাকে বুঝায়, যাতে করে পরিবেশ দূষিত না হয়। উপকারী পোকামাকড় সংরক্ষণ, বালাই সহনশীল জাত ও আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি ব্যবহার এবং সর্বশেষ ব্যবস্থা হিসেবে বালাই নাশকের সময়োচিত ও যুক্তি সঙ্গত ব্যবহারকে নিশ্চিত করে।

    উপকারিতা


    • আই পি এম গ্রহনের ফলে উপকারী পোকা মাকড়, মাছ, ব্যাঙ, পশু, পাখি ও গুই সাপ প্রভৃতি সংরক্ষণ করা যায়।

    • বালাইনাশকের যুক্তি সঙ্গত ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়, যথেচ্ছ ব্যবহার না হওয়ায় উৎপাদন খরচ কমে।

    • বালাইনাশকের পরবর্তী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রোধ করা সম্ভব হয়। এতে করে বালাইনাশক জনিত দুর্ঘটনা সহজেই এড়ানো যায়।

    • ক্ষতিকারক পোকা-মাকড় বালাইনাশক সহনশীলতা অর্জন করার সুযোগ পায় না।

    • বালাই- এর পুনরাবৃত্তি ঘটার সম্ভাবনা কম।

    • সর্বোপরি পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকে এবং দুষণমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা যায়।



    উপাদান সমূহ

    আইপিএম এর পাঁচটি উপাদান।

    উপকারী পোকামাকড় ও প্রাণী সংরক্ষণ


    • জৈবিক দমনে ব্যাঙ, চিল, পেঁচা, গুইসাপ, মাকড়সা, লেডী বার্ড বিটল, ক্যারাবিড বিটল, বোলতা, মিরিড বাগ, ওয়াটার বাগ, ড্যামসেল ফড়িং প্রভৃতি উপকারী পোকামাকড় ও অন্যান্য প্রাণী ক্ষতিকারক পোকা দমনে যথেষ্ট সাহায্য করে।

    • উপকারী পোকামাকড়ের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য :




    • ধান ক্ষেতের আইলে শিম ও শসা জাতীয় ফসল আবাদ করা।

    • জমিতে পরিমিত পরিমাণ পানি রাখা।

    • ফসল কাটার অন্তত: ৪/৫ ঘন্টা পর জমিতে লাঙল দেওয়া।

    • ফসল কাটার পর আইলে কিছু খরকুটা বিছিয়ে দেওয়া।

    • জমিতে বাঁশের বুষ্টার স্থাপনের মাধ্যমে বোলতা প্রতিপালন করা।

    • বালাইনাশকের এলোপাতাড়ি ব্যবহার পরিহার করা।



    বালাই সহনশীল জাতের চাষাবাদ

    ক্ষতিকারক পোকামাকড় ও রোগের আক্রমণ অনেকাংশে রোধ করতে পারে। যেমন-


    • বি আর ২৬: সাদা-পিঠ গাছ ফড়িং ও ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধশীল এবং পাতাপোড়া রোগ, বাদামি গাছ ফড়িং সবুজ পাতা ফড়িং আক্রমণে মধ্যম প্রতিরোধশীল।

    • বাদামী গাছ ফড়িং ও সবুজ পাত ফড়িং আক্রমণে মধ্যম প্রতিরোধশীল ।

    • ব্রি ধান ২৭: সাদা পিঠ গাছ ফড়িং এর আক্রমণে প্রতিরোধশীল।

    • টুংরো, ব্লাস্ট, পাতাপোড়া রোগ এবং বাদামি গাছ ফড়িং ও পামরী পোকার আক্রমণে মধ্যম প্রতিরোধশীল।

    • ব্রি ধান ৩১: বাদামি গাছ ফড়িং পোকার আক্রমণে প্রতিরোধশীল এবং পাতা পোড়া ও টুংরো রোগে মধ্যম প্রতিরোধশীল ।

    • ব্রি ধান ৩৫: বাদামি গাছ ফড়িং প্রতিরোধশীল এবং টুংরো রোগ মধ্যম প্রতিরোধশীল ।



    আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতির ব্যবহার

    সুস্থ বীজ, সঠিক দূরত্বে রোপন, সবল চারা, সুষম সার, আগাছা মুক্ত জমি, সঠিক পানি ব্যবস্থাপনা, সারিতে রোপণ ও আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি গ্রহনে অধিক ফলন পাওয়া যায়।

     

    যান্ত্রিক দমন পদ্ধতি


    • হাত জালের সাহায্যে পোকা ধরে মারা।

    • আলোর ফাঁদে পোকা ধরা।

    • আক্রান্ত পাতার আগা কেটে দেওয়া।

    • পাখি বসার জন্য ডাল পুঁতা।

    • হাত দিয়ে পোকার ডিম সংগ্রহ করে ধংশ করা।

    • এসব পদ্ধতি ব্যবহারে বালাইকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।



    রাসায়নিক দমন ব্যবস্থা


    • নিয়মিতভাবে অপকারী ও উপকারী পোকামাকড়ের উপস্থিতি জরিপ করা।

    • সর্বশেষ ব্যবস্থা হিসেবে কেবল আক্রান্ত জমিতে সঠিক বালাইনাশক, সঠিক সময়, সঠিক মাত্রায় ও সঠিক পদ্ধতিতে ব্যবহার করা।



    প্রথম ৪টি উপাদানের সাহায্যে ও যদি ক্ষতিকারক পোকা- মাকড় ও রোগের আক্রমণ দমিয়ে রাখা সম্ভব না হয়, কেবল তখনই সর্বশেষ ব্যবস্থা হিসেবে বালাইনাশক ব্যবহার করা র্অথাৎ পোকার সংখ্যা অর্থনৈতিক দ্বারপ্রান্তে (ইটিএল) পৌঁছে গেলে তখনই বালাইনাশক সঠিকভাবে ব্যবহার করা দরকার।

     

    0 comments:

    Post a Comment